
রাজশাহীর বাগমারায় ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে বৃদ্ধ এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে জেল খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর অভিযোগ করে ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক এটিএম তোজাম্মেল হক এর বিচার দাবি করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
দেশের তরমুজ উৎপাদনের সিংহভাগ আবাদ হয় দক্ষিণের উপকূলীয় জেলা বরগুনায়। খেতে সুস্বাধু ও মিষ্টি হওয়ায় সারাদেশেই রয়েছে বরগুনার তরমুজের চাহিদা। সারাদেশে বরগুনার তরমুজের চাহিদাকে মাথায় রেখে এবছর বরগুনায় ব্যাপক তরমুজ আবাদ হয়েছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবছর উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় লাভ নিয়ে শঙ্কিত বরগুনার কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে তরমুজ চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবছর কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন। এরমধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর ও আমতলী উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। প্রতিবছর জেলার আমতলী উপজেলায় বেশি তরমুজ আবাদ হলেও এবছর সবচেয়ে বেশি তরমুজ আবাদ হয়েছে বরগুনায়।
কিন্তু, আবাদ বেশি হলেও গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আদৌ লাভ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। বরগুনার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছর ১০০ গ্রাম তরমুজের বীজের দাম ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা। এবছর সেই একই তরমুজের বীজের দাম প্রতি ১০০ গ্রামে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় এক হাজার টাকা। এবছর এক কৌটা (১০০ গ্রাম) বিগ ফ্যামিলি বীজ ৩ হাজার টাকা, জাগুয়া ৩ হাজার ২০০ টাকা ও এশিয়ান বীজ ৩ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জ¦ালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাষে বেশি খরচ হওয়ায় এবার তরমুজের উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে করে আসলে কতটা লাভবান হবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সবজায়গাতেই বীজতলা তৈরি হয়ে গেছে। এখন কর্মব্যস্ত সময় কাটছে বীজ বপণে। নারী-পুরুষ উভয়ে সমান তালে মাঠে বীজ বপণের কাজ করছেন। অনেকের ক্ষেতে বীজ বপণ শেষে বীজ লাগানো স্থানটিতে ওষুধ স্প্রে করছেন বিভিন্ন পোকামাকড়ের হাত থেকে বীজ রক্ষা করার জন্য। কিছু কিছু ক্ষেতে বীজ থেকে চারা ফুটছে।
বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি নাসির খান বলেন, গত বছরে ঘূর্ণিঝড় অশনির বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেত ডুবে সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছিল। তারপরও এ বছর ১৬ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। এ বছর সবকিছুর দাম আরও বেড়েছে, তাই গত বছরের মতো লোকসানে পড়তে হয় কি না আল্লায় জানেন।
উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের মাইঠা গ্রামের চাষি আল আমিন বলেন, এ বছর ৮০০ শতক জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। এতে তিন লাখ টাকা ব্যয় হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত কৃষকদের উৎপাদন নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এবছর জেলায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও প্রায় দ্বিগুণ তরমুজ আবাদ হবে।
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার দুরমুঠ-নিলক্ষিয়া সড়কের ছয় কিলোমিটার নির্মাণকাজ মাঝপথে বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যে পরিমাণ কাজ হয়েছে, তাও নিম্নমানের হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে অনেক স্থানে নির্মাণ করা সড়ক ধসে গেছে। প্রায় সাড়ে তিন বছরেও সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে সড়কটি নির্মাণ করার জন্য ‘ময়মনসিংহ অঞ্চল পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় দুরমুঠ থেকে নিলক্ষিয়া পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৯৮ টাকা। কাজটি পায় চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স। তবে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কাজটি করছেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন। ২০২০ সালের ২৯ মার্চ সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। তিনবার মেয়াদ বাড়ানোর পর সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে।
