
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আলোচিত আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের প্রথম স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়ার বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামে। আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে আপন পরিচয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন, তারপর বিচ্ছেদ।
পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার আসামিও হয়েছেন তার প্রথম স্ত্রী। মামা শ্বশুরের মোটরসাইকেলে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তবে সুসম্পর্ক ছিল না শ্বশুরপক্ষের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে।
অপরদিকে, পুলিশ পরিদর্শক হত্যাকাণ্ডের পর স্ত্রী কেয়ার সঙ্গে আরাভের বিচ্ছেদ ঘটে। এই প্রতারকের বিষয়টি সামনে আসার পর অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, মায়ের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করার সময় ২০১৩ সালে এসএসসি পাস করেন কেয়া। ভর্তি হন ঢাকার একটি ম্যাটস কলেজের প্যাথলজি বিভাগে। কলেজে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আপন ওরফে আরাভের সঙ্গে। ২০১৪ সালে কেয়া গ্রামে বেড়াতে আসেন। এর একদিন পর এক বন্ধুকে নিয়ে কেয়াদের বাড়িতে আসেন আরাভ। পরদিন কেয়ার মামার একটি মোটরসাইকেল ও কেয়াকে নিয়ে পালিয়ে যান আরাভ। পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে তারা ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। মোটরসাইকেল আর মেয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কেয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক ছিল না।
কেয়ার মামা গাড়াডোব গ্রামের কামরুজ্জামান বলেন, ‘মেয়ের বন্ধু হিসেবে তাকে আমরা যথেষ্ট সম্মান করতাম। কিন্তু সে যে এত বড় প্রতারক তা আগে জানা ছিল না। সে নিজেকে আপন জুয়েলার্সের মালিক পরিচয় দিয়েছে। আবার আমার শখের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাকে অনুনয় করলেও মোটরসাইকেল ফেরত দেয়নি, তখন গাংনী থানায় একটি জিডি করেছিলাম। এই জিডি তুলে নিতে সে মেহেরপুরের কয়েকজন নেতাকে দিয়ে আমাকে চাপ দিয়েছিল। ওই নেতাদের কাছে আরাভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে আমাকে চাপ দিতে বলেছিল।’
ভাগ্নি কেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়েটির জীবন তছনছ করে দিয়েছে সে। আরাভের সঙ্গে থাকার কারণে সে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি।’ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কেয়াকে সুন্দর জীবনে ফেরার সুযোগ করে দিতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
কেয়ার বাবা আবুল কালাম আজাদ জানান, কেয়ার মা তার খালাতো বোন। বাড়িও পাশে। তার নাম মনোয়ারা বেগম। ১৯৯৬ সালে মনোয়ারা বিএ পাস করলে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর থেকে তাদের সংসার জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০০০ সালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আপন ভাই হত্যা মামলায় জেল হয় তার। তখন কেয়ার বয়স মাত্র তিন বছর। মাঝে মাঝে মেয়েকে নিয়ে দেখতে জেলে যেতেন তার স্ত্রী। কিন্তু দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে তাদের সংসারে ফাটল ধরে। এরই মাঝে বড় হতে থাকে কেয়া। ২০১১ সালে জেল থেকে বের হয়ে আসেন। এসে শোনেন স্ত্রী তাকে তালাক দিয়েছেন, কিন্তু কোনো কাগজপত্র দেননি। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও পারেননি। স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন বিয়ে করেন উজলপুর গ্রামের একজনকে। পরে তারা ঢাকায় চলে যান। ২০১৩ সালে এসএসসি পাস করেন কেয়া। তার মা তাকে বাবার অমতে ভর্তি করে দেন ঢাকার একটি ম্যাটস কলেজে। সেখানে চিকিৎসাবিদ্যায় ডিপ্লোমা করতেন কেয়া। তারপর থেকেই মেয়ের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নেই আবুল কালামের।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকায় ভর্তি হওয়ার কিছু দিন পরই শুনতে পান তার মেয়ে সম্পর্কে জড়িয়েছেন আপন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। সে নাকি আপন জুয়েলার্সের মালিক। বিয়েও হয় তার সঙ্গে। ২০১৪ ও ১৫ সালে স্বামী আপনকে নিয়ে গাড়াডোব গ্রামে তার খালার বাড়িতে বেড়াতে আসে। তখন বিলাসবহুল জীবনযাপন করতো তারা। কিন্তু বিভিন্ন মারফত জানতে পারি, তার স্বামী সন্ত্রাসীকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এরপরই কিছু দিন যেতে না যেতেই খবর আসে কেয়া একটি পুলিশ হত্যা মামলার আসামি। পরে জেলেও যেতে হয় তাকে। জামিনের পর তাদের বিচ্ছেদ হয়। দীর্ঘ কয়েক বছর হাজতবাস করার পর ২০২২ সালে জামিনে মুক্তি পায় সে। পরে সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শাহিন নামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়। তার পরপরই সে স্বামীর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় চলে যায়।’
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সুরাইয়া আক্তার কেয়া সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ হত্যা মামলায় সে জামিনে ছিল বলে জানতে পেরেছি। তবে সে আসলে কোথায় আছে, তা এখনও পরিষ্কার হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল আলোচিত সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আলীম আল রাজী (জীবন) সাক্ষ্যপ্রদান করেন
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলো। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি সেফাত উল্লাহ সেফুদা অনলাইনে একাধিকবার বিভিন্নভাবে একাধিক ভিডিও আপলোড করেছে, যা ভাইরাল হয়েছে। তিনি এসব ভিডিওর মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, যা মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, ভুল তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছেন।
এ অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনাল এ মামলাটি করেন ঢাকা বারের আইনজীবী আলীম আল রাজী (জীবন)। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরপর মামলার অভিযোগ তদন্ত শেষে একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এসআই পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী সেফাত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ট্রাইব্যুনাল তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেফুদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
ইমন কাজী ও আল-আমিন উভয়ই অটোরিকশা চালাতেন। এই সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আল-আমিনের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন ইমন। একপর্যায়ে আল-আমিনের স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আল-আমিনকে না জানিয়ে অটোরিকশাতে করে তার স্ত্রীকে নিয়ে কয়েকবার ঘুরতেও যান ইমন। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ইমনকে হত্যার ছক আঁকেন আল-আমিন।
