
বাংলাদেশ এগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএমএ) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান। আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় রাজধানীর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সংগঠনটির প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সকল সদস্যের উপস্থিতিতে আগামী দুই বছরের জন্য (২০২৩-২০২৪ সাল) ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএএমএ-এর পরবর্তী সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অ্যাসোসিয়েশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং অর্জন সমূহ তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে এজেন্ডা অনুযায়ী পূর্ববর্তী মতবিনিময় সভার কার্যবিবরণী পাঠ করা হয় এবং অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিএএমএ একটি জনকল্যাণকর ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার অনুমোদিত বাণিজ্যিক সংগঠন। সংগঠনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক সদ্য ১৭/১০/২০২২ তারিখে নিবন্ধন প্রাপ্ত যার লাইসেন্স নম্বর ১৩/২০২২ এবং এফবিসিসিআই এর এ ক্লাস অ্যাসোসিয়েশন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।
বিএএমএ-এর প্রধান কাজ হল কৃষি রসায়ন শিল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে ফসলের সুরক্ষা প্রদান এবং এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির উৎপাদিত পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, মাত্রা নির্ধারণ ও সরকারি বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা ও বিধিবিধান বাস্তবায়নে সহায়তা করা।
এখানে উল্লেখ্য যে, কৃষি রসায়ন শিল্পের একটি অন্যতম গুরুত্ব পূর্ণ শাখা হল বালাইনাশক শিল্প। দেশীয় বালাই নাশক শিল্প বিকাশে বিদ্যমান বিভিন্ন বাধাসমূহ যেমনঃ সোর্স উন্মুক্তকরণ, কার্বোফুরান কাঁচামালের আমদানি ও নিবন্ধন নবায়ন, সালফার আমদানি, এলসি ওপেনিং, কাঁচামাল আমদানি ও উৎপাদন, পেটেন্ট স্বত্ব, নিবন্ধনের সরকারি ফি হ্রাস ও নবায়নের সময় বৃদ্ধি, যথাসময়ে সাব-পিটাক বা পিটাক না হওয়া, একই পণ্যের একই ফসলে ভিন্ন ভিন্নমাত্রা নির্ধারণ ও একই ফসলে বিভিন্ন কোম্পানির লেভেলের জন্য নতুন করে অনুমোদন গ্রহণ ইত্যাদি সমস্যা দূরীকরণে করণীয় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গুলো নিয়ে উক্ত সভায় আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশের কৃষি শিল্প বিকাশে, দেশীয় বালাইনাশক শিল্পকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় এবং সর্বোপরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়তে সভাপতি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) স্প্রিং ২০২৩ এর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে নতুন ভর্তি হওয়া নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান গতকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার বিকেল ৩টায় ইউআইইউ খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস, স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন।
নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া।
অনুষ্ঠানে ইউআইইউ’র উপর একটি প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন ইউআইইউ সিএসই বিভাগের অধ্যাপক এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কো-অপারেশন সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে মনোযোগী হওয়া এবং নিজেকে সফল ও বিশ্বমানের দক্ষ মানব সম্পদ হিসাবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে নানামুখী দক্ষতা অর্জনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডা. জুলফিকার রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক নিয়মাবলি তুলে ধরেন। অন্যান্যদের মধ্যে ইউআইইউ’র দুজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং দুজন নবাগত শিক্ষার্থী বক্তব্য প্রদান করেন।
নবীনবরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এ.এস.এম সালাহউদ্দিন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও পরিচালকসহ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও অবিভাবকবৃন্দ।
অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও বিকাশ পেমেন্টে ১০% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক পাচ্ছেন বইপ্রেমীরা। মেলা চলাকালীন একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক উপভোগ করতে পারবেন। একইসাথে, ৫০০ টাকা বা তার বেশি বিকাশ পেমেন্ট করলেই রয়েছে আরো ৫০ টাকার কুপন, যা মেলা চলাকালীন সময়ে উপভোগ করতে পারবেন গ্রাহক।
বইমেলার অধিকাংশ স্টলেই বিকাশ অ্যাপে কিউআর কোড স্ক্যান অথবা *২৪৭# ডায়াল করে পেমেন্ট করলেই ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক পাবেন গ্রাহক। প্রকাশক ও বিক্রেতাদের দেয়া ছাড়ের পাশাপাশি বিকাশ পেমেন্টে পাওয়া এই ক্যাশব্যাক আরো বেশী বই কেনার সুযোগ করে দেবে পাঠকদের। অফারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে- https://www.bkash.com/campaign/book-fair-offer।
উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা আয়োজনে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সহযোগিতা করছে বিকাশ। শুধু তাই নয়, গত তিনটি মেলার ধারাবাহিকতায় এবারো মেলায় আসা দর্শনার্থী-লেখক-প্রকাশকদের কাছ থেকে বই সংগ্রহ করবে বিকাশ। পাশাপাশি, বিকাশের পক্ষ থেকে দেয়া বই যোগ করে তা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার পাঠকদের মাঝে বিতরণ করবে বিকাশ। বইমেলায় বই সংগ্রহের এই কার্যক্রমের আওতায় গত তিন বছরে ৭২,৫০০ বই বিতরণ করেছে বিকাশ।
