আদালতে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ জুন, ২০১৯ ১৩:০৬
ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে আনা হয়েছে।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে শাহবাগ থানা থেকে নিয়ে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাইবার ট্রাইবুনালের পরোয়ানা অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হচ্ছে। এ মামলার কার্যক্রম দুপুর ২টায় শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম।
এর আগে সকালে মোয়াজ্জেমকে তার সর্বশেষ কর্মস্থলে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।
গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারের পর শাহবাগ থানায় রাখা হয় বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
চার্জশিট আমলে নিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামশ জগলুল হোসেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। আজ তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ারও নির্দেশনা ছিল।
গত ১৫ এপ্রিল ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮-এর ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলাটি করেন। এজাহারে বলা হয়, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি অধ্যক্ষের হাতে কীভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, এর বিবরণ ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়ম ভেঙে তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। তার বক্তব্য নেওয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
যেহেতু ওসি মোয়াজ্জেম নিয়মবহির্ভূতভাবে অনুমতি ব্যতিরেকে ভিডিও ধারণ করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করেন এবং অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করেন, তাই তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরাও। তাদের মতে, ভিকটিমের এ ধরনের ভিডিও ধারণ অপরাধ।
গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় গেলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শরীরের ৮০ শতাংশ পোড়া নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান তিনি।
মৃত্যুর আগে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বর্ণনা দিয়ে যান নুসরাত। তিনি বলেন, আগুন দেওয়ার আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য মুখোশধারী চার-পাঁচজন তাকে চাপ দিয়েছিল।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ জুন, ২০১৯ ১৩:০৬

ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে আনা হয়েছে।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে শাহবাগ থানা থেকে নিয়ে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাইবার ট্রাইবুনালের পরোয়ানা অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হচ্ছে। এ মামলার কার্যক্রম দুপুর ২টায় শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম।
এর আগে সকালে মোয়াজ্জেমকে তার সর্বশেষ কর্মস্থলে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।
গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারের পর শাহবাগ থানায় রাখা হয় বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
চার্জশিট আমলে নিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামশ জগলুল হোসেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। আজ তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ারও নির্দেশনা ছিল।
গত ১৫ এপ্রিল ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮-এর ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলাটি করেন। এজাহারে বলা হয়, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি অধ্যক্ষের হাতে কীভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, এর বিবরণ ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়ম ভেঙে তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। তার বক্তব্য নেওয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
যেহেতু ওসি মোয়াজ্জেম নিয়মবহির্ভূতভাবে অনুমতি ব্যতিরেকে ভিডিও ধারণ করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করেন এবং অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করেন, তাই তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরাও। তাদের মতে, ভিকটিমের এ ধরনের ভিডিও ধারণ অপরাধ।
গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় গেলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শরীরের ৮০ শতাংশ পোড়া নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান তিনি।
মৃত্যুর আগে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বর্ণনা দিয়ে যান নুসরাত। তিনি বলেন, আগুন দেওয়ার আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য মুখোশধারী চার-পাঁচজন তাকে চাপ দিয়েছিল।