স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে বাসায় দাওয়াত দেন ইমনকে। পরে আল-আমিন কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন ইমনকে।
লাশ গুম করতে বস্তায় ভরে ফেলে দেন ঝোপের মধ্যে। ইমন হত্যায় জড়িত আসামি আল-আমিনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। গতকাল সোমবার রাতে বরিশালের হিজলা থানাধীন গোবিন্দপুর খন্না এলাকা থেকে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন রাজধানীর কদমতলীর পশ্চিম মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে ইমনের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে গত ৩০ মে থেকে নিখোঁজ ছিল ইমন। এ ঘটনায় ইমনের বাবা মো. লিটন বাদী হয়ে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর থেকেই ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবির ওয়ারি বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় স্বল্পতম সময়ের মধ্যে হত্যাকারী আল-আমিনকে শনাক্ত করা হয়। পরে তার শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক আল-আমিন জানিয়েছে স্ত্রীর সঙ্গে ইমনের পরকীয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠে সে। এছাড়া ইমনকে সে সুদে ৫০০০ টাকা দিয়েছিল। সেই সুদের টাকা ফেরত না দেয়ার বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। সেই টাকা ফেরত না দেওয়ায় ইমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে আল আমিন। বাসায় ডেকে নিয়ে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
ডিবি ওয়ারি বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মো. আ. আহাদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, হত্যাকান্ডটি ক্লুলেস ছিল। লাশ উদ্ধারের এক দিনের মধ্যে আমরা হত্যাকারীকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘ঘাতক ভেবেছিল সে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে পারবে। এজন্য কৌশলে লাশ বস্তায় ভরে ফেলে রাখে যেন পচে গলে নষ্ট হয়ে যায়।’
নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার শুরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধানসহ তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সোমবার (৫ জুন) রাতে গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র শুরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিবসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে ৮ জন তরুণের নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিখোঁজ তরুণদের পরিবার কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গণমাধ্যমসমূহে বহুলভাবে আলোচিত নিখোঁজের এই ঘটনা দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে র্যাব নিখোঁজদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে র্যাব ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায় এবং র্যাব জানতে পারে যে, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’ এর সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে অদ্যাবধি দেশের বিভিন্ন স্থানে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৭২ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’ এর ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও উগ্রবাদী বই।
এছাড়াও উদ্ধার করা হয় সংগঠন সস্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও কন্টেন্ট। বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, এই সংগঠনের আমীর আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ, সংগঠনের উপদেষ্টা শামীম মাহফুজ, অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান গ্রেপ্তারকৃত রাকিব। ইতিপূর্বে র্যাব কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে সংগঠনের দাওয়াতী কার্যক্রমের প্রধান আব্দুল্লাহ মায়মুন, সামরিক শাখার প্রধান রনবীর ও উপপ্রধান মানিক, অর্থ বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মুনতাছির, দাওয়াতী ও অন্যতম অর্থসরবরাহকারী হাবিবুল্লাহ, বোমা বিশেষজ্ঞ বাশার ও পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন ওরফে চম্পাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সংগঠনের আমীর আনিসুর রহমানের সঙ্গে কেএনএফ এর প্রধান নাথাম বমের সুসম্পর্ক থাকায় কেএনএফ এর সাথে তাদের অর্থের বিনিময়ে চুক্তি হয় এবং কেএনএফ ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র জঙ্গিদের পাহাড়ে আশ্রয়, অস্ত্র ও রশদ সরবরাহ এবং সশস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান করতো। পরবর্তীতে র্যাবের অব্যাহত অভিযানের ফলে পাহাড়কে নিরাপদ না মনে করায় আমীরের নির্দেশে জঙ্গিরা পাহাড় হতে পলায়ন করে সমতলের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে যায় এবং পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম শুরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিব সংগঠনের কয়েকজন সদস্যসহ গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরের দিকে যাচ্ছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত রাতে র্যাব-১ ও ৭ এর আভিযানিক দল গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে একটি সিএনজি হতে সংগঠনের শুরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মো. মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিব, জাকারিয়া হোসাইন ও মো. আহাদুল ইসলাম মজুমদার ওরফে সিফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১টি বিদেশি পিস্তল ও নগদ ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী লিফলেট।
কর্মসংস্থান ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. মনির হোসাইন (৩৫)। আড়ালে তিনি একজন ক্রিমিনাল। সে ‘এসএসসি বন্ধন ২০০১ বাংলাদেশ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলে এবং তার মাধ্যমে একের পর এক মেয়ের সর্বনাশ করে চলেছে। এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৭,০০০ জন এবং সে নিজে তার মডারেটর।
সাইবার পুলিশ সিআইডি’র কাছে একটি অভিযোগ আসে, ওই গ্রুপের এক নারী সদস্যকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, প্রথমে তাকে ওই গ্রুপের সদস্য করে এবং পরে মডারেটর বানানোর প্রস্তাব দেয়। তাকে গ্রুপে আরও ক্ষমতাবান করা হবে এবং নানাবিধ সুযোগ সুবিধা দেয়ার প্রলোভন দেখায়। বিভিন্ন যায়গায় এক সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় এবং খাওয়া-দাওয়া করে। বিভিন্ন ছলনা করে তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং কৌশলে সেই অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি তুলে রাখে, ভিডিও করে রাখে। পরবর্তীতে সেই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার বর্ণিত নারী সদস্যের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে আসছিলো তথাকথিত এই এডমিন মো. মনির হোসাইন।
