ধানের শীষের প্রার্থী মামাশ্বশুর নৌকার মাঝি ভাগ্নে-বউ
মানিক মজুমদার, হাতিয়া (নোয়াখালী) | ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে যারা নির্বাচনে লড়ছেন, তারা সম্পর্কে ভাগ্নে-বৌ ও মামাশ্বশুর।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে আছেন তার মামাশ্বশুর সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ ফজলুল আজিম।
আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের ভাগ্নে। তাই এখানকার নির্বাচনী আলোচনায় প্রার্থীদের দলীয় পরিচয়কে ছাপিয়ে উঠেছে তাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক। নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বোঝাতে ভোটাররা বলছেন মামাশ্বশুর ও ভাগ্নে-বৌয়ের লড়াই।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস দেশ রূপান্তরকে বলেন, হাতিয়ায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস। একই দিন বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, হাজারো প্রতিকূলতা সত্ত্বেও হতিয়াবাসী তাকেই জয়যুক্ত করবেন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া এই দুজনই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তারা দ্বিতীয়বারের মতো একে অপরের মুখামুখি হচ্ছেন।
এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা প্রার্থী হয়েছিলেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা দুজনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ী হন ফজলুল আজিম। সেবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মামাশ্বশুরের কাছে মাত্র পাচ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান ভাগ্নে-বৌ আয়েশা ফেরদাউস।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ওয়ালী উল্যাহ হাতিয়া আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হন। মনোনয়ন পান মোহাম্মদ আলী। কিন্তু ঋণখেলাপের অভিযোগে মোহাম্মদ আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তারপর এ আসনে তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস কলস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
উপজেলা সভাপতি সাবেক সাংসদ মো. ওয়ালী উল্যাহ নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় হাতিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা, হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওয়ালী উল্যাহ হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপির বহিষ্কৃত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের মঞ্চে বক্তব্য দেন। নির্বাচনে মোহাম্মদ ফজলুল আজিম (হরিণ প্রতীকে) ৭২ হাজার ৯৬৯ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন।
অপর দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস (কলস প্রতীকে) পান ৬৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন (ধানের শীষ) পান ৬৮০ ভোট। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সময় সংস্কারপন্থীর অভিযোগে ২০০৭ সালে ফজলুল আজিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী মোহাম্মদ আলী ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাপা থেকে এবং ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র সাংসদ নির্বাচিত হন। আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন আয়েশা ফেরদাউস।
এবারের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ওয়ালী উল্যাহ ও তার সমর্থক নেতাকর্মীরা গত ১১ ডিসেম্বর আয়েশা ফেরদাউসের জনসভাগুলোতে যোগ দেন।
শেয়ার করুন
মানিক মজুমদার, হাতিয়া (নোয়াখালী) | ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে যারা নির্বাচনে লড়ছেন, তারা সম্পর্কে ভাগ্নে-বৌ ও মামাশ্বশুর।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে আছেন তার মামাশ্বশুর সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ ফজলুল আজিম।
আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের ভাগ্নে। তাই এখানকার নির্বাচনী আলোচনায় প্রার্থীদের দলীয় পরিচয়কে ছাপিয়ে উঠেছে তাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক। নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বোঝাতে ভোটাররা বলছেন মামাশ্বশুর ও ভাগ্নে-বৌয়ের লড়াই।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস দেশ রূপান্তরকে বলেন, হাতিয়ায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস। একই দিন বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, হাজারো প্রতিকূলতা সত্ত্বেও হতিয়াবাসী তাকেই জয়যুক্ত করবেন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া এই দুজনই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তারা দ্বিতীয়বারের মতো একে অপরের মুখামুখি হচ্ছেন।
এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা প্রার্থী হয়েছিলেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা দুজনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ী হন ফজলুল আজিম। সেবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মামাশ্বশুরের কাছে মাত্র পাচ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান ভাগ্নে-বৌ আয়েশা ফেরদাউস।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ওয়ালী উল্যাহ হাতিয়া আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হন। মনোনয়ন পান মোহাম্মদ আলী। কিন্তু ঋণখেলাপের অভিযোগে মোহাম্মদ আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তারপর এ আসনে তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস কলস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
উপজেলা সভাপতি সাবেক সাংসদ মো. ওয়ালী উল্যাহ নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় হাতিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা, হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওয়ালী উল্যাহ হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপির বহিষ্কৃত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের মঞ্চে বক্তব্য দেন। নির্বাচনে মোহাম্মদ ফজলুল আজিম (হরিণ প্রতীকে) ৭২ হাজার ৯৬৯ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন।
অপর দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস (কলস প্রতীকে) পান ৬৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন (ধানের শীষ) পান ৬৮০ ভোট। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সময় সংস্কারপন্থীর অভিযোগে ২০০৭ সালে ফজলুল আজিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী মোহাম্মদ আলী ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাপা থেকে এবং ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র সাংসদ নির্বাচিত হন। আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন আয়েশা ফেরদাউস।
এবারের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ওয়ালী উল্যাহ ও তার সমর্থক নেতাকর্মীরা গত ১১ ডিসেম্বর আয়েশা ফেরদাউসের জনসভাগুলোতে যোগ দেন।