ফসিল ফার্নিচারের বিরুদ্ধে নিম্ন মানের পণ্য দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ
অনলাইন ডেস্ক | ২২ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:৩১
ফেসবুক এবং ওয়েবসাইটে চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেশি দাম নিয়ে কম দামের ও নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ফসিল ফার্নিচার নামের একটি কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, অনলাইনে ফসিল ফার্নিচার বিডি ডটকম নামের একটি ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকে ফসিল বিডি নামের একটি পেজ থেকে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার মাধ্যমে ভালো মানের পণ্য দেওয়ার কথা বলে বেশি দাম নিয়ে ক্রেতাকে কম দামের ও অত্যন্ত নিম্ন মানের পণ্য দিয়ে প্রতারণা করছে কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি।
অভিযোগটি করেছেন মো. খালিদ হাসান নামের একজন ক্রেতা। খালিদ হাসান বলেন, ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ফসিল বিডি (Fossil BD) নামের একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেসের প্রতি আগ্রহী হয়ে আমি তাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করি। আমি নিজের চোখে পণ্যগুলো দেখতে চাইলে তারা আমাকে ফসিল ফার্নিচার, ব্লক-কে, রোড-এন/১, হাউস-৬২, ইস্টার্ন হাউজিং, পল্লবী এক্সটেনশন, মিরপুর ১২১৬, ঢাকা- এই ঠিকানায় যেতে বলে। কিন্তু গত ২৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে আমি সেখানে গিয়ে কোন শোরুমের অস্তিত্ব খুঁজে পাইনি। বরং একটি কাঠের কারখানা দেখতে পাই। আমি ফেসবুকে প্রদর্শিত বিছানা, চেস্ট অব ড্রয়ার এবং ড্রেসিং টেবিল দেখতে চাইলে তারা আমাকে বিছানা ছাড়া বাকিগুলো ‘ডিসপ্লেতে এই মূহুর্তে নেই’ বলে জানায়। এবং পণ্যগুলো উচ্চ গুণগত মানের দাবী করে ‘বাসায় ডেলিভারির পর পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়া যাবে’ এই মর্মে আশ্বস্ত করে। এরপর তারা আমাকে ক্রয়াদেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা আমাকে পণ্যগুলোর মোট মূল্যের ৫০ শতাংশ অগ্রিম দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমি সরল বিশ্বাসে ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে তাদের দেওয়া ব্যাংক হিসাবে ৩০,০০০ টাকা পাঠিয়ে ক্রয়াদেশ দেই। (ব্যাংক হিসাবের নাম- মো: জাহিদুল ইসলাম, নং-২১৫২২১৬০২০৮৮৪। চালান নং-৭৪৬/৭৫৬, তাং ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২।)
খালিদ হাসানের অভিযোগ, এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি তারা আমার বাসায় যেসব পণ্য ডেলিভারি দেয় সেগুলো খুবই নিম্ন মানের ছিল। বিজ্ঞাপনে যেভাবে পণ্যের উচ্চ গুনগত মানের উল্লেখ করা হয়েছিল তার সঙ্গে সেগুলোর কোনো মিল নেই।
খালিদ বলেন, তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সাইজের চেয়ে ছোট একটি ম্যাট্রেস দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তাদেরকে জানানোর পর তারা সেটি পাল্টে না দিয়ে বরং কেটে-জোড়া লাগিয়ে সাইজ বড় করে দেয়। এছাড়া তারা যে চেস্ট অফ ড্রয়ার দিয়েছে সেটিও ভাঙ্গা ছিল। একইভাবে, অত্যন্ত হালকা বোর্ডের ড্রেসিং টেবিল সরবরাহ করা হয়। অনলাইনের ছবির সাথে যার কোন মিল নেই। বাজারের সস্তা বোর্ডের যে ড্রেসিং টেবিল সাধারণত ৩/৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয় এমন একটি টেবিল ১৩,৭০০ টাকায় বিক্রির মাধ্যমে ঠকানোর চেষ্টা করছে বুঝতে পেরে আমি সেটি তাদের ফেরত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ফসিল বিডির লোকজন নানা অজুহাতে চেস্ট অব ড্রয়ার ও ড্রেসিং টেবিল ফেরত নিতে অস্বীকার করে। অবশেষে, প্রায় ৩ সপ্তাহ পর গত ৮ মার্চ ২০২২ তারিখে ফসিলের লোকজন এগুলো ফেরত নিয়ে যায়। কিন্তু, এই দুইটি পণ্য বাবদ মোট ২৫,২০০ টাকা (১৩,৭০০+ ১১,৫০০) ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও, বারবার টেলিফোন করার পর ২ মাসেরও বেশি সময় পর গত ২০ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মাত্র ১০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে, বাকী টাকা ফেরত দিতে নানা টালবাহানা করে যাচ্ছে।