মনির হোসাইন অভিযোগকারী নারী সদস্য ছাড়াও অন্যান্য একাধিক নারী সদস্যদের সাথে একইভাবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ও পরবর্তীতে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছে। এজন্য বাড্ডা এলাকায় তার গোপন হেরেমখানা তৈরি করে। বাহিরে বাঁশের বেড়া, টিনের ঘর, দেখলে চোখে পড়ার মত তেমন কিছু নয়। কিন্ত ভেতরে এসি রুম, উন্নত শয়ন কক্ষ, এটাচ বাথরুম, ইয়াবা সেবন করার ব্যবস্থাপনা। মৌজ-মাস্তি করার সকল উপকরণ মজুদ সেখানে। ছিল একাধিক গোপন ক্যামেরাও। এই গোপন ক্যামেরা দিয়ে সে তার অনৈকিত কাজের সব ছবি এবং কর্মকাণ্ড রেকর্ড করে রাখত।
গত রবিবার সন্ধ্যায় সাইবার ইন্টেলিজেন্স এন্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এর একটি টিম ঢাকার রামপুরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত গ্রুপের এডমিন মনির হোসাইনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে বিভিন্ন নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ও ছবি সম্বলিত ২ টি মোবাইল ফোন, ৩ টি সিম কার্ড, এবং ২ টি মেমোরি কার্ড, ২ টি গোপন ক্যামেরা/ডিভাইস জব্দ করা হয়।
তদন্তে সিআইডি জানতে পারে, ‘এসএসসি বন্ধন ২০০১ বাংলাদেশ’ গ্রুপের এডমিন হিসেবে সে এই নারীসহ একাধিক নারীর সাথে গ্রুপের মডারেটর বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ভিডিও কলে কথা বলে ও তা স্ক্রিন রেকর্ড করে রাখে। পরবর্তীতে সেই স্ক্রিন রেকর্ড ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং কৌশলে তাও ভিডিও করে রাখে বা ছবি তুলে রাখে। পরবর্তীতে আবার সেই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পুনরায় ব্ল্যাকমেইল করে প্রতিনিয়ত তাদেরকে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করে। ভিকটিমকে জোর করে ছুরির ভয় দেখিয়ে পর্যন্ত ধর্ষণ করতো। ভিকটিমের স্বামী অফিসে চলে গেলে কখনো কখনো সে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে হানা দিত। তার অত্যাচারে ভিকটিমের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়।
তদন্তে আরও জানা যায়, বিভিন্ন মেয়েকে নিজের কব্জায় নিয়ে টাকার বিনিমেয়ে ধনাঢ্য লোকদের নিকট পাঠাত। বিনিময় মূল্য কখনো ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা ছাড়িয়ে যেত। ভিকটিমরা সামান্য টাকা পেলেও মনির পেত টাকার সিংহভাগ। এভাবে সে মেয়েদের উপর জুলুম এবং অত্যাচার করে আসছিল। কিন্তু সিআইডির ফাঁদে তাকে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হলো।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিএমপি’র রুপনগর থানায় পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে যার নং ০৪, তারিখ ০৪/০৬/২০২৩ ইং, ধারা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ধারা ৮ (১)(২)(৩)। তদন্ত অব্যাহত আছে।
রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেক এলাকায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের বাসায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনার প্রায় চার বছর পর ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রো (উত্তর)।
এ সময় তারেক হাওলাদার (২১) নামে এক চোরকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। এ ছাড়া মাটি খুরে উদ্ধার করা হয়েছে চুরি হওয়া লাইসেন্সকৃত পিস্তল।
শনিবার (০৩ জুন) রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের নোয়াপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তারেককে।
পিবিআই এর তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেপ্তার তারেক হাওলাদার পেশাদার অপরাধী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তবে ওই চুরির ঘটনার পর তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। সেখানে গিয়ে বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করেন। আর অস্ত্রটি মাটির নিচে রেখে দেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. সামছুল হুদার (৬৩) রাজধানীর ভাষানটেক থানা এলাকার ১১ নম্বর সড়কের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে ডিএমপির ভাষানটেক থানায় মামলা করেন।
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পিবিআই এর বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্তে করলেও পরে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। সোর্স নিয়োগ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চোরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তারেক হাওলাদার জানান চোরাইমালের মধ্যে থাকা অস্ত্রটি (পিস্তল) তার নিজ বসত ঘরের রান্না ঘরে মাটির নিচে পুতে রেখেছেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সামনে বসত বাড়ির রান্না ঘরের মেঝেতে ৩ ফুট মাটি খুঁড়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সামছুল হুদা গুলশান ২ নম্বরে ল্যাব এইডের চেম্বার প্র্যাকটিস করার জন্য ঘটনার দিন বিকেলে ফ্ল্যাট থেকে বের হন। তার বাসার অন্যান্য সদস্যরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ করে রেখে যান। ওই দিন রাত আনুমানিক ১১টার দিকে বাসায় ফিরে ফ্ল্যাটের দরজার তালা খোলার পর ভেতর থেকে বন্ধ পান। পরে পাশের বাসার কেয়ারটেকার মাহবুব ও নিয়মিত মিস্ত্রি মো. মিজানকে ডেকে আনেন।
মিস্ত্রি দরজার লক খোলার চেষ্টাকালে দেখেন ভিতর থেকে লক করা। তখন সিকিউরিটি গার্ড মো. সোহাগ সিঁড়ির সাইড দিয়ে প্রবেশ করে ফ্ল্যাটটির পেছনের রুমের গ্রিলকাটা দেখতে পায়। এ সময় সামছুল হুদার গাড়ীর ড্রাইভার তরিকুল ইসলাম কাটা গ্রিলের ভেতর দিয়ে রুমের ভেতর প্রবেশ করে দরজা খুলে দেন। তখন বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন তার বেডরুমের আলমারির ড্রয়ার বিছানায় পড়ে আছে এবং আলমারি খোলা ও তছনছ করা।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, চোরেরা বাসার গ্রিল কেটে নগদ টাকা, বিদেশি হাত ঘড়ি, ডলার, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়, সব মিলে যার মূল্য প্রায় ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া আলমারির ড্রয়ার থেকে লাইসেন্সকৃত ১টি পিস্তল, কার্তুজ ৫০ রাউন্ড ও ২টি ম্যাগাজিন চুরি করে নিয়ে যায়।
লিওনেল মেসি ঘোষণা দিলেন, ‘আমি ইন্টার মিয়ামিতে যাচ্ছি।’
রাতে স্প্যানিশ গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে এ ঘোষণা দিয়েছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক।
ডারিও স্পোর্টকে তিনি জানান, ‘আমার ইউরোপের আরেক ক্লাব থেকে প্রস্তাব ছিল। কিন্তু ওই প্রস্তাব দেখিওনি, কারণ আমি ইউরোপে খেললে বার্সেলোনায় খেলতে চেয়েছে। বিশ্বকাপ জেতার এবং বার্সাতে না যেতে পারায়, এখন সময় যুক্তরাষ্ট্র লিগে খেলার এবং ভিন্নাভাবে ফুটবলকে উপভোগ করার। তবে দায়িত্ব থাকবে একই এবং আকাঙ্খা থাকবে জেতার এবং অবশ্যই ভালো করার। তবে আরো শান্তিপূর্ণভাবে।’
মেসি জানান, ‘বুসকেটস আর জর্ডি আলবার সাথে যোগাযোগ ছিল, কখনো তাদের সাথে একই জায়গায় যাওয়ার ব্যাপারে কথা হয়নি। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিজে নিয়েছি।’
