
চট্টগ্রামের আবাসন শিল্পে ২০০৫ সালে সূর্যোদয়ের মতো আবির্ভূত হয় সিপিডিএল। নন্দনকাননে নন্দন ভ্যালি দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও নগরীর প্রাণকেন্দ্র জামালখানে একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে থাকে। তখনকার সময়ে আবাসন খাতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প হস্তান্তরের দৃষ্টান্ত ছিল না। কিন্তু সিপিডিএল নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্প হস্তান্তরের চর্চা চালু করে। এ কারণে ভূমি মালিকদের অনেকে যেমন সিপিডিএলের কাছে ছুটে আসে তেমনি ফ্ল্যাট ক্রেতাদেরও পছন্দের শীর্ষে পৌঁছে যায় প্রতিষ্ঠানটি।
ক্রেতাবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে করতে জামালখান, মেহেদীবাগ, খুলশী, পাথরঘাটা, নন্দনকানন, দেবপাহাড়, কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশ, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, ফয়’স লেকসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প নিয়েছে। পাশাপাশি নগরীর বাইরে আনোয়ারায় স্যাটেলাইট সিটি গড়ে তোলার উদ্যোগও নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু কি আনোয়ারা? চট্টগ্রামের গ-ি পেরিয়ে এখন ঢাকায়ও সদর্পে এগিয়ে চলছে সিপিডিএল। ২০২০ সালে ঢাকায় প্রকল্প নেওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যে ছয়টির কাজ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
জামালখান এলাকায় সবচেয়ে বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও নগরীর মেহেদীবাগে তারা সর্বপ্রথম বিলাসবহুল ফ্ল্যাট নির্মাণ করে। ‘ক্রিমসন ক্লোভার’ নামের একটি কনডোমিনিয়াম প্রকল্পে প্রতিটি ফ্ল্যাটের সর্বনিম্ন আয়তন ছিল দুই হাজার বর্গফুটের ওপরে এবং সেটিতে নাগরিক সুযোগ-সুবিধার অনেকটাই যুক্ত করায় অনেকের কাছে এখনো তা ঈর্ষণীয় প্রকল্প। আর এরই ধারাবাহিকতায় আরও বড় আকারে নগরের দেবপাহাড় এলাকায় পাহাড় ও সমতলের সংমিশ্রণে নেওয়া হয়েছে ‘সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়া’ নামের একটি প্রকল্প। চার টাওয়ারের সেই প্রকল্পে রয়েছে ১৩৬০ থেকে ২৪৩৫ বর্গফুট সাইজের ১৫৫টি ফ্ল্যাট। গত ১৮ বছরে চট্টগ্রামে ২৬টি প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে, বর্তমানে চলমান রয়েছে আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ।
চট্টগ্রামে ব্যবসা শুরু করে ঢাকা পর্যন্ত বিস্তৃত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের বাইরের মানুষদেরও আমরা সেবা দিতে চাই। আমরা আমাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে চাই। এখন ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় দুটি, উত্তরায় দুটি, পুরানা পল্টনে একটি এবং আমেরিকান এমবাসিসংলগ্ন বারিধারায় একটি অত্যাধুনিক কনডোমিনিয়াম প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আগামীতে কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, গাজীপুরসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় গ্রোথ সেন্টারভিত্তিক প্রকল্প নিতে চাই।’
ফ্ল্যাট শুধু একটি ঘর নয়, বসবাসের সব উপকরণের সংযুক্তি মানেই ফ্ল্যাট। আবাসন শিল্পে এ ধারার সঙ্গে নগরবাসীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সিপিডিএল যেখানে প্রকল্প নেয় সেই এলাকার পরিবেশও বদলে ফেলে। নান্দনিক চট্টগ্রাম সেøাগানে সর্বপ্রথম জামালখান এলাকায় সবুজ ও নান্দনিকের মিশ্রণ ঘটিয়ে সবুজায়ন কার্যক্রম শুরু করেছিল সিপিডিএল। আর এরই ধারাবাহিকতায় পরে পুরো নগরে ফুটপাত ও রোড ডিভাইডারে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প নিয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এ ছাড়া দেবপাহাড় এলাকায় সুলতানা গার্ডেনিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এলাকায় প্রবেশপথ থেকে শুরু করে পুরো এলাকার আউটলুকে পরিবর্তন এনেছে সিপিডিএল। এর আগে দক্ষিণ খুলশী এক নম্বর রোডে ‘বেলা দিস্তা’ প্রকল্পের জন্য পুরো একটি সড়ক নিজ খরচে করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অর্থাৎ শুধু ফ্ল্যাট তৈরি এবং তা হস্তান্তর নয়, পুরো এলাকা নিয়ে কাজ করে তারা।
