চাঁদপুরে প্রচারে চাঙ্গা আ.লীগ বাধার মুখে বিএনপি
চাঁদপুর প্রতিনিধি | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
চাঁদপুরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করলেও বাধার মুখে পড়ছে বিএনপি। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের কোনোটিতেই স্বস্তিতে প্রচার চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীদের। প্রচারে আওয়ামী লীগ চাঙ্গা থাকলেও বিএনপি দিশেহারা।
চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) আসনে বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি কয়েক বার হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।
চাঁদপুরের সব কটি আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, পথসভা করে ভোট চাইছেন। প্রচার চালাচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা), জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) (মই), জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) প্রার্থী ও তাদের দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
বিএনপির নেতাদের অভিযোগ মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের কারণে তারা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছেন না। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের প্রচার বহরে একাধিক স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
একসময়ের নদীভাঙন-কবলিত চাঁদপুরের ভাঙন রোধ করায় নৌকাকে আবার বিজয়ী করবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে চাঁদপুরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা কোনো সময়ে সম্ভব হয়নি। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়ী করবে।
দীপু মনি চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
এখানে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। তিনি মনে করেন, জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়ী হবে।
মানিক বলেন, ‘আমরা প্রচারে নামলে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের বাধার মুখে পড়ছি। বেশ কয়েকবার আমি হামলার শিকার হয়েছি। গায়েবি মামলা দিয়ে পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। তবে ভোটার ও নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত রয়েছেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।’
চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির মোশারফ হোসেন। গত সপ্তাহে তার নির্বাচনী প্রচারে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এর পর থেকে এলাকাছাড়া মোশারফ।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে আওয়ামী লীগের নূরুল আমিন রুহুলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির ড. জালাল উদ্দিন।
নিজ বাড়িতে পুলিশ তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই প্রার্থী। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচার চালাতে গেলেই হামলার শিকার হচ্ছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির এম এ হান্নান। গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ঋণ খেলাপজনিত কারণে হান্নানের প্রার্থিতা স্থগিত করেছেন।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ধানের শীষের প্রার্থী মমিনুল হক।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল বলেন, ৩০ ডিসেম্বর মানুষ নৌকায় ভোট দিয়ে চাঁদপুরের সব কটি আসনেই আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবে।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, নির্বাচনের আগে অসংখ্য নেতাকর্মীকে পুলিশ গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদেরও ধরার জন্য পুলিশ তৎপর।
এ কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নির্বাচনী প্রচারে চলছে স্থবিরতা। তিনি মনে করেন, জনগণ ভোট দিতে পারলে চাঁদপুরের সব কটি আসনে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন নীরব ভোট বিপ্লব ঘটবে।
শেয়ার করুন
চাঁদপুর প্রতিনিধি | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

চাঁদপুরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করলেও বাধার মুখে পড়ছে বিএনপি। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের কোনোটিতেই স্বস্তিতে প্রচার চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীদের। প্রচারে আওয়ামী লীগ চাঙ্গা থাকলেও বিএনপি দিশেহারা।
চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) আসনে বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি কয়েক বার হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।
চাঁদপুরের সব কটি আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, পথসভা করে ভোট চাইছেন। প্রচার চালাচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা), জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) (মই), জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) প্রার্থী ও তাদের দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
বিএনপির নেতাদের অভিযোগ মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের কারণে তারা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছেন না। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের প্রচার বহরে একাধিক স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
একসময়ের নদীভাঙন-কবলিত চাঁদপুরের ভাঙন রোধ করায় নৌকাকে আবার বিজয়ী করবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে চাঁদপুরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা কোনো সময়ে সম্ভব হয়নি। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়ী করবে।
দীপু মনি চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
এখানে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। তিনি মনে করেন, জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়ী হবে।
মানিক বলেন, ‘আমরা প্রচারে নামলে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের বাধার মুখে পড়ছি। বেশ কয়েকবার আমি হামলার শিকার হয়েছি। গায়েবি মামলা দিয়ে পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। তবে ভোটার ও নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত রয়েছেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।’
চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির মোশারফ হোসেন। গত সপ্তাহে তার নির্বাচনী প্রচারে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এর পর থেকে এলাকাছাড়া মোশারফ।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে আওয়ামী লীগের নূরুল আমিন রুহুলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির ড. জালাল উদ্দিন।
নিজ বাড়িতে পুলিশ তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই প্রার্থী। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচার চালাতে গেলেই হামলার শিকার হচ্ছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির এম এ হান্নান। গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ঋণ খেলাপজনিত কারণে হান্নানের প্রার্থিতা স্থগিত করেছেন।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ধানের শীষের প্রার্থী মমিনুল হক।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল বলেন, ৩০ ডিসেম্বর মানুষ নৌকায় ভোট দিয়ে চাঁদপুরের সব কটি আসনেই আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবে।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, নির্বাচনের আগে অসংখ্য নেতাকর্মীকে পুলিশ গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদেরও ধরার জন্য পুলিশ তৎপর।
এ কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নির্বাচনী প্রচারে চলছে স্থবিরতা। তিনি মনে করেন, জনগণ ভোট দিতে পারলে চাঁদপুরের সব কটি আসনে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন নীরব ভোট বিপ্লব ঘটবে।