সংরক্ষিত বনের শতবর্ষী গর্জন পাচার হচ্ছে
মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) | ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০
শতবর্ষী গর্জনসহ (মাদার ট্রি) অন্যান্য গাছ রক্ষায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল (রিজার্ভ ফরেস্ট) ঘোষণা দিয়েও তা বাঁচানো যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, বনকর্মীদের সহায়তায় মূল্যবান গাছ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় উজাড় হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
অভিযোগ রয়েছে, গত তিন মাসে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধীন পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জের অধীন বারবাকিয়া বিট, টইটং বিট ও পহরচাঁদা বন বিটের অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্পট থেকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামজিক বনায়নের আওতাভুক্ত শতবর্ষী গর্জনসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ বিপুল পরিমাণে পাচার করা হয়েছে। পাচারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা রয়েছে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। স্থানীয়রা জানান, মাঝে মধ্যে পাচারের সময় গাড়ির নম্বরসহ যাবতীয় তথ্য বন কর্মকর্তাদের জানানো হলে প্রথমে আটক দেখিয়ে পরে টাকার বিনিময়ে কাঠ ও গাছভর্তি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি বারবাকিয়া বন বিটের অধীন আবাদীঘোনা ও লাইনের শিরা এলাকা থেকে দিনের বেলা ট্রলিতে করে ১০-১২টি মাঝারি সাইজের গর্জন পাচার করা হয়। গাছগুলো পেকুয়া বাজার, রাজাখালী আরবশাহ বাজার ও বারবাকিয়া বাজারের কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়।
টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা গ্রামের বাসিন্দা জহিরউদ্দিন বলেন, ‘ধনিয়াকাটা পূর্ব পাড়ার সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়তই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ পাচার হয়। বন বিভাগকে পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে বলেও লাভ হয়নি।’ বারবাকিয়ার বাসিন্দা মো. ইলিয়াছ জানান, বারবাকিয়ার রেঞ্জ কর্মকর্তার কারণে বনাঞ্চল নিধনের পাশাপাশি জমি জবর-দখলও হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল গফুর মোল্লা সাত-আট মাস আগে সেখানে যোগ দিয়েছেন। এখানে এসেই তিনি স্থানীয় গাছচোর চক্র ও অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন। বন বিটের প্রহরী ও বিট কর্মকর্তাদের সঙ্গেও পাচারকারী সিন্ডিকেটের আঁতাত রয়েছে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে আবদুল গফুর মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বন বিভাগের জনবল সংকটের কারণে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছি। শতবর্ষী গর্জন পাচারকারীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, বীজের জোগান দেওয়া গাছকে বলা হয় মা গাছ বা মাদার ট্রি। বনাঞ্চল থেকে মাদার ট্রি কমে গেলে বন উজাড়ের শঙ্কা বেড়ে যায়।
শেয়ার করুন
মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) | ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০

শতবর্ষী গর্জনসহ (মাদার ট্রি) অন্যান্য গাছ রক্ষায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল (রিজার্ভ ফরেস্ট) ঘোষণা দিয়েও তা বাঁচানো যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, বনকর্মীদের সহায়তায় মূল্যবান গাছ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় উজাড় হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
অভিযোগ রয়েছে, গত তিন মাসে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের অধীন পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জের অধীন বারবাকিয়া বিট, টইটং বিট ও পহরচাঁদা বন বিটের অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্পট থেকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামজিক বনায়নের আওতাভুক্ত শতবর্ষী গর্জনসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ বিপুল পরিমাণে পাচার করা হয়েছে। পাচারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা রয়েছে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। স্থানীয়রা জানান, মাঝে মধ্যে পাচারের সময় গাড়ির নম্বরসহ যাবতীয় তথ্য বন কর্মকর্তাদের জানানো হলে প্রথমে আটক দেখিয়ে পরে টাকার বিনিময়ে কাঠ ও গাছভর্তি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি বারবাকিয়া বন বিটের অধীন আবাদীঘোনা ও লাইনের শিরা এলাকা থেকে দিনের বেলা ট্রলিতে করে ১০-১২টি মাঝারি সাইজের গর্জন পাচার করা হয়। গাছগুলো পেকুয়া বাজার, রাজাখালী আরবশাহ বাজার ও বারবাকিয়া বাজারের কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়।
টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা গ্রামের বাসিন্দা জহিরউদ্দিন বলেন, ‘ধনিয়াকাটা পূর্ব পাড়ার সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়তই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ পাচার হয়। বন বিভাগকে পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে বলেও লাভ হয়নি।’ বারবাকিয়ার বাসিন্দা মো. ইলিয়াছ জানান, বারবাকিয়ার রেঞ্জ কর্মকর্তার কারণে বনাঞ্চল নিধনের পাশাপাশি জমি জবর-দখলও হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল গফুর মোল্লা সাত-আট মাস আগে সেখানে যোগ দিয়েছেন। এখানে এসেই তিনি স্থানীয় গাছচোর চক্র ও অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন। বন বিটের প্রহরী ও বিট কর্মকর্তাদের সঙ্গেও পাচারকারী সিন্ডিকেটের আঁতাত রয়েছে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে আবদুল গফুর মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বন বিভাগের জনবল সংকটের কারণে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছি। শতবর্ষী গর্জন পাচারকারীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, বীজের জোগান দেওয়া গাছকে বলা হয় মা গাছ বা মাদার ট্রি। বনাঞ্চল থেকে মাদার ট্রি কমে গেলে বন উজাড়ের শঙ্কা বেড়ে যায়।