মেলায় বিকাশের সৌজন্যে স্থাপিত ‘বই প্রদান বুথ’-এ এসে নতুন বা পুরাতন বই প্রদান করে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন পাঠক-দর্শনার্থীরা। যারা ঢাকার বাইরে আছেন, তারা নিজ নিজ এলাকার বিকাশ গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়েও বই দিয়ে আসতে পারবেন।
এদিকে যাদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই, চাইলে তারাও মেলা প্রাঙ্গনে জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে নিয়ে বিকাশের বুথ থেকে তাৎক্ষণিক অ্যাকাউন্ট খুলে বিকাশ পেমেন্টে বই কিনতে পারবেন। এছাড়া মেলার পাঠক-লেখক-ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য বিকাশের সৌজন্যে এবারও রয়েছে বসার ব্যবস্থা। শিশু কিশোরদের জন্য বিকাশের সৌজন্যে আছে মজার পাপেট শো।
এক দশক আগে, ইউনিসেফ, ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট এবং সেভ দ্য চিলড্রেন, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসমূহে স্বেচ্ছায় ব্যবহারের লক্ষ্যে শিশু অধিকার এবং ব্যবসার নীতি সংক্রান্ত এক সহায়িকা তৈরি করেছিল। এই সহায়িকার উদ্দেশ্য ছিল কর্মক্ষেত্র, বাজার এবং ব্যবসায়ী কমিউনিটির সকলে যেন শিশুদের অধিকারকে সম্মান জানিয়ে নিজ নিজ কর্পোরেট দায়িত্ব পালন করে। এই বৈশ্বিক সহায়িকার লক্ষ্য ছিল ব্যবসার কারণে সৃষ্ট শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে এবং ব্যবসা-পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দুতে শিশু অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে দায়িত্বশীল আচরণ পালন করা। গত এক দশকে এই বিষয়ে বেশ কিছু অগ্রগতি সাধিত হলেও এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
এই প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সিন্ডিকেট হলে আজ এক জাতীয় সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। এনএসইউ'র উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে, পূর্বে-ধারণকৃত ভাষণে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ব্যবসার সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করতে শিশু অধিকার এবং ব্যবসায়িক নীতির কাঠামো মেনে চলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অনুষ্ঠানে ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, সরকার, বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসা-প্রতিঠানসমূহের পক্ষেই এই বিষয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের সক্ষমতা রয়েছে। শিশুদের প্রতি প্রতিশ্রুতি পালনে পিতামাতা, চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠানসহ সকলকেই এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন ভবিষ্যতে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বজায় থাকে এবং ব্যবসার সম্মৃদ্ধিতে পরবর্তী প্রজন্মের প্রয়োজনীয় দক্ষতাও অর্জিত হয়।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন,বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে নারীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের অধিকার পায় না।
তিনি আরও বলেন, শিশুরা আমাদের সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ এবং তাদের রক্ষা করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান এইচ.ই. মিস্টার চার্লস হোয়াইটলি বলেন, শিশুরা ক্রমাগত দারিদ্র্য, শোষণ এবং বৈষম্যের সম্মুখীন হয়, ব্যবসা এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি আরও যোগ করেছেন, আমরা খুব আশাবাদী যে এই সম্মেলন এমন একটি নিরবচ্ছিন্ন এবং অনায়াসে পরিবর্তনের রূপান্তর হবে এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক মহিলা, সরকারী এবং অন্যান্য স্তরে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান এইচ.ই. মিস্টার চার্লস হোয়াইটলি, বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, বাংলাদেশে সুইডিশ রাষ্ট্রদূত মিস আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে; শ্রম ও কর্মসংস্থান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক, এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ বেসরকারি খাত- ইউনিলিভার, গ্রামীণফোন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ এবং বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও এই সিম্পোজিয়ামে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে এনএসইউ এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের মধ্যে সম্প্রতি সম্পাদিত একটি সমঝোতা স্মারকের আওতায় পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
৯ম ঢাকা আন্তর্জাতিক মোবাইল চলচ্চিত্র উৎসব – ডিআইএমএফএফ ২০২৩ পাওয়ার্ড বাই স্টার সিনেপ্লেক্স এর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ – ইউল্যাবের এর রিসার্চ বিল্ডিং এ।
আগামী ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি, ২৬টি চলচ্চিত্র নিয়ে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে যা বিশ্বের ২৫টি দেশ থেকে আগত ১৬৩টি চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে বাছাই করা হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ এর মোহাম্মদপুর স্থায়ী ক্যাম্পাসে ৪ ফ্রেব্রুয়ারি উৎসবের পর্দা উঠবে যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকছেন গ্রে ঢাকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গাউসুল আলম শাওন। এইদিন দুই পর্বে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হবে।
উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ৫ ফেব্রুয়ারি স্টার সিনেপ্লেক্স সীমান্ত সম্ভারে। সমাপনী দিনের প্রধান অতিথি হিসেবে থাকছেন ইরেশ যাকের। এদিন মোট ১০টি চলচ্চিত্র নিয়ে একটি প্রদর্শনী হবে এবং ধারা রেখে ঘোষণা করা হবে ডিআইএমএফএফ ২০২৩ চলচ্চিত্র বিজয়ীদের নাম।
ঢাকা আন্তর্জাতিক মোবাইল চলচ্চিত্র উৎসবের ৯ম আসরে এবার মোট পাঁচটি বিভাগে চলচ্চিত্র জমা নেওয়া হয়েছে। প্রথম বিভাগ ওপেন ডোর, এই বিভাগে কোনো বয়স এবং সময় নির্ধারিত ছিল না। 'ডিআইএমএফএফ বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড' পাবে এই বিভাগের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রটি। শর্ট ফিল্ম বিভাগে অংশগ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা এবং এই বিভাগের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রটি পাবে “সিনেমাস্কোপ বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড”। প্রথম থেকে দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতা করছে “ইউল্যাব ইয়াং ফিল্ম মেকার অ্যাওয়ার্ড” এর জন্য। এই বছর ডিআইএমএফএফ-এ সংযোজন করা হয়েছে আরও দুইটি নতুন বিভাগ। ভার্টিকাল চলচ্চিত্রের জন্য রয়েছে “ডিআইএমএফএফ বেস্ট ভার্টিকাল ফিল্ম” এবং শ্রেষ্ঠ মোজো ছোট গল্পের জন্য রয়েছে “এমএসজে বেস্ট মোজো”।
এই বছরের চলচ্চিত্র বাছাই এবং বিচারকার্যের জন্য দুইটি জুরি বোর্ড রয়েছে। শর্ট ফিল্ম, মোজো স্টোরি এবং ওয়ান-মিনিট বিভাগের জুরি চেয়ার হিসেবে আছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা সেঁজুতি সুবর্ণা তুশি এবং জুরি সদস্য হিসেবে আছেন ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড জয়ী ডিরেক্টর রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও পাকিস্তানের মাল্টিমিডিয়া ট্রেইনার, রিসার্চার আয়াজ খান। ওপেন ডোর এবং ভার্টিকাল ফিল্ম বিভাগের জুরি চেয়ার হিসেবে আছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় নির্মাতা শিমুল চন্দ্র বিশ্বাস এবং জুরি সদস্য হিসেবে আছেন ফ্রান্স-তুর্কি ডিরেক্টর বেরাট গোক্কুস ও চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রডিউসার তাসমিয়াহ আফরিন মৌ।
ডিআইএমএফএফ এর ডকুমেন্টারি পার্টনার হিসেবে আছে ফিল্মিজম। ওয়্যারড্রোব পার্টনার হিসেবে আছে ব্ল্যাকিস্টিক এবং ফুড পার্টনার হিসেবে আছে চাউ-ম্যান, ফেস্টিভ্যাল পার্টনার হিসেবে আছে মিনা। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে ঢাকা পোস্ট, পাবলিক রিলেশন পার্টনার হিসেবে আছে ব্র্যান্ডস্মিথ। টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স, অ্যাওয়ার্ড পার্টনার হিসেবে আছে এসএকেপিডিএল। এই বছর উৎসবের ভেন্যু হিসেবে থাকছে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের পার্মানেন্ট ক্যাম্পাস এবং স্টার সিনেপ্লেক্স সীমান্ত সম্ভার।
প্রতিবছর ডিআইএমএফএফ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতীক তুলে আনে। সেই অনুসারে, এই বছর উৎসবের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বায়োস্কোপ’।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ডিআইএমএফএফ ২০২৩ এর ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর মোহাম্মদ সাম্বিতুল ইসলাম, ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইসমাম রহিম কারীব এবং পাবলিক রিলেশন্স ম্যানেজার জান্নাতিন তাজরীমিন রীথি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে 'নতুন প্রজন্ম, নতুন প্রযুক্তি ও নতুন যোগাযোগ' এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক মোবাইল চলচ্চিত্র উৎসবের যাত্রা শুরু হয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহিত করার জন্যই এই আয়োজন।
প্রফেসর অ্যাডাম মুলার, ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানিটোবা, কানাডা গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন কালে তিনি বিইউপি এর সম্মানিত উপাচার্য মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং একাডেমিক ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধি বিষয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় বিইউপির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে অধ্যাপক অ্যাডাম মুলার বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে বিইউপি শিক্ষার্থীদের সামনে মানবাধিকার বিষয়ে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন।
সংক্ষিপ্ত সফরে নেপাল হয়ে বিকেলে ঢাকায় এসেছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল। আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনা মো. হাশিম।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শ্রমবাজারের জটিলতা নিয়ে আলাপ করবেন। কিভাবে দেশটিতে আমরা সহজে কর্মী পাঠাতে পারি; সেগুলো আলোচনায় উঠে আসবে। আমাদেরও কিছু প্রস্তাব রয়েছে। আমাদের কর্মীদের স্বার্থ আগে আমরা চাই, সবার জন্য বাজার খুলে দেওয়া হোক। নিয়োগকর্তার পছন্দমতো রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়োগ— এটা আমরা চাই না। অভিবাসন ব্যয়
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার গত কয়েক বছর ধরে অস্থির। দেশটিতে প্রত্যাশিত শ্রমিক পাঠাতে পারছে না বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমবাজারটির জটিলতা নিরসনে আলোচনা করতে সংক্ষিপ্ত সফরে নেপাল হয়ে ঢাকায় আসছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল।
