লবণাক্ত পানিতে দুর্বিষহ জীবন ৩ ইউনিয়নবাসীর
মোহাম্মদ মঈনুল হক লিপু, ঝালকাঠি | ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার পাটিখালঘাটা, চেঁচরিরামপুর ও আমুয়া ইউনিয়নবাসী সুপেয় পানির অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বৃষ্টির পানি কিংবা পুকুর ও ডোবার পানির ওপর ভরসা করতে হয় এলাকার মানুষের। রান্না, থালাবাসন ধোয়া, গোসলসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ করতে হচ্ছে এসব পানিতে। ফলে এ এলাকায় সারা বছরই লেগে থাকে পানিবাহিত রোগ।
জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা কাঁঠালিয়া উপজেলার দুর্গম এই তিনটি ইউনিয়নের নলকূপে পানি ওঠে লবণাক্ত। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা বৃষ্টির পানি ধরে রেখে কিংবা পুকুর ও ডোবার পানি সংগ্রহ করে ফিটকিরি অথবা পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ দিয়ে পান করছেন। যাদের সামর্থ্য নেই তারা এই লবণাক্ত পানি দিয়েই রান্না, থালাবাসন ধোয়াসহ সংসারের যাবতীয় কাজ করছেন।
এ তিন ইউনিয়নে অগভীর নলকূপ রয়েছে ৯৬টি, যার মধ্যে আটটি অকেজো। আশির দশক থেকে এ পর্যন্ত সরকারিভাবে এ এলাকার বিভিন্ন পুকুর পাড়ে ১৭২টি পানির ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপন করা হয়। এগুলোর প্রায় সবই এখন অকেজো। পরে লবণাক্ততা দূরীকরণে চারটি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলেও সেগুলোও এখন নষ্টের পথে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরিশাল জোনাল ল্যাব সূত্র জানায়, ১০০০ থেকে ১৫০০ পিপিএম পর্যন্ত লবণাক্ত পানি মানবদেহে সহনশীল। কিন্তু কাঁঠালিয়ার তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ের পানিতে আড়াই হাজার থেকে ৩০০০ পিপিএম পর্যন্ত লবণাক্ততা শনাক্ত করা গেছে, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের নেয়ামতপুরা গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা নুসরাত জাহান বলেন, সাগর কাছে হওয়ায় এ এলাকায় সব জায়গার পানিই লবণাক্ত। আমরা পুকুর বা নালার পানি সংগ্রহ করে তাতে ফিটকিরি অথবা বিশুদ্ধকরণ ওষুধ দিয়ে ব্যবহার করি।
পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শিশির দাস বলেন, উপকূলীয় এলাকার কোথাও গভীর নলকূপ বসালেও কাজ হচ্ছে না, লবণাক্ত পানি আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পিএসএফ ও লবণাক্ত দূরীকরণ প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে তার বেশিরভাগই অকেজো।
কাঁঠালিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলাবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহে সরকার পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করার নতুন একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
শেয়ার করুন
মোহাম্মদ মঈনুল হক লিপু, ঝালকাঠি | ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার পাটিখালঘাটা, চেঁচরিরামপুর ও আমুয়া ইউনিয়নবাসী সুপেয় পানির অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বৃষ্টির পানি কিংবা পুকুর ও ডোবার পানির ওপর ভরসা করতে হয় এলাকার মানুষের। রান্না, থালাবাসন ধোয়া, গোসলসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ করতে হচ্ছে এসব পানিতে। ফলে এ এলাকায় সারা বছরই লেগে থাকে পানিবাহিত রোগ।
জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা কাঁঠালিয়া উপজেলার দুর্গম এই তিনটি ইউনিয়নের নলকূপে পানি ওঠে লবণাক্ত। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা বৃষ্টির পানি ধরে রেখে কিংবা পুকুর ও ডোবার পানি সংগ্রহ করে ফিটকিরি অথবা পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ দিয়ে পান করছেন। যাদের সামর্থ্য নেই তারা এই লবণাক্ত পানি দিয়েই রান্না, থালাবাসন ধোয়াসহ সংসারের যাবতীয় কাজ করছেন।
এ তিন ইউনিয়নে অগভীর নলকূপ রয়েছে ৯৬টি, যার মধ্যে আটটি অকেজো। আশির দশক থেকে এ পর্যন্ত সরকারিভাবে এ এলাকার বিভিন্ন পুকুর পাড়ে ১৭২টি পানির ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপন করা হয়। এগুলোর প্রায় সবই এখন অকেজো। পরে লবণাক্ততা দূরীকরণে চারটি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলেও সেগুলোও এখন নষ্টের পথে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরিশাল জোনাল ল্যাব সূত্র জানায়, ১০০০ থেকে ১৫০০ পিপিএম পর্যন্ত লবণাক্ত পানি মানবদেহে সহনশীল। কিন্তু কাঁঠালিয়ার তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ের পানিতে আড়াই হাজার থেকে ৩০০০ পিপিএম পর্যন্ত লবণাক্ততা শনাক্ত করা গেছে, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের নেয়ামতপুরা গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা নুসরাত জাহান বলেন, সাগর কাছে হওয়ায় এ এলাকায় সব জায়গার পানিই লবণাক্ত। আমরা পুকুর বা নালার পানি সংগ্রহ করে তাতে ফিটকিরি অথবা বিশুদ্ধকরণ ওষুধ দিয়ে ব্যবহার করি।
পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শিশির দাস বলেন, উপকূলীয় এলাকার কোথাও গভীর নলকূপ বসালেও কাজ হচ্ছে না, লবণাক্ত পানি আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পিএসএফ ও লবণাক্ত দূরীকরণ প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে তার বেশিরভাগই অকেজো।
কাঁঠালিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলাবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহে সরকার পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করার নতুন একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।