
ময়মনসিংহের ত্রিশাল-বড়মা আঞ্চলিক সড়কের দূরত্ব চার কিলোমিটার। ত্রিশাল পৌর অংশ থেকে বড়মা বাজার যেতে সড়কের প্রবেশপথেই উঁচু একটি গতিরোধক দিয়ে শুরু। এভাবে পুরো চার কিলোমিটার সড়কে কোথাও ৫০ ফুট, কোথাও ১০০ ফুট দূরত্বে বসানো হয়েছে গতিরোধক। পুরো সড়কে অপরিকল্পিতভাবে ১৬টি গতিরোধক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে না দেওয়ায় অনেকেরই চোখে পড়ছে না। ফলে এগুলো এখন যানবাহন চালকদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সড়কটিতে এতগুলো গতিরোধক কারা বসিয়েছে, তা জানেন না উপজেলা প্রকৌশলীও।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর সীমানার পর বড় একটি গতিরোধক দেওয়া হয়েছে। তারপর কিছুদূর যাওয়ার পর একের পর এক গতিরোধক, যা খোলা চোখে কত সময় চোখে পড়ে, অনেক সময় পড়ে না। সড়কটি দিয়ে যান বলতে বেশির ভাগই মোটরসাইকেল আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। সড়কের পাশে পাঁচ-সাতটি দোকান থাকলেই তার দুই পাশে দেওয়া হয়েছে গতিরোধক। বাড়ি, স্কুল, দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনার সামনে অপরিকল্পিতভাবে ইচ্ছামতো দেওয়া হয়েছে গতিরোধক। কোনোটাতেই রং দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি। যানবাহন চালকরা না দেখেই গতিরোধকের ওপর দিয়ে দ্রুত গতিতে যান চালিয়ে যাচ্ছেন। এত ঘটছে দুর্ঘটনা। দিনের বেলায় ঝুঁকি এড়াতে মোটরসাইকেল চালকরা গতিরোধক এড়িয়ে সড়কের পাশ ঘেঁষে চলাচল করতে দেখা গেছে।
আরিফুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেলচালক বলেন, ‘এত কম দূরত্বে এতগুলো বিট (গতিরোধক) মেনে নেওয়া যায় না। বিটগুলো যে উঁচু এবং ঘন ঘন দিয়েছে তাতে অনেক সময় ব্রেক করতে করতে গাড়ি উল্টে যায়। অনেক সময় এগুলো দেখা যায় না, তখন ওপর দিয়েই চালিয়ে দিতে হয়। আর রাতের বেলা তো এগুলো বোঝারই উপায় থাকে না। অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। আমিও দুর্ঘটনায় পড়েছি। কোনো মোটরসাইকেলচালক এই সড়কে প্রথম এলে অবশ্যই দুর্ঘটনার কবলে পড়বেন।’
অটোরিকশাচালক আলিম উদ্দিন বলেন, ‘সড়কে ঘন ঘন বিট দিছে গাড়ি চালাইয়া মজা নাই। একটু পর পর ব্রেক করতে হয়। অনেক সময় মনেও থাকে না। এত বিটের তো দরকার নাই। সারাডা সড়কে বিট দিয়া রাখছে। এসব বিটের কারণে অনেক গাড়ি উল্টে যাত্রীরা ব্যথা পাইছে। বেশি মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট হয়। প্রায় রাতেই মোটরসাইকেল উল্টে পড়ে।’
স্থানীয়রা জানান, অটোরিকশা বা সিএনজিতে করে হাসপাতালে অসুস্থ রোগী, গর্ববতী নারীকে নিলে গতিরোধকগুলোর কারণে তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছু কিছু গতিরোধক চলন্ত অবস্থায় বোঝা যায় না। এতে অনেক সমস্যা হয়। গাড়িভর্তি যাত্রী থাকলে গতিরোধক পার হওয়ার সময় ঝাঁকি লাগে। অপরিচিত চালকরা গতিরোধকগুলো সহজে দেখতে পায় না। অপরিকল্পিত এসব গতিরোধকের কারণে সন্ধ্যার পর দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। এগুলো অপসারণের দাবি জানান তারা।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এই সড়কে এতগুলো গতিরোধক কারা বসিয়েছে, সে তথ্য আমরা বলতে পারব না। আমার ডিপার্টমেন্ট এগুলো দেয়নি। এটা আনঅথরাইজড।’ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ‘এ সড়কে ১৬টি গতিরোধক। এগুলো গতিরোধক নয়, মরণফাঁদ। স্থানীয় যারাই গতিরোধক দিয়ে থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত। সড়কে অপরিকল্পিতভাবে গতিরোধক দেওয়ার নিয়ম নেই। আমি বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
‘দেশের মানুষ যখন ঘুমায়, শেখ হাসিনা তখন জেগে থাকেন। যাতে দৈত্য-দানবের বিষাক্ত নিঃশ্বাস দেশকে বিষাক্ত না করতে পারে। সেই সঙ্গে তিনি একটি সবুজ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন।’ শেরপুরের নকলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার জালালপুরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
এদিন দুপুরে সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক। সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আম্বিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, নির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ওয়াজ শুনতে গিয়ে মো. হৃদয় হাসান আলিফ (১৯) নামে এক কলেজছাত্র ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও নিহতের চার বন্ধুকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম জানায়নি। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের নরুন বাজার তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত আলিফ শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের ডুমনী গ্রামের মো. আমানউল্লাহর ছেলে। তিনি প্রহলাদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কী কারণে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমানউল্লাহ মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মর্জিনা আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরী হত্যা মামলার রায়ে স্বপন গাজী ও তার স্ত্রী আঁখি আক্তার তমাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে কারাদ-ের আদেশ দেওয়া হয়েছে। দ-িত আসামিরা পলাতক আছেন।
