আক্তারকে মাতাল করে হত্যা, জড়িতরা শনাক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:৩৬
রাজধানীর দারুস সালাম এলাকার বাগবাড়ী উত্তর পাড়ার ভাড়াটিয়া আক্তার হোসেন (৫৬) খুনের ঘটনায় জড়িত হিসাবে সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
শুক্রবার দারুস সালাম থানা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার(ডিবি) একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তারা আরও জানান, একটি মোবাইল ফোন ও একটি বাইসাইকেল হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই খুনিরা আক্তারকে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় মদ খাইয়ে মাতাল করে মুখ, হাত, পা বেধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে। আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, বিপত্নিক আক্তার হোসেন বাগবাড়ী উত্তরপাড়ার ২০৩/এ নম্বরের বাড়ির একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন। চাকরি করতেন মহাখালীর ডিওএইচএসের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। করোনাকালে সেই চাকরি চলে যাওয়ায় তিনি আর্থিক অনটনে পড়েন। খাবার খেতেন পাশেই অবিস্থত বোনের বাসায়। রাতে এসে নিজের ভাড়া বাসায় ঘুমাতেন।
গত বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে দারুস সালাম থানা পুলিশ সেই ভাড়া বাসার মেঝে থেকে হাত, পা ও মুখ বাধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে রশি, কেরুর একটি খালি মদের বোতল ও একটি হাতুড়ি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুলতান মাহমুদ শাকিল দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আক্তার খুনের ঘটনায় জড়িত একাধিক ব্যাক্তির তথ্য পাওয়া গেছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাও তদন্ত করে যাচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই এই খুনের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
ডিবির একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে জানান, আক্তার খূনের পর তার বাসা থেকে একটি বাই সাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন খোঁয়া গেছে। খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই খুনের রহস্য উদঘাটন হবে। ইতোমধ্যে ডিবির তদন্তে অগ্রগতি হওয়ায় মামলার তদন্তভার তাদের হাতেই ন্যস্ত হচ্ছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের আরেক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, নিহত আক্তার হোসেনের বাবা দেশভাগের সময় ভারতের মুর্শিদাবাদ এলাকা থেকে এই দেশে আসেন। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলে। তার বাবা ফুড কন্ট্রোলার পদে চাকরি করতেন। সেই সুবাধে দেশের বিভিন্ন জেলায় বসবাস করলেও নির্দিষ্ট বসতির ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ৮ বোনের মধ্যে আক্তার হোসেন ছিলেন একমাত্র ভাই। তার দুই বোন আমেরিকা প্রবাসী। এক বোনের নিজের ফ্ল্যাট আছে মিরপুরে। সেই বোনের বাসাতে গিয়ে দুপুর ও রাতের খাবার খেতেন আক্তার। তিনি বিবাহিত হলেও তার স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে প্রায় ১৫ বছর আগে। সেই ঘরে তাদের একমাত্র মেয়ে রয়েছে, যিনি বিয়ে করে স্বামী নিয়ে রাজধানীর বাড্ডায় থাকেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিভিন্ন কারণ সামনে রেখে আক্তার খূনের তদন্ত করা হলেও তাদের কাছে মনে হচ্ছে, আক্তারের পূর্ব পরিচিত ব্যক্তিরাই তার বাসায় গিয়ে একসাথে মদ পান করার পর পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় তার মোবাইল ফোন ও বাইসাইকেল নিয়ে গেছে।
আক্তার খুনের কারণ ও জড়িতদের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপকমিশনার(ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার দেশ রূপান্তরকে বলেন, তদন্তে অগ্রগতি আছে। শিগগিরই জানানো হবে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:৩৬

রাজধানীর দারুস সালাম এলাকার বাগবাড়ী উত্তর পাড়ার ভাড়াটিয়া আক্তার হোসেন (৫৬) খুনের ঘটনায় জড়িত হিসাবে সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
শুক্রবার দারুস সালাম থানা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার(ডিবি) একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তারা আরও জানান, একটি মোবাইল ফোন ও একটি বাইসাইকেল হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই খুনিরা আক্তারকে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় মদ খাইয়ে মাতাল করে মুখ, হাত, পা বেধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে। আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, বিপত্নিক আক্তার হোসেন বাগবাড়ী উত্তরপাড়ার ২০৩/এ নম্বরের বাড়ির একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন। চাকরি করতেন মহাখালীর ডিওএইচএসের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। করোনাকালে সেই চাকরি চলে যাওয়ায় তিনি আর্থিক অনটনে পড়েন। খাবার খেতেন পাশেই অবিস্থত বোনের বাসায়। রাতে এসে নিজের ভাড়া বাসায় ঘুমাতেন।
গত বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে দারুস সালাম থানা পুলিশ সেই ভাড়া বাসার মেঝে থেকে হাত, পা ও মুখ বাধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে রশি, কেরুর একটি খালি মদের বোতল ও একটি হাতুড়ি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুলতান মাহমুদ শাকিল দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আক্তার খুনের ঘটনায় জড়িত একাধিক ব্যাক্তির তথ্য পাওয়া গেছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাও তদন্ত করে যাচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই এই খুনের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
ডিবির একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে জানান, আক্তার খূনের পর তার বাসা থেকে একটি বাই সাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন খোঁয়া গেছে। খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই খুনের রহস্য উদঘাটন হবে। ইতোমধ্যে ডিবির তদন্তে অগ্রগতি হওয়ায় মামলার তদন্তভার তাদের হাতেই ন্যস্ত হচ্ছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের আরেক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, নিহত আক্তার হোসেনের বাবা দেশভাগের সময় ভারতের মুর্শিদাবাদ এলাকা থেকে এই দেশে আসেন। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলে। তার বাবা ফুড কন্ট্রোলার পদে চাকরি করতেন। সেই সুবাধে দেশের বিভিন্ন জেলায় বসবাস করলেও নির্দিষ্ট বসতির ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ৮ বোনের মধ্যে আক্তার হোসেন ছিলেন একমাত্র ভাই। তার দুই বোন আমেরিকা প্রবাসী। এক বোনের নিজের ফ্ল্যাট আছে মিরপুরে। সেই বোনের বাসাতে গিয়ে দুপুর ও রাতের খাবার খেতেন আক্তার। তিনি বিবাহিত হলেও তার স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে প্রায় ১৫ বছর আগে। সেই ঘরে তাদের একমাত্র মেয়ে রয়েছে, যিনি বিয়ে করে স্বামী নিয়ে রাজধানীর বাড্ডায় থাকেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিভিন্ন কারণ সামনে রেখে আক্তার খূনের তদন্ত করা হলেও তাদের কাছে মনে হচ্ছে, আক্তারের পূর্ব পরিচিত ব্যক্তিরাই তার বাসায় গিয়ে একসাথে মদ পান করার পর পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় তার মোবাইল ফোন ও বাইসাইকেল নিয়ে গেছে।
আক্তার খুনের কারণ ও জড়িতদের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপকমিশনার(ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার দেশ রূপান্তরকে বলেন, তদন্তে অগ্রগতি আছে। শিগগিরই জানানো হবে।