
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ১১ জন আহত হন। নিহত যুবকের নাম ফালান মিয়া (৩০)।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার চরগুলগুলিয়া গ্রামে ইয়াকুব মিয়া ও জয়নাল মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে ওই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর ওই গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শতাধিক টেঁটা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দুই ঘণ্টাব্যাপী ওই সংঘর্ষে ফালানসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। বেলা ২টার দিকে টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় ফালানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফালান ওই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
সিরাজদিখান থানার ওসি এ কে এম মিজানুল হক জানান, চরগুলগুলিয়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে ইয়াকুব ও নুরু মিয়ার ছেলে জয়নালের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জেরে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান।
ওসি আরও জানান, সংঘর্ষের পরপরই ওই গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শতাধিক টেঁটা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ফালানের খালাতো ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সংঘর্ষ চলাকালে ফালান ইয়াকুবের পক্ষ হয়ে ছুটে যান। সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ জয়নালের লোকজন ফালানকে লক্ষ্য করে টেঁটা ছোড়ে। বুকে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ফালান মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ইয়াকুব ও জয়নালে পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার আতঙ্কে তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইলে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং সঠিকভাবে স্ক্যারিফাই ও রোলার মেশিন ব্যবহার না করে দায়সারাভাবে রাস্তা সংস্কার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জোনাইল বাজার-চামটা ব্রিজমুখী সড়কের সাড়ে তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তা সংস্কারের জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়। এর মধ্যে জোনাইল বাজারের মধ্যে ২৯২ মিটার আরসিসিসহ অবশিষ্ট অংশ কার্পেটিং করা হবে। ১ কোটি ৬৭ লাখ লাখ টাকার চুক্তিতে ঠিকাদার খাইরুল কবির রানা কাজটি বরাদ্দ পান। তার কাছ থেকে নাটোরের ঠিকাদার আকরামুল ইসলাম আক্কু কিনে নিয়ে কাজটি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরাতন ভাঙা রাস্তাটি প্রথমে স্ক্যারিফাই (মেশিনের সাহায্যে পিচ ঢালাইসহ খোয়া উপড়ে দিয়ে পুনরায় রোলার করা) করার সময় যথাযথ নিয়ম না মেনে পুরাতন রাস্তার পিচসহ আস্ত কার্পেটিং তুলে আগের মতো করে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ এগুলো ভেঙে ছোট ছোট করে দেওয়ার কথা। আবার স্ক্যারিফাই করার পর ভালোভাবে রোলার করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। ফলে পরে খোয়া বিছিয়ে রোলার করা হলেও রাস্তা অসমান থেকে যাচ্ছে। অ্যাজিংয়ে নতুন ও ভালোমানের ইট ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও তা না করে রাস্তার পুরাতন ইট ব্যবহার করা হয়েছে। রোলার করার পর ভেঙে গুঁড়া হয়ে গেছে নিম্নমানের ইটের খোয়া। বেশ কিছু জায়গায় পুড়ে যাওয়া ফাঁপা ইটের খোয়াও ব্যবহার করা হয়েছে।
চামটা গ্রামের ভ্যানচালক রাশিদুল ইসলামসহ সেখানে উপস্থিত আরও পাঁচ-ছয়জন ব্যক্তি জানান, এভাবে সংস্কার করা হলে রাস্তা বেশিদিন টিকবে না।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি গাজীউর রহমান ও সোহেল রানার কাছে জানতে চাইলে তারা এ প্রতিবেদককে অনৈতিক সুবিধার প্রস্তাব দিয়ে এসব নিয়ে সংবাদ না লেখার অনুরোধ করেন।
কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন বলেন, আমরা রাস্তায় মানসম্পন্ন খোয়া দিতে বলেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল করিম বলেন, পুরাতন রাস্তার তুলে ফেলা কার্পেটিংয়ের আস্তরণ ভেঙে ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু না ভেঙে দিলে অনিয়ম হবে। তিনি রাস্তায় দেওয়া খোয়াগুলোর মান খারাপ নয় বলে দাবি করেন।
ট্রেনে কেটে কিশোরগঞ্জে কলেজছাত্র এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও ফেনীতে দুই রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
কিশোরগঞ্জ : শহরতলির কানিকাটা এলাকায় চট্টগ্রামগামী ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে শাকিন আহমেদ (১৮) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শাকিন নানাবাড়ি থেকে শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজে পড়াশোনা করতেন। তিনি দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে কানিকাটা এলাকায় রেললাইনে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় চট্টগ্রামগামী ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শাকিন।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি আমিনুল হক জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জয়পুরহাট : আক্কেলপুর বেগুনবাড়ী রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অটোরিকশার চার যাত্রী। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অটোরিকশাচালক আতাউর রহমান (৪৮) আক্কেলপুর উপজেলার রোয়াইড় গ্রামের মোতারব হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন মজিদা বেগম (৪১), ফাতেমা বেগম (৪২), তানিয়া খাতুন (১২) ও আজমিরা আক্তার (১৩)।
