‘এক টাকার মাস্টার’ লুৎফর
রওশন আলম পাপুল, গাইবান্ধা | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
মাস শেষে ৪০০-৫০০ টাকা দিয়ে যেসব ছাত্রছাত্রী প্রাইভেট বা কোচিংয়ে পড়তে পারে না, প্রতিদিন হেঁটে হেঁটে তাদের বাড়িতে গিয়ে পাঠদানের পর প্রতিজনের কাছ থেকে মাত্র এক টাকা করে নিতেন বলে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন এক টাকার মাস্টার হিসেবে। ৬৬ বছর বয়সী এই শিক্ষকের নাম মো. লুৎফর রহমান। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুড়িয়া গ্রামে। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এক টাকা করে নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করেছেন। সংসার চালাতে না পেরে বর্তমানে তিনি প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিদিন পাঠদানের জন্য তিন থেকে পাঁচ টাকা করে নেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লুৎফর রহমানের বাড়ি ছিল ফুলছড়ী উপজেলার উড়িয়া গ্রামে। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। প্রায় শতবিঘা জমি, পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভরা গরু ছিল তাদের। ১৯৭২ সালে স্থানীয় গুনভরি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগ দেন। সে সময় তিনি শিশুদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিতেন। বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে গিয়ে বিনেপয়সায় শিক্ষার্থীদের পড়ানো শুরু করেন। সেই থেকেই শুরু।
১৯৭৪ সালে ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেলে লুৎফর রহমান পরিবারসহ আশ্রয় নেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের ডাকাতিয়া গ্রামে। এখানে এসেও তিনি ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর বিনিময়ে প্রতিজনের কাছ থেকে নেওয়া শুরু করেন এক টাকা করে। এখানকার বাড়িও নদীভাঙনের কবলে পড়লে ১৯৮৭ সালে তিনি আশ্রয় নেন একই ইউনিয়নের বাগুড়িয়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন টিনশেড ঘরে। এখনো এখানেই আছেন। তার স্ত্রী লতিফুল বেগম গৃহিণী। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে এসএসসি পাসের পর অর্থাভাবে আর পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
শেয়ার করুন
রওশন আলম পাপুল, গাইবান্ধা | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

মাস শেষে ৪০০-৫০০ টাকা দিয়ে যেসব ছাত্রছাত্রী প্রাইভেট বা কোচিংয়ে পড়তে পারে না, প্রতিদিন হেঁটে হেঁটে তাদের বাড়িতে গিয়ে পাঠদানের পর প্রতিজনের কাছ থেকে মাত্র এক টাকা করে নিতেন বলে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন এক টাকার মাস্টার হিসেবে। ৬৬ বছর বয়সী এই শিক্ষকের নাম মো. লুৎফর রহমান। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুড়িয়া গ্রামে। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এক টাকা করে নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করেছেন। সংসার চালাতে না পেরে বর্তমানে তিনি প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিদিন পাঠদানের জন্য তিন থেকে পাঁচ টাকা করে নেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লুৎফর রহমানের বাড়ি ছিল ফুলছড়ী উপজেলার উড়িয়া গ্রামে। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। প্রায় শতবিঘা জমি, পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভরা গরু ছিল তাদের। ১৯৭২ সালে স্থানীয় গুনভরি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগ দেন। সে সময় তিনি শিশুদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিতেন। বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে গিয়ে বিনেপয়সায় শিক্ষার্থীদের পড়ানো শুরু করেন। সেই থেকেই শুরু।
১৯৭৪ সালে ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেলে লুৎফর রহমান পরিবারসহ আশ্রয় নেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের ডাকাতিয়া গ্রামে। এখানে এসেও তিনি ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর বিনিময়ে প্রতিজনের কাছ থেকে নেওয়া শুরু করেন এক টাকা করে। এখানকার বাড়িও নদীভাঙনের কবলে পড়লে ১৯৮৭ সালে তিনি আশ্রয় নেন একই ইউনিয়নের বাগুড়িয়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন টিনশেড ঘরে। এখনো এখানেই আছেন। তার স্ত্রী লতিফুল বেগম গৃহিণী। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে এসএসসি পাসের পর অর্থাভাবে আর পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।