একই মামলায় আদালত আরেকটি আইনে স্বামী-স্ত্রীকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদ- দিয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদ- দেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষণা করেন।
স্বপন গাজী (৩৬) ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় পাইলট স্কুলসংলগ্ন রাসেল মিয়ার বাড়িতে স্ত্রী আঁখি আক্তার তমাকে (৩০) নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর বাড়িওয়ালা রাসেল ও তার স্ত্রী সাবিনা কান্নাকাটি শুনে ভাড়াটিয়া স্বপন গাজীর কক্ষে যান। সেখানে তাদের কথায় সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে তাদের কাছ থেকে জানতে পারে ভায়রার মেয়ে পরিচয় দেওয়া মর্জিনা আক্তারকে (১৬) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেছে স্বপন। এ হত্যায় সহযোগিতা করে তার স্ত্রী আঁখি।
বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত রাজশাহীর ২৬ শিশু আসামিকে ভালো কাজ করার শর্তে মুক্তির সুযোগ দিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এই আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্তদের ভালো কাজ করার এই কার্যক্রম আগামী ৬ মাস পর্যবেক্ষণ করা হবে। এই ৬ মাস তারা নিজ নিজ বাড়িতেই থাকবে। যদি তারা আদালতের নির্দেশনা ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কথা অনুযায়ী সুন্দর জীবনযাপন করে তাহলে তাদের মামলা থেকে খালাস দেওয়া হবে। তবে যারা নির্দেশনা উপেক্ষা করবে তাদের আবারও বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে ২৫ পুরুষ ও ১ নারী শিশু রয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুন নাহার মুক্তি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাডভোকেট মুক্তি বলেন মাদক বহন, ধর্ষণচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলার আসামি ওই ২৬ শিশু-কিশোর। এগুলো তাদের সবারই প্রথম মামলা। আদালতের নির্দেশনা তারা মানছে কিনা তা তদারক করার জন্য সমাজসেবা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
রাজশাহী সমাজসেবা দপ্তরের প্রবেশনারি অফিসার মতিনুর রহমান বলেন, আদালত আমাদের ওই শিশুদের অপরাধের ধরন দেখে ভালো কাজ কী কী করবে সেটি ঠিক করতে বলেছে। এছাড়া তাদের মাদকে না জড়ানো, বাল্যবিবাহ না করা, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, মারামারিতে জড়ানো থেকে বিরত রাখতে বলেছে আদালত।
এই সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, এসব মামলার আসামিদের বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তাদের বাড়ি রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায়। আগামী ৬ মাস সময়ে তাদের সংশোধনের একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের এই সময়ে মনিটরিং করব। এই সময়ে তাদের ভালো কাজ করাসহ ১০টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা ঠিক করে দিব এই সময়ে তারা কী কী করবে। শর্তগুলো কী কী হবে। এরপর ৬ মাস পর আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বন্যহাতি তাড়াতে গিয়ে মো. নূরুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তবর্তী বেতগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নূরুল ইসলাম একই ইউনিয়নের সন্যাসীপাড়া এলাকার মো. মফিজুল ইসলামের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক এনামুল হক জানান, তিন-চার দিনের মধ্যে এলাকায় ধান কাটা শুরু হবে। বন্যহাতি যাতে ধান ক্ষেত নষ্ট করতে না পারে সেজন্য নূরুলসহ আমরা পাঁচ-ছয় কৃষক ক্ষেতের কাছাকাছি অবস্থান নেই। অনুমানিক রাত ৯টার দিকে ধানের জমিতে পাশের পাহাড় থেকে বন্যহাতির পাল আক্রমণ করে। সবাই মিলে মশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়াতে গেলে হাতি শুঁড় দিয়ে টেনে এবং মাথায় আঘাত করে নূরুল ইসলামকে গুরুতর আহত করে। আমাদের ডাক চিৎকারে গ্রামবাসী হাতির পালকে ধাওয়া করলে ভারতের পাহাড়ের ভেতর চলে যায়। নূরুল ইসলামকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।