জানা যায়, সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আওতায় এনেছে। ফলে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গুনতে হবে জরিমানা। তারপরও কবে এই সড়কের কাজ শেষ হবে, জানে না কেউ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সংসদ সদস্যের হেঁয়ালিপনায় সড়কটি নির্মাণের কাজ খুবই ঢিমেতালে চলছিল। এখন তো পুরো কাজই বন্ধ রয়েছে। যেটুকু কাজ সম্পন্ন করেছে, সেটাও নিম্নমানের। কাজ শেষ না হতেই বিভিন্ন স্থান ধসে পড়ছে। এই সড়কে গাইবান্ধা ইউনিয়নের লোকজন ইসলামপুর উপজেলা শহর ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াত করেন। সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মহিষকুঁড়া গ্রামের আসমত আলী বলেন, ‘চানগঞ্জ নৌকাঘাট থেকে মহিষকুঁড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে বালু ও খোয়ার কাজ শেষ হয়েছিল। পরে কার্পেটিং করার জন্য সড়কে রোলারও করা হয়েছিল। ওই অবস্থায় রেখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৯ মাস থেকে লাপাত্তা। এখানে আমি এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি ফেলেছিলাম। এমপির লোকজন আমাকে দিয়ে মাটি ফেলায়। কিন্তু ৯ মাসেও আমার পাওনা টাকা দেওয়া হয়নি। প্রায় ২০ বার এমপির বাড়িতে গিয়েছি টাকার জন্য।’
এ বিষয়ে জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘কাজটি আমার নয়। এক ভদ্রলোক কাজটা চালাতে পারতেছে না। আমার নাম দেয়। তাও কাজ হইতেছে। সোয়া দুই কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। সরকার টাকা-পয়সা দেয় না। বাকি কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে টাকা দিতে বলেছি। দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ‘কোনো টাকা নেই, টাকা এলে পাবেন।’ তবে খুব দ্রুত সড়কের কাজটি শেষ হবে।’
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল হক বলেন, ‘কাজটির দুই কিলোমিটার কার্পেটিং শেষ হয়েছে। বাকি চার কিলোমিটার ম্যাকাডাম পর্যন্ত করা হয়েছে। মালামালের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে কাজটি করতে বিলম্ব হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়কের কাজ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যা একটু ছিল তা সংশোধন করা হয়েছে’।
প্রতি বছরই শীতকালে অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখর হয় আমাদের দেশ। দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই শীতের অতিথি পাখিদের দেখা যায়। এর ব্যতিক্রম নয় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা। রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপ-শহরের গোয়ালপাড়া, বাঘবেড় এলাকার লেকে প্রতি বছরই দেখা মেলে অতিথি পাখির। এখানে আসা অতিথি পাখিদের যাতে কেউ কোনো ক্ষতি না করতে পারে সেটি খেয়াল রাখেন স্থানীয়রা।
এ কারণে অতিথি পাখিরাও নির্বিঘে্ন এখানে প্রতি বছর পাড়ি জমায়। গোয়ালপাড়া ও বাঘবেড় এলাকার এ দুটি লেক যেন অতিথি পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। রূপগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা থেকে অতিথি পাখি দেখতে বাঘবেড় ও গোয়ালপাড়া এলাকায় এসে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
জানা গেছে, শীতকাল এলে শীতপ্রধান দেশের পাখিরা দেশ ভ্রমণে বের হয় বেঁচে থাকার জন্য। মূলত আমাদের দেশে আসে সাইবেরিয়া এবং হিমালয় অঞ্চলের পাখিরা। শীতকাল এলে ওইসব দেশের ভূভাগ ও জলাশয়গুলো বরফে ঢেকে যাওয়ায় সেখানকার পাখিরা, বিশেষ করে সেসব দেশের হাঁস, বক ইত্যাদি জলচর পাখি প্রয়োজনীয় খাবার পায় না। তখন তারা দেশান্তরী হতে শুরু করে। পাড়ি জমায় এমন দেশে যেখানে হাওর-বাঁওড়, নদী-নালার অভাব নেই, খাবারের সমস্যা নেই। এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নামটি উল্লেখযোগ্য। শীতটা কাটিয়ে আবার ওরা পাড়ি জমায় নিজ দেশে। এরই ভেতর পাখি-প্রেমিকরা মন ভরে দেখে নেয় তাদের।
তবে এক শ্রেণির লোভী শিকারির নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য দুর্লভ প্রজাতির অতিথি পাখি। এসব কারণে এদেশে আগের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কমে গেছে অতিথি পাখি আগমনের সংখ্যা। তবে অনেকটাই ব্যতিক্রম নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বাঘবেড় ও গোয়ালপাড়া এলাকা। বাঘবেড় ও গোয়ালপাড়া এলাকায় অতিথিদের নিরাপদ আবাস্থল গড়ে উঠেছে।
