বিজয়ে অঢেল মিষ্টি ও ফুলের ছড়াছড়ি
ঋত্বিক নয়ন, চট্টগ্রাম | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০
বাঙালির যেকোনো আনন্দঘন মুহূর্তে; সেটা ঈদ-পূজা পার্বণ, বিয়ে, জন্মদিন কিংবা নির্বাচনÑ সবকিছুতেই চাই মিষ্টি। নিজের আনন্দযজ্ঞে অন্যকে শরিক করতে তাই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে মিষ্টি-ম-া-মিঠাইয়ের কারবার। সঙ্গে যদি ফুলের সৌরভমাখা শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া যায়, তবে তো কথা-ই নেই।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ। চট্টগ্রামের সবক’টি আসন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের। বিজয়ের আনন্দ তো আছেই, সঙ্গে আছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিপুল ব্যবধানে হারানোর আনন্দ। যেহেতু আনন্দ বেশি, তাই মিষ্টি ও ফুল চাই বেশি বেশি। গতকাল ৩১ ডিসেম্বর সকাল থেকেই নগরীর বিজয়ী প্রার্থীদের বরণ করে নিতে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, পেশাজীবী সমাজÑসবাই চট্টগ্রামের মিষ্টি বিপণি কেন্দ্র ও ফুলের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। নগরীর ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও চেরাগী পাহাড় এলাকার ফুলের দোকান অপরাজিতার কর্ণধার কুতুবউদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফুলের চাহিদা প্রচুর। একে তো নির্বাচন শেষ, তার ওপর আজ (গতকাল) থার্টিফার্স্ট নাইটÑ সব মিলিয়ে ফুলের বুকেট, মালার অর্ডার স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। চাহিদা অনুযায়ী ডেলিভারি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবু সবাইকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।’ মিষ্টির দোকানগুলোতেও ছিল তাই উপচে পড়া ভিড়। মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছে না কর্মচারীরা। সকাল সোয়া ৮টায় চেরাগী পাহাড় মোড়ের হাইওয়ে সুইটস থেকে দুই হাতে চারটি করে আট প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে বেরুচ্ছেন সাগর। এর মধ্যে বেজে উঠেছে ফোন। রিসিভ করবেন কীভাবে? হাত দুটো তো বন্ধ। নিরুপায় হয়ে রাস্তায় নামিয়ে রাখলেন বাঁ-হাতে ধরে থাকা মিষ্টির প্যাকেট চারটি। পকেট থেকে মুঠোফোন বের করে এত উল্লসিত কণ্ঠে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিজয়ের সংবাদ শোনাচ্ছিলেন, এ যেন নওফেলের কৃতিত্ব নয়, তার নিজেরও কৃতিত্ব। ওপ্রান্ত থেকে ফোন রাখতে না চাইলেও তিনি নিজেই তাড়া দিয়ে রাখলেন। কারণ প্রিয় নেতার বাসায় ছুটতে হবে মিষ্টি নিয়ে। সেখানে অপেক্ষা করছেন তার বন্ধুরা। হাইওয়ে সুইটসের স্বত্বাধিকারী মো. মুরাদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে জানান, নির্বাচনে বিজয় উপলক্ষে মিষ্টির জন্য ভিড় বেশি থাকবে। এ কারণে মিষ্টির দোকানগুলোও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি মিষ্টি তৈরি করেছে। তিনি জানান, অন্য সময়ের তুলনায় গত ৩১ ডিসেম্বর সোমবার মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর সকাল থেকে অনেকটা খোশগল্পে মশগুল থাকতে দেখা যায় চট্টগ্রাম নগরীর মানুষকে। স্থানে স্থানে জটলা। সকলে আগের দিন অনুষ্ঠিত নির্বাচন এবং নৌকার অভূতপূর্ব বিজয় নিয়েই আলাপ করছিলেন। নগরীর নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দির সড়ক মোড়ে সকাল ১০টার দিকে রোদ পোহাতে দেখা যায় পাঁচজনকে। তাদের মধ্যে তিনজন রিকশা রেখে গরম চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে। ভোট দিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হয় তাদের একজন সালাউদ্দিনের কাছে। বললেন, ‘দিছি।’ কাকে দিলেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা সব নৌকা।’ ঠিক বলছেন কি নাÑ জানতে দ্বিতীয়জন রেজার উদ্দেশে প্রশ্ন করা হলে তিনি মুচকি হেসে বলেন, ‘হ হ, এহন আমরা ক্যান হগলেই নৌকা। যে দিছে হেও, যে দ্যায় নাই হে-ও নৌকা।’
