বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন সরবরাহে অনিয়ম
পটুয়াখালী প্রতিনিধি | ১৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি ও প্রস্থান নিশ্চিত করতে সারা দেশের মতো পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চালু হচ্ছে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি। কিন্তু উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন সরবরাহ করা নিয়ে উঠেছে নানা অনিয়মের অভিযোগ।
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্ধারিত মূল্যের প্রায় তিন গুণ বেশি মূল্য নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোনো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই ওই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে চায়নি। যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কোনো ভাউচার বা প্রমাণপত্র দেয়নি বলে তাদের দাবি। স্থানীয় শিক্ষা অফিসের কিছু কর্মকর্তা, একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সিন্ডিকেটে ওই অখ্যাত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৬ জুন এক চিঠিতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসব যন্ত্রপাতি স্কুলের উন্নয়ন ফান্ড থেকে প্রধান শিক্ষক কিনবেনÑ এমনটাই নির্দেশনা রয়েছে। কলাপাড়ায় মোট ১৭৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।
গোলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, পরিপত্র অনুযায়ী স্কুল উন্নয়ন ফান্ডের টাকা দিয়ে মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু মেশিনের ভালো-মন্দ, ক্রয়, যাতায়াতসহ নানা ঝামেলা এড়াতে গ্রামীণপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা শহরের সচেতন শিক্ষকদের সহযোগিতায় পটুয়াখালী শহরের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেশিন বিদ্যালয়ে স্থাপন করেছেন। এ মেশিন ক্রয়ের জন্য ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
১৫ হাজার টাকায় মেশিন কেনার কথা স্বীকার করলেও পেয়ারপুর আমেনা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানাতে পারেননি কোন প্রতিষ্ঠান মেশিন সরবরাহ করেছে। এ ক্ষেত্রে তাকে কোনো ভাউচারও দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, মেশিনের মূল্য ১৪ হাজার ৫০০ এবং স্থাপন চার্জ ৫০০ টাকা ধরা হয়েছে।
কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান বা সংশ্লিষ্টরা শহরের ওই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, অনলাইন সার্চ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের নির্ধারিত তক ঞবপড় ক৪০ ব্র্যান্ড ও মডেলের মেশিনের মূল্য ৫ হাজার ৫০০ টাকা দেখতে পেয়ে, মেশিন সরবরাহ করা হলেও তারা টাকা পরিশোধ করেননি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাশার বলেন, বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনে শিক্ষা অফিসের পরামর্শ থাকলেও ক্রয়ে কারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত কার্যক্রমটি স্থগিত রয়েছে।
শেয়ার করুন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি | ১৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি ও প্রস্থান নিশ্চিত করতে সারা দেশের মতো পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চালু হচ্ছে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি। কিন্তু উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন সরবরাহ করা নিয়ে উঠেছে নানা অনিয়মের অভিযোগ।
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্ধারিত মূল্যের প্রায় তিন গুণ বেশি মূল্য নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোনো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই ওই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে চায়নি। যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কোনো ভাউচার বা প্রমাণপত্র দেয়নি বলে তাদের দাবি। স্থানীয় শিক্ষা অফিসের কিছু কর্মকর্তা, একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সিন্ডিকেটে ওই অখ্যাত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৬ জুন এক চিঠিতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসব যন্ত্রপাতি স্কুলের উন্নয়ন ফান্ড থেকে প্রধান শিক্ষক কিনবেনÑ এমনটাই নির্দেশনা রয়েছে। কলাপাড়ায় মোট ১৭৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।
গোলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, পরিপত্র অনুযায়ী স্কুল উন্নয়ন ফান্ডের টাকা দিয়ে মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু মেশিনের ভালো-মন্দ, ক্রয়, যাতায়াতসহ নানা ঝামেলা এড়াতে গ্রামীণপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা শহরের সচেতন শিক্ষকদের সহযোগিতায় পটুয়াখালী শহরের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেশিন বিদ্যালয়ে স্থাপন করেছেন। এ মেশিন ক্রয়ের জন্য ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
১৫ হাজার টাকায় মেশিন কেনার কথা স্বীকার করলেও পেয়ারপুর আমেনা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানাতে পারেননি কোন প্রতিষ্ঠান মেশিন সরবরাহ করেছে। এ ক্ষেত্রে তাকে কোনো ভাউচারও দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, মেশিনের মূল্য ১৪ হাজার ৫০০ এবং স্থাপন চার্জ ৫০০ টাকা ধরা হয়েছে।
কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান বা সংশ্লিষ্টরা শহরের ওই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, অনলাইন সার্চ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের নির্ধারিত তক ঞবপড় ক৪০ ব্র্যান্ড ও মডেলের মেশিনের মূল্য ৫ হাজার ৫০০ টাকা দেখতে পেয়ে, মেশিন সরবরাহ করা হলেও তারা টাকা পরিশোধ করেননি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাশার বলেন, বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনে শিক্ষা অফিসের পরামর্শ থাকলেও ক্রয়ে কারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত কার্যক্রমটি স্থগিত রয়েছে।