
নীলফামারীতে নিখোঁজের একদিন পর শাহরিয়ার সিহাব (১২) নামে এক স্কুলছাত্রের গলাকাটা লাশ উদ্ধার হয়েছে। গত রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামে বাড়ির অদূরে একটি সেচনালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সিহাব ওই গ্রামের এরশাদুল হকের ছেলে এবং শহরের নীলফামারী ক্যাডেট একাডেমির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিখোঁজ হয় সিহাব।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার বিকেলে সদর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনের নামে হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বাবা এরশাদুল হক। পরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এলাকার দুই যুবককে আটক করে।
স্বজনরা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় নিখোঁজ হওয়ার পর এলাকায় মাইকিং করেও সিহাবের সন্ধান না পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সদর থানায় জিডি করেন তার বাবা। রবিবার রাত ৯টার দিকে জমিতে সেচ দিতে গিয়ে বাড়ির প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে সেচনালায় সিহাবের লাশ দেখতে পায় এলাকার কৃষক হাচিনূর রহমান। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নীলফামারী সদর থানার ওসি (তদন্ত) মোক্তারুল আলম বলেন, নিহতের বাবা মামলা করার পর ময়নুল ইসলাম (৩০) ও নাজমুল ইসলাম (৩৮) নামে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছি। হত্যা রহস্য উদঘাটনে সদর থানা পুলিশের সঙ্গে ডিবি পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই কাজ করছে।
হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভায় বাসাবাড়িতে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য নির্মাণ করা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি কোনো কাজে আসছে না। দীর্ঘ পাঁচ বছর নির্মাণকাজ চলার পর গত বছরের জুনে প্ল্যান্টটি পৌরসভাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই প্ল্যান্টের তিনটি গভীর নলকূপের মধ্যে দুটি নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়া এই প্ল্যান্ট থেকে পৌরবাসীকে পানি সরবরাহ করার মতো পাইপলাইনও পৌরসভার নেই। নতুন পাইপলাইন স্থাপনের কোনো পরিকল্পনা বা উদ্যোগও নেই। ফলে প্রায় ৫ কোটি টাকায় নির্মিত এই প্ল্যান্ট পৌরসভার কোনো কাজে আসছে না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পৌরবাসীকে আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের প্রায় ৪০টি পৌরসভার সঙ্গে মাধবপুরেও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শুরু হয়। পৌরসভার শ্যামলীপাড়ার উত্তরে স্টেডিয়ামের পূর্বপাশে প্ল্যান্টটির অবস্থান। ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন ও বিশুদ্ধকরণের পর ৪৫০ ঘনমিটার ধারণক্ষমতার সুপরিসর ওভারহেড ট্যাংকে (রিজার্ভেয়ার) সংরক্ষণ করে পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌরবাসীকে সরবরাহ করা হবে। ৫ কোটি ৮ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি ২০২২ সালের ২৮ জুন মাধবপুর পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা যায়, প্ল্যান্টটি বুঝে পাওয়ার আট মাস পার হলেও পৌরসভা এটি ব্যবহারের ন্যূনতম উদ্যোগ নেয়নি। এতে ২৫ হাজার পৌরবাসী আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঘণ্টায় ২ লাখ লিটার পানি পরিশোধন ক্ষমতার এ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পৌরবাসীকে পানি সরবরাহ করার মতো পাইপলাইন সংযোগও পৌরসভায় নেই।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল হক বলেন, ‘প্ল্যান্টের ৩টি গভীর নলকূপের মধ্যে দুটি অকেজো হয়ে পড়েছে। বাকি একটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পৌরসভার বাসিন্দাদের সুপেয় পানির সরবরাহ করা হচ্ছে।’
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম দাবি করেন, ‘৪০ শতাংশ পৌরবাসীকে গভীর নলকূপের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।’
কিন্তু এই দাবিকে অমূলক বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ১০ শতাংশ বাসিন্দাকে পানি সরবরাহের সক্ষমতাও মাধবপুর পৌরসভার নেই।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পাইপলাইনে লিকেজের কারণে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে চাইলেও পৌরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাবদ পৌরসভা প্রতি মাসে ১০-১২ হাজার টাকা গচ্চা দিচ্ছে।’
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুরের রংধনু মডেল স্কুলের প্রাথমিকে বৃত্তিপ্রাপ্ত ৮০ শিক্ষার্থীকে গতকাল সোমবার সকালে হেলিকপ্টারে আকাশে ঘুরিয়ে ব্যতিক্রমী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শাহজাদপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শাহ আজম শান্তনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান, শাহজাদপুর পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী, শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন। সভাপতিত্ব করেন রংধনু মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম শাহিন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শাহ আজম শান্তনু কেক কেটে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপর ৮০ শিক্ষার্থীকে চারজন করে ২০ বারে হেলিকপ্টারে শাহজাদপুরের আকাশে ঘোরানো হয়।
এ বিষয়ে রংধনু মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, শিক্ষার্থীদের আরও ভালো পড়ালেখা করার উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়।
এ সময় নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে শিক্ষার্থী নিশাত, স্বর্ণা, মাইসি ও সুমসা বলেন, এই আয়োজন আমাদের পড়ালেখায় আরও মনোযোগী হতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
প্রধান অতিথি রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শাহ আজম শান্তনু তার বক্তব্যে বলেন, এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় নিঃসন্দেহে আরও উৎসাহিত করবে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে নাগরিকদের কাছে টাকা ঘুষ চাওয়ায় ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে পদ থেকে কেন চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিসও দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, ২ নম্বর গৌরীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক দরিদ্রদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ভেরিফাই ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরি করে দেওয়ার জন্য নাগরিকদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন।
গত বছর ২১ আগস্ট গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হলে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে এবং তদন্তে আবু বক্কর সিদ্দিকের টাকা দাবির ঘটনাটি প্রমাণিত হয়। আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গতকাল ইউপি সচিব আমার হাতে কাগজ দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জবাব দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ডাকাত দলের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছয় ডাকাতকে আটক করেছে। এদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ রয়েছেন। এসময় ডাকাতদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গতকাল সোমবার ভোররাতে সাতক্ষীরা-কলারোয়া সড়কের কোয়ার্টার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান জানান, পরিবহনে ডাকাতির লক্ষ্যে কিছু দুর্বৃত্ত প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে কোয়ার্টার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি প্রাইভেটকারকে চ্যালেঞ্জ করে পুলিশ। এসময় প্রাইভেটকার থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। তিনি আরও জানান, অভিযানকালে তিনি নিজে, কলারোয়া থানার ওসি, এএসআই আনোয়ার ও কনস্টেবল রাজীব মীর আহত হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার উপ-রাজারামপুর কুমারপাড়ায় মা-মেয়েকে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল ইসলাম এই রায় দেন। দন্ডিত ব্যক্তিরা হলেন উপ-রাজারামপুর কুমারপাড়ার হুমায়ন কবির (৩৪), মাহবুব আলম (৩২) ও মোহাম্মদ রুবেল (৩৩)। এর মধ্যে দন্ডপ্রাপ্ত মাহবুব আলম পলাতক রয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি রবিউল ইসলাম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট প্রবাসী নাসির উদ্দীনের স্ত্রী নাসিমা বেগমকে কুপিয়ে ও তার শিশুকন্যা নিলাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই নাসিমার বাবা তৈমুর রহমান সদর থানায় মামলা করেন।
মামলা চলাকালে আসামি মজিবুর রহমান খুদি মারা যাওয়ায় এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তোহরা বেগম ও জাহাঙ্গীরকে খালাস দেওয়া হয়।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।