এ বিষয়ে সিপিডিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘আমরা শুধু একটি ফ্ল্যাট নয়। এ ফ্ল্যাটে বসবাসকারী প্রতিটি বয়স গ্রুপের নাগরিকদের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন ফিচার যুক্ত করে থাকি। যেমন শিশুদের জন্য কিডস জোন, বয়স্কদের জন্য বই পড়া কিংবা গল্প করার স্থান, জিম সুবিধা, ইয়োগা, হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে সব ফ্যাসিলিটি যুক্ত করা হয় আমাদের প্রকল্পে। একই সঙ্গে যে এলাকায় প্রকল্পটি নেওয়া হয় সেই এলাকাটিকে দৃষ্টিনন্দন করতেও প্রকল্প নেওয়া হয়। জামালখান, দেবপাহাড় ও খুলশীতে যেমনভাবে করা হয়েছে তেমনিভাবে অন্যান্য সব প্রকল্পে করা হচ্ছে।’
শুধু ফ্ল্যাট নয়, সিপিডিএল রেডি অফিস অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির ধারণাও যুক্ত করেছে নগরীতে। নগরীর খুলশীতে রহিমস প্লাজায় স্টুডিও অফিস চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন এ ধারণা প্রসঙ্গে সিপিডিএলের চিফ বিজনেস অফিসার জিয়াউল হক খান বলেন, ‘বর্তমান সময়ে একটি অফিস কম্পাউন্ডের কনফারেন্স রুমসহ অন্যান্য অনেক রুম অপ্রয়োজনীয় অবস্থায় পড়ে থাকে। তাই আমরা একটি অফিস কনফারেন্স রুমকে কেন্দ্র করে একাধিক স্টুডিও অফিস করেছি। এতে শিডিউলের ভিত্তিতে কনফারেন্স রুম ব্যবহার করা যায়। আবার একটি ফ্রন্ট ডেস্ক রেখে একাধিক অফিস পরিচালনা করা সম্ভব। আর্থিকভাবেও তা সাশ্রয়ী।’
আবাসিক ফ্ল্যাটের পাশাপাশি সিপিডিএল সেকেন্ড হোম কনসেপ্টও চালু করেছে নগরীতে। নগরীর ফয়’স লেকে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের আদলে চালু করেছে সেকেন্ড হোম। এতে বিনিয়োগকারীরা একটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট কিনে পাঁচ তারকা হোটেলের সুবিধা নিয়ে থাকতে পারবে। ব্যবসায়িক কাজে চট্টগ্রামে এলে এখানে থাকার সুবিধা পাবে। একই সঙ্গে কেউ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কিনলে মাসিক ভাড়াও পাবে। মূলত মিরসরাই ইকোনমিক জোন, বে টার্মিনাল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্প আগামীতে চালু হতে যাচ্ছে। এসব প্রকল্পে অনেক বিদেশি এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা চট্টগ্রামে আসবেন। তাদের পারিবারিক পরিবেশে আবাসন সুবিধা দিতে সিপিডিএল নতুন ধারার এ সেকেন্ড হোম স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট চালু করেছে।
চট্টগ্রামের আবাসন কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্যাটেলাইট সিটির কথা বলে আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে লজিস্টিক সাপোর্ট ও নীতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে স্যাটেলাইট সিটি গড়ে উঠছে না। কিন্তু তাই বলে কি উন্নয়ন থমকে যাবে? সিপিডিএল আনোয়ারায় গড়ে তুলছে স্যাটেলাইট সিটি ‘অনিন্দ্য নগর’। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেলের মাধ্যমে সহজেই আনোয়ারার সঙ্গে যুক্ত হবে চট্টগ্রাম নগর। নদীর ওপারের আনোয়ারায় জমির দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় স্যাটেলাইট সিটি গড়ে তোলা গেলে গ্রাহকরা তুলনামূলক কম দামে ফ্ল্যাট পাবেন।’
সর্বোপরি শুধু ফ্ল্যাট তৈরি নয়, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং একটি নগরীর উন্নয়নেও কাজ করছে সিপিডিএল। একই সঙ্গে নতুন শহর গড়ে তুলতেও এগিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
