অপরিকল্পিত নালায় ময়লা আবর্জনার স্তূপ
সাইফুর রহমান, বরিশাল | ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০
বরিশাল নগরে অপরিকল্পিতভাবে নালা (ড্রেন) নির্মাণের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সঠিকভাবে পানি অপসারণের ব্যবস্থার অভাবে জমছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নালার ঢাকনা না থাকায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, বাড়ছে মশা-মাছির উপদ্রব।
নগরবাসীর অভিযোগ, বরিশালের বড় বড় খাল ভরাট করে (ড্রেন) নালা নির্মাণ করায় নগরের পানি অপসারণ ব্যবস্থা সংকুচিত হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অপরিকল্পিত নালাগুলো দীর্ঘদিনেও পরিচ্ছন্ন না করায় ময়লা-আবর্জনা জমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বরিশাল নগর সৌন্দর্য রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশন বড় বড় খাল ভরাট করে ছোট ড্রেন নির্মাণ করে। যে দুয়েকটি খাল অবশিষ্ট আছে সেগুলোও ময়লা-আবর্জনায় ঢেকে গেছে। দুই-একবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান হলেও খাল সংরক্ষণ কিংবা সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ নেই। নালা ব্যবস্থাপনা ভালো না হওয়ায় নগরের পানি সহজে অপসারণ হচ্ছে না। এখনই নালাগুলো পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনষাবাড়ি গলির নালাগুলোর দুই পাশে ঢালাই করা, ওপরের অংশ খোলা, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটিখানা পূজামণ্ডপ থেকে জোড় মসজিদ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নালা খোলা অবস্থায় রয়েছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দ্রপাড়া, মাতৃমন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা, কাউনিয়া প্রধান সড়ক, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গগণগলি, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাজার রোড, হাটখোলা এলাকা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফেয়ার হেলথ ক্লিনিকের পেছনসহ কমপক্ষে ছয়-সাত কিলোমিটার নালা খোলা অবস্থায় রয়েছে। এসব নালাগুলো অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় ময়লা-আবর্জনায় অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনে মোট ৩৭৬ কিলোমিটারজুড়ে নালা রয়েছে। এর মধ্যে পাকা নালা ২১২ কিলোমিটার এবং কাঁচা নালা আছে ১৬৪ কিলোমিটার। পাকা নালার অর্ধেক খোলা অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিচুজ্জামান বলেন, ‘নগরের মোট নালার ৫০ ভাগের ঢাকনা নেই। এর বাইরে বড় সড়কের পাশে থাকা ড্রেনগুলোর প্রায় ৫০০ সøাব নষ্ট হয়ে গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে সøাবগুলো ঠিক করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায় খোলা ড্রেনগুলো সংস্কার করে ঢাকনা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই-এক দিনের মধ্যে নগরের ২০ থেকে ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ ড্রেন পরিচ্ছন্নতা কাজ শুরু হবে। ধীরে ধীরে পুরো নগরের নালাগুলো থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হবে।’
নগরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কথা হয় সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মহানগরের ড্রেনগুলো বিগত সময়ে মেয়ররা নির্মাণ করেছেন। সেটা অপরিকল্পিত কি না তা আমার জানা নেই। তবে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরই নালাগুলো ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। গত ২৬ ডিসেম্বর মাসব্যাপী পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করেছি। নগরের কেবল ড্রেন নয়, কোথাও ময়লা-আবর্জনা থাকতে পারবে না। প্রকৌশল বিভাগসহ পরিচ্ছন্নতা বিভাগকে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে বরিশালে যাতে জলাবদ্ধতা না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হবে।’
শেয়ার করুন
সাইফুর রহমান, বরিশাল | ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০

বরিশাল নগরে অপরিকল্পিতভাবে নালা (ড্রেন) নির্মাণের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সঠিকভাবে পানি অপসারণের ব্যবস্থার অভাবে জমছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নালার ঢাকনা না থাকায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, বাড়ছে মশা-মাছির উপদ্রব।
নগরবাসীর অভিযোগ, বরিশালের বড় বড় খাল ভরাট করে (ড্রেন) নালা নির্মাণ করায় নগরের পানি অপসারণ ব্যবস্থা সংকুচিত হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অপরিকল্পিত নালাগুলো দীর্ঘদিনেও পরিচ্ছন্ন না করায় ময়লা-আবর্জনা জমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বরিশাল নগর সৌন্দর্য রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশন বড় বড় খাল ভরাট করে ছোট ড্রেন নির্মাণ করে। যে দুয়েকটি খাল অবশিষ্ট আছে সেগুলোও ময়লা-আবর্জনায় ঢেকে গেছে। দুই-একবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান হলেও খাল সংরক্ষণ কিংবা সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ নেই। নালা ব্যবস্থাপনা ভালো না হওয়ায় নগরের পানি সহজে অপসারণ হচ্ছে না। এখনই নালাগুলো পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনষাবাড়ি গলির নালাগুলোর দুই পাশে ঢালাই করা, ওপরের অংশ খোলা, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটিখানা পূজামণ্ডপ থেকে জোড় মসজিদ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নালা খোলা অবস্থায় রয়েছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দ্রপাড়া, মাতৃমন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা, কাউনিয়া প্রধান সড়ক, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গগণগলি, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাজার রোড, হাটখোলা এলাকা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফেয়ার হেলথ ক্লিনিকের পেছনসহ কমপক্ষে ছয়-সাত কিলোমিটার নালা খোলা অবস্থায় রয়েছে। এসব নালাগুলো অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় ময়লা-আবর্জনায় অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনে মোট ৩৭৬ কিলোমিটারজুড়ে নালা রয়েছে। এর মধ্যে পাকা নালা ২১২ কিলোমিটার এবং কাঁচা নালা আছে ১৬৪ কিলোমিটার। পাকা নালার অর্ধেক খোলা অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিচুজ্জামান বলেন, ‘নগরের মোট নালার ৫০ ভাগের ঢাকনা নেই। এর বাইরে বড় সড়কের পাশে থাকা ড্রেনগুলোর প্রায় ৫০০ সøাব নষ্ট হয়ে গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে সøাবগুলো ঠিক করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায় খোলা ড্রেনগুলো সংস্কার করে ঢাকনা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই-এক দিনের মধ্যে নগরের ২০ থেকে ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ ড্রেন পরিচ্ছন্নতা কাজ শুরু হবে। ধীরে ধীরে পুরো নগরের নালাগুলো থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হবে।’
নগরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কথা হয় সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মহানগরের ড্রেনগুলো বিগত সময়ে মেয়ররা নির্মাণ করেছেন। সেটা অপরিকল্পিত কি না তা আমার জানা নেই। তবে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরই নালাগুলো ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। গত ২৬ ডিসেম্বর মাসব্যাপী পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করেছি। নগরের কেবল ড্রেন নয়, কোথাও ময়লা-আবর্জনা থাকতে পারবে না। প্রকৌশল বিভাগসহ পরিচ্ছন্নতা বিভাগকে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে বরিশালে যাতে জলাবদ্ধতা না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হবে।’