
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সংশ্লিষ্টদের অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এক সময়ে প্রধান সড়ক। উপজেলার শ্রীফলতলী ইউনিয়নের সোনাখালী থেকে বাজহিজলতলী পর্যন্ত ওই সড়কটির বর্তমানে নামকরণ করা হয়েছে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার নামফলকটি নতুন করে লাগানো হলেও সড়কটির অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। সড়কের মধ্যে একটি কালভার্টের দুপাশের মাটি ভেঙে যাওয়ায় এটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েকটি গ্রামের ১৫-২০ হাজার মানুষ। মুক্তিযোদ্ধার নামের অবহেলিত এ সড়কটি বাঁচিয়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীফলতলী ইউনিয়নের সোনাখালী-বাজহিজলতলী সড়কটি গত ২৫-৩০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়কের সোনাখালী গ্রামের সেতুর পাশ থেকে সড়কটির উৎপত্তি। জয়দেবপুর-রাজশাহী রেললাইন যখন ছিল না, তখন উপজেলা শহরে চলাচলের জন্য এটিই ছিল ওই এলাকাবাসীর প্রধান সড়ক। বাজহিজলতলী ছাড়াও এ সড়ক দিয়ে সোনাখালী, নয়ানগর, ভিঙ্গরাজ, বামন্দসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। বাজহিজলতলী গ্রামে সড়কের মধ্যে ছোট একটি কালভার্ট রয়েছে। ২০০০ সালের দিকে ওই সড়কের মধ্যে দিয়ে জয়দেবপুর-রাজশাহী রেললাইন নির্মাণ করা হলে ছোট ওই কালভার্টে বন্যার স্রোতের চাপ পড়ে। স্রোতের কারণে একপর্যায়ে কালভার্টের সংযোগের মাটি ও সড়কের কিছু অংশ ভেঙে যায়। ফলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে চলাচল শুরু করেন গ্রামবাসী। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সড়কটি তার অস্তিত্ব হারাতে থাকে। এরমধ্যেই ২০২০ সালে প্রায় বিলীন এই সড়কের নামকরণ করা হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ডিএডি কাজীমউদ্দীন সড়ক’ নামে। বেশ কয়েকবার মাপ ঝোঁক হলেও সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই গ্রামগুলোর স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ। অসুস্থ রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল খালেক বলেন, ‘এই সড়কের বিষয়ে উপজেলা মিটিংয়ে একাধিকবার কথা বলেছি। সড়কটি করা এখন খুব জরুরি। এটা ঠিক হলে মানুষের কষ্ট অনেকটা লাগব হবে। খুব সহজেই শহরে চলাচল করা যাবে।’
স্থানীয় শ্রীফলতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিবর রহমান বলেন, ‘এরই মধ্যে রাস্তাটির সেংশন (অনুমোদন) হয়ে গেছে। ওই স্থানে আরেকটু বড় ব্রিজ করা হবে। আর বিলীন প্রায় সড়কটিতে মাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করা হবে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সারোয়ার আলম বলেন, ‘খুব শিগগিরই ওই সড়কের কাজ শুরু হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, ‘ওই সড়কের কাজ আমাদের টেন্ডারের মধ্যে আছে। এখনো কাজ শুরু না হলে খুব দ্রুত শুরু করা হবে।’
ভাষাশহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশে পালিত হয়েছে জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। গতকাল মঙ্গলবার দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি অফিস। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কর্মসূচির মধ্যে ছিল শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রভাতফেরি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা এবং দোয়া ও মোনাজাত। আলোচনা সভায় বক্তারা সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন। প্রযুক্তির সঙ্গে মিলিয়ে ভাষাকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে বাংলা ভাষার ওপর আগ্রাসনের চেষ্টা হলে তার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকার বাইরের নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন :
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠের শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকেই ফুল হাতে মানুষের ঢল নামে। এদিন সবার আগে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এরপর আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আমিনুর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
গাজীপুর : প্রথম প্রহরে গাজীপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। পরে আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা হয় এবং দুপুরে নগরীর নলজানী এলাকায় ভাষাশহীদ বরকতের মায়ের কবর জিয়ারত, দোয়া ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ডুয়েট পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে।
রাজশাহী : প্রথম প্রহরে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ভুবনমোহন পার্কের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর একে একে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
খুলনা : প্রথম প্রহরে নগরীর শহীদ হাদিস পার্কের শহীদ মিনারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর কমান্ড, কেসিসির মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে নগর ভবনে সিটি করপোরেশনের আয়োজনে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
ঠাকুরগাঁও : প্রথম প্রহরে ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। এরপর পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট, জেলা ও পৌর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
সিরাজগঞ্জ : মঙ্গলবার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ছিল প্রভাতফেরি, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান ম-ল।