খালিদ আরও অভিযোগ করেন, ফসিল বিডি ভালো মানের ম্যট্রেস তৈরি করে বলে দাবী করেছিল। এর প্রেক্ষিতে, আমি ১৬,০০০ টাকায় দুটি ম্যট্রেস এর অর্ডার দেই। কিন্তু, ম্যট্রেসগুলো হাতে পাওয়ার পর দেখা যায়, সেগুলো ফসিলের নয় বরং ‘এলিট’ (Elite) নামের কোম্পানির তৈরী। এতে বোঝা যায় যে, নিজেদের পণ্য না থাকায় তারা মুনাফার লোভে খোলা বাজার হতে যাচ্ছে-তাই পণ্য কিনে সরবরাহ করছে।
খালিদ হাসান জানান, তিনি ফসিল বিডির কর্ণধার জাহিদুল ইসলাম জনি বরাবর লিখিতভাবে এসব বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে একটি অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। সেই অভিযোগ পত্রের একটি করে কপি সিনিয়র সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মহাপরিচালক, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কাওরান বাজার, রোড নং-১, ঢাকা, মহাপরিচালক, নীরিক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, মুসক, ৮ সেলিনা পারভিন সড়ক, বড় মগবাজার, ঢাকা এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার, দারুস সালাম জোন, মিরপুর, ঢাকা বরাবরেও পাঠানো হয়েছে।
খালিদ জানান, বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য জাহিদুল ইসলাম জনিকে অসংখ্যবার টেলিফোন করে এবং টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়েও গত ২ মাসে তার দিক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই তিনি আইনগত পদক্ষে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফসিল বিডির কর্ণধার জনাব জাহিদুল ইসলাম জনির বক্তব্য জানার জন্য মোবাইলে ফোনে করা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি তাকে টেক্সট ম্যাসেজ করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২২ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:৩১

ফেসবুক এবং ওয়েবসাইটে চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেশি দাম নিয়ে কম দামের ও নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ফসিল ফার্নিচার নামের একটি কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, অনলাইনে ফসিল ফার্নিচার বিডি ডটকম নামের একটি ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকে ফসিল বিডি নামের একটি পেজ থেকে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার মাধ্যমে ভালো মানের পণ্য দেওয়ার কথা বলে বেশি দাম নিয়ে ক্রেতাকে কম দামের ও অত্যন্ত নিম্ন মানের পণ্য দিয়ে প্রতারণা করছে কথিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি।
অভিযোগটি করেছেন মো. খালিদ হাসান নামের একজন ক্রেতা। খালিদ হাসান বলেন, ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ফসিল বিডি (Fossil BD) নামের একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেসের প্রতি আগ্রহী হয়ে আমি তাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করি। আমি নিজের চোখে পণ্যগুলো দেখতে চাইলে তারা আমাকে ফসিল ফার্নিচার, ব্লক-কে, রোড-এন/১, হাউস-৬২, ইস্টার্ন হাউজিং, পল্লবী এক্সটেনশন, মিরপুর ১২১৬, ঢাকা- এই ঠিকানায় যেতে বলে। কিন্তু গত ২৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে আমি সেখানে গিয়ে কোন শোরুমের অস্তিত্ব খুঁজে পাইনি। বরং একটি কাঠের কারখানা দেখতে পাই। আমি ফেসবুকে প্রদর্শিত বিছানা, চেস্ট অব ড্রয়ার এবং ড্রেসিং টেবিল দেখতে চাইলে তারা আমাকে বিছানা ছাড়া বাকিগুলো ‘ডিসপ্লেতে এই মূহুর্তে নেই’ বলে জানায়। এবং পণ্যগুলো উচ্চ গুণগত মানের দাবী করে ‘বাসায় ডেলিভারির পর পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়া যাবে’ এই মর্মে আশ্বস্ত করে। এরপর তারা আমাকে ক্রয়াদেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা আমাকে পণ্যগুলোর মোট মূল্যের ৫০ শতাংশ অগ্রিম দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমি সরল বিশ্বাসে ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে তাদের দেওয়া ব্যাংক হিসাবে ৩০,০০০ টাকা পাঠিয়ে ক্রয়াদেশ দেই। (ব্যাংক হিসাবের নাম- মো: জাহিদুল ইসলাম, নং-২১৫২২১৬০২০৮৮৪। চালান নং-৭৪৬/৭৫৬, তাং ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২।)