তার সফরে শ্রমবাজারটি গতিশীল করতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) পরিবর্তন, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় কমানোসহ দেশের সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য বাজার উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দেবে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ২৪ ঘণ্টার সফরে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি তিনি সেনাকল্যাণ সংস্থার সঙ্গেও একটি বৈঠক করবেন।
'পাঠান' মুক্তির আগে থেকেই অনুরাগীদের সঙ্গে শাহরুখের যোগাযোগের একটাই মাধ্যম, টুইটার। শনিবার ফের টুইটারে 'আস্ক এসআরকে' সেশনে ধরা দিলেন শাহরুখ। হালকা মেজাজে, খোলামেলা আড্ডায় মাতলেন অনুরাগীদের সঙ্গে। অনুরাগীদের প্রশ্ন উত্তর দিলেন। সেখানেই একজন টুইটার ব্যবহারকারীর উপদেশ- বয়স অনুযায়ী চরিত্রে অভিনয়ের করার। পাল্টা জবাব দেন শাহরুখও। বলেন, 'তিনি হিরো ছিলেন, আছেন, থাকবেন'।
অনুরাগীরা যেমন রয়েছেন, তেমনই ট্রোল করার লোকের সংখ্যাও কম নয় শাহরুখের সোশালে। বছর সাতান্নর 'তরুণ' এই অভিনেতাকে একজনের প্রশ্ন, 'আপনি কি এভাবেই হিরোর চরিত্রেই অভিনয় করবেন, নাকি কোনো দিন নায়ক-নায়িকার বাবার চরিত্র করার পরিকল্পনাও রয়েছে?' তাতে শাহরুখ যা জবাব দিয়েছেন, তা রীতিমত ছড়িয়ে পড়েছে সোশালে।
এমনিতেই রসিক মানুষ শাহরুখ। তবে কোন কথায় কাকে কী উত্তর দেবেন, তা ভালোই জানা তার। বাদশাহ লেখেন, 'তুই বাপ হ… আমি হিরোর চরিত্রেই ঠিক আছি।'
শনিবারের 'আস্ক এসআরক'-এ সেশনে, শাহরুখের কাছে জানতে চাওয়া হয় 'পাঠান'-এর মোট আয়ের পরিসংখ্যান। তাকেও ফেরাননি শাহরুখ। উত্তর দিয়ে লেখেন, 'ভালোবাসা ৫ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে, ৩ হাজার কোটি প্রশংসা, ৩২৫০ কোটি হাগ, ২০০০ কোটি হাসি এখনও গণণা চলছে। তোমার অ্যাকাউন্ট্যান্ট কী বলছেন?'
'পাঠান' ঘিরে উন্মাদনা নজিরবিহীন। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে এই ছবি দেখার ঢল। শাহরুখ অভিনীত ছবিটি লম্বা রেসের ঘোড়া, বলেছেন সিনেমা বিশেষজ্ঞরা। ৪ বছর পর শাহরুখ পর্দায় ফিরেছেন বলেই শুধু নয়, ৭ দিনে বক্স অফিসে ৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে 'পাঠান', যা বলিউডে বছরের সেরা ব্লকবাস্টার হিসাবে গণ্য হতে চলেছে।
দুঃসময় পিছু ছাড়ছে না লিভারপুলের। প্রিমিয়ার লিগে টানা তিন ম্যাচে জয়হীন থেকে মাঠে নেমেছিল তারা। ভাঙতে চেয়েছিল ব্যর্থতার বৃত্ত। কিন্তু পারেনি, উল্টো উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের ধরাশায়ী হয়েছে তারা। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দল হেরে গেছে বড় ব্যবধানে।
নিজেদের মাঠে শনিবার ৩-০ গোলে জিতেছে উলভস। লিভারপুলের বিপক্ষে লিগে আগের ১১ ম্যাচে হারের পর জয়ের স্বাদ পেয়েছে তারা।
শুরুর ১২ মিনিটে দুই গোল হজম করে দিশেহারা লিভারপুল ঘুরে দাঁড়ানোর পথই খুঁজে পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে হজম করেছে আরও একটি গোল। তার আগেই ছিটকে যায় ম্যাচ থেকে। দারুণ জয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন উলভসের ফুটবলাররা।
শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণে লিভারপুলের রক্ষণ কাঁপাতে থাকে উলভস। দলটির সমর্থকরা আনন্দে মেতে ওঠার উপলক্ষ পেয়ে যায় পঞ্চম মিনিটে। আত্মঘাতী গোল করে লিভারপুল। বাইলাইনের কাছাকাছি গিয়ে হাং হি-চান শট নেওয়ার পরিস্থিতি না দেখে তিনি বক্সে বাড়ান বল, জোয়েল মাতিপের পায়ে লেগে বল পোস্ট ছুঁয়ে গোললাইন পেরিয়ে যায়। আলিসনের প্রাণপণ চেষ্টা যায় বিফলে।
দ্বাদশ মিনিটে আবারও গোল হজম করে বসে লিগে ধুঁকতে থাকা লিভারপুল। ইংলিশ ডিফেন্ডার ক্রেইগ ডসনের পায়ের জোরাল শটে বল খুঁজে নেয় জাল। উলভসের হয়ে অভিষেকেই গোল পেয়ে যান তিনি। ২-০ গোলের ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় উলভস।
বিরতির পরও চলে আক্রমণ আর পালটা আক্রমণ। ৭১তম মিনিটে মাঝমাঠে জো গোমেজ ও স্তেফান বাইচেতিস আটকাতে পারেননি জোয়াও মৌতিনিয়োকে। এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডারের পাস ধরে বক্সে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান আদামা ত্রাওরো। নিখুঁত টোকায় বাকি কাজ সারেন রুবেন নেভেস। ম্যাচের ভাগ্যও লেখা হয়ে যায় অনেকটাই।
এই হারে লিগ টেবিলে সেরা চারে থাকার পথটা আরও কঠিন হয়ে গেল লিভারপুলের। ২০ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে আছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। তাদের চেয়ে ১০ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চার নম্বরে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। ২১ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে ১৫তম স্থানে উঠে এসেছে উলভস।
ছবি মুক্তির ১০ দিন পার। এখনও বক্স অফিসে 'পাঠান' রাজ। শুধু দেশের মাটিতেই নয়, বিদেশেও অব্যাহত 'পাঠান' ঝড়। বিশ্বজুড়ে ৭০০ কোটির বেশি ব্যবসা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে শাহরুখ খানের এই ছবি। এমনকি, ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানেও 'পাঠান' জ্বরে ভুগছেন আমজনতা। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সে দেশে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হলো 'পাঠান'। খালি রইল না প্রেক্ষাগৃহের একটি আসনও, হাউসফুল সেই শো।