শৈশবের ক্লাব বার্সেলোনা থেকে মনের কষ্ট নিয়েই ২০২১ সালে স্পেন ছেড়ে ফ্রান্সের পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। দু'বছর পর আবার বার্সেলোনায় ফিরতে চেয়েছিলেন খুব করে। তার জন্য বাধা হয়ে দাড়ানো লা ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে'র অনুমোদনও দিয়েছিল লিগা কর্তৃপক্ষ। মেসি চাচ্ছিলেন আগের বার তাকে যেভাবে চলে যেতে হয়েছিল বার্সেলোনা ছেড়ে, সেটা যেন না হয় পরে।
দুদিন ধরে এ নিয়ে কথাবার্তা হলেও বার্সেলোনা সেই নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। মেসির কাছে ছিল দুটি অপশন- সৌদি ক্লাব আল-হিলালের দুবছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব গ্রহণ করা নয়তো মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মিয়ামির প্রস্তাব গ্রহণ করা। আল হিলালকে এক বছরের জন্য অপেক্ষায় থাকবে বলেছিলেন মেসি দুদিন আগে। বাকি ইন্টার মিয়ার প্রস্তাব। সেটাই গ্রহণ করে যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাব ফুটবল খেলতে যাচ্ছেন।
মেসির সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি হচ্ছে ইন্টার মায়ামির। প্রতিবছর শেষ মেসি ক্লাব ছেড়ে দিতে পারবেন, না দিলে সয়ংক্রিয় ভাবে তিনি পরের বছর খেলবেন। বছর প্রতি ৫৪ লাখ ডলার পারিশ্রমিক পাবেন তিনি।
এবার অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ।
বুধবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২২-২৩ হিসাববছরের নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে লভ্যাংশের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ১ জুন কোম্পানিটি ২০২১-২২ হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
কোম্পানি সূত্র জানায়, চলতি ২০২২-২৩ হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে পণ্য বিক্রি করে আয় হয়েছে ৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। উৎপাদন, পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় সমন্বয়ের পর কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এতে করে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা (ইপিএস) দাঁড়ায় ৮৭ পয়সার কিছুটা বেশি।
তবে এফআরসির বিধান অনুযায়ী, শেয়ার মানি ডিপোজিটের বিপরীতে নতুন ইস্যু করা শেয়ার বিবেচনায় নয় মাসে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৫৮ পয়সা। এই আয় থেকেই শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রায় ছয় বছর বন্ধ থাকার পর জাপানি বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনায় ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। জাপানি প্রতিষ্ঠান মিনোরি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে উৎপাদনে ফেরে মৃতপ্রায় এমারেল্ড। উৎপাদিত রাইস ব্র্যান অয়েল বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৪৫ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগ ও নতুন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এমারেল্ডে প্রাণ ফিরিয়ে আনে মিনোরি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় কোম্পানিটির প্রধান উদ্যোক্তা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ায় ২০১৬ সালে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এমারেল্ড অয়েলের। এ কারণে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে টানা পাঁচ বছর শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। মিনোরির তত্ত্বাবধানে এখন লভ্যাংশ দেওয়া শুরু করেছে কোম্পানিটি।
মিনোরির নতুন বিনিয়োগের বিপরীতে গত ১০ এপ্রিল এমারেল্ড অয়েলের আরও ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫৮ হাজার নতুন শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দিয়েছে এসইসি, যা মিনোরি বাংলাদেশের নামে ইস্যু করা হবে। এর আগে বাজার থেকে এমারেল্ড অয়েলের ৪৬ লাখ শেয়ার কেনে মিনোরি বাংলাদেশ। নতুন শেয়ার যুক্ত হলে এমারেল্ড অয়েলের পরিশোধিত মূলধন ৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকায় উন্নীত হবে।
ফুটবল কিংবদন্তী পেলের গোটা জীবন কেটেছে ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোসে। বিশ্ব ফুটবলে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে যিনি আলো ছড়িয়েছেন, তিনি ক্যারিয়ারের সেরা সময় যাননি ইউরোপের কোনো ক্লাবে।
তবে ১৯৭৪ সালে ৩৪ বছর বয়সে সান্তোসের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানেন ফুটবল সম্রাট। পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।
১৯৭৫ সালে নিউ ইয়র্ক কসমসে যোগ দেন। সেই বছরের ১৫ জুন ক্লাবটিতে নাম লিখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসেন।
যে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষজন একটা সময় ফুটবল খেলাই দেখতে যেতেন না, পেলে যোগ দেওয়ার পর ৮০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। সেদিনই পেলে নিউইয়র্ক জয় করেছিলেন।
পেলে কসমসে যাওয়ার ১৫ বছর পর ফের বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে টুর্নামেন্টের অভিষেক আসরের তৃতীয় স্থান অর্জনকারী যুক্তরাষ্ট্র। সেই থেকে শুধুমাত্র ২০১৮ সাল ছাড়া প্রতিটি বিশ্বকাপেই খেলেছে তারা। ২০০২ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন। কাতার বিশ্বকাপেও শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়ে হয়েছে ১৪তম দল হয়ে।
বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডে দারুণ একটা মৌসুম কাটিয়েছেন জুড বেলিংহাম। অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে নজর কেড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের। আর তাই তো নতুন মৌসুম শুরু করবেন এই ক্লাবের জার্সি গায়ে। ইংল্যান্ডের এই মিডফিল্ডারকে দলে নিতে ১০৩ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে রাজি হয়েছে ব্ল্যাঙ্কোরা।
এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ডর্টমুন্ড। তারা জানিয়েছে, স্প্যানিশ দলটি ১০৩ মিলিয়ন ইউরো দিতে সম্মত হয়েছে। যেখানে আনুসাঙ্গিক আরও অনেক বিষয় জড়িয়ে। যদি সেটা অর্জন করা সম্ভব হয়, তবে চুক্তিটি ১৩৩.৯ মিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছতে পারে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে বার্মিংহাম সিটি থেকে ডর্টমুন্ডে যোগ দেন ১৯ বছর বয়সী বেলিংহাম। কাতার বিশ্বকাপেও ইংলিশদের সেরা পারফরমার ছিলেন তিনি। ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল উভয় ক্লাবই তাকে পাওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিল। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত মাদ্রিদে পাড়ি দিচ্ছেন।
এই চুক্তির মাধ্যমে বেলিংহামে বিশ্বের তৃতীয় দামি তরুণ ফুটবলার হতে চলেছেন। ২০১৯ সালে ইডেন হ্যাজার্ড ১১৫ মিলিয়ন ইউরোতে চেলসি থেকে রিয়ালে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
বেলিংহাম এই মৌসুমে তার ক্লাবের হয়ে ৪২ ম্যাচ খেলে ১৪ গোল করেছেন। সাতটি গোল তিনি করিয়েছেন।
ডারিও স্পোর্ট ও মুন্ডো দেপোর্তিভোর সঙ্গে লিওনেল মেসির সাক্ষাৎকারের চুম্বক আংশ
বার্সেলোনায় ফিরবেন না জানার পর, আপনি কি সিদ্ধান্ত নিলেন? সৌদি আরব না, মায়ামি?