ঝিনাইদহ : প্রথম প্রহরে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খালেদা খানম, জেলা প্রশাসক প্রশাসক মনিরা বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায়। পরে পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ সরকারি, বেসরকারি নানা সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকালে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বর থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রভাতফেরির আয়োজন করা হয়।
জামালপুর : প্রথম প্রহরে জামালপুর পৌর শহরের দয়াময়ী মোড়ে শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন, জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়, পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। পরে সকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
টাঙ্গাইল : সকালে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ছানোয়ার হোসেন এমপি, জোয়াহের ইসলাম জোয়াহের এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, খান আহমেদ শুভ এমপি, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার প্রমুখ। পরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনসাধারণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
নীলফামারী : প্রথম প্রহরে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ। এরপর পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন, বাংলায় সুন্দর হাতের লেখা, ভাষার গান, দেশাত্মবোধক গান ও রচনা লিখন প্রতিযোগিতা হয়।
মুন্সীগঞ্জ : প্রথম প্রহরে শহরের পুরাতন কাচারী এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানাভাবে দিবসটি পালিত হয়।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের পক্ষে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দুপুরে প্রতিবন্ধী ও সুবিধাবঞ্চিতসহ তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে সুন্দর হাতের লেখা, চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়।
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইরে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। সকালে উপজেলার বলধারা ইউনিয়নে রফিকনগরে শহীদ রফিকের নিজ বাড়িতে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ ও জেলা পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান।
মাভাবিপ্রবি : মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) শহীদ মিনারে প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এআরএম সোলাইমান, ট্রেজারার অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, হল, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি ও ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় : প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর। এরপর বিভিন্ন সংগঠন, বিভাগ ও দপ্তরের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর সকাল ১১টায় কালো ব্যাজ ধারণ শেষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে এক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর।
পবিপ্রবি : পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম প্রহরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত। সকাল সাড়ে ৭টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে প্রভাতফেরি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কুলসুম আক্তার কাকলী পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে, রোল ৬। তার বাবা কবির হোসেন অটোরিকশা চালান। দুই মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে তাকে হিমশিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত। কাকলীর সহপাঠীদের ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে কেনা হয়ে গেছে ‘পপির’ গাইড বই, যা পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
বাবা কবির হোসেন যা উপার্জন করেন তা থেকে সংসার চালিয়ে ৯০০ টাকা মূল্যের ‘পপি’ গাইড বই মেয়েকে কিনে দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। এদিকে, মেয়েকে সুশিক্ষায় শিক্ষিতও দেখতে চান বাবা। কী আর করা, অবশেষে মেয়েকে কথা দিয়েছেন ঋণ-কর্জ করে হলেও কিছুদিনের মধ্যে তাকে কিনে দেওয়া হবে ‘স্বপ্নের’ সেই ‘পপি’ গাইড বই। এটি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ১৬৩ নম্বর নহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা।
একই চিত্র উপজেলার ধামঘর পূর্ব, রানীমুহুরী, সুবিলারচর, বোড়ারচর, নেয়ামতকান্দি, জাহাপুর, ধনীরামপুর, ১০১ নম্বর রহিমপুর, মুরাদনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২০৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে এবং সরেজমিনে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের জাঁতাকলে পড়ে ঝরে পড়ছে অনেক দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী। ব্যয় মেটাতে না পেরে আগের বছরের তুলনায় স্কুলগুলোতে কমছে ছাত্র-ছাত্রী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনেক আগেই প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও মুরাদনগরে দেদার বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ সেসব নোট ও গাইড বই।