অন্য ভারতীয় ছবির মতোই পাকিস্তানে মুক্তির ছাড়পত্র পায়নি সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ছবি 'পাঠান'। তবে সে দেশের সিন্ধ সেন্সর বোর্ডের সেই নিষেধাজ্ঞাকে একপ্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করল শাহরুখের ছবি। কানায় কানায় ভর্তি প্রেক্ষাগৃহ দেখল রুপালি পর্দায় 'বাদশাহ ম্যাজিক'।
পাকিস্তানি মুদ্রায় ৯০০ টাকার টিকিটেও হাউসফুল 'পাঠান'-এর শো। নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেআইনিভাবেই জোগাড় করে দেখানো হলো 'ওয়াইআরএফ স্পাই ইউনিভার্স'-এর এই ছবি।
পাকিস্তানের 'ফায়ারওয়ার্ক ইভেন্ট' নামক এক সংস্থা আয়োজন করে 'পাঠান' ছবির প্রদর্শনের। ছবির টিকিটমূল্য রাখা হয় পাকিস্তানি মুদ্রায় ৯০০ টাকা। তাতেই ছবির টিকিট পাওয়ার জন্য কাউন্টারের বাইরে লম্বা লাইন পড়ে সিনেপ্রেমীদের। অল্প সময়ের মধ্যেই শো হাউসফুল ঘোষণা করে দেওয়া হয়। তবে পাকিস্তানি সেন্সর বোর্ডের কানে এ খবর যেতেই নড়েচড়ে বসে তারা। 'ফায়ারওয়ার্ক ইভেন্ট'কে অবিলম্বে 'পাঠান'-এর সব প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে বিবৃতি জারি করে সিন্ধ সেন্সর বোর্ড। কেউ যদি এর পরেও বেআইনিভাবে 'পাঠান' প্রদর্শন করে, তাহলে অপরাধের শাস্তিস্বরূপ তার ১ লাখ টাকা জরিমানা থেকে ৩ বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে, হুঁশিয়ারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়কের পাশের একটি ডোবা থেকে মো. ইমাম হোসেন (৪৬) নামে এক ব্যক্তির ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পার্শ্ববর্তী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিম পাশের ডোবা থেকে নিহতের ক্ষতবিক্ষত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইমাম হোসেন জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ভালুকগড়ি গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার জিরাবো পুকুরপাড় এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
থানা পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে সন্ধ্যায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী একটি ডোবা থেকে লুঙ্গি এবং জ্যাকেট পরিহিত অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পিবিআইকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-মামুন কবির বলেন, ইমাম হোসেন বৃহস্পতিবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। মরদেহটি উদ্ধারের খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে গেছে এবং নিহতের মরদেহটি ডোবার মধ্যে ফেলে গেছে।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং গায়েব হওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
শ্রম পরিদর্শক পদে যোগ দেওয়ার ৩৪ বছর পর পদোন্নতি পেলেন মাহমুদুল হক। স্বপ্ন দেখতেন পদোন্নতির সিঁড়ি বেয়ে একসময় প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে যাবেন। সেই স্বপ্ন আট বছরেই লুটিয়ে পড়ল জ্যেষ্ঠতার তালিকায়।
১৯৮৮ সালে যোগ দেওয়ায় ’৯৫ সালেই পদোন্নতি পাওয়ার কথা ছিল মাহমুদুল হকের। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর প্রতিষ্ঠানপ্রধানের অদূরদর্শিতা সে স্বপ্ন শুরুতেই বাধা পেল। এন্ট্রি পোস্টে যোগ দেওয়ার পর তার মতো অন্য কর্মচারীরা যখন পদোন্নতির স্বপ্নে বিভোর, তখন তাতে গা-ই করলেন না সেই সময়ের প্রতিষ্ঠানপ্রধান।
মাহমুদুল অপেক্ষায় রইলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য। সেই পরিবর্তন আসতে আসতে চাকরিতে কেটে গেল আঠারো বছর। আঠারোতে মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়। তিনিও ভাবলেন আঠারোতে তিনি না হয় ‘জব ম্যাচিউরিটি’তে পৌঁছালেন। চাকরির আঠারো বছরে পদোন্নতি পেলেও মন্দ হয় না।
কিন্তু অবাক ব্যাপার, কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি দিল, তবে মাহমুদুলকে ছাড়া। পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে কোথাও তার নাম নেই। হতাশায় মুষড়ে পড়লেন তিনি। জুনিয়র কর্মকর্তারদের নাম আছে, অথচ তার নাম নেই। প্রতিষ্ঠানের নীতি-নির্ধারকদের দরজায় দরজায় ঘুরলেন ন্যায়বিচারের আশায়। কিন্তু তারা পাত্তাই দিলেন না বিষয়টি।
তারা আমলে না নিলেও মাহমুদুলের স্বপ্ন তো সেখানেই থেমে যাওয়ার নয়। সেই স্বপ্ন পুঁজি করে তিনি গেলেন আদালতে। সেই ভিন্ন জগৎটাও কম চ্যালেঞ্জিং ছিল না। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে রায় দিল। মাহমুদুল আনন্দে আত্মহারা হলেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। সরকার আপিল করল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে। মামলার ফল উল্টে গেল। হতাশায় ভেঙে না পড়ে তিনি গেলেন উচ্চ আদালতে। আপিল বিভাগে সিভিল আপিল মামলা করলে প্রশাসনিক আপিল আদালতের রায় বাতিল হয়। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকে।
জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করার মতো মাহমুদুল হকও যেন সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে নামলেন। আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করল সরকারপক্ষ। একপর্যায়ে সরকার বুঝতে পারল কোনোভাবেই তারা এ মামলায় জিততে পারবে না। সরকারপক্ষে রিভিউ পিটিশন প্রত্যাহার করা হলো। আদালত সরকারের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনকে আইনের কর্তৃত্ববহির্ভূত বলে ঘোষণা করল। জুনিয়র কর্মকর্তাকে যেদিন থেকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং যতবার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, একইভাবে মাহমুদুল হককে পদোন্নতি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বকেয়া বেতন-ভাতাসহ সব পাওনা কড়ায়-গ-ায় পরিশোধের নির্দেশনা আসে।
