অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে রোমহর্ষকভাবে হত্যার বিচার চেয়ে মায়ের অকুতোভয় লড়াই
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ নভেম্বর, ২০২১ ২৩:৪৪
মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার অজ্ঞাত নারীকে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবির সূত্র ধরে অন্তঃসত্ত্বা লিপা আক্তার নিপা (২২) নামে ওই নারীর রোমহর্ষক মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটন করে পিবিআই। এ হত্যার বিচার চেয়ে হুমকির মুখেও লড়ে যাচ্ছেন নিপার মা।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. সুজন মিয়া (২২) ও মো. জহিরুল ইসলামকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
তারা জানিয়েছে, হত্যায় সাতজন অংশ নেয়। এ খুনের মূল নায়ক নিহত নিপার কথিত প্রেমিক আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিরুল পলাতক রয়েছে। অপর চারজন উচ্চ আদালতে জামিনে আছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. এনায়েত হোসেন মান্নান এসব তথ্য জানান।
এসপি এনায়েত হোসেন জানান, জোর করে বিয়ে দেওয়ার পর পুরোনো প্রেমিক আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিরুলের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ হয় নিপার। তাদের সম্পর্কের একপর্যায়ে নিপা গর্ভবতী হয়ে পড়লে আমিরুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেন নিপা। একদিন রাতে বিয়ের কথা বলে নিপাকে ঘর থেকে নিয়ে যায় আমিরুল। মেঘনা নদীর মাঝে নৌকায় নিপাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে। গত বছরের ২৬ এপ্রিল মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাত হিসেবে লাশ দাফন করা নিপার মৃত্যুর ঘটনায় নরসিংদী সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলাও দায়ের করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দেখে ঘটনার চার দিন পর পুলিশের সহায়তায় পরিবার নিশ্চিত হয় মরদেহটি লিপা আক্তার নিপার। পরবর্তীতে নিহতের মা কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে ১০জনের নামে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত নরসিংদী সদর থানাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। আসামিদের হুমকির মুখে ঘটনার চার মাস পর আদালতে নিহতের মা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলাটি প্রথমে নৌ-পুলিশ তদন্ত করলেও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন আরো জানান, মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে রোমহর্ষক এ খুনের রহস্য একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে। একপর্যায়ে রাজধানীর মগবাজার টিঅ্যান্ডটি এলাকা, ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে ঘটনার মূল নায়ক পলাতক আমিনুলের চাচাতো ভাই জহিরুল ও সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
গ্রেপ্তারদের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির প্রেক্ষিতে পিবিআই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. এনায়েত হোসেন জানান, আমিরুলের সঙ্গে নিপার দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমিরুলের বাবা তাদের সম্পর্ক মেনে নেননি। বরং নিপার বাবাকে দিয়ে অন্যত্র বিয়ে দিতে সহায়তা করেন। নিপা এক বছর সংসার করার পর সেখানে তার রাকিবুল হাসান নামে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। একপর্যায়ে পুরোনো প্রেমিক ঘাতক আমিনুল নিপার স্বামীকে তাদের অতীতের প্রেমের কাহিনি বলেন। এতে নিপার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে নিপাকে সন্তানসহ বাবার বাড়িতে রেখে আসেন। এর মধ্যে নিপার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে ফেলেন। নিপার সঙ্গে আমিরুলের প্রেমের সম্পর্ক আবার গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে নিপা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। আমিনুল নিপার বাচ্চাটি নষ্ট করার জন্য ডাক্তারের কাছে গেলে, এটি সম্ভব হবে না বলে জানান চিকিৎসক। এ সময় নিপা চার থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরে আমিরুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন নিপা। এর মধ্যে আমিরুল অন্য সহযোগীদের নিয়ে নিপাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত বছরের ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পর নিপাকে বিয়ের কথা বলে নৌকাযোগে মেঘনা নদীতে নিয়ে যায়। মাঝ নদীতে নিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে নিপার মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা।
পিটিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, নিপাকে হত্যার পর চরের কোথাও লাশটি চাপা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু নদীর সবদিকে জেলেদের উপস্থিতি থাকায় উপায় না দেখে নিপার মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয় তারা। হত্যায় ব্যবহৃত গামছা ও তাদের সঙ্গে থাকা কোদাল নদীতে ফেলে দেয়। এমনকি নৌকাটিও অন্যত্র বিক্রি করে দেয় জড়িতরা। পরে নৌকাটিকে আলামত হিসেবে সংগ্রহ করতে পেরেছে পিবিআই।
তিনি জানান, নিপার ভাসমান মরদেহটি ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুলের সহায়তায় মরদেহটি দাফন করা হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করতে গিয়ে তার পরিবার নানা ধরনের ভয়ভীতির সম্মুখীন হয়। পরে নিপার মা কোহিনুর বেগমের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নরসিংদী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে পিটিআইয়ের এসপি এনায়েত হোসেন জানান, প্রধান অভিযুক্ত আমিরুল বিদেশে পলাতক বলে শোনা যাচ্ছে, কিন্তু বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত নই, আমরা তাকে খুঁজছি। এ ছাড়া, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি সেলিম, নূরুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আতিক উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন।
নিহত নিপার মা কোহিনূর বেগম জানান, ঘটনার চার দিন পর ফেসবুকে ছবি দেখে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন। পরে তিনি পুলিশকে আসামিদের নাম জানান। এতে ঘটনাটি প্রকাশ হলে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তার স্বামী খলিলুর রহমান মামলা না করতে বলেন।
তিনি বলেন, আমি মেয়ে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। তাই স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি এসে চার মাস পর আদালতে মামলা করি। এরপর থেকে আসামিরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আসামিদের ভয়ে এখন আমি গ্রাম ছাড়া। মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
খুনিদের ফাঁসি চেয়ে একপর্যায়ে কোহিনূর বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ নভেম্বর, ২০২১ ২৩:৪৪

মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার অজ্ঞাত নারীকে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবির সূত্র ধরে অন্তঃসত্ত্বা লিপা আক্তার নিপা (২২) নামে ওই নারীর রোমহর্ষক মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটন করে পিবিআই। এ হত্যার বিচার চেয়ে হুমকির মুখেও লড়ে যাচ্ছেন নিপার মা।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. সুজন মিয়া (২২) ও মো. জহিরুল ইসলামকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
তারা জানিয়েছে, হত্যায় সাতজন অংশ নেয়। এ খুনের মূল নায়ক নিহত নিপার কথিত প্রেমিক আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিরুল পলাতক রয়েছে। অপর চারজন উচ্চ আদালতে জামিনে আছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. এনায়েত হোসেন মান্নান এসব তথ্য জানান।
এসপি এনায়েত হোসেন জানান, জোর করে বিয়ে দেওয়ার পর পুরোনো প্রেমিক আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিরুলের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ হয় নিপার। তাদের সম্পর্কের একপর্যায়ে নিপা গর্ভবতী হয়ে পড়লে আমিরুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেন নিপা। একদিন রাতে বিয়ের কথা বলে নিপাকে ঘর থেকে নিয়ে যায় আমিরুল। মেঘনা নদীর মাঝে নৌকায় নিপাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে। গত বছরের ২৬ এপ্রিল মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাত হিসেবে লাশ দাফন করা নিপার মৃত্যুর ঘটনায় নরসিংদী সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলাও দায়ের করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দেখে ঘটনার চার দিন পর পুলিশের সহায়তায় পরিবার নিশ্চিত হয় মরদেহটি লিপা আক্তার নিপার। পরবর্তীতে নিহতের মা কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে ১০জনের নামে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত নরসিংদী সদর থানাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। আসামিদের হুমকির মুখে ঘটনার চার মাস পর আদালতে নিহতের মা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলাটি প্রথমে নৌ-পুলিশ তদন্ত করলেও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন আরো জানান, মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে রোমহর্ষক এ খুনের রহস্য একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে। একপর্যায়ে রাজধানীর মগবাজার টিঅ্যান্ডটি এলাকা, ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে ঘটনার মূল নায়ক পলাতক আমিনুলের চাচাতো ভাই জহিরুল ও সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
গ্রেপ্তারদের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির প্রেক্ষিতে পিবিআই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. এনায়েত হোসেন জানান, আমিরুলের সঙ্গে নিপার দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমিরুলের বাবা তাদের সম্পর্ক মেনে নেননি। বরং নিপার বাবাকে দিয়ে অন্যত্র বিয়ে দিতে সহায়তা করেন। নিপা এক বছর সংসার করার পর সেখানে তার রাকিবুল হাসান নামে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। একপর্যায়ে পুরোনো প্রেমিক ঘাতক আমিনুল নিপার স্বামীকে তাদের অতীতের প্রেমের কাহিনি বলেন। এতে নিপার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে নিপাকে সন্তানসহ বাবার বাড়িতে রেখে আসেন। এর মধ্যে নিপার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে ফেলেন। নিপার সঙ্গে আমিরুলের প্রেমের সম্পর্ক আবার গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে নিপা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। আমিনুল নিপার বাচ্চাটি নষ্ট করার জন্য ডাক্তারের কাছে গেলে, এটি সম্ভব হবে না বলে জানান চিকিৎসক। এ সময় নিপা চার থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরে আমিরুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন নিপা। এর মধ্যে আমিরুল অন্য সহযোগীদের নিয়ে নিপাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত বছরের ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পর নিপাকে বিয়ের কথা বলে নৌকাযোগে মেঘনা নদীতে নিয়ে যায়। মাঝ নদীতে নিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে নিপার মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা।
পিটিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, নিপাকে হত্যার পর চরের কোথাও লাশটি চাপা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু নদীর সবদিকে জেলেদের উপস্থিতি থাকায় উপায় না দেখে নিপার মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয় তারা। হত্যায় ব্যবহৃত গামছা ও তাদের সঙ্গে থাকা কোদাল নদীতে ফেলে দেয়। এমনকি নৌকাটিও অন্যত্র বিক্রি করে দেয় জড়িতরা। পরে নৌকাটিকে আলামত হিসেবে সংগ্রহ করতে পেরেছে পিবিআই।
তিনি জানান, নিপার ভাসমান মরদেহটি ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুলের সহায়তায় মরদেহটি দাফন করা হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করতে গিয়ে তার পরিবার নানা ধরনের ভয়ভীতির সম্মুখীন হয়। পরে নিপার মা কোহিনুর বেগমের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নরসিংদী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে পিটিআইয়ের এসপি এনায়েত হোসেন জানান, প্রধান অভিযুক্ত আমিরুল বিদেশে পলাতক বলে শোনা যাচ্ছে, কিন্তু বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত নই, আমরা তাকে খুঁজছি। এ ছাড়া, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি সেলিম, নূরুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আতিক উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন।
নিহত নিপার মা কোহিনূর বেগম জানান, ঘটনার চার দিন পর ফেসবুকে ছবি দেখে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন। পরে তিনি পুলিশকে আসামিদের নাম জানান। এতে ঘটনাটি প্রকাশ হলে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তার স্বামী খলিলুর রহমান মামলা না করতে বলেন।
তিনি বলেন, আমি মেয়ে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। তাই স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি এসে চার মাস পর আদালতে মামলা করি। এরপর থেকে আসামিরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আসামিদের ভয়ে এখন আমি গ্রাম ছাড়া। মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
খুনিদের ফাঁসি চেয়ে একপর্যায়ে কোহিনূর বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।