
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগের ঘটনায় পাঁচটি ইউনিয়নের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সব কটি ইউনিয়ন ও সরকারি কলেজ শাখায় নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) আহ্বান করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
গত শনিবার রাতে ফুলগাজী উপজেলা সভাপতি রেজাউল কবির মজুমদার ইয়ামিন ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বাপ্পী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশ মোতাবেক ফুলগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন ফুলগাজী সদর, মুন্সিরহাট, দরবারপুর, আমজাদহাট ও জিএমহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় কমিটি নিয়ে সমস্যার জেরে সেচপাম্প তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে প্রায় দুই মাস। এতে সময়মতো সেচ দিতে না পারায় ৩০০ বিঘা জমির ফসলের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। সেচ বন্ধ থাকার জন্য কৃষকরা নাটোর বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলীকে দায়ী করেছেন। শিগগিরই সমস্যার সমাধান করে সেচ চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষকদের সুফল ভোগের আশায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাগাতিপাড়ার দয়ারাম ইউনিয়নের চন্দ্রখইর গ্রামে গভীর সেচপাম্প স্থাপন করা হয়। এটি পরিচালনার জন্য দুই বছর আগে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে সেই কমিটি দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে আবার কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন নাটোর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মতিন। পরে তিনি স্থানীয় কৃষক আলম মোল্লাকে সভাপতি ও আবদুর রশিদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৮ সদস্যের নতুন কমিটি করেন। তবে মতামত না নিয়ে সদস্য করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ১৪ জন কমিটি থেকে অব্যাহতি নেন। এ সমস্যা সমাধানে সরেজমিনে আসেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মতিন। তবে সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়ে সেচপাম্পের ঘরের চাবি নিয়ে তিনি চলে যান। ফলে বন্ধ হয়ে পড়ে সেচব্যবস্থা। সেচ কার্যক্রম চালু করতে কৃষকরা স্থানীয় ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে একাধিকবার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের অফিসে ধরনা দিলেও কোনো সুফল পাননি।
স্থানীয় কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, তার প্রায় ২০ বিঘা কৃষিজমিতে গম, ভুট্টা, রসুন, আম ও কলার বাগান রয়েছে। সেচের অভাবে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধান করে সেচ কার্যক্রম সচল করার দাবি জানান।
অব্যাহতি নেওয়া কমিটির সদস্য পলাশ বলেন, ‘কমিটি নিয়ে বিভিন্ন সময় টালবাহানা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে যাদের সদস্য করা হয়েছে তার অনেকেই এ বিষয়ে জানেন না। তাই আমরা লিখিতভাবে অব্যাহতি নিয়েছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সেচ সমস্যা সমাধানের জন্য কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে নাটোর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয় প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মতিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে তিনি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও পরে অজানা কারণে সাধারণ কৃষকদের কোনো মূল্যায়ন করেননি।’
এ বিষয়ে নাটোর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মতিন বলেন, আগের কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটির দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে তা সমাধানের চেষ্টা করি। সমাধান না হওয়ায় অফিসের নির্দেশনায় সেচপাম্পের ঘরের চাবি নিয়ে আসা হয়। সমাধানের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই সেচ কার্যক্রম চালু করা হবে।’
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের নাম, স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সিভিল সার্জনের নাম, স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এ ঘটনায় এক প্রতারককে আটক করেছে।
গতকাল রবিবার দুপুরে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় প্রতারণার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন। গ্রেপ্তার ২৬ বছর বয়সী আশিকুর রহমান দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুবাড়ীর সিদ্দিকুল আলমের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, আশিকুর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অফিসে চাকরি দেওয়ার কথা বলে গ্রামের সহজ, সরল ও নিরীহ লোকদের টার্গেট করে তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বীরগঞ্জ উপজেলার দেবীপুর গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বী এক কলেজছাত্রীকে টার্গেট করে। আশিকুর প্রথমে ওই ছাত্রীকে চাকরির প্রলোভন দেখায়। এতে ওই ছাত্রী তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। গত ১৬ মার্চ আশিকুর সিভিল সার্জনের নাম, স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে একই অফিসের অফিস সহকারী-৩ পদে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে তাকে দিয়ে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়।