দোকানিদের দাবি, শিক্ষকরা যদি গাইড বইয়ে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করে তাহলে কমবে গাইড বই বিক্রি। কিন্তু, নোট ও গাইড প্রকাশনী সংস্থাগুলো বিদ্যালয় বা শিক্ষকদের নানারকম সুবিধা দিয়ে গাইড বইয়ের চাহিদা তৈরি করছে। এ ক্ষেত্রে পপি একাই দখল করে রেখেছে ৮০ শতাংশ বাজার।
ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নোট ও গাইড ব্যবসা বহু বছর ধরে চলে এলেও বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতির দোহাই দিয়ে তা আরও বেড়ে গেছে। এই পদ্ধতিতে পাঠদানে শিক্ষকরা ‘যথেষ্ট দক্ষ নন’ বলে শিক্ষার্থীদের নোট ও গাইডের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে।
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে নহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফাসহ অন্যান্য বিদ্যালয় প্রধানরা বলছেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সবসময় গাইড বইয়ে নিরুৎসাহিত করি। অনেক সময় তারা নিজেদের প্রয়োজনে তা কিনে থাকতে পারে।
মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আকতার জানান, গাইড বই পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যদি কোনো শিক্ষককে এ ধরনের কাজে জড়িত পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান মুঠোফোনে বলেন, আমাদের প্রাইমারিতে কোনো গাইড বই অ্যালাউ না। শিক্ষার্থীদের গাইড বইয়ে উৎসাহিত করা সম্পূর্ণভাবে এটি একটি অনৈতিক কাজ যা মোটেও কাম্য নয়। যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঞা জনী বলেন, নিষিদ্ধ নোট ও গাইডের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচটি পদে জয়ী হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ নয়টি পদে জয়ী হয়েছে।
গত সোমবার গভীর রাতে এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আতোয়ার রহমান আলো এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে সভাপতি পদে ৩৫৩ ভোট পেয়ে মাইদুল ইসলাম শিশির ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৬৭ ভোট পেয়ে আবুল কাশেম মো. মুনসুর আহম্মেদ খান বিপন নির্বাচিত হন। এ ছাড়া এ পরিষদ থেকে সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক পদে জামিউল হক সুমন, নির্বাহী সদস্য আতোয়ার রহমান মল্লিক ও তোফাজ্জল হোসেন (আলম) নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সহসভাপতি ইমরুল কায়েস বুলবুল, জোয়াহেরুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক জাহিদ শামস, লাইব্রেরি সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক অনুপম দে অপু, নির্বাহী সদস্য শাহীনুজ্জামান শাহীন, আল আমিন, সৈয়দ মুহাম্মদ শাহানুর আল আজাদ ও শামসুন্নাহার স্বপ্না নির্বাচিত হন।
অ্যাডভোকেট আতোয়ার রহমান আলো জানান, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে।
দিনাজপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে মোবারক হোসেন (৪৭) নামে অপহৃত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে এ সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এর আগে গত সোমবার বিকেলে দিনাজপুরে উপশহরের ৮ নম্বর ব্লকে অভিযান চালিয়ে মোবারককে উদ্ধার ও তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানকালে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন হারুন-অর-রশিদ, মোফাজ্জল হোসেন শিমুল ও সাকিরা আক্তার পুতুল। উদ্ধার হওয়া মোবারক জেলার কাহারোল উপজেলার গড়নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ওসি বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপশহরের ৮ নম্বর ব্লকে গেলে মোবারককে অপহরণ করে ওই এলাকার মৌসুমী বেগমের বাসায় আটকে রাখা হয়। এ সময় অপহরণকারীরা তাকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে মোবারকের স্ত্রী প্রথমে বিকাশে (মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানোর মাধ্যম) ২০ হাজার টাকা এবং পরে আরও ২ লাখ টাকা দেন।
সোমবার বিকেলে মোবারকের স্ত্রী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মোবারককে উদ্ধার ও তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে।
নরসিংদীর রায়পুরায় কলাগাছ দিয়ে তৈরি কে এস এ পাবলিক স্কুলের শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার পলাশতলী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা যায়, স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণে গত সোমবার বিকেল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যায়। পরে ভোরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রভাতফেরিতে এসে দেখতে পায় শহীদ মিনারটি দুর্বৃত্তরা ভেঙে ফেলেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক আকলিমা আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ১৫০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। ভোরে এসে দেখি, দুর্বৃত্তরা সেটি ভেঙে ফেলেছে।’
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
এক লোক হজরত সুফিয়ান সাওরি (রহ.) কে প্রশ্ন করল, নামাজের সময় কাতারের কোন পাশে দাঁড়ানো উত্তম? প্রথম কাতারের ডান পাশে না কি বাম পাশে? তখন সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, প্রথমে দেখো খাবারের জন্য রুটির যে টুকরোটা নিয়েছে তা হালাল না কি হারাম? তুমি কাতারের যেখানেই নামাজ আদায় করো তা তোমার কোনো ক্ষতি করবে না। তুমি নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে খুব ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করো, তুমি নামাজ কোথায় আদায় করবে? অথচ তুমি এমন একটি কাজে লিপ্ত যা তোমাকে নামাজ কবুল হওয়া থেকে বিরত রাখে!