আদালতের এই নির্দেশনা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। এরপর আদেশ বাস্তবায়ন করতে সরকারের লেগে যায় প্রায় চার বছর। ২০২২ সালের ১১ মে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ৩৪ বছর পর পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন মাহমুদুল হক। আবারও তাকে ঠকিয়েছে সরকার। জুনিয়র কর্মকর্তা যুগ্ম মহাপরিদর্শক হলেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয় তার দুই ধাপ নিচের সহকারী মহাপরিদর্শক পদে। উপমহাপরিদর্শক ও যুগ্ম মহাপরিদর্শক আরও ওপরের পদ। আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
কখনোই প্রজ্ঞাপন মাহমুদুল হকের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনেনি। পুরো চাকরিজীবন আদালতের বারান্দায় ঘুরে তিনি পৌঁছেছেন অবসরের প্রান্তসীমায়। আর তিন মাস পরে তিনি অবসরে যাবেন। যৌবন ও মধ্য বয়সের দিনগুলোতে আদালতে ঘুরে বেড়ানোর শক্তি ও সাহস থাকলেও মাহমুদুল হক এখন সেই সাহস দেখাতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করছেন। পারবেন তো শেষ সময়ে এসে সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে?
মাহমুদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, তিনি আদালতের কাছেই জানতে চাইবেন, আদালতের বিচার না মানার শাস্তি কী।
পুরো ঘটনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা শুনিয়ে জানতে চাইলেন, কতজনের পক্ষে মাহমুদুল হকের মতো লড়াকু মনোভাব দেখানো সম্ভব?
সীমাহীন আনন্দ নিয়ে মানুষ সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়। এরপরই তার মধ্যে যে স্বপ্নটি দানা বাঁধে তা হচ্ছে পদোন্নতি। কার কীভাবে পদোন্নতি হবে তা আইনকানুন, নিয়ম-নীতি দিয়ে পোক্ত করা। পুরো বিষয়টি কাচের মতো স্বচ্ছ। এরপরও পদোন্নতি হয় না। দিন, মাস, বছর পার হয়ে যায়, কাক্সিক্ষত পদোন্নতির দেখা মেলে না।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হয়। বাকি ক্যাডারে হতাশা। তার চেয়েও কঠিন পরিস্থিতি নন-ক্যাডারে। ক্যাডার কর্মকর্তারা নিজের পদোন্নতির ষোলো আনা বুঝে নিয়ে ঠেকিয়ে দেন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় নন-ক্যাডাররা একজন আরেকজনকে নানা ইস্যুতে আটকাতে গিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেন। সরকারের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কর্মচারী। সেই হিসেবে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনবলের পদোন্নতি হয় না। পে-কমিশন হলেই কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য করুণা উথলে ওঠে। এমনকি ব্লকপোস্টে যারা আছেন, তাদের জন্যও পদোন্নতির বিকল্প সুবিধা বাতলে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্মচারীদের পদোন্নতি উপেক্ষিতই থাকে।
যখন সময়মতো পদোন্নতি হয় না, তখন নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এসব সমস্যা সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তরের চৌহদ্দি পেরিয়ে আমজনতাকেও প্রভাবিত করে। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা আর সঙ্গে কর্মচারীরা যখন বুঝতে পারেন পদোন্নতির আশা তাদের নেই, তখন তারা দুহাতে টাকা কামানোর ধান্দায় মেতে ওঠেন। এতে করে ঘুষের সংস্কৃতি সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। অকার্যকর পথে হাঁটে রাষ্ট্র। সাধারণ মানুষ টাকা ছাড়া তাদের কাছ থেকে কোনো সেবা পায় না, ব্যবসায়ীরা নতুন কোনো আইডিয়া নিয়ে ব্যবসায় আসেন না, ব্যবসাবান্ধব পরিস্থিতি না থাকায় মুখ ফিরিয়ে নেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বারবার আহ্বানেও বিনিয়োগকারীরা সাড়া দেন না। সাধারণ মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে সেবা দেওয়ার বাণীতেও উদ্বুদ্ধ হন না সংশ্লিষ্টরা।
এই পরিস্থিতিতে অনিয়ম আটকে রাখার সব কৌশলই ব্যর্থ হচ্ছে। যথাযথ তদারকি না থাকায় বিভাগীয় ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে গেছে। ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০টি অডিট আপত্তি ঝুলে থাকায় অডিট প্রতিষ্ঠানগুলোও আগ্রহ হারিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছে অনিয়মে। দন্তহীন বাঘে পরিণত হওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান নিজেই।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদোন্নতির বড় একটা অংশ আটকে রাখে মন্ত্রণালয়গুলো। এই আটকে রাখার কারণ হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের স্বার্থ। বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তরে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিলে নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তদের ওপরের পদে বসাতে হবে। এতে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের এককালীন লাভ; অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে একবার পদোন্নতি দেওয়া যাবে। কিন্তু পদোন্নতি না দিয়ে সংশ্লিষ্টদের চলতি দায়িত্ব দিলে বছরজুড়ে টাকা আয় করতে পারেন নীতিনির্ধারকরা। দপ্তর, অধিদপ্তরে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের আয় অনুসারে নীতিনির্ধারকদের মাসোহারা দিতে হয়। নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি দেওয়া হলে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের নিয়মিত আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আইন বা বিধি-বিধানের ফাঁকফোকর গলিয়ে নন-ক্যাডার এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।
সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের সভাপতি নিজামুল ইসলাম ভূঁইয়া মিলন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সচিবালয় এবং সারা দেশের সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। নন-ক্যাডারের কিছু বিষয় ছাড়া সচিবালয়ের কর্মচারীরা সময়মতো পদোন্নতি পায়। কিন্তু সচিবালয়ের বাইরে পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। সচিবালয়ে মাত্র ১০ হাজার কর্মচারী আছেন। সচিবালয়ের বাইরে আছেন ১০ লাখের বেশি। এসব কর্মচারীর পদোন্নতি নিয়ে বহু বছর ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সমস্যা নিয়ে কাজ করার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। এরপর এর কোনো অগ্রগতি নেই। যেখানে সরকারপ্রধান বলেন, চাকরিজীবনে সবাই যেন কমপক্ষে একটি পদোন্নতি পায়। সেখানে বহু কর্মচারী কোনো পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যাচ্ছেন। সরকারপ্রধানের নির্দেশনা উপেক্ষা করেন আমলারা। তাদের আগ্রহ কেনা-কাটায়, বিদেশ ভ্রমণে, নতুন জনবল নিয়োগে। এসব করলে তাদের লাভ। কর্মচারী পদোন্নতি দিতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এর নিশ্চয়ই একটা শেষ আছে। বৈষম্যের পরিণতি কী হয়, তা অনেক দাম দিয়ে বিডিআর বিদ্রোহে আমরা দেখেছি।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি ঝুলছে বছরের পর বছর। এই অধিদপ্তরের কয়েক শ কর্মকর্তা পাঁচ বছর আগেই পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। নানা কায়দা-কানুন করে তাদের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সংশ্লিষ্টদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করে তাদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিলেও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নতুন করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার নামে সময়ক্ষেপণ করছে। জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার পর এখন তাদের পারিবারিক সদস্যদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদেরও তথ্য তালাশ করছে। তাদের আত্মীয়দের মধ্যে কে কোন দলের সমর্থক তার তথ্য নিচ্ছেন সংস্থার কর্মকর্তারা।
গত মাসে শেষ হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দায়িত্ব পালন করছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সুরম্য ভবনে দায়িত্ব পালন করলেও ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তার মনের অবস্থাটা মনোহর ছিল না। কেমন আছেন জানতে চাইলে ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তা বলেন, ‘ভালো নেই। চাকরি করছি, পদোন্নতি নেই। ২০১৫ সালের আগে পদোন্নতি না পেলেও টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ছিল। তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল সময়মতো পদোন্নতি হবে, ব্লকপোস্টধারীদের দেওয়া হবে বিশেষ আর্থিক সুবিধা। এসবের কোনোটাই হয়নি।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে একটি প্রশাসনিক আদেশ খুবই পরিচিত। সেই প্রশাসনিক আদেশ ১৬/২০১৮ অনুযায়ী ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগ হবে। আর ৩০ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগের ফলে বিমানে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মকর্তা বেশি। নীতিনির্ধারকদের নতুন জনবল নিয়োগে আগ্রহ বেশি। পুরনোদের পদোন্নতি দিয়ে ওপরের পদ পূরণের চেয়ে তারা নতুন নিয়োগে যান। ফলে কারও চাকরিজীবনে একবারও পদোন্নতি হয় না। নামমাত্র যে পদোন্নতি হয় তা অনিয়মে ভরপুর।
নন-ক্যাডার ছাড়াও ১৩তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। প্রতিটি দপ্তরে এসব গ্রেডের পদোন্নতি আটকে আছে। অথচ এসব গ্রেডেই বেশি লোক চাকরি করছেন। সরকারের মোট জনবল প্রায় ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩ শতাংশ পদের মধ্যেও নন-ক্যাডার রয়েছেন। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৭৭ শতাংশ পদই ১৩তম থেকে তার পরের গ্রেডের। এতে করে সহজেই বোঝা যায় সরকারের জনবলের বড় অংশই পদোন্নতির চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। সরকারের জনবলের এই বিশাল অংশ যখন পদোন্নতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন, তখন তারা নানা অনিয়মে ঝুঁকে পড়েন।
বেশির ভাগ দপ্তর, অধিদপ্তর পরিচালনা করেন বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা তাদের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে ক্যাডার কর্মকর্তাদের দপ্তর, অধিদপ্তরে পাঠান। প্রেষণে গিয়ে অনেক কর্মকর্তা শুধু রুটিন কাজটুকুই করতে চান। শূন্যপদে জনবল নিয়োগ বা পদোন্নতি রুটিন কাজ না হওয়ায় তা উপেক্ষিত থাকে। তা ছাড়া পদোন্নতি দিতে গিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়; বিশেষ করে মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী বা সচিব তাদের পছন্দের লোককে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য সংস্থার প্রধানকে চাপ দেন। এই চাপ উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ না থাকায় অযোগ্য লোককে পদোন্নতি দিতে হয় সংস্থার প্রধানকে। এই জটিলতা থেকে দূরে থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের পদোন্নতি দেওয়া থেকেও দূরে থাকেন সংস্থার প্রধানরা।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের ১৪ গ্রেডের একজন কর্মচারী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাইরের লোকের ইচ্ছাটাই জাগে না আমাদের পদোন্নতি দিতে। আমাদের দপ্তরপ্রধান মহাপরিচালক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। অতিরিক্ত মহাপরিচালকও অনেক সময় প্রশাসন ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসেন। তাদের কেন ইচ্ছা জাগবে আমাদের পদোন্নতি নিয়ে। যদি এসব পদে ফুড ক্যাডারের কর্মকর্তা থাকতেন, তাহলে তারা খাদ্য বিভাগের সমস্যা বুঝতেন। তা ছাড়া নিয়োগ বিধি সংশোধনের নামে আমরা দীর্ঘদিন একই পদে আটকে আছি।’
