আলুর পর এবার বগুড়ার বাঁধাকপিও যাচ্ছে বিদেশে
বগুড়া প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
দীর্ঘদিন ধরেই বগুড়ার আলু বিদেশে রপ্তানি হয়ে আসছে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হলো সেখানকার বাঁধাকপিও। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বাঁধাকপি কিনে রপ্তানি শুরু হওয়ায় এ অঞ্চলের কপি চাষিদের দুর্দিন ঘুচতে চলেছে। শীতকালীন শাক-সবজির এই ভরা মৌসুমে বগুড়ার বিভিন্ন বাজারে যখন সর্বোচ্চ ৫ টাকা দরে প্রতিটি বাঁধাকপি বিক্রি হতো, সেসব বাজারে এখন ভালোই দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। আর যেসব চাষি সরাসরি জমি থেকে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বাঁধাকপি পৌঁছে দিচ্ছেন, তারা পাচ্ছেন আরও বেশি দাম। বাজারে প্রতিটি বাঁধাকপি সর্বোচ্চ ১২ টাকা দরে বিক্রি হলেও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তা কিনছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে। এই দরে কেনা প্রায় আড়াই কোটি টাকার বাঁধাকপি বগুড়া থেকে এবার বিদেশে যাবে।
জানা যায়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পূর্ব জাহাঙ্গীরাবাদ পাতানিয়াপাড়ার সাগর হোসেন নামে এক যুবক বিদেশে এই বাঁধাকপি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মাধ্যমেই এসব বাঁধাকপি যাচ্ছে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার বাজারে। ইতিমধ্যে এই দুটি দেশে ১ হাজার ৫০ মেট্রিক টন বাঁধাকপি পাঠানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। তবে শিবগঞ্জে উৎপাদিত কপি দিয়ে তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবেন না স্থানীয় কৃষকরা। এ কারণে পাশের উপজেলা থেকেও কপি কিনছেন তিনি।
মেসার্স সাগর ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাগর হোসেন জানান, এক সময় তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে আলু রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে তাদের মাধ্যমে আলু পাঠাতে শুরু করেন তিনি। এরইমধ্যে চট্টগ্রামের মাসায়া এগ্রো লিমিটেড নামক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আরিফ আজাদ প্রিন্স মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর ঘুরে এসে ওই দুটি দেশে বাঁধাকপি রপ্তানিতে তাকে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তার উৎসাহে ইতিপূর্বে তিনি বছরে ৬ থেকে ১০ কন্টেইনার বাঁধাকপি (প্রতি কন্টেইনারে ১২ হাজার পিস বা প্রায় ২ মেট্রিক টন) পাঠিয়েছেন। কিন্তু এবার দেশ দুটির ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আগাম ৫০ কন্টেইনার কপি পাঠাতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এজন্য এলাকার চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কপির জাত, ওজন, ক্ষেতে থাকার বয়স এবং বিষমুক্ত উৎপাদনের শর্ত দিয়ে চাষ করতে বলেন সাগর।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির জানান, বগুড়া থেকে এতদিন শুধু আলুই বিদেশে রপ্তানি হতো। এখন অন্যান্য সবজিও রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকরা লাভবান হবেন। তিনি বলেন, ‘কৃষকদের উৎপাদিত কপি বিদেশে পাঠাতে সরকারি যা যা সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জাইকা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
শেয়ার করুন
বগুড়া প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

দীর্ঘদিন ধরেই বগুড়ার আলু বিদেশে রপ্তানি হয়ে আসছে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হলো সেখানকার বাঁধাকপিও। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বাঁধাকপি কিনে রপ্তানি শুরু হওয়ায় এ অঞ্চলের কপি চাষিদের দুর্দিন ঘুচতে চলেছে। শীতকালীন শাক-সবজির এই ভরা মৌসুমে বগুড়ার বিভিন্ন বাজারে যখন সর্বোচ্চ ৫ টাকা দরে প্রতিটি বাঁধাকপি বিক্রি হতো, সেসব বাজারে এখন ভালোই দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। আর যেসব চাষি সরাসরি জমি থেকে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বাঁধাকপি পৌঁছে দিচ্ছেন, তারা পাচ্ছেন আরও বেশি দাম। বাজারে প্রতিটি বাঁধাকপি সর্বোচ্চ ১২ টাকা দরে বিক্রি হলেও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তা কিনছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে। এই দরে কেনা প্রায় আড়াই কোটি টাকার বাঁধাকপি বগুড়া থেকে এবার বিদেশে যাবে।
জানা যায়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পূর্ব জাহাঙ্গীরাবাদ পাতানিয়াপাড়ার সাগর হোসেন নামে এক যুবক বিদেশে এই বাঁধাকপি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মাধ্যমেই এসব বাঁধাকপি যাচ্ছে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার বাজারে। ইতিমধ্যে এই দুটি দেশে ১ হাজার ৫০ মেট্রিক টন বাঁধাকপি পাঠানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। তবে শিবগঞ্জে উৎপাদিত কপি দিয়ে তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবেন না স্থানীয় কৃষকরা। এ কারণে পাশের উপজেলা থেকেও কপি কিনছেন তিনি।
মেসার্স সাগর ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাগর হোসেন জানান, এক সময় তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে আলু রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে তাদের মাধ্যমে আলু পাঠাতে শুরু করেন তিনি। এরইমধ্যে চট্টগ্রামের মাসায়া এগ্রো লিমিটেড নামক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আরিফ আজাদ প্রিন্স মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর ঘুরে এসে ওই দুটি দেশে বাঁধাকপি রপ্তানিতে তাকে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তার উৎসাহে ইতিপূর্বে তিনি বছরে ৬ থেকে ১০ কন্টেইনার বাঁধাকপি (প্রতি কন্টেইনারে ১২ হাজার পিস বা প্রায় ২ মেট্রিক টন) পাঠিয়েছেন। কিন্তু এবার দেশ দুটির ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আগাম ৫০ কন্টেইনার কপি পাঠাতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এজন্য এলাকার চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কপির জাত, ওজন, ক্ষেতে থাকার বয়স এবং বিষমুক্ত উৎপাদনের শর্ত দিয়ে চাষ করতে বলেন সাগর।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির জানান, বগুড়া থেকে এতদিন শুধু আলুই বিদেশে রপ্তানি হতো। এখন অন্যান্য সবজিও রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকরা লাভবান হবেন। তিনি বলেন, ‘কৃষকদের উৎপাদিত কপি বিদেশে পাঠাতে সরকারি যা যা সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জাইকা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।