মেসি: আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি মিয়ামিতে যাব। আমি এখনও এ ব্যাপারে শতভাগ জানিনা, কিছু ব্যাপার বাকি আছে, তবে আমি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আপনি কি বুসকেটস, আলবার সাথে কথা বলেছিলে? মেসি: কথা উঠেছিল যে আমি নাকি বুসি, জর্দির সাথে সৌদিতে যাচ্ছিলাম। বলবো সবাই যার যার ভবিষ্যত বেছে নিচ্ছে। আমি তাদের ব্যাপারটা জানাতাম কিন্তু কখনোই কোনো মুহূর্তে আমরা একসঙ্গে কোথাও যেতে রাজি হইনি। আমি নিজের জন্য আমার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমি জানি না তারা কী করতে যাচ্ছে। আমি কারও সাথে কিছু সেটআপ করিনি।
কি বলবেন, ফোকাস ছেড়ে যাচ্ছেন?মেসি: হ্যাঁ. ইউরোপ ছেড়ে। সত্যি বলতে আমার কাছে অন্য ইউরোপীয় দল থেকে অফার ছিল, কিন্তু আমি তা মূল্যায়নও করিনি কারণ ইউরোপে আমার একমাত্র চিন্তা ছিল বার্সেলোনায় যাওয়া। বিশ্বকাপ জেতার পরে এবং বার্সায় যেতে না পারায় এখন সময় ফুটবলকে অন্যভাবে উপভোগ করতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লিগে যাওয়া। অবশ্যই দায়িত্ব একই এবং আকাঙ্খা, জয়।
আপনি কি বার্সাকে মিস করেছেন?মেসি: হ্যাঁ, স্পষ্টতই হ্যাঁ, আমি তাকে মিস করেছি। এবং শুরুতে প্রথম বছরটি আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। বার্সা আমার মনের মধ্যে ছিল, খেলা দেখেছি সবসময়। স্মৃতিগুলো অনুরোণিত হতো।
বার্সা যে লিগ জিতলো নিশ্চয়ই খুব খুশি হয়েছিলনমেসি: অবশ্যই। সারা বছর ক্লাবকে অনুসরণ করেছি এবং আমি বার্সেলোনা সমর্থকদের মতোই বার্সার শিরোপা দেখতে চেয়েছিলাম। এমনকি প্রথম বছরেও, আমি কয়েকটি খেলার পর জাভির সাথে অনেক কথা বলেছিলাম।
বার্সায় ফিরে আসা সম্ভাবনা সম্পর্কে, আপনি কি কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন?মেসি: হ্যাঁ, হ্যাঁ। আমি খুব খুব উত্তেজিত ছিলাম। কিন্তু, অন্যদিকে, আগে যা ঘটেছিল একই ব্যাপারটা ঘটুক চাচ্ছিলাম না। একই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে চাইনি। আমি আমার ভবিষ্যৎ অন্যের হাতে ছেড়ে দিতে চাইনি। কোনোভাবে, আমি নিজের সম্পর্কে, আমার পরিবারের কথা ভেবে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। যদিও আমি শুনেছি যে বলা হয়েছিল যে লা লিগা সবকিছু মেনে নিয়েছে এবং আমার ফিরে আসার জন্য সবকিছু ঠিক আছে... এখনও অনেক কিছুর ঘাটতি ছিল। শুনেছি যে ক্লাবে খেলোয়াড়দের বিক্রি করতে হয়েছে বা খেলোয়াড়দের বেতন কমানো হয়েছে এবং সত্য হল যে আমি এর মধ্য দিয়ে যেতে চাইনি, দায়িত্ব নিতে চাইনি বা এই সমস্ত কিছুর সাথে কিছু করতে চাইনি।...?বার্সেলোনায় আমি যখন ছিলাম তখনকার অনেক কিছুর জন্য আমাকে দায়ী করা হয়েছিল। এসব শুনে কিছুটা ক্লান্ত ছিলাম। আমি চাইনি এসবের মধ্যে আর যেতে। আমি যখন ছেড়ে যেতে চাচ্ছিলাম বলা হয়েছিল যে লা লিগা সবকিছু মেনে নিয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা করা যায়নি। এবার ভয়ে ছিলাম যে একই জিনিস আবার ঘটবে এবং আমাকে তখন দৌড়াতে হবে যেমনটি ঘটেছিল। এখানে প্যারিসে আসা, আমার পরিবারের সাথে একটি হোটেলে দীর্ঘ সময় থাকা, আমার বাচ্চাদের সাথে স্কুলে যাওয়া এবং এখনও সেখানেই থাকা। আমি আমার নিজের সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। আর সে কারণেই বার্সায় ফেরাটা হলো না।
মন কি বলে?মেসি: ফিরে যেতে পারলো ভালো হতো। আমিও এমন একটি মুহুর্তে আছি যেখানে আমি একটু ফোকাস থেকে বেরিয়ে আসতে চাই, আমার পরিবার সম্পর্কে আরও ভাবতে চাই। আমি যেমন বলছিলাম, মাত্র দুই বছর সময়.. পারিবারিক পর্যায়ে এতটাই খারাপ ছিলাম যে আমি এটা উপভোগ করিনি। সেই মাসটা ছিল অসাধারণ যে সময় বিশ্বকাপ জিতলাম। কিন্তু এরপর খুবই কঠিন সময় কেটেছে। পরিবারের সঙ্গে, বাচ্চাদের সঙ্গে ভালো সময় খুজে বেড়াতাম। আর একারণেই বার্সেলোনার ঘটনা ঘটল না।
এ সব কারণই কি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করলো? মেসি: আমি নিজের সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আবার অপেক্ষা করতে বাধ্য হইনি। ঝুকি নিতে চাইনি যা দুবছর আগে ঘটেছিল। যেমনটা বলছিলাম, আমার আরাধ্য বিশ্বকাপ অর্জনের পর ভিন্ন কিছু এবং কিছুটা মানসিক শান্তি চাচ্ছিলাম
ক্লাবের বিভিন্ন স্তর থেকে বলা হচ্ছিল আপনার ফিরে আসা আপনার উপর নির্ভর করে। জাভি এমনকি আপনার হাতেই ৯৯% বলেছিলেন। কিন্তু পাশাপাশি এটাও ঠিক যে কিছু মিসিং ছিল। এটাকে কিভাবে ব্যাখ্যা দেবেন?মেসি: ঠিক আছে, আমি যা কিছু বলা হয়েছিল, যা বেরিয়ে আসছে, জাভি যা বলেছে তার কিছুটা শুনেছি, তবে তা ছিল সাম্প্রতিক। লা লিগাও ওকে করেছে। কিন্তু এটা ঠিক নয় সিদ্ধান্তটা আমার, কারণ এখনও অনেক কিছুই মিসিং ছিল। একটি লম্বা প্রত্যাশিত ছিল যে আমি ইতিমধ্যে যা অতিক্রম করেছি তার জন্য আমি আর যেতে চাই না। আমি এটা শেষ করতে চেয়েছি, শান্ত মনে ভবিষ্যত সম্পর্কে ভেবেছি। পরিকল্পনা নিয়েছি যা হওয়া সম্ভব তাই।
প্যারিসে এই দুই বছর আপনি বলেছেন যে আপনি খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না- এটা কি আপনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে?মেসি: একটু, হ্যাঁ, একটু হ্যাঁ, কারণ আমি সম্প্রতি বলেছিলাম, সত্য হল যে দুটি বছর ছিল যেখানে আমি সুখী ছিলাম না, যেখানে আমি নিজেকে উপভোগ করিনি এবং এটি আমার পারিবারিক জীবনকে প্রভাবিত করেছিল। বাচ্চারা অনেক কিছু মিস করছিল। আমার সিদ্ধান্ত নেয়াটা সেসব কারণেও। পরিবারের সাথে মিলিত হওয়া, বাচ্চাদের সঙ্গে থাকা এবং প্রতিটা দিন উপভোগ করা। আমি আগে যেমন বলেছিলাম যে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে তিনি আমাকে ফুটবলের সবকিছু অর্জন করতে দেননি। এজন্যই আজ আমি খেলার বাইরে থাকাতে পারি, যা আমার আগ্রহকে জাগিয়ে তোলে, পরিবারকে নিয়ে আগ্রহী করে তোলে, তাদের মঙ্গল ভাবতে পারি।
প্রেসিডেন্ট লাপোর্তার কথা, জাভির কথা বলি। তারা কি আপনার সাথে যোগাযোগ করেছে, এই প্রক্রিয়া জুড়ে কি তাদের সাথে কোনো সংলাপ হয়েছে?মেসি: বাস্তবে, আমি প্রেসিডেন্ট লাপোর্তার সাথে খুব কম কথা বলেছি। এই দুই বছরে আমরা একবার বা দুবার কথা বলেছি। জাভির সাথে আমার অনেক যোগাযোগ আছে, ক্লাবে আসার পর থেকে বেশি। আমার ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে কথা হতো। এবং আমরা খুব উত্তেজিত ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তুমি সত্যিই আমাকে ফেরা দেখতে চাও, আমার ফেরাটা কি দলের জন্য ভালো হবে। এসব কথা হতো।
