মেরামতের নামে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১ বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা লুট
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ২২:৩৪
মেরামতে নামে রাজধানীর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১ বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এ অভিযোগে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির সাবেক ক্যাশ এ্যাটেনডেন্ট তাহমিদ উদ্দিন পাঠান (২৭) ও মেশিন মেইনটেন্যান্স পদে কাজ করা আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুারো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা আদালতে নিজেদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
পিবিআইয়ের দাবি, গ্রেপ্তাররা পেশাগত দায়িত্ব পালনের আড়ালে একটি চক্রের হয়ে কাজ করছিল।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও পিবিআই মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, গত চার মাসে চক্রটি মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ডাচ বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে এত বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর আগে ডিবি পুলিশ এ চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, তারা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ এ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করতেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড বনানী শাখা থেকে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার এটিএম বুথে টাকা লোডের জন্য গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে বুথের তালিকা ও টাকা লোডের পরিমাণসহ রিকুইজিশন আসতো। চক্রের সদস্যরা প্রতিটি দলে ২ জন মোট ১১ জন ভাগ হয়ে যেত। এরপর এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের কাজ করতো। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস ট্রানজেকশন করতো। এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই টাকা চক্রের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে।
এসপি জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তারা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। গার্ড শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পান। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আব্দুল আলম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি কাফরুল থানা পুলিশ প্রাথমিক পর্যায়ে একমাস তদন্ত করে।
তদন্তকালে এজাহারের আসামিসহ আরও নয়জনকে পর্যায়ক্রমে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
তদন্ত পর্যায়ে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআই জানায়, এ চক্রে জড়িত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, আলী, রবিউল হাসান, আব্দুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম ও শিশির কুমার একই উদ্দেশ্যে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এটিএম বুথে টাকা লোড দিয়ে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা তুলে হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিত।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ২২:৩৪

মেরামতে নামে রাজধানীর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১ বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এ অভিযোগে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির সাবেক ক্যাশ এ্যাটেনডেন্ট তাহমিদ উদ্দিন পাঠান (২৭) ও মেশিন মেইনটেন্যান্স পদে কাজ করা আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুারো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা আদালতে নিজেদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
পিবিআইয়ের দাবি, গ্রেপ্তাররা পেশাগত দায়িত্ব পালনের আড়ালে একটি চক্রের হয়ে কাজ করছিল।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও পিবিআই মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, গত চার মাসে চক্রটি মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ডাচ বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে এত বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর আগে ডিবি পুলিশ এ চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, তারা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ এ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করতেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড বনানী শাখা থেকে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার এটিএম বুথে টাকা লোডের জন্য গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে বুথের তালিকা ও টাকা লোডের পরিমাণসহ রিকুইজিশন আসতো। চক্রের সদস্যরা প্রতিটি দলে ২ জন মোট ১১ জন ভাগ হয়ে যেত। এরপর এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের কাজ করতো। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস ট্রানজেকশন করতো। এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই টাকা চক্রের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে।
এসপি জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তারা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। গার্ড শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পান। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আব্দুল আলম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি কাফরুল থানা পুলিশ প্রাথমিক পর্যায়ে একমাস তদন্ত করে।
তদন্তকালে এজাহারের আসামিসহ আরও নয়জনকে পর্যায়ক্রমে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
তদন্ত পর্যায়ে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআই জানায়, এ চক্রে জড়িত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, আলী, রবিউল হাসান, আব্দুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম ও শিশির কুমার একই উদ্দেশ্যে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এটিএম বুথে টাকা লোড দিয়ে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা তুলে হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিত।