
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কলেজছাত্রকে নিয়ে এক স্কুলছাত্রীর বাবা, চাচা ও মামা আত্মগোপন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যদুবয়রা ইউনিয়নের এক গ্রাম থেকে ওই কলেজছাত্রকে নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা, চাচা ও তিন মামা উধাও হয়ে গেছেন। ছেলেকে উদ্ধারের জন্য কুমারখালী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কলেজছাত্রের বাবা।
কলেজছাত্রের বাবার ভাষ্য, তার ছেলে সদ্য এইচএসসি পাস করেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মোবাইল ফোনে ছেলেকে নবম শ্রেণি পড়–য়া এক ছাত্রী একই গ্রামে তার নানাবাড়ি এলাকায় দেখা করতে বলে। ওই স্কুলছাত্রীর নানাবাড়ি এলাকায় গেলে তার (স্কুলছাত্রী) নানা ও তিন মামা মিলে কলেজছাত্রকে মারধর করে ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে কলেজছাত্রের পরিবারের লোকজন গিয়ে আপসের চেষ্টা করলে তাদের গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তারা চৌরঙ্গী ক্যাম্পে বিষয়টি জানালে পুলিশ স্কুলছাত্রীর নানাবাড়ি গিয়ে কলেজছাত্রকে খুঁজে পায়নি।
পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে স্কুলছাত্রীর নানা জানান, কলেজছাত্রকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে তার নাতনির বাবা, চাচা ও তিন মামা কোথায় গেছে তা তিনি জানেন না। কলেজছাত্রের মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ওসি মহসীন হোসাইন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। কলেজছাত্রকে উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।’
সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা প্রণয়ন ও যাচাই-বাছাইয়ে গড়িমসি করার কারণে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৩১৫ টন চাল ফেরত গেছে। ফলে এ কর্মসূচির আওতায় চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ১০ হাজার ৪৭৫ জন মানুষ।
সচেতন মহল বলছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সময়মতো তালিকা জমা দিলে সুবিধাভোগীরা চাল পেতেন। এতে স্থানীয় চালের বাজার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকত।
গত সোমবার সরেজমিনে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় সারা দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করা হয়। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে খাদ্য অধিদপ্তর। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পর্যায়ে বসবাসরত বিধবা, বয়স্ক, পরিবারপ্রধান নারী, নিম্নআয়ের দুস্থ পরিবারপ্রধানদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে বর্তমানে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার জন্য একটি তালিকা রয়েছে। মাসে সুবিধাভোগীরা ৩০ কেজি করে চাল পেয়ে থাকেন। এ কর্মসূচির আওতায় আগে ১০ টাকা দরে প্রতি কেজি চাল পাওয়া যেত। গত বাজেটে এর দাম বাড়িয়ে ১৫ টাকা কেজি করা হয়।
সে অনুযায়ী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২২ হাজার হতদরিদ্র পরিবার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় রয়েছে। নতুন করে আরও ১০ হাজার ৪৭৫ জন সুবিধাভোগী বৃদ্ধি করার জন্য এই উপজেলায় ৩১৫ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য উপজেলা প্রশাসন ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে গত বছরের (২০২২) সেপ্টেম্বরে নতুন সুবিধাভোগীর তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা প্রদান করে। যা ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়। এতে কেবলমাত্র পুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ তালিকা প্রদান করতে সক্ষম হলেও গতকাল (সোমবার) পর্যন্ত বাকি ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা তালিকা দিতে ব্যর্থ হন। তালিকা জমা না দেওয়ার কারণে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। ফলে নতুন সুবিধাভোগীদের চাল আসার পরও তা ফেরত গেছে।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দেশ রূপান্তরকে বলেন, নানা ঝামেলার কারণে ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা দিতে পারিনি। কয়েকদিনের মধ্যে তৈরি করে জমা দেব। একই কথা জানান গাফিলতি করা অন্য ইউপি চেয়ারম্যানরা।