ঘুরতে এসে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ রায়হান বলেন, অতিথি পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ ও উড়ে বেড়ানো দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেল।
অতিথি পাখি দেখতে আসা আলামিন জানান, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পাখিদের বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন আছে। যে দেশে পাখি বেশি, সে দেশে পর্যটকের সংখ্যাও বেশি।
স্থানীয় যুবক রিপন মিয়া বলেন, বাড়ি লেকের পাশের হওয়ার কারণে শীতকালে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। ব্যাপারটি আমার মনে অনেক প্রশান্তি জোগায়। আমরা এলাকাবাসী পাখিগুলোকে দেখে রাখি। যাতে করে কেউ পাখিগুলোর ক্ষতি করতে না পারে। এ কারণে পাখিরাও আসে প্রতি বছর।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে রাতের আঁধারে একটি মৎস্য খামারে দুর্বৃত্তের বিষ প্রয়োগে বিপুল পরিমাণ মাছ মারা গেছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের নিচকাটা গ্রামের জহিরুল ইসলাম জসিমের মাছের খামারে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার মাছ মারা গেছে বলে দাবি করেছেন ওই খামারি।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি জহিরুল ইসলাম জসিম বলেন, আমি দীর্ঘ ৩০ বছর মাছের খামার পরিচালনা করে আসছি। আমি খামার করেই কোনোরকম সংসার চালাই। কে বা কারা আমার ১ একর আয়তনের খামারের ছোট দুটি অংশে বিষপ্রয়োগ করেছে। এতে পুকুরে থাকা বিক্রি উপযোগী রুই, কাতল, মিরর কার্পসহ দেশীয় প্রজাতির প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার মাছ মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু এইবারই না আমার খামারে আরও একবার বিষ দিয়েছে। তখনো আমার অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এইবারও বড় ধরনের ক্ষতি করল। আমি এর বিচার চাই।’
রাঙ্গাবালী থানার ওসি (তদন্ত) সালাম মোল্লা বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে অর্ধশতাধিক শ্যালো মেশিন ও গভীর নলকূপ দিয়ে (ডিপ টিউবওয়েল) ভূগর্ভস্থ থেকে বোরো ধানের ক্ষেতে সেচ বাণিজ্য চলছে। এর ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়ে বসতবাড়ির অগভীর নলকূপগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট ও বেশকিছু নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, শ্যালো মেশিনে ভূগর্ভ থেকে সেচ প্রদানে উপজেলা পরিষদ থেকে লাইসেন্স নেওয়ার কথা থাকলেও তা কেউই মানছে না।
জানা গেছে, শ্যালো মেশিন ও গভীর নলকূপের মাধ্যমে মাটির ৭০ ফুট থেকে ৩০০ ফুট নিচ থেকে পানি উত্তোলনের মাধ্যমে সেচ দেওয়া হচ্ছে। শ্যালো মেশিন ও গভীর নলকূপের মালিকরা নিজেদের জমির পাশাপাশি কিয়ার প্রতি (৩৩ শতক) ১ হাজার ৫০০ টাকা হারে সেচ প্রদান করছেন। ভূগর্ভ থেকে প্রতিনিয়ত পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নিচে নামতে শুরু করেছে। ফলে আশপাশের বসতবাড়ির অগভীর নলকূপগুলোতে বিশুদ্ধ পানি মিলছে না। কোনো কোনো নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ সতিঝির গ্রাম, মরাজানের পার, হাজীনগর গ্রাম, পতনউষার ইউনিয়নের মহেষপুর, শ্রীসূর্যসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে অসংখ্য শ্যালো মেশিন ও ডিপ টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। এসব নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করে আশপাশের এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকায় বোরো ধানের ক্ষেতে সেচ প্রদান করা হচ্ছে।
মরাজানের পার গ্রামের রুশনা বেগম, সালমা বেগম ও দক্ষিণ সতিঝির গ্রামের রাজু মিয়া জানান, গভীর নলকূপ ছাড়লেই টিউবওয়েলে পানি উঠতে সমস্যা দেখা দেয়। গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির নলকূপে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
শমসেরনগরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহিবুর রহমান বলেন, ‘এখন বলতে গেলে ঘরে ঘরেই গভীর নলকূপ ও শ্যালো মেশি। এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।’ কমলগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘শ্যালো মেশিনগুলোর বিষয়ে শিগগিরই তথ্য সংগ্রহ করব।’
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।