ঈদে গ্রামে ফিরছে মানুষ বাড়ছে উদ্বেগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় রাজশাহী জেলাকে গত ১৪ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এক জেলা থেকে অন্য জেলা এমনকি এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় যাতায়াতের ওপরও দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। তবে লকডাউনের মধ্যেও রাজশাহীতে প্রবেশ করছে অনেকেই। বিশেষ করে ঈদের আগমুহূর্তে ঢাকা থেকে অনেকেই আসছে গ্রামে। এদিকে বাইরে থেকে আসা মানুষদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা, কিন্তু অনেকেই থাকছে এর বাইরে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আসা এসব মানুষ গ্রামের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ থেকে গোপনে রাজশাহী আসা এক যুবকের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেল, তিনি প্রশাসনকে কোনো খবরই দেননি। এখন তো গণপরিবহন বন্ধ এর মধ্যে কীভাবে ফিরলেন জানতে চাইলে ওই যুবক বলেন, ‘রাতের আঁধারে সিরাজগঞ্জ থেকে সিএনজিতে উঠি, এরপর নাটোরে নামি। সেখান থেকে অটোতে পুঠিয়া হয়ে রাজশাহী শহরে নেমে যাই। পথে কোনো বাধা নেই। সরাসরি চলে আসি।’
ঢাকা থেকে আসা আরেক যুবক বললেন, ‘রাজশাহী আসতে হলে গাড়ি ভাড়া ডটকম সাইটের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় আসা যায়। এতে চারজন আসার সুযোগ আছে। আমরা দুজনই ওই টাকায় প্রাইভেট কার ভাড়া নিয়েছিলাম। পথে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয়নি। পথে পথে পুলিশ দেখা গেছে কিন্তু কেউ কোথাও বাধা দেয়নি। বরং কোথাও কোথাও হাইওয়ে দিয়ে না গিয়ে বিকল্প পথে যাওয়ার জন্য বলেছে পুলিশ। এভাবে বিকল্প পথেই আমরা চলে আসি রাজশাহী।’
রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, আমাদের বলে কেউ আসছে না। যারা আসছে তারা চোরাপথে আসছে। মধ্য বা ভোররাতে আসছে। এরপরও আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা সিটি করপোরেশন, ইউএনও, পুলিশকে জানাচ্ছি।
অন্যদিকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে স্রোতের বেগে মানুষ ঢুকছে গাইবান্ধায়। তারা প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক কিংবা পিকআপ-ভ্যান ভাড়া করে ও নদীপথে ফিরছেন বাড়িতে। সড়ক ও নৌ প্রবেশপথসহ গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের কড়া পাহারা। তারপরও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষের প্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না। ফলে ঈদে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, গত ১ এপ্রিল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৮০০ থেকে ৯০০ জন গাইবান্ধায় এসেছেন। তারা ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গোপনে এ জেলায় আসেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গাইবান্ধা জেলা শহরের প্রবেশদ্বার ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কের পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের চৌমাথা মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশের কড়া পাহারা। মহাসড়কে চলাচল করছে কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক। সন্দেহজনক যানবাহনগুলোকে থামিয়ে দেখছেন তারা। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদে বহিরাগত লোক আসা বন্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় রাজশাহী জেলাকে গত ১৪ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এক জেলা থেকে অন্য জেলা এমনকি এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় যাতায়াতের ওপরও দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। তবে লকডাউনের মধ্যেও রাজশাহীতে প্রবেশ করছে অনেকেই। বিশেষ করে ঈদের আগমুহূর্তে ঢাকা থেকে অনেকেই আসছে গ্রামে। এদিকে বাইরে থেকে আসা মানুষদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা, কিন্তু অনেকেই থাকছে এর বাইরে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আসা এসব মানুষ গ্রামের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ থেকে গোপনে রাজশাহী আসা এক যুবকের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেল, তিনি প্রশাসনকে কোনো খবরই দেননি। এখন তো গণপরিবহন বন্ধ এর মধ্যে কীভাবে ফিরলেন জানতে চাইলে ওই যুবক বলেন, ‘রাতের আঁধারে সিরাজগঞ্জ থেকে সিএনজিতে উঠি, এরপর নাটোরে নামি। সেখান থেকে অটোতে পুঠিয়া হয়ে রাজশাহী শহরে নেমে যাই। পথে কোনো বাধা নেই। সরাসরি চলে আসি।’
ঢাকা থেকে আসা আরেক যুবক বললেন, ‘রাজশাহী আসতে হলে গাড়ি ভাড়া ডটকম সাইটের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় আসা যায়। এতে চারজন আসার সুযোগ আছে। আমরা দুজনই ওই টাকায় প্রাইভেট কার ভাড়া নিয়েছিলাম। পথে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয়নি। পথে পথে পুলিশ দেখা গেছে কিন্তু কেউ কোথাও বাধা দেয়নি। বরং কোথাও কোথাও হাইওয়ে দিয়ে না গিয়ে বিকল্প পথে যাওয়ার জন্য বলেছে পুলিশ। এভাবে বিকল্প পথেই আমরা চলে আসি রাজশাহী।’
রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, আমাদের বলে কেউ আসছে না। যারা আসছে তারা চোরাপথে আসছে। মধ্য বা ভোররাতে আসছে। এরপরও আশপাশের লোকজনের মাধ্যমে আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা সিটি করপোরেশন, ইউএনও, পুলিশকে জানাচ্ছি।
অন্যদিকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে স্রোতের বেগে মানুষ ঢুকছে গাইবান্ধায়। তারা প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক কিংবা পিকআপ-ভ্যান ভাড়া করে ও নদীপথে ফিরছেন বাড়িতে। সড়ক ও নৌ প্রবেশপথসহ গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের কড়া পাহারা। তারপরও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষের প্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না। ফলে ঈদে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, গত ১ এপ্রিল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৮০০ থেকে ৯০০ জন গাইবান্ধায় এসেছেন। তারা ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গোপনে এ জেলায় আসেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গাইবান্ধা জেলা শহরের প্রবেশদ্বার ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কের পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের চৌমাথা মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশের কড়া পাহারা। মহাসড়কে চলাচল করছে কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক। সন্দেহজনক যানবাহনগুলোকে থামিয়ে দেখছেন তারা। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদে বহিরাগত লোক আসা বন্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।