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এক আবেদনে জানান, ‘বর্তমানে সচিবালয়ে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কর্মরত। এর বিপরীতে ক্যাডারবহির্ভূত সংরক্ষিত পদের সংখ্যা ২৬৭টি, যা খুবই নগণ্য। ফলে একই পদে ২০-২২ বছরের বেশি সময় কর্মরত থাকার পরও অনেকে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। পদোন্নতি না পাওয়ায় সৃষ্ট হতাশার ফলে কর্মস্পৃহা নষ্ট হচ্ছে।’
সরকার এ সমস্যা থেকে কীভাবে বের হতে পারে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এসব সমস্যা সমাধানে সরকার সব সময়ই কাজ করে। কিন্তু এ চেষ্টা জটিলতার তুলনায় কম। এ বিষয়ে আরও এফোর্ট দিতে হবে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে ১১২ কেন্দ্রের ফলাফলে ৯৫১ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন বহুল আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। একতারা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ৪৮৬ ভোট। এ আসনে জয় পেয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম তানসেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৩৭ ভোট।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বগুড়ার দুইটিসহ মোট ৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির এমপিরা পদত্যাগের ঘোষণা দিলে এ আসনগুলো শূন্য হয়।
তখন, বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন হিরো আলম। নির্বাচন কমিশন একদফা তার প্রার্থিতা বাতিল করলেও পরে আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
নাগরিকত্ব বিষয়ক জটিলতার জেরে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ ও পার্লামেন্টে আসন হারিয়েছেন নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী রবি লামিছানে। শুক্রবারের রায়ে আদালত জানিয়েছে, এই মুহূর্তে নেপালের নাগরিকত্বও নেই তার।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র বিমল পৌদেল বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় অনুযায়ী, ২০২২ সালের জাতীয় নির্বাচনে নাগরিকত্ব বিষয়ক আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে রবি লামিছানের বিরুদ্ধে। এ কারণে এখন থেকে আর পার্লামেন্টের সদস্য নন তিনি।’
নেপালের এক সময়ের জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব রবি লামিছানে দেশটির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ইনডিপেনডেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতা। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর নেপালের পার্লামেন্ট প্রতিনিধিসভার নির্বাচনে তার দল ২০টি আসনে জয়ী হয়েছে। তারপর গত ডিসেম্বরে ক্ষমতাসীন জোট সরকারে নিজের দলসহ যোগ দিয়ে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন লামিছান।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিত্ব ছিল লামিছানের; কিন্তু নেপালের সংবিধানে দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃত না হওয়ায় ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। শুক্রবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, নিয়ম অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর নেপালের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার কথা ছিল লামিছানের; কিন্তু তা করেননি তিনি। ফলে এই মুহূর্তে নেপালের নাগরিকও নন লামিছান। এদিকে, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর লামিছানের প্রতিক্রিয়া জানতে তার মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে গিয়েছিলেন সাংবাদিকরা; কিন্তু লামিছানে তাদের বলেন, ‘যেহেতু এই মুহূর্তে আমি কোনো দেশেরই নাগরিক নই, তাই আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করা আমার পক্ষে উচিত নয়, সম্ভবও নয়।’
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন হিরো আলম বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘সদরের কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাছে। ডিসি-এসপিক কয়্যাও কোনো কাম হচ্চে না। সদরের আশা সব শ্যাষ। কাহালু-নন্দীগামের অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেকছি। ভোট খুব সুষ্ঠু হচ্চে। মাঠের অবস্থা ভালো। কাহালু-নন্দীগ্রামে নিশ্চিত এমপি হচ্চি।’
এর আগে, সকালে সদর উপজেলার এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। ভোট দেওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘বগুড়া-৬ আসনে আগে থেকেই গোলযোগের আশঙ্কা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। নির্বাচনি এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হলে এই আসনে আমিই বিজয়ী হবো।’
এদিকে বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট বাদে অন্য এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সকালে হিরো আলমসহ তিনজন প্রার্থী এ অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়।