শেয়ার করুন
ঋত্বিক নয়ন, চট্টগ্রাম | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০

বাঙালির যেকোনো আনন্দঘন মুহূর্তে; সেটা ঈদ-পূজা পার্বণ, বিয়ে, জন্মদিন কিংবা নির্বাচনÑ সবকিছুতেই চাই মিষ্টি। নিজের আনন্দযজ্ঞে অন্যকে শরিক করতে তাই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে মিষ্টি-ম-া-মিঠাইয়ের কারবার। সঙ্গে যদি ফুলের সৌরভমাখা শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া যায়, তবে তো কথা-ই নেই।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ। চট্টগ্রামের সবক’টি আসন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের। বিজয়ের আনন্দ তো আছেই, সঙ্গে আছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিপুল ব্যবধানে হারানোর আনন্দ। যেহেতু আনন্দ বেশি, তাই মিষ্টি ও ফুল চাই বেশি বেশি। গতকাল ৩১ ডিসেম্বর সকাল থেকেই নগরীর বিজয়ী প্রার্থীদের বরণ করে নিতে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, পেশাজীবী সমাজÑসবাই চট্টগ্রামের মিষ্টি বিপণি কেন্দ্র ও ফুলের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। নগরীর ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও চেরাগী পাহাড় এলাকার ফুলের দোকান অপরাজিতার কর্ণধার কুতুবউদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফুলের চাহিদা প্রচুর। একে তো নির্বাচন শেষ, তার ওপর আজ (গতকাল) থার্টিফার্স্ট নাইটÑ সব মিলিয়ে ফুলের বুকেট, মালার অর্ডার স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। চাহিদা অনুযায়ী ডেলিভারি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবু সবাইকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।’ মিষ্টির দোকানগুলোতেও ছিল তাই উপচে পড়া ভিড়। মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছে না কর্মচারীরা। সকাল সোয়া ৮টায় চেরাগী পাহাড় মোড়ের হাইওয়ে সুইটস থেকে দুই হাতে চারটি করে আট প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে বেরুচ্ছেন সাগর। এর মধ্যে বেজে উঠেছে ফোন। রিসিভ করবেন কীভাবে? হাত দুটো তো বন্ধ। নিরুপায় হয়ে রাস্তায় নামিয়ে রাখলেন বাঁ-হাতে ধরে থাকা মিষ্টির প্যাকেট চারটি। পকেট থেকে মুঠোফোন বের করে এত উল্লসিত কণ্ঠে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিজয়ের সংবাদ শোনাচ্ছিলেন, এ যেন নওফেলের কৃতিত্ব নয়, তার নিজেরও কৃতিত্ব। ওপ্রান্ত থেকে ফোন রাখতে না চাইলেও তিনি নিজেই তাড়া দিয়ে রাখলেন। কারণ প্রিয় নেতার বাসায় ছুটতে হবে মিষ্টি নিয়ে। সেখানে অপেক্ষা করছেন তার বন্ধুরা। হাইওয়ে সুইটসের স্বত্বাধিকারী মো. মুরাদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে জানান, নির্বাচনে বিজয় উপলক্ষে মিষ্টির জন্য ভিড় বেশি থাকবে। এ কারণে মিষ্টির দোকানগুলোও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি মিষ্টি তৈরি করেছে। তিনি জানান, অন্য সময়ের তুলনায় গত ৩১ ডিসেম্বর সোমবার মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর সকাল থেকে অনেকটা খোশগল্পে মশগুল থাকতে দেখা যায় চট্টগ্রাম নগরীর মানুষকে। স্থানে স্থানে জটলা। সকলে আগের দিন অনুষ্ঠিত নির্বাচন এবং নৌকার অভূতপূর্ব বিজয় নিয়েই আলাপ করছিলেন। নগরীর নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দির সড়ক মোড়ে সকাল ১০টার দিকে রোদ পোহাতে দেখা যায় পাঁচজনকে। তাদের মধ্যে তিনজন রিকশা রেখে গরম চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে। ভোট দিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হয় তাদের একজন সালাউদ্দিনের কাছে। বললেন, ‘দিছি।’ কাকে দিলেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা সব নৌকা।’ ঠিক বলছেন কি নাÑ জানতে দ্বিতীয়জন রেজার উদ্দেশে প্রশ্ন করা হলে তিনি মুচকি হেসে বলেন, ‘হ হ, এহন আমরা ক্যান হগলেই নৌকা। যে দিছে হেও, যে দ্যায় নাই হে-ও নৌকা।’