স্থানীয়রা জানায়, অটোরিকশাটি রেলগেটে ওঠার পর উল্টে যায়। তখন ট্রেন আসছে দেখে চালক অটোরিকশাটি রেললাইনের ওপর থেকে সরাতে যান। এ সময় ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় চালকের মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
আক্কেলপুর রেলস্টেশনের মাস্টার হাসিবুল ইসলাম বলেন, বেগুনবাড়ী রেলগেটটি অনুমোদনহীন। এ কারণে সেখানে কোনো গেটম্যান নেই।
ফেনী : ট্রেনে কাটা পড়ে আবদুল হালিম (৫০) নামে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী রেলস্টেশনের অদূরে গুদাম কোয়ার্টার রেলক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল হালিম বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের সাওলিয়া এলাকার মৃত বশির উদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি ফেনীতে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রেল-পুলিশ ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ট্রেন আসার সময় হলে গেটম্যান গেট বন্ধ করে দেন। কিন্তু হালিমের রিকশাসহ বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে গিয়ে রেললাইনে চলে আসে।
একসময়ের খরস্রোতা ইছামতী নদী এখন মৃতপ্রায়। নদীর বুকজুড়ে পানির ঢেউ আর পালতোলা নৌকার বদলে এখন দেখা মিলছে সবুজের সমারোহ। নদীটি এখন সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে চলছে বোরো ধানের বীজতলাসহ ইরি-বোরো ফসলের চাষাবাদ। শুকনো মৌসুমের আগেই নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হারিয়েছে অনেক দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী। এতে জেলেরা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছেন ভিন্ন পেশায়। এখন যে কেউ দেখলে একে নদী বলে বিশ্বাস করতে চায় না। কারণ পানিবিহীন নদীর বুকজুড়ে সমতল ভূমিতে রয়েছে সবুজ ফসলের চাষ।
জানা গেছে, ভাঙন ও বন্যার হাত থেকে রক্ষায় ২০০০ সালে ঢাকার দোহারের অরঙ্গাবাদ থেকে মানিকগঞ্জের হাটিপাড়া বংখুরী পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। বেড়িবাঁধের কারণে সে যাত্রায় নদীভাঙন থেকে রক্ষা পেলেও সেই বাঁধই এখন ইছামতী নদী মরার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অদক্ষতা ও অপরিকল্পিত বাঁধে ইছামতী-পদ্মা নদীর সংযোগ স্থলে জলকপাট (স্লুইসগেট) স্থাপন না করা এবং বহু বছরেও নদীটি ড্রেজিং না করায় ইছামতী এখন বিলুপ্তির পথে। এতে সমস্যায় পড়েছে স্থানীয় পাঁচ হাজার জেলে পরিবারের প্রায় ২৫ হাজার সদস্য। সে সঙ্গে বেকার হয়ে পড়েছে নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হাজারও পেশার মানুষ। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে ঢাকা জেলার দোহার-নবাবগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ওপর।
স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা জেলার অন্যতম বৃহত্তম কোঠাবাড়ীর বিলে আজ পানির অভাবে ধান চাষ করতে পারছেন না কৃষক। একসময় এ বিলে চাষ হতো লাখ লাখ হেক্টর ইরি-বোরো ধান। বিলের উৎপাদিত ধানই নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলাবাসীর চালের চাহিদা মেটাত। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে জেলেরা এ বিলের পানিতে রাত-দিন মাছ শিকারে ব্যস্ত থাকত। আর এখন বিলে তো দূরের কথা ইছামতী নদীতেই পানি নেই।
নবাবগঞ্জের বারুয়াখালী নবগ্রাম এলাকার আশিক মন্ডল জানান, আগে বাবার সঙ্গে নদীতে মাছ ধরতে যেতেন। কিন্তু এখন নদীতে পানি নেই, মাছও নেই। ওই এলাকার সুনিরাম হালদার, নিধন হালদার, নরেশ হালদার একসময় নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্ত এখন বেকার। তবে তারা এখনো পুরনো পেশায় ফিরে যেতে চান। তাদের দাবি, নদী খনন করে আবারও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক।
উদপুর এলাকায় নদীপাড়ের বাসিন্দা মো. বাবুল বলেন, ‘এ নদীর পানি সারা বছর দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হতো। বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেওয়ার জন্য পানির কোনো চিন্তাই করতে হতো না। কিন্তু এখন আর নদীর বুকে সেচ দেওয়ার মতো পানি নেই। নদীর বুকে চাষ করা হচ্ছে বোরো ধান।’
যদিও নদীর বুকে ধান চাষকে কৃষকের ভালো হিসেবেই দেখছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে নদীগুলো তার রূপ হারিয়ে ফেলেছে। আর সেই সুযোগে কৃষকরা সেখানে আবাদ শুরু করেছেন। এতে অবশ্য কৃষকরা উপকৃত হচ্ছে।’
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম আওয়ারনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, ‘সোনাবাজু বেড়িবাঁধে প্রয়োজনীয় স্লুইসগেট নির্মাণ এবং নবাবগঞ্জ থেকে সোনাবাজু বেড়িবাঁধ পর্যন্ত খনন করা হলে তবেই ইছামতী নদী বাঁচানো সম্ভব হবে।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত বলেন, ‘২০১০ সালে এ বাঁধে ছয়টি স্লুইসগেট নির্মাণ, ইছামতী নদীর ৭২ কিলোমিটার খনন এবং আড়িয়াল বিলের ছয়টি খাল খননসহ সমন্বিত পানি নিষ্কাশন নামে একটি প্রকল্প ওপর মহলে জমা দেওয়া ছিল। খাল খননের কাজ চলছে, ধীরে ধীরে সব কাজই করা হবে।’
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘নদী খননের বিষয়ে স্থানীয় এমপি সালমান এফ রহমান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানানো হবে।’
ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, ‘ইছামতী নদী নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। তবে নদীর কাঁশিয়াখালী বেড়িবাঁধে দুটি স্লুইসগেট রয়েছে, নদীর স্বার্থে আরও নির্মাণ করা হবে।’
মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এমএ মতিনের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। গতকাল শুক্রবার কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। পরে তারা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা গেজেট থেকে এমপি এমএ মতিনের নাম বাতিলের দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু অভিযোগ করেন, বর্তমান এমপি এমএ মতিনসহ উলিপুর উপজেলার দেলোয়ার হোসেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জার বিষয়। এ বিষয়ে এমপি এমএ মতিন বলেন, তারা তো কেউ মুক্তিযোদ্ধা না। আগামী রবিবার এ বিষয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানান।
শরীয়তপুরের জাজিরায় প্রাপ্ত (১৪) নামে এক ভ্যানচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের আফাজ উদ্দিন মুন্সিরকান্দি এলাকার একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত প্রাপ্ত উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামের মৃত আতিকুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ জানায়, প্রাপ্ত গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে জাজিরার সেনেরচর এলাকার নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল ইসলাম জানান, তার শালা এমাদাদুল বেগ ও সম্বন্ধী জাহিদ বেগকে নিয়ে প্রাপ্তকে মোবাইলে ফোনে ডেকে কাজিরহাটে নিয়ে প্রথমে ভ্যান ছিনিয়ে নেয়। পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে । ভ্যানটি মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী এলাকার ইদ্রিস মাদবরের কাছে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই এমদাদুল বেগ ও ইদ্রিস মাদবরকে আটক করা হয়। জাহিদকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।
জাজিরা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। দফায় দফায় বিদ্যুৎ থাকছে না বাসা-বাড়ি, অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে একটি মহল পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টায় আছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য এসেছে। আর ওই তথ্য পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করেছেন। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সোমবার পুলিশের সব রেঞ্জ অফিস ও ইউনিট প্রধানদের কাছে বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
বিশেষ বার্তা পেয়ে ইউনিট প্রধান, রেঞ্জ ডিআইজি ও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি। এরই মধ্যে যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলো নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। এই জন্য আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সোমবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সব ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের কাছে বিদ্যুৎ স্টেশনে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি নজরদারি বাড়াতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটি মহল লোডশেডিংয়ের অজুহাতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। যেসব এলাকায় বেশি বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তারও একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর আমরা বিশেষ বৈঠক করছি। এলাকায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তা সত্য। এ জন্য আমরা বেশ সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ অফিস ও স্টেশনগুলোর বিষয়ে থানার ওসিদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে বলেন, লোডশেডিংয়ের অজুহাত তুলে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে একটি বিশেষ মহল। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়তি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে থানার ওসিদের নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন জেলার পুলিশ সুপাররা। এমনকি বাড়তি ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তা ছাড়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
বিদ্যুৎ অফিসের পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলতে ৫০ থানার ওসিদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক দেশ রূপান্তরকে জানান, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে জন্য আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলোর পাশাপাশি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো বাড়তি নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে সবাইকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎসহ যেকোনো সমস্যা নিয়ে কোন মহল যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। আশা করি বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না। তারপরও পুলিশ সতর্ক আছে।
সূত্র জানায়, লোডশেডিংকে পুঁজি করে কেউ যাতে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার পর সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, বিদ্যুৎ অফিস, সাবস্টেশনসহ কেপিআই স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম ও পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা সমিতি বা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও পুলিশকে চিঠি দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তাও চাওয়া হয়েছে।
