ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজ চাষে লাভবান কৃষক
ফরিদপুর প্রতিনিধি | ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০
পেঁয়াজ বীজ চাষে হাসি ফুটেছে ফরিদপুরের কৃষকদের। গত কয়েক বছরে ভালো দাম পাওয়ায় এবার স্বপ্নটাও বড়। আর তাই তারা একে তুলনা করছেন সোনার সঙ্গে। এখন পেঁয়াজ বীজ চাষিরা ব্যস্ত বীজ ঘরে তোলার কাজে। সকাল থেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ক্ষেত থেকে বীজ তুলে সময় পার করছেন জেলার চাষিরা।
ফরিদপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে এ বীজ। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় জেলায় প্রতি বছরই বাড়ছে পেঁয়াজ বীজের চাষ। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৫৬ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের/উপপরিচালক ড. হযরত আলী বলেন, চলতি মৌসুমে ফরিদপুর অঞ্চলে ১ হাজার ৫৬ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদিত হবে, যার বাজারমূল্য (গত বছরের মতো হলে) প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। তিনি জানান, বিএডিসির মোট পেঁয়াজ বীজের ৭০ শতাংশ ফরিদপুর জেলা থেকে সংগ্রহ করে। তিনি আরও বলেন, ‘এ বীজ উৎপাদন করে রবি মৌসুমে চাষিরা অধিক মুনাফা করেন। এ কারণে এই ফসলকে ‘কালো সোনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
গত শুক্রবার সরেজমিন ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ও ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে দেখা যায় চাষিরা বীজ সংগ্রহে ব্যস্ত।
অম্বিকারপুর এলাকার গোবিন্দপুর মাঠে কৃষক হারিজ মোল্লা, জুলেখা বেগম, ফাতেমা খানমসহ অনেকেই জানান, এ মৌসুমে বীজ তোলার কাজ করে যে পেঁয়াজ পান তা দিয়ে সংসারের সারা বছরের পেঁয়াজের চাহিদা মিটে যায়।
এখানে অনেক কৃষক এসেছেন রাজশাহী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর থেকে। এদের মধ্যে রহমান মাতুব্বর, আশিক মোল্লা জানান, পেঁয়াজ বীজ তোলার সময় কাজের জন্য তাদের মতো অনেকেই ফরিদপুরে আসেন। এ সময়টায় ভালো আয় হয় তাদের।
সদর উপজেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া মোটামুটি অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ বীজের ভালো ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি দুই থেকে আড়াই মণ বীজ উৎপাদন হবে। গত বছর বাজারমূল্য ছিল প্রতি মণ প্রায় ২ লাখ টাকা। আর খরচ প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।
সদর উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামের বিএডিসির তালিকাভুক্ত পেঁয়াজ বীজ চাষি মো. আকবর খান বলেন, এ বছর চার বিঘা জমিতে বীজের চাষ করছি। আশা করছি আট মণের বেশি বীজ উৎপাদন হবে।
একই গ্রামের লাভলী-ইমতিয়াজ দম্পতি জানান, পেঁয়াজের বীজের কালো দানা আমাদের এলাকার ‘কালো সোনা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পেঁয়াজ বীজ আমাদের কাছে সোনার মতো।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ফরিদপুরের পেঁয়াজ বীজ বিএডিসির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া এ বীজ চাষে অনেক বেকার যুবকের কর্মস্থান হয়েছে। কারণ অল্প খরচে অধিক মুনাফা লাভ করার সহজ উপায় হলো বীজ চাষ।
শেয়ার করুন
ফরিদপুর প্রতিনিধি | ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০

পেঁয়াজ বীজ চাষে হাসি ফুটেছে ফরিদপুরের কৃষকদের। গত কয়েক বছরে ভালো দাম পাওয়ায় এবার স্বপ্নটাও বড়। আর তাই তারা একে তুলনা করছেন সোনার সঙ্গে। এখন পেঁয়াজ বীজ চাষিরা ব্যস্ত বীজ ঘরে তোলার কাজে। সকাল থেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ক্ষেত থেকে বীজ তুলে সময় পার করছেন জেলার চাষিরা।
ফরিদপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে এ বীজ। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় জেলায় প্রতি বছরই বাড়ছে পেঁয়াজ বীজের চাষ। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৫৬ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের/উপপরিচালক ড. হযরত আলী বলেন, চলতি মৌসুমে ফরিদপুর অঞ্চলে ১ হাজার ৫৬ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদিত হবে, যার বাজারমূল্য (গত বছরের মতো হলে) প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। তিনি জানান, বিএডিসির মোট পেঁয়াজ বীজের ৭০ শতাংশ ফরিদপুর জেলা থেকে সংগ্রহ করে। তিনি আরও বলেন, ‘এ বীজ উৎপাদন করে রবি মৌসুমে চাষিরা অধিক মুনাফা করেন। এ কারণে এই ফসলকে ‘কালো সোনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
গত শুক্রবার সরেজমিন ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ও ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে দেখা যায় চাষিরা বীজ সংগ্রহে ব্যস্ত।
অম্বিকারপুর এলাকার গোবিন্দপুর মাঠে কৃষক হারিজ মোল্লা, জুলেখা বেগম, ফাতেমা খানমসহ অনেকেই জানান, এ মৌসুমে বীজ তোলার কাজ করে যে পেঁয়াজ পান তা দিয়ে সংসারের সারা বছরের পেঁয়াজের চাহিদা মিটে যায়।
এখানে অনেক কৃষক এসেছেন রাজশাহী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর থেকে। এদের মধ্যে রহমান মাতুব্বর, আশিক মোল্লা জানান, পেঁয়াজ বীজ তোলার সময় কাজের জন্য তাদের মতো অনেকেই ফরিদপুরে আসেন। এ সময়টায় ভালো আয় হয় তাদের।
সদর উপজেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া মোটামুটি অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ বীজের ভালো ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি দুই থেকে আড়াই মণ বীজ উৎপাদন হবে। গত বছর বাজারমূল্য ছিল প্রতি মণ প্রায় ২ লাখ টাকা। আর খরচ প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।
সদর উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামের বিএডিসির তালিকাভুক্ত পেঁয়াজ বীজ চাষি মো. আকবর খান বলেন, এ বছর চার বিঘা জমিতে বীজের চাষ করছি। আশা করছি আট মণের বেশি বীজ উৎপাদন হবে।
একই গ্রামের লাভলী-ইমতিয়াজ দম্পতি জানান, পেঁয়াজের বীজের কালো দানা আমাদের এলাকার ‘কালো সোনা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পেঁয়াজ বীজ আমাদের কাছে সোনার মতো।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ফরিদপুরের পেঁয়াজ বীজ বিএডিসির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া এ বীজ চাষে অনেক বেকার যুবকের কর্মস্থান হয়েছে। কারণ অল্প খরচে অধিক মুনাফা লাভ করার সহজ উপায় হলো বীজ চাষ।