এই পুরো প্রক্রিয়ায়, আপনার সিদ্ধান্ত নিতে অর্থনৈতিক বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এমনও তো বলা হচ্ছিল ফ্রিতেও খেলতে পারেন? মেসি: অর্থ আমার জন্য কোন সমস্যা ছিল না, বা কোন বাধা ছিল না। আমরা চুক্তির কথাও বলিনি। একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছিল, কিন্তু এটি একটি আনুষ্ঠানিক, লিখিত, স্বাক্ষরিত প্রস্তাব ছিল না কারণ আদৌ আমার ফেরাটা সম্ভব ছিল না জানা ছিল না। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থের কথাও বলি না। যদি টাকার প্রশ্ন থাকত, আমি আরব বা অন্য কোথাও চলে যেতাম, সেখানে তারা আমাকে প্রচুর অর্থের প্রস্তাব দেয়। আমার সিদ্ধান্ত গেছে অন্য কারণে টাকার জন্য নয়।
এই যে ক্ষতটা তৈরি হলো..এর মধ্যে কোনোদিন কি বার্সেলোনায় টেকনিক্যাল সেক্রেটারি বা অ্যাম্বাসেডর হয়ে আসতে চান?মেসি: অবশ্যই। আমি সবসময় ক্লাবের কাছাকাছি থাকতে চাই। আরও কী, আমি বার্সেলোনায় বাস থাকতে যাচ্ছি। এটি এমন একটি বিষয় যা আমরা আমার স্ত্রী এবং আমার সন্তানদের সম্পর্কে খুব স্পষ্ট। আশাকরি। আমি জানি না কোন সময়ে, কি, বা কখন, তবে আমি আশা করি আমি একদিন কিছু অবদান রাখতে এবং সাহায্য করতে ফিরে আসতে পারব কারণ এটি এমন একটি ক্লাব যা আমি ভালোবাসি। আমার ক্যারিয়ার জুড়ে আমি মানুষের স্নেহ পেয়েছি এবং আমি আবার সেখানে থাকতে চাই।
পুরো প্রক্রিয়াটি উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে মনে করি। এমন কিছু কি আছে যা আপনাকে বিশেষভাবে আঘাত করেছে, নাকি আপনি এসব পাত্তাই দিচ্ছে না?মেসি: না, না, আমি আগেই বলেছি, অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে, অনেক কিছু ফাঁস হয়েছে, অনেক মিথ্যা... কোনটাই অস্বীকার করতে পারি না। অনেক সাংবাদিক আছেন যারা অনেক মিথ্যা বলেন এবং ছবি তোলেন এবং কিছুই হয় না। পরের দিন সে আবার আরেকটি মিথ্যা বলে এবং কিছুই হয় না। এবং আমি তাই মনে করি, এমন অনেক বিষয় ছিল যা আমাকে বিরক্ত করেছিল।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ৯৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা নতুন বাজেটে এই বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণের ফলে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, দ্বৈত জ্বালানি, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, রামপালে কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ও পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন এবং ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া, ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে পাশর্^বর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি ঝাড়খ-ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে শিগগিরই। তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে সংগ্রহ করতে চাই। এরসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ৬০ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে অফ গ্রিড এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডিজেলচালিত পাম্পের জায়গায় সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করার অংশ হিসেবে সেচকাজে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৫৭০টি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৮৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সর্বোপরি, রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উৎপাদিত বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে ৬ হাজার ৬৪৪ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সঞ্চালন লাইন ১৪ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া বিতরণ লাইন ৩ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ৬ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুতের সিস্টেমলস ১৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার কিলোমিটারে সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের অপব্যবহার রোধের লক্ষ্যে গত ৫ বছরে প্রায় ৫৩ লাখ প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায়, জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ৮ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি করে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই মজুদ ক্ষমতা ৩০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনে বাড়ানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উদ্বোধন করা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করা জ্বালানি তেল (ডিজেল) দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় এবং সৈয়দপুরে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকায় একটি বৃহৎ সমন্বিত তেল শোধনাগার স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের সিদ্ধান্ত আছে। সম্প্রতি ভোলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানোর পর দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ৯৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এতে অতিরিক্ত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হওয়ায় আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি এবং স্পট মার্কেট থেকেও কেনা হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বাজেট বক্তৃতায় আরও বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৮ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় ২১৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২৬ সালের মধ্যে পায়রা ও ভোলা থেকে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য আরও ৪২৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি অপচয় রোধে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজও চলছে।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের সামগ্রিক বাজেট আকারে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড় হলেও আগামী বছরের শিক্ষা-বাজেট দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। তবে টাকার অঙ্কে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু শিক্ষা খাত হিসাব করলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দ ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে তা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ০১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