খালিদ হাসানের অভিযোগ, এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি তারা আমার বাসায় যেসব পণ্য ডেলিভারি দেয় সেগুলো খুবই নিম্ন মানের ছিল। বিজ্ঞাপনে যেভাবে পণ্যের উচ্চ গুনগত মানের উল্লেখ করা হয়েছিল তার সঙ্গে সেগুলোর কোনো মিল নেই।
খালিদ বলেন, তাকে তার কাঙ্ক্ষিত সাইজের চেয়ে ছোট একটি ম্যাট্রেস দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তাদেরকে জানানোর পর তারা সেটি পাল্টে না দিয়ে বরং কেটে-জোড়া লাগিয়ে সাইজ বড় করে দেয়। এছাড়া তারা যে চেস্ট অফ ড্রয়ার দিয়েছে সেটিও ভাঙ্গা ছিল। একইভাবে, অত্যন্ত হালকা বোর্ডের ড্রেসিং টেবিল সরবরাহ করা হয়। অনলাইনের ছবির সাথে যার কোন মিল নেই। বাজারের সস্তা বোর্ডের যে ড্রেসিং টেবিল সাধারণত ৩/৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয় এমন একটি টেবিল ১৩,৭০০ টাকায় বিক্রির মাধ্যমে ঠকানোর চেষ্টা করছে বুঝতে পেরে আমি সেটি তাদের ফেরত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ফসিল বিডির লোকজন নানা অজুহাতে চেস্ট অব ড্রয়ার ও ড্রেসিং টেবিল ফেরত নিতে অস্বীকার করে। অবশেষে, প্রায় ৩ সপ্তাহ পর গত ৮ মার্চ ২০২২ তারিখে ফসিলের লোকজন এগুলো ফেরত নিয়ে যায়। কিন্তু, এই দুইটি পণ্য বাবদ মোট ২৫,২০০ টাকা (১৩,৭০০+ ১১,৫০০) ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও, বারবার টেলিফোন করার পর ২ মাসেরও বেশি সময় পর গত ২০ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মাত্র ১০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে, বাকী টাকা ফেরত দিতে নানা টালবাহানা করে যাচ্ছে।

খালিদ আরও অভিযোগ করেন, ফসিল বিডি ভালো মানের ম্যট্রেস তৈরি করে বলে দাবী করেছিল। এর প্রেক্ষিতে, আমি ১৬,০০০ টাকায় দুটি ম্যট্রেস এর অর্ডার দেই। কিন্তু, ম্যট্রেসগুলো হাতে পাওয়ার পর দেখা যায়, সেগুলো ফসিলের নয় বরং ‘এলিট’ (Elite) নামের কোম্পানির তৈরী। এতে বোঝা যায় যে, নিজেদের পণ্য না থাকায় তারা মুনাফার লোভে খোলা বাজার হতে যাচ্ছে-তাই পণ্য কিনে সরবরাহ করছে।

খালিদ হাসান জানান, তিনি ফসিল বিডির কর্ণধার জাহিদুল ইসলাম জনি বরাবর লিখিতভাবে এসব বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে একটি অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। সেই অভিযোগ পত্রের একটি করে কপি সিনিয়র সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মহাপরিচালক, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কাওরান বাজার, রোড নং-১, ঢাকা, মহাপরিচালক, নীরিক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, মুসক, ৮ সেলিনা পারভিন সড়ক, বড় মগবাজার, ঢাকা এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার, দারুস সালাম জোন, মিরপুর, ঢাকা বরাবরেও পাঠানো হয়েছে।

খালিদ জানান, বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য জাহিদুল ইসলাম জনিকে অসংখ্যবার টেলিফোন করে এবং টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়েও গত ২ মাসে তার দিক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই তিনি আইনগত পদক্ষে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ফসিল বিডির কর্ণধার জনাব জাহিদুল ইসলাম জনির বক্তব্য জানার জন্য মোবাইলে ফোনে করা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি তাকে টেক্সট ম্যাসেজ করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।