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা (মেম্বার) নিজেদের স্বজন ও কাছের লোকদের তালিকা তৈরি করেছেন। সরকারের প্রতিটি প্রণোদনায় তাদের নাম রয়েছে। স্বজনপ্রীতির তালিকার কারণে বঞ্চিত হতে হচ্ছে প্রকৃত দরিদ্রদের। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ইউপি সদস্যরা তালিকায় নাম দেওয়ার জন্য ২০০-৫০০ টাকা করে চেয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানরা সময়মতো তালিকা নির্বাচন করতে না পারায় গত ৪ মাসে বরাদ্দের ১০ হাজার ৪৭৫ জনের ৩১৫ টন চাল ফেরত গেছে। ফলে দরিদ্ররা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল থেকে বঞ্চিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, কয়েক দফায় ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা তালিকা দিতে না পারায় সুবিধাভোগীদের চাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। সাত দিনের মধ্যে পুনরায় তালিকা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছি।
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের বেলতৈল এলাকার কাটাখালী নদীতে তিনটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে নদীর তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে বিএডিসির সেচপাম্প ও সেতু। ইতিমধ্যে ভাঙনে নদীর তীরবর্তী আবাদি জমি হারিয়েছেন অনেকেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাটাখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থাই নেয়নি প্রশাসন। প্রায় দুই বছর আগে অভিযান পরিচালনা করলেও এরপরে এ নদীটির আর কোনো খবর নেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলতৈল সেতুর পশ্চিম পাশে কাটাখালী নদী থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে আমিত্তি এলাকাসহ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায়। এভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করতে থাকলে বেলতৈল সেতুসহ সেচ পাম্প যে কোনো মুহূর্তে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার প্রভাবশালী লোকজন নদী থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় মাস ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। একই জায়গায় বছরের পর বছর বালু উত্তোলন করছে ৩-৪টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে। এ বালুদস্যু চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু বিক্রি করে। প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকার বালু বিক্রি করে ওই বালু দস্যুরা। দিন-রাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি এবং এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থেকে কারা সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে, সেটা তদন্ত করারও দাবি জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় কৃষক আলাল মিয়া বলেন, অনেকদিন ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে এ ইউনিয়নের কিছু বালু ব্যবসায়ী। বালু নদী থেকে তোলার ফলে প্রতি বছর বন্যায় ভেঙে যাচ্ছে ফসলি জমি।
বেলতৈল এলাকার বিল্লাল নামে এক কৃষক বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে নদী তার গতিপথ বদলাচ্ছে। ফলে প্রতি বছর বর্ষায় নদীতে ফসলের জমি ভেঙে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকারি একটি সেচপাম্প, সেতু ও ফসলের জমি হুমকির মুখে রয়েছে।’
ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান লিটু বলেন, ‘ওদের মানা করেছি। সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু আইনগত বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম মিঞা বলেন, ‘কাটাখালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে সরকারিভাবে কাউকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দুই দিনমজুরকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজার বিরুদ্ধে।
এর প্রতিবাদে ঝাড়ুমিছিল ও মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুকুটিয়া ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে ইউনিয়নের বিবন্ধী গ্রামে ওই মিছিল ও মানববন্ধন হয়। এতে গ্রামের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গেল ১৬ ফেব্রুয়ারি কুকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে বিবন্ধী গ্রামের জাবেদা বেগম ও তার স্বামী-সন্তানসহ তিনজনকে মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলা হয়।
এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে পোস্টার ছাপানো হয়। ওই পোস্টার বিভিন্ন স্থানে সাঁটানোর জন্য জাবেদা বেগম দিনমজুর নাহিদ শেখ (১৬) ও বাবুকে (১৭) ভাড়া করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি টুনিয়ামান্দ্রা গ্রামে পোস্টার সাঁটাতে গেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির লোকজন ওই দুই দিনমজুরকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের মারধর করে ইয়াবাসহ ছবি তোলে।
পরে ২২ পিস ইয়াবাসহ দিনমজুরদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরদিন শ্রীনগর থানায় মামলা রুজু করে দুই দিনমজুরকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
দুই দিনমজুরকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। গতকাল বিবন্ধী গ্রামে নারীরা প্রথমে ঝাড়ুমিছিল বের করে। মিছিল শেষে বিবন্ধী গ্রামের সড়কে মানববন্ধন করে।
এ বিষয়ে শ্রীনগর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দুই শ্রমিক হয়রানির শিকার হোক তা আমরা চাই না। যাচাইবাছাই করেই মামলা নেওয়া হতো। কিন্তু এখন মামলা নিয়েই যাচাইবাছাই করতে হচ্ছে। কারও ছবি তুলে দিলেই দোষী হয়ে যায় না। তবে কতিপয় লোকজনের কারণে মামলা নিতে হয়েছে।’
অভিযুক্ত কুকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘আমি বা আমার কোনো লোকজন এসব ঘটনায় জড়িত নয়। মানববন্ধনে আমার বিরুদ্ধে যা বলা হয়েছে সব মিথ্যা।’
মাদারীপুরে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। গতকাল শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের সরদারকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে ঢাকা মেডিকেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সরদারকান্দি গ্রামের শওকত ব্যাপারীর সঙ্গে একই এলাকার রব ব্যাপারীর জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে শওকত তার লোকজন নিয়ে দেয়াল নির্মাণ করতে যান। এতে বাধা দেন রব ও তার পরিবারের লোকজন। এ সময় প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে নারীসহ আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করেছেন চিকিৎসক।
অভিযুক্ত শওকত ব্যাপারী বলেন, ‘আমার জায়গায় দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে তারা হামলা চালায়।’
অপরদিকে, রব ব্যাপারী বলেন, ‘জমির সীমানা নির্ধারণ না করেই দেয়াল নির্মাণ করতে আসে শওকত ব্যাপারী। নিষেধ করলে তারাই প্রথমে হামলা চালায়।’
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু সফর হাওলাদার বলেন, আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনজনকে পাঠানো হয়েছে ঢাকা মেডিকেলে।
২০ বছর আত্মগোপনে থাকা ডাকাতি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি জামাল উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। কক্সবাজারের টেকনাফের খারাংখালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল অ্যান্ড মিডিয়া) আবু সালাম চৌধুরী গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাবের একটি দল টেকনাফ থানার খারাংখালী এলাকা থেকে ২০ বছর আত্মগোপনে থাকা ডাকাতি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার নাইক্ষ্যংখালীর জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে।
বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের রক্ষণভাগের অন্যতম সেরা আঁখি খাতুন। সেই ছোট থেকেই গড়ন, উচ্চতা ও লড়াকু ফুটবল দিয়ে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন। মেয়েদের ফুটবলে বাংলাদেশের প্রায় সব সাফল্যেই ছিলেন অগ্রনায়ক হয়ে। সম্প্রতি তিনিও জাতীয় দলের ক্যাম্প ছেড়েছেন। তবে সতীর্থ সিরাত জাহান স্বপ্নার মতো অবসরের সিদ্ধান্ত নেননি। বরং নিজেকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাফুফের বন্দী জীবনকে বিদায় জানিয়েছেন।