এরপর কলেজছাত্রী ১৮ মার্চ সিভিল সার্জন ডা. বোরহান উদ্দীনের কাছে ‘নিয়োগপত্রটি’ নিয়ে যোগদান করতে গেলে ভুয়া নিয়োগপত্র দেখে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (সিএস) ডা. সামিউল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন আরও জানান, মামলা হওয়ার পর থেকে আশিকুর পলাতক ছিল। ১৮ মার্চ রাতে অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৫ ভুক্তভোগীর জীবনবৃত্তান্ত জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আরও এক কলেজছাত্রী তার বিরুদ্ধে একই রকমের অভিযোগ করেছেন। ওই ছাত্রীর কাছ থেকে আশিকুর ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। আশিকুরের বিরুদ্ধে আরও একটি প্রতারণার মামলা চলমান।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের করা একটি মামলায় গতকাল রবিবার দুপুরে লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইস্রাফিলের আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিচারক তাকেসহ ১২ জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ৭ নভেম্বর হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে টিআর, কাবিখা, কাবিটার ভাগাভাগি নিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা এবং অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। জেসমিন নাহারের করা মামলার প্রধান আসামি মশিউর রহমান মামুন। এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পান মামুনসহ বাকি আসামিরা। কিন্তু ৬ সপ্তাহ পার হলেও আদালতে হাজির হতে বিলম্ব করেন আসামিরা। এ অবস্থায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
রবিবার সেই মামলায় মামুনসহ ১২ আসামি হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠান।
লালমনিরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আকমল হোসেন হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমানসহ ১২ জনের জামিন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি বরিশাল কলেজের মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম রিজনকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে সহপাঠী ও স্বজনরা। গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় সদর রোডের অশি^নী কুমার হলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অমৃত লাল দে কলেজ, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, সরকারি বরিশাল কলেজ, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, কাশিপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি আলেকান্দা কলেজসহ আট কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
মানববন্ধনে কলেজ শিক্ষার্থী এইচ এম রাব্বির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মনিরুজ্জামান খান, শিক্ষার্থী মঈন, মো. ইমন, মো. নোমান, মো. নিলয়, মো. তানভীর, মো. সোহান, মো. রাইয়ান, আহত রাকিবুলের বোন সুমাইয়া আক্তার, ভগ্নিপতি সায়মন হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ১৫ মার্চ বিকেলে রাকিবুল ইসলাম রিজনের ওপর নগরীর ইছাকাঠি প্রধান সড়কে ১০-১২ জন হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। রাকিবুলকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বক্তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত শনিবার রাতে রনি ঢালি নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ গতকাল রবিবার রনির বন্ধু রাজুকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে।
রনির পরিবারের অভিযোগ, তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত রনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ভাদুঘর এলাকার মানিক ঢালীর ছেলে। আর রাজু একই এলাকার বাসিন্দা।
গতকাল রবিবার সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের গাছতলা এলাকা থেকে রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে রনি বাড়ি থেকে বের হন। রাতে তিনি বন্ধু রাজুর সঙ্গে সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের বিয়াল্লিশ্বর এলাকায় মসজিদের পাশে নির্জন স্থানে অবস্থান করছিলেন। রাত ১০টার দিকে রনিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় রাজু। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে রনি মারা যান।
রনির বাবা মানিক ঢালী অভিযোগ করেন, রনিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে রাজু।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজুকে আটক করে। সে আত্মীয়র বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজু খুনের কথা স্বীকার করেছে। সে বলেছে, মোবাইল ফোনে রনি তাকে গালাগাল করে এবং হুমকি দেয়। এর প্রতিশোধ নিতেই রনিকে ছুরিকাঘাত করেছে সে। বুকের বামপাশে আঘাত করায় একটি আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রনির বাবা মামলা করেছেন।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।