চট্টগ্রাম শহরে লাইটিংয়ের জগতে অনন্য হোসেন লাইটিং। ৩২ বছর ধরে এ খাতে ব্যবসা করে আসা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘বেচা-বিক্রি কী করব, চাহিদা অনুযায়ী পণ্যই তো নেই। একটি ভবনের জন্য একই ধরনের ৫০টির কোনো আইটেমের দরকার হলে পাঁচ থেকে ছয়টির বেশি পাওয়া যায় না। আবার দামও আগের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। ডলার সংকটের কারণে এলসি ওপেন করা যাচ্ছে না বলে আমদানিও করা যাচ্ছে না।’ শুধু লাইটিংয়ের ক্ষেত্রে নয়, আবাসনে ব্যবহার্য প্রতিটি নির্মাণ উপকরণের ক্ষেত্রেই একই চিত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষস্থানীয় একটি সিমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামালের (ক্লিংকার, জিপসাম, স্ল্যাগ, ফ্লাই অ্যাশ ও লাইমস্টোন) দাম কিন্তু বাড়েনি। তারপরও দেশে ভোক্তা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এর কারণ টাকার অবমূল্যায়ন এবং সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া। এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে বাজারে।
এদিকে সিমেন্টের পাশাপাশি রডের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ইকুইটি প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. কাজী আইনুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ছয় মাস আগে যে রডের দাম ছিল টনপ্রতি ৬৫ হাজার টাকা সেই রড এখন লাখের কাছাকাছি। ভবন নির্মাণের প্রধান উপকরণই হলো রড। এখন রডের দাম এভাবে বাড়লে ভবন নির্মাণ করব কীভাবে?’
রড, সিমেন্ট, লাইটিং, স্যানিটারি উপকরণ সব পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যে দিশেহারা আবাসন খাত। শহরে গত এক বছর আগেও প্রতি বর্গফুট ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দরে ফ্ল্যাট পাওয়া যেত। এখন সেই একই ফ্ল্যাটের দাম ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রিহ্যাব চট্টগ্রাম জোনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম বলেন, ‘জামালখান এলাকায় এখন প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দর ৮ হাজার টাকার বেশি। অর্থাৎ কম দামে আর ফ্ল্যাট নেই। নির্মাণ উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডেভেলপাররা দাম কমাতে পারছেন না।’
উপকরণের দাম বাড়ায় ফ্ল্যাটের দামেও তার প্রভাব পড়েছে। ফলে ক্রেতারাও আশাহত। বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির কর্ণধারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে প্রচুর গ্রাহক রয়েছে। অর্থাৎ মানুষ এখন প্লটের পরিবর্তে ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকেছে। কিন্তু হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় সেই আশাও কমে গেছে।
আবু বকর বিন হাশেম নগরীর একটি প্রাইভেট কলেজের সহকারী অধ্যাপক। দেবপাহাড় এলাকায় একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য ২০২১ সালে প্রতি বর্গফুট সাড়ে ৫ হাজার টাকায় নেওয়ার কথা বললেও এখন এর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮ হাজার টাকা।
দাম বাড়ার প্রসঙ্গে সিপিডিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়লে ফ্ল্যাটের দাম বাড়বে এটা স্বাভাবিক। ফলে মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে ফ্ল্যাট রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে ৩০ বছরেও বাড়েনি নগরীতে ফ্ল্যাটের বিস্তৃতি। নগরীতে আবাসন ফ্ল্যাট প্রকল্প সর্বপ্রথম চালু হয় ১৯৯২ সালে। নগরীর ষোলশহর সিঅ্যান্ডবি কলোনি এলাকায় আইডিয়াল হোম ডেভেলপমেন্ট ‘আপন নিবাস’ নামে আবাসন প্রকল্প চালু করেছিল। সেই শুরুর পর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, খুলশী, পাঁচলাইশ, চকবাজার, মেহেদীবাগ, জামালখান, নন্দনকানন ও কোতোয়ালি এলাকায় ব্যাপকহারে ফ্ল্যাট তৈরি হলেও অন্যান্য এলাকায় তেমনভাবে ডেভেলপার কোম্পানিগুলো ফ্ল্যাট নির্মাণে আগ্রহী নয়।
ফ্ল্যাট প্রকল্প কিছু এলাকায় কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারণ কী? শহরের ভেতরে প্রতি বর্গফুট ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় ফ্ল্যাট বিক্রি হলেও প্রান্তীয় এলাকায় দাম আরও কমে আসার কথা। কিন্তু সেসব এলাকায় ডেভেলপাররা প্রকল্প নিচ্ছেন না। এ বিষয়ে এপিক প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিহ্যাব চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সাবেক সভাপতি এসএম আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এখনো চট্টগ্রাম শহর মানেই খুলশী, নাসিরাবাদ, মেহেদীবাগ, পাঁচলাইশ, জামালখান, চকবাজার ও নন্দনকানন এলাকা। এসব এলাকার বাইরে মানুষ ফ্ল্যাট কিনতে চায় না। আর ক্রেতারা যেসব এলাকায় থাকতে চাইবে ডেভেলপাররাও সেসব এলাকায় ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। এটাই স্বাভাবিক।’
ডেভেলপারদের মতে, নগরীর অন্যান্য এলাকায় সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, শপিং মলসহ নগরবাসীর বিনোদনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে মানুষ ওইসব এলাকায় ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হবে। বর্তমানে জাকির হোসেন রোডের নাসিরাবাদ প্রপার্টিজ, পলিটেকনিক এলাকায় এয়াকুব ফিউচার পার্ক এলাকায় অনেক ডেভেলপার ফ্ল্যাট প্রকল্প নিয়েছেন। মূলত খুলশী এলাকার ফ্লেভার দিতেই নাসিরাবাদের পাহাড়ি এলাকায় গিয়েছেন ডেভেলপাররা। নগরীর জামালখান এলাকায় সবচেয়ে বেশি ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে সিপিডিএল। চট্টগ্রাম মহানগরীর নগরীর বিশদ উন্নয়ন পরিকল্পনা করে থাকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
পুরো শহরে উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধার অসাম্য প্রসঙ্গে সংস্থাটির সাবেক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহীনুল ইসলাম খান বলেন, ‘ডেভেলপাররা সবসময় প্রফিটবেইজ প্রকল্প নিয়ে থাকেন। তাই যেখানে তারা বেশি লাভ করতে পারবেন সেখানে প্রকল্প নেয়। কিন্তু নগরীর অন্যান্য এলাকায় মধ্যম আয়ের মানুষদের জন্য চাইলে প্রকল্প নেওয়া যায়।’
আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠার পেছনে নাগরিক সুযোগ-সুবিধাও বড় একটি ফ্যাক্টর। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমাদের মতো সরকারি সংস্থাগুলো হালিশহর, পতেঙ্গা বা বাকলিয়া এলাকাগুলোতে হাসপাতাল, স্কুল, শপিং মলসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। একই সঙ্গে সিডিএকে ওইসব এলাকায় প্লট বা ফ্ল্যাট প্রকল্প গ্রহণ করে অন্যদের উৎসাহিত করতে হবে।’
তবে প্রকল্প যেখানেই নেওয়া হোক না কেন, নির্মাণ উপকরণের দাম না কমলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আবাসন খাত। ফ্ল্যাটের দাম অনেক বেড়ে যাবে এবং মধ্যবিত্তের নাগালেরই বাইরে চলে যাবে। এতে শুধু উচ্চবিত্তদের জন্যই তৈরি হবে ফ্ল্যাট।
আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান
‘অনেকে বক্তৃতায় বলেন, কানাডা, মালয়েশিয়া, দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের বেগমপাড়া গড়ে উঠছে। আমি বলব, এই বেগমপাড়া গড়ে ওঠার পেছনে আমাদের পলিসি দায়ী। মানুষের অর্থ যদি এখানে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া হতো, তাহলে কখনোই দেশের বাইরে বেগমপাড়া গড়ে উঠত না।’ রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী এমন দাবি করেছেন। তিনি আক্ষেপ করে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখানে বৈধ টাকা পদ্ধতিগত কারণে কালো টাকায় পরিণত হয়ে যায়। আর তখন সেই কালোটাকা মানুষ দেশের বাইরে নিয়ে যায়। এসব টাকা আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে।’
নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়ায় আবাসন খাতের জন্য অশনিসংকেত অপেক্ষা করছে উল্লেখ করে আবদুল কৈয়ূম বলেন, ‘আবাসন কোম্পানিগুলো পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের সুনজর দেওয়া খুব প্রয়োজন।’
সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের সুবিধা প্রত্যাশা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সরকার ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি কমাতে পারে, ফ্ল্যাটের ট্রান্সফার ফি কমাতে পারে আর সেকেন্ডারি মার্কেট (ব্যক্তিপর্যায়ে ফ্ল্যাট বিক্রি) গড়ে তুলতে ট্যাক্স কমিয়ে আনতে হবে। তবেই এই খাত টিকে থাকতে পারবে। অন্যথায় কভিডের পর চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে অনেক কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে।’
বর্তমানে লাক্সারি ফ্ল্যাটের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে কি বিত্তশালীদের চাহিদা বাড়ছে? আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, ‘ফ্ল্যাট মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য নয়। মধ্যবিত্তদের বাজেটে যারা ফ্ল্যাট নির্মাণ করত, এক দশকে তাদের অনেকে বাজার থেকে হারিয়ে গেছে। ফলে মধ্যবিত্তদের নাগালে ফ্ল্যাট নেই, উচ্চবিত্তদের জন্যই মূলত ফ্ল্যাট গড়ে তোলা হচ্ছে।’
ডলার সংকটের কারণে দেশে আবাসনশিল্পের ফিটিংস আইটেম আনতে সমস্যা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কী করা যেতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সুুযোগে দেশীয় কোম্পানিগুলো তাদের প্রসার বাড়াতে পারে।’
ডা. কাজী আইনুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইকুইটি প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট
নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়ায় আবাসন খাতের উত্তরণ বাধাগ্রস্ত হয়েছে, আর এতে এ খাতের জন্য অশনি সংকেত অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইকুইটি প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আইনুল হক।
চট্টগ্রামে আবাসন খাতের অন্যতম অগ্রণী ব্যক্তিত্ব আইনুল হকের এই প্রতিষ্ঠানটি একসময় একচেটিয়া ব্যবসা করেছিল। পরবর্তীতে অনেক কোম্পানি গড়ে উঠায় প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়েছেন। তবে প্রতিযোগিতায় টিকে আছেন খুব ভালোভাবেই।
প্রায় দুই দশক আগের তুলনায় এখনকার আবাসন খাতের অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ডা. আইনুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একসময় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে খুঁটি গেড়ে দিলেই ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে যেতো। গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পরবর্তীতে ভবন নির্মাণ করতো ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন আর সেদিন নাই।’
তিনি বলেন, ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করায় এখন গ্রাহক আগে ফ্ল্যাট চায়, পরে বুকিং। অর্থাৎ নিজের টাকায় ভবন নির্মাণের পর গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা যাবে। ব্যবসা অনেক কঠিন। আর এই কঠিনের মধ্যে নির্মাণ উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত।
ফ্ল্যাটের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই উল্লেখ করে আইনুল হক বলেন, একটি প্রকল্পের যেসব ফ্ল্যাট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে চুক্তির সময় সেগুলোর যে দাম ছিল। এখন সেই দামে দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ নির্মাণ ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় ফ্ল্যাটের দাম বাড়ানো না হলে ব্যবসায় টিকে থাকা যাবে না বলে তিনি দাবি করেন।
কিন্তু চুক্তির পর দাম বাড়ানো সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এজন্য গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কোউন্নয়ন করতে হবে। একইসঙ্গে রিহ্যাব বা সরকারের পক্ষ থেকেও নীতিগত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