একবার হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা কি জানো প্রকৃত দরিদ্র কে? তারা বললেন, দরিদ্র তো সে যার কোনো দিনার-দেরহাম নেই (অর্থকড়ি নেই)। তখন তিনি বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র সে, কিয়ামতের দিন নামাজ, রোজা ও জাকাতের সওয়াব নিয়ে আসবে; কিন্তু সে একে গালি দিয়েছে, ওকে প্রহার করেছে, অন্যায়ভাবে অন্যের মাল ভক্ষণ করেছে, তখন এই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, ওই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, অতঃপর যখন তার সওয়াব শেষ হয়ে যাবে তখন অন্য পাওনাদাররা তাদের অপরাধগুলো এই লোককে দিয়ে দেবে, এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এরপর সুফিয়ান সাওরি (রহ.) লোকটিকে বলেন, তুমি প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করলে তাতে কী লাভ; যদি তুমি মানুষের হক নষ্ট করো, অন্যের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো? সুতরাং তুমি হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো।
নবী কারিম (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না এবং তিনি মুমিন বান্দাদের তাই আদেশ করেছেন যা তিনি নবী-রাসুলদের আদেশ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রাসুলরা, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎ কাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত।’ সুরা মুমিনুন : ৫১
এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা পবিত্র খাবারকে নেক আমলের পূর্বে এনেছেন। অর্থাৎ নামাজ আদায়, দিনের বেলা রোজাপালন, রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন তেলাওয়াতের পূর্বে হালাল খাবারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা এখানে রাসুলদের উদ্দেশ করে বলেছেন, হে রাসুলরা! তোমরা হালাল খাবার গ্রহণ করো। এরপর তিনি বলেছেন এবং সৎ আমল করো। অর্থাৎ নেক আমলের পূর্বে হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো, যাতে হারাম খাবার গ্রহণের কারণে নেক আমলগুলো নষ্ট না হয়ে যায়। এ কারণেই আল্লাহতায়ালা বলেছেন, তোমরা পবিত্র বস্তু গ্রহণ করো এবং সৎ আমল করো।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত ধূলোমলিন চুল ও চেহারাওয়ালা এক লোকের উপমা দিয়ে বলেছেন, সে আসমানের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! তিনি বলেন, অথচ তার খানাপিনা হারাম, তার পোশাক-পরিচ্ছেদ হারাম, সে যা ভক্ষণ করে তা হারাম, তাহলে তার দোয়া কবুল হবে কীভাবে?
ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, হালাল খাবার মানুষের মেধা, ইলম ও আমলের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সুতরাং এ প্রশ্ন করা অবান্তর, আমাদের দোয়া কবুল করা হয় না। দোয়া কবুল না হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ না করা। বস্তুত সমস্যা দোয়ার মধ্যে নয়, সমস্যা আমার-আপনার মধ্যে। আপনি খাবারকে পবিত্র রাখুন, দেখবেন আপনার দোয়াগুলো কবুল হচ্ছে।
একজন হারাম কজে লিপ্ত, অন্যায়ভাবে মানুষের হক ভক্ষণকারী, শ্রমিকের পারিশ্রমিক পরিশোধ করেন না, বাড়ির অসহায় কাজের মেয়েটির প্রাপ্য ভাতা প্রদান করেন না, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না আর সেই আপনিই আবার অভিযোগ করেন আমার দোয়া কবুল হয় না?
একটু ভাবুন, চিন্তা করুন। সর্বদা পবিত্র খাবার খাওয়ার, পবিত্র পোশাক পরিধানের চেষ্টা করুন। দয়াময় আল্লাহ আপনাকে বঞ্চিত করবেন না।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।