ইউনেস্কো, শিক্ষাবিদ বা অংশীজনরা অনেক দিন ধরেই শিক্ষায় জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলছেন। এটাকে তারা বরাদ্দ হিসেবে না দেখে আগামী দিনের বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে বলছেন। গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষায় বরাদ্দ ১২ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। জিডিপির হিসাবে তা ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে শিক্ষায় বরাদ্দের সংগতি নেই। বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। এজন্য দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী প্রয়োজন। কিন্তু এ জনগোষ্ঠী তৈরির জন্য প্রয়োজন শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ। বরাবরের মতো এবারও শুভংকরের ফাঁকি লক্ষ করছি। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি মিলিয়ে আকার বড় করা হলেও চলতি অর্থবছরের চেয়েও বরাদ্দ কমেছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বাজেটে দিকনির্দেশনা দেখছি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শিক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশের নিচে বরাদ্দ কাক্সিক্ষত নয়। আগামী অর্থবছরে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দিলে ভালো হতো। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত ছিল। সেটা আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের বাজেটে মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে, যা খুবই ভালো। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে। শিক্ষায় বরাদ্দের সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’
আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
বাজেট ঘিরে প্রতি বছরই বেসরকারি শিক্ষকদের অন্যতম দাবি থাকে শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও শতভাগ উৎসব-ভাতা প্রদান। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রাখাও তাদের অন্যতম দাবি। কিন্তু সেসব বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। তবে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য খাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে এবার বরাদ্দ ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়লেও মোট বাজেটের তুলনায় তা কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে খাতটিতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে তা ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ১৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ১২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ৮ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকেই নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবার টাকার অঙ্কে গত বছরের তুলনায় (বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছর) ১ হাজার একশ কোটির মতো বেড়েছে। কিন্তু বাজেট শেয়ারে সেটা কমেছে। সামগ্রিক বাজেটের গ্রোথ বা বৃদ্ধি ১২ শতাংশ, কিন্তু স্বাস্থ্যের বাজেটের বৃদ্ধি ৩ শতাংশ। তারমানে রাষ্ট্রীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব কমেছে। সেই কারণে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, এবার কমার যৌক্তিক কারণ আছে। সেটা হলো স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্টর প্রোগ্রামে উন্নয়ন বাজেট থেকে অর্থ আসে। সেই সেক্টর প্রোগ্রাম এই অর্থবছরে শেষ হয়ে প্রস্তাবিত অর্থবছর থেকে নতুন সেক্টর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান সেক্টর প্রোগ্রাম সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারায় সেটার সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই এক বছরের জন্য নতুন বাজেট থাকে না, পুরনো বাজেট থেকেই ব্যয় করতে হয়। ফলে বরাদ্দ না বাড়িয়ে পাঁচ বছরের বাজেট যদি ছয় বছরে গিয়ে ঠেকে, তাহলে প্রতি বছর টাকা কমে যায়। মূলত এ কারণে এবার টাকা কমে গেছে।
সরকার স্বাস্থ্য খাতে এবারও কিছু থোক বরাদ্দ রাখতে পারত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, কভিড ছাড়াও আমাদের অনেক জরুরি খাত আছে। এখন ডেঙ্গু চলছে। এটি ইমার্জেন্সি হয়ে যাবে। ফলে এটার জন্য যে ফান্ড দেওয়া আছে হাসপাতালে, রোগী বাড়লে সেটা দিয়ে হবে না। এরকম ইমার্জেন্সি আরও আসতে পারে। এরকম একটা থোক বরাদ্দ রাখলে স্বাস্থ্যের ইমার্জেন্সিতে সেখান থেকে ব্যয় করা যেত। কিন্তু সেটাও নেই। তার মানে কভিডের শিক্ষা থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। প্রস্তাবিত বাজেটে সেটার প্রতিফলন নেই।
সামগ্রিকভাবে বাজেটে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়ে যাবে বলেও মনে করছেন এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এতে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধসহ সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
যদিও এবারের বাজেটে ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা আরও সুলভ করার জন্য ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, আইভি ক্যানুলা উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উপাদান সিলিকন টিউবসহ আরও কিছু বিদ্যমান ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তামাক জাতীয় পণ্য যেমন তরল নিকোটিন, ট্রান্সডারমাল ইউস নিকোটিন পণ্যের বিপরীতে ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাসায় তেলাপোকা মারার ওষুধ দেওয়ার পর বিষক্রিয়ায় মারা গেছে রাজধানীর বারিধারা এলাকার ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষারের দুই ছেলে। তার মেয়ে এখনো অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গত শনিবার ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড’ নামের একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বাসায় ওষুধ দিয়ে ছয় ঘণ্টা পরে ঢুকে ঘর পরিষ্কার করতে বলেছিলেন। পরিবারটি ৯ ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ সময় তাদের সবারই পেট খারাপ, বমির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
