এটিএম কার্ড ক্লোনকারী তুর্কি নাগরিক আটক ঢাকায়
অনলাইন ডেস্ক | ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:১০
আটক হাকান জানবারকান (মাঝে)
রাজধানীতে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে ক্লোনিং কার্ড দিয়ে শতাধিকবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এক ক্লোনকারী তুর্কি নাগরিক। ব্যাংকটির অ্যান্টি স্কেমিং সফটওয়্যার থাকায় তিনি টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। সে খবর পুলিশকে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) গুলশান ১ নম্বর থেকে বাংলাদেশি সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার তুরস্কের ওই নাগরিকের নাম হাকান জানবারকান (৫৫)। এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের দায়ে তিনি ২০১৯ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারারক্ষীদের হেফাজতে ভারতের আসামের জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান। এরপর নেপালে যান। নেপাল থেকে আউটপাস নিয়ে তুরস্কে যান। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এটিএম কার্ড ক্লোনকারী আন্তর্জাতিক চক্রের এ সদস্যের গ্রেপ্তার বিষয়ে বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বিস্তারিত জানান ডিএমপির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, হাকান জানবারকানের বাংলাদেশি সহযোগীর নাম মফিউল ইসলাম। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোনিং এটিএম কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এই তুরস্কের নাগরিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভারতে ২০১৯ সালে তার বাংলাদেশি সহযোগী শহিদুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি পালিয়ে এলেও শহিদুল এখনো ভারতের কারাগারে রয়েছেন। শহিদুলের ভাই মফিউল ইসলাম। তারা সবাই মিলে এই এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে থাকেন।’
গত ৩১ ডিসেম্বর হাকান জানবারকান বিজনেস ভিসায় ঢাকা আসেন। তার একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি একেকবার একেক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণ করেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকায় আসার পর তুরস্কের এই নাগরিক ২ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ইউএসএ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে একশ’বার টাকা উত্তোলন করেছেন। এসব কার্ড তিনি বিদেশ থেকেই ক্লোন করে নিয়ে আসছেন বলে আমরা ধারণা করছি।’
তিনি জানান, ঢাকায় এসে তিনি পল্টনের ক্যাপিটাল হোটেলে উঠেছিলেন। কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ঢাকার অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।
এই চক্রের সঙ্গে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলেও প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন হাকান জানবারকান।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:১০

রাজধানীতে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে ক্লোনিং কার্ড দিয়ে শতাধিকবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এক ক্লোনকারী তুর্কি নাগরিক। ব্যাংকটির অ্যান্টি স্কেমিং সফটওয়্যার থাকায় তিনি টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। সে খবর পুলিশকে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) গুলশান ১ নম্বর থেকে বাংলাদেশি সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার তুরস্কের ওই নাগরিকের নাম হাকান জানবারকান (৫৫)। এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের দায়ে তিনি ২০১৯ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারারক্ষীদের হেফাজতে ভারতের আসামের জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান। এরপর নেপালে যান। নেপাল থেকে আউটপাস নিয়ে তুরস্কে যান। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এটিএম কার্ড ক্লোনকারী আন্তর্জাতিক চক্রের এ সদস্যের গ্রেপ্তার বিষয়ে বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বিস্তারিত জানান ডিএমপির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, হাকান জানবারকানের বাংলাদেশি সহযোগীর নাম মফিউল ইসলাম। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোনিং এটিএম কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এই তুরস্কের নাগরিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভারতে ২০১৯ সালে তার বাংলাদেশি সহযোগী শহিদুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিনি পালিয়ে এলেও শহিদুল এখনো ভারতের কারাগারে রয়েছেন। শহিদুলের ভাই মফিউল ইসলাম। তারা সবাই মিলে এই এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে থাকেন।’
গত ৩১ ডিসেম্বর হাকান জানবারকান বিজনেস ভিসায় ঢাকা আসেন। তার একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি একেকবার একেক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণ করেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকায় আসার পর তুরস্কের এই নাগরিক ২ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ইউএসএ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে একশ’বার টাকা উত্তোলন করেছেন। এসব কার্ড তিনি বিদেশ থেকেই ক্লোন করে নিয়ে আসছেন বলে আমরা ধারণা করছি।’
তিনি জানান, ঢাকায় এসে তিনি পল্টনের ক্যাপিটাল হোটেলে উঠেছিলেন। কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ঢাকার অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।
এই চক্রের সঙ্গে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলেও প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন হাকান জানবারকান।