সম্প্রতি চীনের বন্দরনগরী হাইকোউ শহরের একটি ফুটবল অ্যাকাডেমিতে খেলার পাশাপাশি পড়ালেখার প্রস্তাব পেয়েছেন আঁখি। এখন চলছে চীনের ভিসা নেওয়ার প্রক্রিয়া। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে ঈদের পর দেশ ছাড়বেন তিনি। বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন আঁখি।
তিনি যে আর দশজন ফুটবলারের মতো নন, তা আগেই বুঝিয়েছেন আঁখি। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর বিশ্ব ফুটবলের নজর কাড়েন দীর্ঘদেহী এই ডিফেন্ডার। তার নির্ভীক ফুটবল বড্ড মনে ধরে সুইডেনের শীর্ষ লিগের একটি ক্লাবের। সাফে বাংলাদেশ মাত্র একটি গোল হজম করেছিল।
এই কৃতিত্বের বড় দাবীদার সেন্টারব্যাক আঁখি। তাই সুইডিশ ক্লাবটি তাকে দলে নেওয়ার প্রস্তাবও দেয়। প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে ইউরোপের কোন দেশের শীর্ষ লিগে খেলার প্রস্তাবে আঁখি দেখতে শুরু করেছিলেন বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণের স্বপ্ন। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের হঠকারি সিদ্ধান্তে সুইডেনে খেলতে যাওয়া হয়নি। জাতীয় দলের খেলা থাকবে বলে সুইডেনের দরজা বন্ধ করে দেয় বাফুফে। পরে অবশ্য অর্থ সঙ্কটসহ নানা অযুহাতে জাতীয় দলকে সিঙ্গাপুরে ফিফা ফ্রেন্ডলি ও মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইপর্ব খেলতে পাঠানো হয়নি।
বিষয়টা ভীষণ কষ্ট দিয়েছিল সদ্য এইচএসসি পাস করা আঁখিকে। অভিমানে কিছুদিন ক্যাম্প ছেড়েও চলে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য ক্যাম্পে যোগ দেন। তবে হতাশা একটুও কমেনি। দিনের পর দিন লক্ষ্যহীণ পথ চলতে কারই বা ভালো লাগে? দেশের ফুটবলের যে ভবিষ্যত নেই ঢের বুঝতে পেরেছিলেন। তাই চীনের প্রস্তাবটাকে লুফে নেন আঁখি।
দেশ রূপান্তরের কাছে ক্যাম্প ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'আমি ওখান থেকে চলে এসেছি ঠিক, তবে ফুটবলেই থাকবো। চীনে ভাল অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন ও লিগ খেলার সুযোগ পাচ্ছি। তাই ওইখানে যাবো। এখন ভিসা নিয়ে কাজ করছি। আমার জন্য দোয়া করবেন।'
গত ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন সিরাজগঞ্জের গর্ব আঁখি। দেশে সুযোগ ছিল বেসরকারী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। তবে তিনি যে স্বপ্ন বুনেছেন চীনে লেখাপড়া করার, ‘মূলত আমি ওখানে পড়াশোনা ও খেলা এক সঙ্গে করবো। এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। তবে ভর্তি হইনি।’
তার এই সিদ্ধান্ত বাফুফেকে জানিয়েই নেওয়া। তবে জাতীয় দলের প্রয়োজনে যেখানেই থাকেন না কেন, চলে আসবেন, 'আমি পল স্যারকে (বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি) জানিয়েই ক্যাম্প ছেড়েছি। তাকে এটাও বলেছি আমি যেখানেই থাকি, জাতীয় দলের প্রয়োজন হলে চলে আসবো।'
সম্প্রতি মেয়েদের ক্যাম্পে লেগেছে দ্রোহের আগুন। তিনদিন আগে অভিমানে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের অন্যতম স্ট্রাইকার স্বপ্না। একই দিনে মেয়েদের ফুটবলের সকল সাফল্যের রূপকার অভিজ্ঞ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। মূলত বাফুফের গঞ্জনার শিকার হয়েই ছোটনের এই সিদ্ধান্ত। তাতেই হুলস্থুল লেগে গেছে ফুটবল অঙ্গনে। সালাউদ্দিন-কিরণের হাতে বন্দী নারী ফুটবল নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। প্রিয় কোচ ছোটনের জন্য ভীষণ মন খারাপ আঁখির, 'সত্যি খুব খারাপ লাগছে স্যারের সরে যাওয়ার কথা শুনে।'
তাকে সুইডেনে খেলতে যেতে দেওয়া হয়নি। স্বপ্নাকেও ভারতের লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। আঁখি অবশ্য এই অপ্রিয় বিষয়গুলো এড়িয়েই যেতে চাইলেন। শুধু বলেছেন, 'স্বপ্না আপুর ভারতে খেলার সুযোগ ছিল। তার সঙ্গে কী হয়েছে, সেটা সবার জানা। আমার সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে।'
শেষটায় আঁখি যা বলেছেন, তা দিয়েই নারী ফুটবলের ভেতরের চিত্রটা ফুটে উঠেছে। তারা দেশকে অসংখ্য সাফল্য এনে দিয়েছেন। গোটা দেশের কাছে তারা একেকজন খেলার মাঠের বীর সেনানী। তবে তাতে তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন ঘটেনি। বাফুফের চতুর্থ তলায় গাদাগাদি করে থাকতে হয়। মাস শেষে জুটে নামকোয়াস্তে পারিশ্রমিক। সেটা বাড়ানোর দাবী করলেই নাম কাটা যায় গুডবুক থেকে। আঁখির কথায়, 'ভাইয়া, আমরা তো মেয়ে। আর কত কষ্ট করবো যদি ঠিকভাবে পারিশ্রমিকই না পাই?'
