
লালমনিরহাটে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়া স্কুল শিক্ষক নূরুল আমিনের খোঁজ মেলেনি। অপহরণের তিন দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত শিক্ষককে উদ্ধার কিংবা অপহরণকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি।
অপহৃত শিক্ষক নূরুল আমিন (৫৫) জেলার আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি গ্রামের দোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। গত শুক্রবার সকালের দিকে তাকে নামুড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়। ওইদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় পুলিশের কেউ তাকে তুলে আনেনি। অন্য কেউ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
আদিতমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এন এম শরিফুল ইসলাম বলেন, রবিবার (গতকাল) অপহৃত শিক্ষক নূরুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করে আদিতমারী থানার অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।
অপহৃতের পরিবার জানায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস ও সাদা রঙের একটি কার নামুড়ি গ্রামে শিক্ষক নূরুল আমিনের বাড়ির সামনের রাস্তায় এসে দাঁড়ায়। পরে গাড়ি থেকে নেমে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল বাড়ির প্রধান ফটক টপকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে নূরুল আমিনের খোঁজ করতে থাকে। পরে নূরুল আমিনকে তার শয়ন কক্ষ থেকে বের করে এনে মারধর শুরু করে। এ সময় বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পল্লী চিকিৎসক চাচা আবু তালেব (৭০) ও ভাই স্কুল শিক্ষক রুহুল আমিনকে আঘাত করে। এক পর্যায়ে নূরুল আমিনকে গাড়িতে উঠিয়ে তারা দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। আদিতমারী থানার ওসি মোক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।’
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পিপলস ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন নামে এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এক পরিচালক গ্রাহকের প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা ফেরত পেতে গ্রাহকরা থানায় অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে উপজেলার বরাটি বাজারে এই এনজিও স্থাপিত হয়। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে নেওয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর টমি-১৯২৪। পরে এনজিওটি ভাতগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রাহক তৈরি করে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে। মূলধনের বিপরীতে অধিক মুনাফার লোভ দেখালে দুই বছরের মধ্যে তাদের গ্রাহকসংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়ে যায়।
এনজিওটির কার্যক্রম দেখে ভাতগ্রাম ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের জামাল ভুঞার দুই ছেলে দেলজু ও দেলুয়ার কয়েক বছর পূর্বে ১৫ লাখ টাকা জমা রাখেন। তাদের দেখে একই গ্রামের রহমত খান, শিউলী বেগম, রুমা বেগম ও রজ্জব ভুঞাসহ অনেকেই মোটা অঙ্কের টাকা ওই এনজিওতে জমা রাখেন। প্রথমদিকে এনজিওটির লেনদেন ভালো থাকলেও বিগত তিন বছর ধরে তাদের বরাটি বাজারের প্রধান কার্যালয় বন্ধ করে দিয়ে গোপনে সঞ্চয় সংগ্রহ করতে থাকে। পরে গ্রাহকের মুনাফার টাকা দিতে করতে থাকে নানা টালবাহানা।
এ নিয়ে ভাতগ্রাম ইউপি কার্যালয়ে একাধিক সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহক ভাতগ্রাম দাসপাড়া গ্রামের জামাল ভুঞার ছেলে দেলজুর রহমান সম্প্রতি মির্জাপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে ওই এনজিওর পরিচালক বাবুল হাসান বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, সম্প্রতি এনজিওটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিপি বেগমও বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন বলে দেলজুর রহমানসহ এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক রহমত, রজ্জব, রুমা ও শিউলী বলেন, আমাদের কাছ থেকে অধিক মুনাফার কথা বলে ১০ লাখ করে টাকা জমা নেন এনজিওটির কর্মকর্তারা। আমাদের প্রয়োজনের সময় টাকা চাইলে ‘দেই, দিচ্ছি’ বলে গত তিনি বছর ধরে টালবাহানা করছে। এখন তাদের খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না।
এনজিওটির ব্যবস্থাপক লিপি বেগম, সহকারী ব্যবস্থাপক শাহ্ আলম এবং মাঠকর্মী পারভীন আক্তারের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল দিয়েও সেগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ভাতগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একাধিকবার বসা হলেও এনজিও কর্তৃপক্ষ তাদের দেওয়া কথা অনুযায়ী কাজ করেনি।
