গানের মডেল হয়ে ফেঁসে যান সিরিয়াল কিলার হেলাল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:১২
সিরিয়াল কিলার হেলাল
মাস ছয়েক আগে এক ব্যক্তি ইউটিউবে একটি গানে বাউল মডেলকে দেখে চমকে যান। এরপর র্যাবকে তথ্য দেন, ওই ব্যক্তি সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে আটক হন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সিরিয়াল কিলার হেলাল।
ছদ্মবেশে বাউল সেলিম নামে ঘুরছিলেন হেলাল। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে হেলাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়।
এ সময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, সেলিম নামে গানের মডেলিং করে পরিচিতি পান উত্তরবঙ্গের ভয়ংকর খুনি হেলাল। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে নারী নির্যাতনের মামলা।
আনুমানিক পাঁচ বছর আগে হেলাল নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে গামছা পলাশের একটি গানের শুটিং চলাকালে রেললাইনের পাশে বাউল গান গাইছিলেন। তখন শুটিংয়ের একজন তাকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়। সেই সূত্রে সেলিম ফকির নামে ‘ভাঙা তরী ছেঁড়া পাল’ শিরোনামের জনপ্রিয় গানে তাকে দেখা যায়। এই ভিডিওই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
র্যাব জানায়, একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পর ছদ্মবেশে চলাফেরা শুরু করেন হেলাল। বিয়ে করে চার বছর ধরে থাকছিলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন এলাকায়। সেখানে বাউল শিল্পী সেলিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
র্যাবের কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, সেলিম ফকির জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে ২০০১ সালে বগুড়ার চাঞ্চল্যকর বিদ্যুৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি। সে আরও দুটি হত্যা মামলার আসামি। ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলার আসামি বলে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।
এ ছাড়া ২০০৬ সালে বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রবিউল নামের এক ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তেরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। গ্রেপ্তার করা হেলাল ওই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এ ছাড়া ২০১১ সালে হেলালের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, হেলাল এলাকায় মুদি দোকানদারি করতেন। পরবর্তীকালে চুরি, হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে এলাকায় তার কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি সুকৌশলে এলাকা ত্যাগ করে ফেরারি জীবনযাপন শুরু করেন।
এরপর চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেটের শাহজালাল মাজারে চলে যান হেলাল। সিলেটে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে আরও কিছুদিন অবস্থান করেন। বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে অবস্থানের পর তিনি থিতু হন কিশোরগঞ্জ ভৈরব রেলস্টেশনে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:১২

মাস ছয়েক আগে এক ব্যক্তি ইউটিউবে একটি গানে বাউল মডেলকে দেখে চমকে যান। এরপর র্যাবকে তথ্য দেন, ওই ব্যক্তি সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে আটক হন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সিরিয়াল কিলার হেলাল।
ছদ্মবেশে বাউল সেলিম নামে ঘুরছিলেন হেলাল। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে হেলাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়।
এ সময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, সেলিম নামে গানের মডেলিং করে পরিচিতি পান উত্তরবঙ্গের ভয়ংকর খুনি হেলাল। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে নারী নির্যাতনের মামলা।
আনুমানিক পাঁচ বছর আগে হেলাল নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে গামছা পলাশের একটি গানের শুটিং চলাকালে রেললাইনের পাশে বাউল গান গাইছিলেন। তখন শুটিংয়ের একজন তাকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়। সেই সূত্রে সেলিম ফকির নামে ‘ভাঙা তরী ছেঁড়া পাল’ শিরোনামের জনপ্রিয় গানে তাকে দেখা যায়। এই ভিডিওই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
র্যাব জানায়, একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পর ছদ্মবেশে চলাফেরা শুরু করেন হেলাল। বিয়ে করে চার বছর ধরে থাকছিলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন এলাকায়। সেখানে বাউল শিল্পী সেলিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
র্যাবের কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, সেলিম ফকির জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে ২০০১ সালে বগুড়ার চাঞ্চল্যকর বিদ্যুৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি। সে আরও দুটি হত্যা মামলার আসামি। ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলার আসামি বলে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।
এ ছাড়া ২০০৬ সালে বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রবিউল নামের এক ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তেরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। গ্রেপ্তার করা হেলাল ওই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এ ছাড়া ২০১১ সালে হেলালের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, হেলাল এলাকায় মুদি দোকানদারি করতেন। পরবর্তীকালে চুরি, হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে এলাকায় তার কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি সুকৌশলে এলাকা ত্যাগ করে ফেরারি জীবনযাপন শুরু করেন।
এরপর চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেটের শাহজালাল মাজারে চলে যান হেলাল। সিলেটে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে আরও কিছুদিন অবস্থান করেন। বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে অবস্থানের পর তিনি থিতু হন কিশোরগঞ্জ ভৈরব রেলস্টেশনে।