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দল হওয়ার পরও আঁখিদের আকাশ ঢেকে আছে নিকশ কালো অন্ধকারে। এর দায় কী এড়াতে পারবেন, বছরের পর বছর মসনদ আঁকড়ে রাখা ফুটবল কর্তারা?
হার দিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ করলো চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। অন্যদিকে ৫-০ গোলের দাপুটে জয়ে শেষ করেছে দ্বিতীয় স্থানের আর্সেনাল। জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর ৪-৪ গোলে ড্র করেছে লিভারপুল। সাউদাম্পটনের অবনমন আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। রবিবার তাদের সঙ্গে নেমে গেছে লিস্টার ও লিডস। লিডস ১-৪ গোলে হেরে গেছে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে। আর ২-১ গোলে ওয়েস্টহ্যামকে হারিয়েও লাভ হয়নি লিস্টারের। বেন্টফোর্ডের মাঠে হালান্ড-গুনদোয়ানসহ প্রথমসারির কয়েকজনকে খেলানইনি পেপ গার্দিওলা। সামনে ছিলেন আলভারেজ, মাহরেজ, তাদের পেছেন ফোডেন। ৮৫ মিনিট পর্যন্ত অরক্ষিত রেখেছিল সিটি তাদের গোল। ঠিক ওই সময়ে ব্রেন্টফোর্ডের ইথান পিনোক। পঞ্চম হার দিয়ে লিগ শেষ করে সিটি।
নগর প্রতিদ্বন্দ্বি ম্যানইউ ঘরের মাঠে জেডন সানচো ও ব্রুনো ফার্নান্দেজের দ্বিতীয়ার্ধের দুগোলে ফুলহ্যামকে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছে। চেলসির সঙ্গে নিউক্যাসলে ১-১ গোলে ড্র করায় চতুর্থ স্থান নিয়ে শেষ করলো সৌদি যুবরাজের মালিকানধীন নিউক্যাসল। সাউদাম্পটনের সঙ্গে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও একপর্যায়ে ৪-২ গোলে পিছিয়ে পড়ে হারের শঙ্কায় পড়েছিল লিভারপুল। ৭২ ও ৭৩ মিনিটে কোডি গাকপো ও ডিয়েগো জোতার গোল ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম হয়েছে লিভারপুল। ব্রাইটন হয়েছে ষষ্ঠ। ঘরে মাঠে জাকার দুই ও সাকার এক গোলে উলভসের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই ৩-০তে এগিয়ে যায় গানার্সরা। দ্বিতীয়ার্ধে জেসুস ও কিইয়োর আরো দুই গোল করলে বড় জয়ের স্বস্তিতে মৌসুম শেষ করে একসময় শিরোপা লড়াইয়ে থাকা আর্সেনাল।
ত্রাসবুর্গের মাঠে তাদের বিপক্ষে ড্র করে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের শিরোপা নিশ্চিত করেছে পিএসজি। তাই সময়টা এখন তাদের উৎসবের। সময়টা উপভোগ করতে ঘোড়দৌড়ে অংশ নিয়েছিলেন পিএসজি গোলরক্ষক সার্জিও রিকো। কিন্তু সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন তিনি।
বর্তমান রিকোকে ইনটেনসিভ কেয়ারে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। পিএসজির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘রিকোর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’ পরে ক্লাব থেকে জানানো হয়, তার প্রিয়জনদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ করা হচ্ছে।
লিগ ওয়ান শিরোপা নিষ্পত্তি হওয়ার পর প্যারিসে ছুটি না কাটিয়ে নিজ দেশ স্পেনের সেভিয়ায় ফিরে যান রিকো। সেখানেই দুর্ঘটনার শিকার হোন তিনি।
স্পেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ২৯ বছর বয়সী রিকো স্পেনের হুয়েলভা অঞ্চলের এল রোসিওতে ঘোড়দৌড়ে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে দৌড়ে থাকা আরেকটি ঘোড়ার সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হোন তিনি। রিকোকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সেভিয়ার এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় হেলিকপ্টারে করে।
সেভিয়ার সাবেক এই গোলরক্ষক ২০২০ সালে পিএসজিতে যোগ দেন। তার আগে ২০১৮-১৯ মৌসুমে ধারে কাটান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফুলহামে। পিএসজির হয়ে রিকো ২৯ ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সেভিয়া থেকে চলে যান তিনি।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫০টি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৯ ভোট এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৪১৩ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে। দুজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অপরদিকে ভোটের পরিবেশ ভালো বলে জানান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি।