মির্জাপুর থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ গত ৭ জানুয়ারি জেলার ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে স্ব-প্রণোদিত আদেশ জারি করেছেন। আদেশে অবৈধ ভাটাগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিশেষ পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুষ্টিয়া এবং উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মেহেরপুরে ইটভাটার জন্য বহন করা মাটি পড়ে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলার বিভিন্ন সড়ক, যা সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ওই মাটি সরকারি নতুন রাস্তাগুলোকে খুব দ্রুত চলাচলের অনুপযুক্ত করে দিচ্ছে। এছাড়া, অবৈধ ইটভাটার অস্তিত্ব পরিবেশকে হুমকিতে ফেলছে বলে এগুলো বন্ধে বিচারক এ আদেশ জারি করেছেন।
এছাড়া, ইটভাটার মাটি পড়ায় সড়কে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ও চলাচলকারীদের জন্য জীবনের হুমকি বিবেচনা করে বিষয়টিকে দ-বিধির ২৯০ ও ৪৩১ ধারা অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে আদালত। সেই সঙ্গে জেলায় ১০৩টি ইটভাটার মধ্যে অধিকাংশ লাইসেন্সবিহীন, অবৈধ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকা সংলগ্ন হওয়ার বিষয়টি ইটভাটা প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এর ধারা ৪ ও ৮ এর লঙ্ঘন এবং উক্ত আইনের ধারা ১৪ ও ১৮ অনুযায়ী অর্থদ- ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে এ আদেশ দিয়েছে আদালত।
আদেশে পিবিআইকে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিচে নয় এমন কর্মকর্তা দ্বারা সুষ্ঠু তদন্ত ও অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পরিবেশ অধিপ্তরের নিয়মের তোয়াক্কা না করে মেহেরপুরে যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন এবং ইটভাটার মাটিতে সড়ককে পিচ্ছিল করে ঝুঁকিপূর্ণ ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংবাদপত্রে এবং টেলিভিশনে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও কিছুতেই থামছে না ইটভাটা স্থাপনের নামে এই দুর্বৃত্তায়ন। ফলে, প্রতি বছর সামান্য কুয়াশা কিংবা বৃষ্টিতে ইটভাটার মাটি পড়ে রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে। বেড়ে যাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ঝরে যাচ্ছে অনেক প্রাণ। আবার সড়কের পাশে এবং শহরের মধ্যে ইটভাটা করে যেমন পরিবেশ দূষণ করছে, তেমনি আবাদি জমির মধ্যে ভাটা করে আশপাশের ফসলি জমির ফসলহানিসহ বিস্তীর্ণ আবাদি জমির ক্ষতি করছে। সেই সঙ্গে ইটভাটায় প্রতিদিন দেদার শত শত টন কাঠ পুড়িয়ে বৃক্ষ সম্পদকে উজাড় করা হচ্ছে। ফিক্টস ভাটা বন্ধ এবং অবৈধ ইটভাটা স্থাপনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরও মেহেরপুরে ৯৯ ভাগ ইটভাটা এখনো চলছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, প্রতিবারের মতো এবারও শুরু হয়েছে ইটভাটার কার্যক্রম। ফলে, বিস্তীর্ণ জমি ধ্বংস করে প্রধান উপকরণ মাটি কেনাবেচা এখন তুঙ্গে। ভাটা মালিকরা জমির উপরিঅংশ (কৃষিজমির টপ সয়েল) কিনে নিয়ে জমির উর্বরাশক্তিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কেউবা সরকারি পুকুর কিংবা মৎস্য বিলের মাটি পাচার করে সেই মাটি ইটভাটায় বিক্রি করে জলাশয় ধ্বংস করছে।
ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান আতু ইটভাটার মাটিতে রাস্তার ক্ষতি প্রসঙ্গ স্বীকার করে বলেন, আমরা বিষয়টি দেখেছি। প্রতিটি ভাটা মালিককে স্ব-এলাকা পরিষ্কার করতে বলেছি।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মনসুর আলম খান বলেন, এই ধরনের খবর পেলেই ঘটনাস্থলে মোবাইল কোর্ট পাঠানো হচ্ছে। ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপপরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, মেহেরপুরে একটি ইটভাটা ছাড়া সবই অবৈধ। কোনো ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই।
দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববাজারে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের সবজি। গত ডিসেম্বরে কয়েক দফায় শুধু মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে কয়েক কোটি টাকার বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, লাউসহ বিভিন্ন সবজি রপ্তানি হয়েছে। জানুয়ারিসহ আগামী তিন মাসে এ উপজেলা থেকে আরও সাত কোটি টাকার সবজি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতে পারে বলে প্রত্যাশা স্থানীয় কৃষি বিভাগের।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আড়াইহাজারে চলতি বছর ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। এসব জমিতে বিষমুক্ত বাঁধাকপি, ফুলকপি, রজবপাতা, লাউপাতা, লাউশাক, বরবটি, কাঁকরোল, উচ্ছে, ঝিঙে, লালশাক, ডাঁটা, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, পটোল, চালকুমড়া, লাউ, কাঁচাপেঁপে, কাঁচাকলা, শসা, শিম, লাউ, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, মুলাসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়। এসব সবজি আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডা, দুবাই, ইতালিসহ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের প্রায় ৩৫টি দেশে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে।