বছরে ৪০ কোটি ডলার পারিশ্রমিকের প্রস্তাব নিয়ে লিওনেল মেসির সংগে যোগাযোগ করছে আলো হিলাল। তারা মংগলবার চুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে জানিয়ে রেখেছে। কিন্তু মেসি তাদেরকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রস্তাবটা পিছিয়ে দিতে বলেছেন বলে খবর দিয়েছে ফুটবল বিষয়ক ওয়েব পোর্টাল গোল ডটকম।
তবে সৌদি ক্লাব এ-ই প্রস্তাব এখনই গ্রহন না করলে আগামী বছর তা একই রকম থাকবে না বলে জানিয়েছে।
মেসি আসলে তার শৈশবের ক্লাবে আরো অন্তত এক বছর খেলতে চান। তাতে তার পারিশ্রমিক সৌদি ক্লাবের প্রস্তাবের ধারে কাছে না হলেও ক্ষতি নেই। জানা গেছে, বার্সা তাকে এক বছরে ১৩ মিলিয়েন ডলার পারিশ্রমিক প্রস্তাব করতে যাচ্ছে।
লা লিগা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ায় মেসিকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবে বার্সা। ধারনা করা হচ্ছে বুধ-বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ ব্যাপারে একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ৯৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা নতুন বাজেটে এই বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণের ফলে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, দ্বৈত জ্বালানি, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, রামপালে কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ও পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন এবং ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া, ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে পাশর্^বর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি ঝাড়খ-ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে শিগগিরই। তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে সংগ্রহ করতে চাই। এরসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ৬০ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে অফ গ্রিড এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডিজেলচালিত পাম্পের জায়গায় সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করার অংশ হিসেবে সেচকাজে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৫৭০টি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৮৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সর্বোপরি, রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উৎপাদিত বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে ৬ হাজার ৬৪৪ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সঞ্চালন লাইন ১৪ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া বিতরণ লাইন ৩ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ৬ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুতের সিস্টেমলস ১৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার কিলোমিটারে সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের অপব্যবহার রোধের লক্ষ্যে গত ৫ বছরে প্রায় ৫৩ লাখ প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায়, জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ৮ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি করে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই মজুদ ক্ষমতা ৩০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনে বাড়ানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উদ্বোধন করা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করা জ্বালানি তেল (ডিজেল) দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় এবং সৈয়দপুরে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকায় একটি বৃহৎ সমন্বিত তেল শোধনাগার স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের সিদ্ধান্ত আছে। সম্প্রতি ভোলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানোর পর দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ৯৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এতে অতিরিক্ত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হওয়ায় আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি এবং স্পট মার্কেট থেকেও কেনা হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বাজেট বক্তৃতায় আরও বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৮ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় ২১৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২৬ সালের মধ্যে পায়রা ও ভোলা থেকে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য আরও ৪২৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি অপচয় রোধে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজও চলছে।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের সামগ্রিক বাজেট আকারে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড় হলেও আগামী বছরের শিক্ষা-বাজেট দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। তবে টাকার অঙ্কে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু শিক্ষা খাত হিসাব করলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দ ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে তা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ০১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