কোটা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের চাকরি পাওয়ার হার প্রায় একই রয়েছে। ১০ শতাংশ কোটা থাকা অবস্থায় তারা যে পরিমাণ চাকরি পাচ্ছিলেন, কোটা তুলে দেওয়ার পরও প্রায় একই হারে চাকরি পাচ্ছেন। সাধারণ ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারে পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারগুলোতে এগিয়ে গিয়ে বিসিএসে মোট চাকরি পাওয়ার হারে প্রায় একই অবস্থান ধরে রেখেছেন নারীরা।
অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বলা হয়েছিল, কোটা তুলে দিলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণের গ্রাফ নিম্নমুখী হবে। আসলে তা হয়নি। কোটা তুলে দেওয়ার পরও তারা প্রায় সমানতালে এগিয়ে চলছেন।
৪০তম বিসিএস দিয়ে চাকরিতে ঢুকে বর্তমানে ঢাকা বিভাগে কর্মরত একজন নারী কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে বয়সে ছেলেরা চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করে সেই বয়সে অধিকাংশ নারীকেই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করতে হয়। সংসার করে, সন্তান লালনপালন করে নারীরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পারে না। ফলে অনেক মেধাবী নারী প্রতিযোগিতায় উতরে যেতে পারেন না। অনেক নারী পারিবারিক কারণে বিয়ের পর চাকরির আবেদনই করেন না। বিয়ের পর পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা আসে। এসব কাটিয়ে উঠে চাকরিতে প্রবেশ করা কঠিন। আর বিসিএসের চাকরি মানেই বদলিযোগ্য। সংসার-সন্তান রেখে বদলিকৃত পদে যোগ দেওয়া কঠিন বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে নারীদের জন্য এ চাকরি সহজ নয়। একজন পুরুষ বেকার নারী বিয়ে করে, কিন্তু একজন নারী বেকার পুরুষ বিয়ে করে না। এ বিষয়টাও ছেলেদের প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। এ বাস্তবতা থেকেও পুরুষ প্রতিযোগী বেশি হয়। অন্যদিকে যোগ্য হলেও অনেক নারী প্রতিযোগিতাই করে না।
একজন নারী ইউএনও বলেন, পরীক্ষার হলে বা মৌখিক পরীক্ষার সময় অনেক নারীকে দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে সঙ্গে আনতে হয়। এগুলোও অনেক সময় নারীকে চাকরির ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে। ঘরে ঘরে বাধা পায় নারীর অগ্রযাত্রার নানা চেষ্টা। নগর-জীবনে নারীর অস্তিত্ব অনেকটা স্বচ্ছন্দের। কিন্তু নগরসভ্যতার বাইরে বিশাল বিস্তৃত গ্রামীণ জনজীবনে পুরুষতন্ত্রের নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বেষ্টনী এখনো নারীকে ধরাশায়ী করে রাখে। হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথ হাঁটছে নারী-পুরুষ। তবু তাদের মধ্যে ভারসাম্য নেই।
কোটা না থাকার পরও নারীরা তাদের অবস্থান কীভাবে ধরে রাখলেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকেও মেয়েরা অনেক এগিয়েছে। উচ্চশিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে। সবকিছু মিলে বিসিএসে এর প্রতিফল ঘটেছে। যে পরিমাণ মেয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে, সেই তুলনায় চাকরিতে প্রবেশের হার বেশি। উচ্চশিক্ষায় যায় হয়তো ৮০ ভাগ ছেলে। আর মেয়েদের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার হার ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে ২৬ বা ২৭ শতাংশ মেয়ে বিসিএস দিয়ে চাকরি পাচ্ছে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে মেয়েরা অনেক ভালো করছে।’
এক প্রশ্নের জবাব ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘মেয়েদের কাছে শিক্ষা এখনো অপরচুনিটি (সুযোগ) আর ছেলেদের কাছে অধিকার। মেয়েরা যখন এ সুযোগটা পায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কাজে লাগাতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের ছেলেসন্তানের জন্য যে বিনিয়োগ, মেয়েসন্তানের জন্য এখনো তার চেয়ে অনেক কম। এখনো মনে করা হয় মেয়ে তো অন্যের ঘরে চলে যাবে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, পরিবারের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষিত ছেলের তুলনায় উচ্চশিক্ষিত মেয়ে অনেক বেশি বহন করে। এসব প্রতিবন্ধকতা হাজার বছরে তৈরি হয়েছে। এগুলো দূর হতে আরও সময় লাগবে।’
