আশ্রয়ণের নামে বিত্তবানদের ২৫ কোটি টাকার খাসজমি বন্দোবস্ত!
অভিযুক্ত সার্ভেয়ার গ্রেপ্তার
পটুয়াখালী প্রতিনিধি | ৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইউনওর স্বাক্ষর জাল করে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর সরকারি খাসজমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগে ভূমি অফিসের এক সার্ভেয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে হুমায়ুন কবির নামে ওই সার্ভেয়ারকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশালের রূপাতলী আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে লাপাত্তা ছিলেন ওই সার্ভেয়ার।
জানা যায়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ভূমিহীন ১৯৫টি পরিবারকে দুই শতক খাসজমিসহ ১৯৫টি সেমিপাকা ঘর দেওয়া হয়। চূড়ান্ত তালিকায় থাকা এই ১৯৫টি বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্র্রি করতে খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্র্রি অফিসে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির জালিয়াতির মাধ্যমে এই বন্দোবস্ত কেসের সঙ্গে ৪২টি বিত্তবান শ্রেণির কথিত ভূমিহীনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তাদের নামে ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাসজমির দলিল রেজিস্ট্রি করেন। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল ২২টির স্থলে ৩১টি, ২৪ এপ্রিল ১২০টির স্থলে ১৩২টি এবং ১৯ মে ৫৩টির স্থলে ৭৪টি কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রিকালে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। তার স্বাক্ষর জাল করে রেজিস্ট্রি করেন সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরপরই সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন ইউএনও। ৪ আগস্ট কলাপাড়া থানায় হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন তিনি।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক বলেন, ‘সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে জালিয়াতির মাধ্যমে ৪২টি ভুয়া কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন।’ এদিকে ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশ হাওয়া বেগম ও দলিল লেখক আনোয়ার হোসেনকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। ১২ জন নকলনবিশকে দাপ্তরিক কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম বলেন, ‘গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার হুমায়ুনকে শুক্রবার (গতকাল) সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
শেয়ার করুন
অভিযুক্ত সার্ভেয়ার গ্রেপ্তার
পটুয়াখালী প্রতিনিধি | ৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইউনওর স্বাক্ষর জাল করে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর সরকারি খাসজমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগে ভূমি অফিসের এক সার্ভেয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে হুমায়ুন কবির নামে ওই সার্ভেয়ারকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশালের রূপাতলী আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে লাপাত্তা ছিলেন ওই সার্ভেয়ার।
জানা যায়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ভূমিহীন ১৯৫টি পরিবারকে দুই শতক খাসজমিসহ ১৯৫টি সেমিপাকা ঘর দেওয়া হয়। চূড়ান্ত তালিকায় থাকা এই ১৯৫টি বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্র্রি করতে খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্র্রি অফিসে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির জালিয়াতির মাধ্যমে এই বন্দোবস্ত কেসের সঙ্গে ৪২টি বিত্তবান শ্রেণির কথিত ভূমিহীনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তাদের নামে ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাসজমির দলিল রেজিস্ট্রি করেন। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল ২২টির স্থলে ৩১টি, ২৪ এপ্রিল ১২০টির স্থলে ১৩২টি এবং ১৯ মে ৫৩টির স্থলে ৭৪টি কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রিকালে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। তার স্বাক্ষর জাল করে রেজিস্ট্রি করেন সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরপরই সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন ইউএনও। ৪ আগস্ট কলাপাড়া থানায় হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন তিনি।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক বলেন, ‘সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে জালিয়াতির মাধ্যমে ৪২টি ভুয়া কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন।’ এদিকে ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশ হাওয়া বেগম ও দলিল লেখক আনোয়ার হোসেনকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। ১২ জন নকলনবিশকে দাপ্তরিক কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম বলেন, ‘গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার হুমায়ুনকে শুক্রবার (গতকাল) সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’