এ ছাড়া আড়াইহাজারের উৎপাদিত সবজি প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য জেলায়।
জানা যায়, আড়াইহাজার উপজেলা ও গোপালদী পৌরসভার ব্রাহ্মনদী, সাতগ্রাম, দুপ্তারা, হাইজাদী, ফতেপুর, উচিৎপুরা, খাগকান্দা, বিশনন্দী, মাহমুদপুর ও কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় ৩০০ কৃষক রপ্তানির উপযোগী বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। এবছর বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার ও সম্প্রসারণে উদ্বুদ্ধ করে পরিবেশ রক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার লাভ করেন আড়াইহাজারের কৃষক শফিকুল ইসলাম।
উপজেলার সরাবদী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ২০ বিঘা জমিতে লাউ, বেগুন, টমেটো, শিমের আবাদ করেছি। ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে সবজি কিনে নিয়ে বিদেশে রপ্তানি করেন। তাই নগদে ও বেশি দামে বিক্রি করে চাহিদামতো মুনাফা হয়।’ ২৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছেন নগর জোয়ার গ্রামের শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘আগে অনেক সময় লোকসানে সবজি বিক্রি করতে হতো। এখন বিদেশে রপ্তানি হওয়ায় সবজি বিক্রিতে আর কোনো সমস্যা হয় না।’
পাইকার কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা জমি থেকে সবজি সংগ্রহ করে ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও কাওরানবাজারে আড়তদারদের কাছে নিয়ে যাই। সেখান থেকে প্রসেসিং করে রপ্তানিকারকরা বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করেন।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ফারুকী বলেন, ‘উপজেলার প্রায় ৩০০ কৃষক রপ্তানির উপযোগী বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন ও সরবরাহ করছেন। কৃষি অফিস থেকে বিষমুক্ত সবজি চাষে সেক্স ফেরোমন, হলুদ আটা টেপ ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতিসহ নেওয়া হয়েছে বিশেষ পদ্ধতি।’ নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল মাজেদ বলেন, ‘আড়াইহাজারের লাউ, ঢেঁড়শ, বেগুন যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে। ইংল্যান্ডে একটি বাংলা মার্কেট রয়েছে। সেখানে প্রচুর চাহিদা দেশের সবজির।’
১০ ঘণ্টার বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে স্বাভাবিক হয় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরি চলাচল। এর আগে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়াতে গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে ঘাট কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া প্রান্তে আটকে পরে শতাধিক যানবাহন।
গতকাল সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফেরি বন্ধ থাকায় জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়ক এলাকায় তৈরি হয়েছে যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবোঝাই ট্রাকের সারি। সাড়ে ৮টায় ফেরি চলাচল শুরু হলে যানবাহনের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
ফেরি চলাচল বন্ধের সময় গ্রিন বাংলা পরিবহনের যাত্রী রায়হান বলেন, গতকাল (গত শনিবার) রাত ১১টা থেকে ঘাট এলাকায় এসে বসে আছি।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আলীম ডাইয়ান বলেন, কুয়াশার জন্য দুর্ঘটনা এড়াতে রাত থেকেই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অপরদিকে, সকাল সোয়া ৯টার দিকে ফেরি চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবদুস সালাম।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আগুন পোহাতে গিয়ে কমলা বেগম (৮৫) নামে এক নারী দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় পৌর এলাকার আজিমপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে । তিনি ওই গ্রামের মৃত গোপাল খাঁর স্ত্রী।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কমলা বেগম শনিবার সন্ধ্যায় শীত নিবারণের জন্য ঘরের মধ্যে মাটির পাত্রে খড়কুটা জ¦ালিয়ে আগুন পোহাচ্ছিলেন। হঠাৎ ওই আগুন তার কাপড়ে লাগে। এতে দগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। নিহতের মেয়ে বছিরন পার্শ¦বর্তী বাজারে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে দেখতে পান তার মা উঠানে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে আছেন। এরপর বছিরনের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে দেখতে পান কমলা বেগম মারা গেছেন।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।