অন্যান্য কোটার মতো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ছিল। নারীরা যোগ্যতা অনুযায়ী মেধা কোটায়ও নিয়োগ পেতেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ নারী কোটা রয়েছে এখনো। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষিত রেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে নারীরা সরকারি চাকরিতে পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে মেধা কোটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিয়োগ লাভের পাশাপাশি সংরক্ষিত কোটায়ও নিয়োগ লাভের সুবিধা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ছাত্রীর হার বাড়ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর হার বেশি। কলেজ পর্যায়ে ছাত্র ও ছাত্রীর হার প্রায় সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর হার ৩৬ শতাংশের বেশি।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। ৪০তম সাধারণ বিসিএস হচ্ছে কোটামুক্ত প্রথম বিসিএস। ধাপে ধাপে বাছাই করে গত বছর ৩০ মার্চ এই বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রায় ১৩ মাস পর গত মাসে সেই সুপারিশের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে পিএসসি। সেখানে বলা হয়েছে, ৪০তম বিসিএসে মোট ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। যা কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৯১ ও ৩৭তমে ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল। গত ১ নভেম্বর এ বিসিএসের কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান বলেছেন, কোটামুক্ত একটি সাধারণ বিসিএসে ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন এটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নারীদের শক্ত সক্ষমতা প্রকাশ করে। কারণ এর আগে কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার পরও নারীরা ১ শতাংশও পিছিয়ে পড়েননি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রত্যেক বিসিএসে নারীদের আবেদনের হার অর্থাৎ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের হার পুরুষের তুলনায় কম অর্থাৎ গড় হার কম। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতেও নারী প্রার্থীদের পুরুষের তুলনায় অনেক কম চোখে পড়ে। এমনকি কোনো কোনো কক্ষে নারী প্রার্থী থাকেই না। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ধাপগুলো অতিক্রম করার ক্ষেত্রে নারীদের অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে। ৪০তম বিসিএসে যোগ্য আবেদনকারী নারী ছিলেন ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১৯ দশমিক ১৯ শতাংশ নারী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। যোগ্য আবেদনকারী পুরুষ ছিলেন ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ পুরুষের হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের সাধারণ ক্যাডারে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৪ দশমিক ১৪ ও ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের কারিগরি ক্যাডারে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৯ দশমিক ৫৩ ও ২৫ দশমিক ২ শতাংশ।
সাধারণ এবং কারিগরি ক্যাডারে নারীরা পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারে এগিয়েছেন। ৪০তম বিসিএসে ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। যা ৩৮তমে ২৬ দশমিক ৩০ এবং ৩৭তমে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।
পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নেওয়া ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারেও নারীরা পিছিয়েছেন। জেলা কোটাও না থাকায় নাটোর, ভোলা, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রশাসন ক্যাডারে কেউ সুপারিশ পাননি।
গত বছর প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরিজীবীদের তথ্যসংক্রান্ত ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস’ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সিভিল প্রশাসনের ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। সরকারি দপ্তরের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কাজ করেন সবচেয়ে কমসংখ্যক নারী। মন্ত্রণালয়ের মোট জনবলের ১৯, অধিদপ্তরের ৩১, বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ের ১২ এবং আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ১২ শতাংশ কর্মী নারী।