ইউনেস্কো, শিক্ষাবিদ বা অংশীজনরা অনেক দিন ধরেই শিক্ষায় জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলছেন। এটাকে তারা বরাদ্দ হিসেবে না দেখে আগামী দিনের বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে বলছেন। গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষায় বরাদ্দ ১২ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। জিডিপির হিসাবে তা ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে শিক্ষায় বরাদ্দের সংগতি নেই। বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। এজন্য দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী প্রয়োজন। কিন্তু এ জনগোষ্ঠী তৈরির জন্য প্রয়োজন শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ। বরাবরের মতো এবারও শুভংকরের ফাঁকি লক্ষ করছি। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি মিলিয়ে আকার বড় করা হলেও চলতি অর্থবছরের চেয়েও বরাদ্দ কমেছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বাজেটে দিকনির্দেশনা দেখছি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শিক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশের নিচে বরাদ্দ কাক্সিক্ষত নয়। আগামী অর্থবছরে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দিলে ভালো হতো। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত ছিল। সেটা আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের বাজেটে মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে, যা খুবই ভালো। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে। শিক্ষায় বরাদ্দের সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’
আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
বাজেট ঘিরে প্রতি বছরই বেসরকারি শিক্ষকদের অন্যতম দাবি থাকে শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও শতভাগ উৎসব-ভাতা প্রদান। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রাখাও তাদের অন্যতম দাবি। কিন্তু সেসব বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। তবে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
স্বাস্থ্য খাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে এবার বরাদ্দ ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়লেও মোট বাজেটের তুলনায় তা কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে খাতটিতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে তা ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ১৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ১২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ৮ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকেই নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবার টাকার অঙ্কে গত বছরের তুলনায় (বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছর) ১ হাজার একশ কোটির মতো বেড়েছে। কিন্তু বাজেট শেয়ারে সেটা কমেছে। সামগ্রিক বাজেটের গ্রোথ বা বৃদ্ধি ১২ শতাংশ, কিন্তু স্বাস্থ্যের বাজেটের বৃদ্ধি ৩ শতাংশ। তারমানে রাষ্ট্রীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব কমেছে। সেই কারণে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, এবার কমার যৌক্তিক কারণ আছে। সেটা হলো স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্টর প্রোগ্রামে উন্নয়ন বাজেট থেকে অর্থ আসে। সেই সেক্টর প্রোগ্রাম এই অর্থবছরে শেষ হয়ে প্রস্তাবিত অর্থবছর থেকে নতুন সেক্টর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান সেক্টর প্রোগ্রাম সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারায় সেটার সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই এক বছরের জন্য নতুন বাজেট থাকে না, পুরনো বাজেট থেকেই ব্যয় করতে হয়। ফলে বরাদ্দ না বাড়িয়ে পাঁচ বছরের বাজেট যদি ছয় বছরে গিয়ে ঠেকে, তাহলে প্রতি বছর টাকা কমে যায়। মূলত এ কারণে এবার টাকা কমে গেছে।
সরকার স্বাস্থ্য খাতে এবারও কিছু থোক বরাদ্দ রাখতে পারত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, কভিড ছাড়াও আমাদের অনেক জরুরি খাত আছে। এখন ডেঙ্গু চলছে। এটি ইমার্জেন্সি হয়ে যাবে। ফলে এটার জন্য যে ফান্ড দেওয়া আছে হাসপাতালে, রোগী বাড়লে সেটা দিয়ে হবে না। এরকম ইমার্জেন্সি আরও আসতে পারে। এরকম একটা থোক বরাদ্দ রাখলে স্বাস্থ্যের ইমার্জেন্সিতে সেখান থেকে ব্যয় করা যেত। কিন্তু সেটাও নেই। তার মানে কভিডের শিক্ষা থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। প্রস্তাবিত বাজেটে সেটার প্রতিফলন নেই।
সামগ্রিকভাবে বাজেটে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়ে যাবে বলেও মনে করছেন এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এতে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধসহ সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
যদিও এবারের বাজেটে ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা আরও সুলভ করার জন্য ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, আইভি ক্যানুলা উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উপাদান সিলিকন টিউবসহ আরও কিছু বিদ্যমান ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তামাক জাতীয় পণ্য যেমন তরল নিকোটিন, ট্রান্সডারমাল ইউস নিকোটিন পণ্যের বিপরীতে ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।