উদ্ধারের জন্য ঘুরছে একপক্ষ
শাহজাদপুরে শতবর্ষী পুকুর এখন মাঠ
শাহজাদপুর (সিরাজগগঞ্জ) সংবাদদাতা | ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ও রাউতারা গ্রাম দুটিকে বলা হয় ‘পুকুরের গ্রাম।’ গ্রাম দুটির একদিকে বড়াল নদী, অন্য পাশে রয়েছে গোহালা নদী। এ গ্রাম দুটিতে রয়েছে অনেক জেলে পরিবার।
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পোতাজিয়া ও রাউতারা এলাকা ছিল হিন্দু বসতিপূর্ণ এলাকা। ্্রায় একশ বছর আগে রাউতারার ঘোষ পরিবার জনহিতকর কাজের অংশ হিসেবে রাউতারার পূর্বপাড়ার ১ একর ৩৫ শতাংশ জায়গার ওপর বিশাল পুকুর খনন করে। পোতাজিয়া গ্রামে ওই সময় হিড়িক পড়ে যায় পুকুর খননের। শুধু পোতাজিয়াতেই ৫১টি পুকুর খনন করা হয়। ঘোষ পরিবারের পক্ষে ১ একর ৩৫ শতাংশের ওই পুকুর খনন করেন জোগেষ চন্দ্র ঘোষ। তিনি এলাকায় জোগেষ বাবু নামে পরিচিত। ১৯৪৬ সালে তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জোগেষ ঘোষের বড় ভাই গৌর ঘোষের নাতি শোভন ঘোষ ও তার সহোদররা করোনা
পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে প্রাচীন এ পুকুরটি ভরাট করে ফেলেন। এ নিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। ভরাটের প্রতিবাদ জানিয়ে জোগেষ ঘোষের উত্তরসূরিরা পুকুরটি পুনরুদ্ধারের জন্য বিভিন্ন স্থানে লিখিত আবেদন করলেও ভরাটকারীদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না। এ জন্য তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, ঘোষ পরিবারের শোভন ও তার সহোদররা পুকুরের জায়গা বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে পুকুরের একটি বিশাল অংশ বেহাত হতে চলেছে।
পুকুর ভরাট নিয়ে রাউতারার মৎস্যজীবী পরেশ হালদারের ছেলে উত্তম হালদার ও আবুল হোসেনের ছেলে আবু তালেব বলেন, ভারত-পাকিস্তান ভাগের আগে ঘোষ পরিবারের জোগেষ চন্দ্র ঘোষ রাউতারায় তিনটি পুকুর খনন করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ছিল ১ একর ৩৫ শতাংশ জমির ওপর। আমরা এটাকে কালীর পুকুর হিসেবে চিনতাম। কালী প্রয়াত জোগেষ চন্দ্র ঘোষের মেয়ে। কিন্তু ঘোষ পরিবারের অন্য শরিক জোগেষ ঘোষের বড় ভাই গৌর ঘোষের নাতি সুবীর কুমার ঘোষ (কালা বাবু) ও শোভন ঘোষ মিলে করোনাকালে ড্রেজার দিয়ে পুকুরটি ভরাট করেন। ভরাটকৃত জায়গা এখন বিক্রি করা হচ্ছে।
পুকুর ভরাট ও বিক্রির ব্যাপারে শোভন কুমার ঘোষ বলেন, ‘জমিজমা বাটোয়ারা করেই প্রায় এক বছর ধরে পুকুরটি ভরাট করা হয়। পুকুরটিতে আমাদের ৫৪ শতাংশ জায়গা রয়েছে। দাদা প্রণব কুমার ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করেই পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করি। এখন তিনি কেন এর বিপক্ষে অবস্থান নিলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা এ ব্যাপারে বলেন, যারা পুকুর ভরাট করেছেন, তারা আইনের বরখেলাপ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ার করুন
শাহজাদপুর (সিরাজগগঞ্জ) সংবাদদাতা | ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ও রাউতারা গ্রাম দুটিকে বলা হয় ‘পুকুরের গ্রাম।’ গ্রাম দুটির একদিকে বড়াল নদী, অন্য পাশে রয়েছে গোহালা নদী। এ গ্রাম দুটিতে রয়েছে অনেক জেলে পরিবার।
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পোতাজিয়া ও রাউতারা এলাকা ছিল হিন্দু বসতিপূর্ণ এলাকা। ্্রায় একশ বছর আগে রাউতারার ঘোষ পরিবার জনহিতকর কাজের অংশ হিসেবে রাউতারার পূর্বপাড়ার ১ একর ৩৫ শতাংশ জায়গার ওপর বিশাল পুকুর খনন করে। পোতাজিয়া গ্রামে ওই সময় হিড়িক পড়ে যায় পুকুর খননের। শুধু পোতাজিয়াতেই ৫১টি পুকুর খনন করা হয়। ঘোষ পরিবারের পক্ষে ১ একর ৩৫ শতাংশের ওই পুকুর খনন করেন জোগেষ চন্দ্র ঘোষ। তিনি এলাকায় জোগেষ বাবু নামে পরিচিত। ১৯৪৬ সালে তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জোগেষ ঘোষের বড় ভাই গৌর ঘোষের নাতি শোভন ঘোষ ও তার সহোদররা করোনা
পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে প্রাচীন এ পুকুরটি ভরাট করে ফেলেন। এ নিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। ভরাটের প্রতিবাদ জানিয়ে জোগেষ ঘোষের উত্তরসূরিরা পুকুরটি পুনরুদ্ধারের জন্য বিভিন্ন স্থানে লিখিত আবেদন করলেও ভরাটকারীদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না। এ জন্য তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, ঘোষ পরিবারের শোভন ও তার সহোদররা পুকুরের জায়গা বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে পুকুরের একটি বিশাল অংশ বেহাত হতে চলেছে।
পুকুর ভরাট নিয়ে রাউতারার মৎস্যজীবী পরেশ হালদারের ছেলে উত্তম হালদার ও আবুল হোসেনের ছেলে আবু তালেব বলেন, ভারত-পাকিস্তান ভাগের আগে ঘোষ পরিবারের জোগেষ চন্দ্র ঘোষ রাউতারায় তিনটি পুকুর খনন করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ছিল ১ একর ৩৫ শতাংশ জমির ওপর। আমরা এটাকে কালীর পুকুর হিসেবে চিনতাম। কালী প্রয়াত জোগেষ চন্দ্র ঘোষের মেয়ে। কিন্তু ঘোষ পরিবারের অন্য শরিক জোগেষ ঘোষের বড় ভাই গৌর ঘোষের নাতি সুবীর কুমার ঘোষ (কালা বাবু) ও শোভন ঘোষ মিলে করোনাকালে ড্রেজার দিয়ে পুকুরটি ভরাট করেন। ভরাটকৃত জায়গা এখন বিক্রি করা হচ্ছে।
পুকুর ভরাট ও বিক্রির ব্যাপারে শোভন কুমার ঘোষ বলেন, ‘জমিজমা বাটোয়ারা করেই প্রায় এক বছর ধরে পুকুরটি ভরাট করা হয়। পুকুরটিতে আমাদের ৫৪ শতাংশ জায়গা রয়েছে। দাদা প্রণব কুমার ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করেই পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করি। এখন তিনি কেন এর বিপক্ষে অবস্থান নিলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা এ ব্যাপারে বলেন, যারা পুকুর ভরাট করেছেন, তারা আইনের বরখেলাপ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।