ওই পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সেই পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি পোকামাকড় নিধনের জন্য অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিল, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে রাজধানীতে গত পাঁচ বছরে এই বিষক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চমাত্রার এই কীটনাশক বাসায় ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ বিভিন্নভাবে সাধারণ কীটনাশক হিসেবে দেদার বিক্রি হচ্ছে সারা দেশে।
সূত্র বলছে, রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক শতাধিক পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কোম্পানির প্রায় ৯৫ ভাগের কোনো অনুমোদন নেই। কৃষি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এসব দেখভাল করার কথা থাকলেও তারাও খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান সেবা নিন প্ল্যাটফর্ম লি.-এর চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অধিক মুনাফার আশায় তারা এক ধরনের নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ব্যবহার করে। আবার অনেকে লিকুইড কেমিক্যাল ব্যবহার করে। কিন্তু কোন মাত্রায় এসব ব্যবহার করতে হয় তার প্রশিক্ষণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।
রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে দেয়াল লিখন ও অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে চটকদার বিজ্ঞাপন। অথচ চাষাবাদ ছাড়া অন্য কাজে যার ব্যবহার নিষিদ্ধ। বদ্ধ ঘরে এই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে যে কারও বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাইকিং করে এসব কীটনাশক বিক্রি করছিলেন কাঞ্চন মিয়া। এ ধরনের কীটনাশক বিক্রির অনুমতি তার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অনুমতি লাগে না। দশ বছর ধরে এই ব্যবসা করি। কেউ তো কিছু বলে না। কোথা থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশিরভাগ পুরান ঢাকা থেকে সংগ্রহ করি। গাজীপুর সাভার থেকেও এসে দিয়ে যায়। এসব ব্যবহারে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে তা জানেন না বলে জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন কীটনাশক জাতীয় একপ্রকার ওষুধের জেনেটিক বা গ্রুপ নাম হলো অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড। বাজারে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট আকারে ফসটক্সিন, সেলফস, কুইকফস, কুইকফিউম, ডেসিয়াগ্যাস এক্সটি ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট গ্যাস ট্যাবলেট নামেও পরিচিত। বাতাসের সংস্পর্শে এসে জীবনবিনাশী ভয়াবহ টক্সিক গ্যাস ফসফিন উৎপাদন করে। এই ট্যাবলেট সাধারণত গুদামজাত শস্যের পোকা দমন, ধান ক্ষেতের পোকা দমন, কলাগাছের পোকা দমন ও ইঁদুর দমনে ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক দশকে দেশে এই বিষাক্ত কীটনাশক মানুষের বাসাবাড়িতে ব্যবহার বাড়ছে। দেশের বাজারে ট্যাবলেট আকারে সহজলভ্য। রাজধানীতে ছারপোকা দমনে প্রায় যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে এই ট্যাবলেট।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বালাইনাশক গ্রহণ করলে সেটা দ্রুত ফুসফুসে শোষিত হয় এবং রক্তে মিশে যায়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ বালাইনাশক শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় তাহলে নাক, গলা ও ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারের যে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান রয়েছে এসব বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোন কোন কীটনাশক কোন মাত্রায় কোন কোন কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সেটি নির্দিষ্ট করে নিশ্চিত করতে হবে। আমদানির সময়ও বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অথবা দেশেই যদি তৈরি করতে হয় তাহলে যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের লাইসেন্স নিয়ে উৎপাদন করতে হবে। এটির গুণগত মান থাকছে কি না তারও পরীক্ষা করতে হবে।
পরিবেশ গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি ওই বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানটি অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করেছে। যদিও আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত না। আমার মতে এটা আরও বেশি তদন্ত করা উচিত। সরকারের যে প্রতিষ্ঠান এসব বিক্রির অনুমোদন দেয় তাদের এই তদন্ত করে জানানো দরকার কী ধরনের কেমিক্যাল সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ পেস্ট কন্ট্রোলের নামে কী ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় এটা জানাটা জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন ধরনের কীটনাশক কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার কোনো নীতিমালা নেই। কীটনাশকগুলো সাধারণ কৃষিজমিতে ব্যবহৃত হয়। ঢাকা শহরে এরকম বিষ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উচিত। তাছাড়া রাস্তাঘাটে এসব জিনিস অহরহ বিক্রি হচ্ছে। এসবও তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
আরও এক কর্মী গ্রেপ্তার : দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় টিটু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বালাইনাশক কোম্পানিটির কর্মকর্তা। গত সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভাটারা থানার ওসি আবুল বাসার মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, ওই ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।