বাহ্যিকভাবে নান্দনিক এবং বসবাসে স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করবে উইকন প্রপার্টিজের ফ্ল্যাট। উইকনের পক্ষ থেকে এমন নিশ্চয়তাই দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের সব ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে যায়। আর এর অন্যতম কারণ বলে দাবি করা হয়, ফ্ল্যাট ক্রেতাদের পরিচিত আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুবান্ধব উইকনের ডিজাইনের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা হলে তারা আগেভাগেই বুকিং দিয়ে রাখেন নতুন প্রকল্পে যেন তাদের জন্য ফ্ল্যাট রাখা হয়। আর এই আত্মবিশ্বাস থেকে আবাসনশিল্পে আসার মাত্র চার বছরের মধ্যে ১২টি প্রকল্প নিয়েছে উইকন প্রপার্টিজ; যা বর্তমান বাজারে অকল্পনীয় বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট মহল।
এই অকল্পনীয় কাজটি করছে একদল তুখোড় তরুণ তুর্কি। যারা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ভবনের ডিজাইনের কাজ করছে, আবার কেউ নির্মাণে অভিজ্ঞ। সব মিলিয়ে উইকন প্রপার্টিজ চট্টগ্রাম শহরে ধূমকেতুর মতো আগমন ঘটলেও বাজারে নিজেদের অবস্থান মজবুত রাখার আভাস দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা আশরাফুল ইসলাম আলভি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা রিয়েল এস্টেটে আসার আগে পিটুপির মাধ্যমে নকশা প্রণয়ন, ভবন নির্মাণ, নির্মাণ উপকরণ, ইন্টেরিয়রসহ সব ধরনের সেবা দিয়ে আসছি ২০১৩ সাল থেকে। ২০১৪ সালে আমরা কাজ করেছি ভবনের নির্মাণ উপকরণ নিয়ে, ২০১৫ সালে নকশা প্রণয়নে ও ফার্নিচার তৈরিতে, ২০১৬ সালে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করি। আর এই অভিজ্ঞতা পুঁজি করে ২০১৯ সালে আবাসনশিল্পে আসা। দেশে রড, সিমেন্ট, ফার্নিচারসহ সব ধরনের নির্মাণ উপকরণ আমাদেরই নিজস্ব। আর এতেই আমরা এগিয়ে থাকব এই শিল্পে।’
প্রায় পাঁচ কাঠা জায়গার ওপর জাকির হোসেন রোডে দক্ষিণ খুলশী আবদুল মালেক সড়কে নির্মিত ‘উইকন নূহ’স কেভ’ অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ১৮ মাসে। করোনাকালে এই অসাধ্য কাজটি করেছে উইকন প্রপার্টিজ। এটি উইকনের প্রথম প্রকল্প। যেখানে অনেক ডেভেলপারের প্রকল্প হস্তান্তরের গড় সময় পাঁচ বছর। সর্বোচ্চ ৬০ কিস্তিতে প্রকল্পের ফ্ল্যাট গ্রহণের সুবিধা দিয়ে থাকেন ডেভেলপাররা, সেখানে মাত্র ১৮ মাসে প্রকল্প হস্তান্তর কীভাবে সম্ভব? তবে শুধু এই প্রকল্পই নয়, ইতিমধ্যে উইকনের আওতায় নির্মাণাধীন বাকি প্রকল্পগুলোও দেড় বছরে হস্তান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু কীভাবে এ কাজ করছে উইকন?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা আশরাফুল ইসলাম আলভির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অন্যরা যেখানে কাজ করে আট ঘণ্টা। আমরা সেখানে কাজ করি ২৪ ঘণ্টা (তিন শিফট)। এতে অন্যরা এক বছরে যে পরিমাণ কাজ করতে পারে, আমরা তা চার মাসে সম্পাদন করতে পারি।’
উইকন প্রপার্টিজ নগরীর পাঁচলাইশে ‘উইকন শুকরানা’ নামে একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রিমিয়াম সেই প্রকল্পের স্থাপত্য নিদর্শন অনন্য। ১২তলা ভবনের প্রতি ফ্লোরে তিনটি করে ইউনিট রয়েছে। সুইমিং পুল, গার্ডেন, ওয়াকওয়ে, জিম, কিডস প্লে জোন, নামাজের জন্য জায়গাসহ ভবনে বসবাসকারীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসংবলিত এই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনটির ডিজাইনেও রয়েছে পুরাকীর্তি ও আধুনিক স্থাপত্যের মিশেল। উইকনের প্রায় প্রতিটি ভবনেই আধুনিক স্থাপত্য এবং নির্মাণ উপকরণ বিলাসবহুল।
এ বিষয়ে কথা হয় উইকনের আর্কিটেক্ট ও পরিচালক মেহেদী ইফতেখারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভবন নির্মাণে ডিজাইন করতে গিয়ে গ্রাহককে সর্বোচ্চ লাক্সারিয়াস সুবিধা দেওয়ার কথা বিবেচনা করি। একই সঙ্গে ভবনের ইন্টেরিয়র এবং বৈদ্যুতিক পয়েন্ট জুতসই স্থানে বসানো হয়। ফ্ল্যাটের প্রতিটি জায়গা পরিমাপ করে ডিজাইন করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানসম্মত অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা এই শহরে রয়েছে। তাই আমরা প্রিমিয়াম ফ্ল্যাট নির্মাণ করছি। একই সঙ্গে আমরা বাতাসে আয়তন মেপে কোনো মূল্য নিচ্ছি না; অর্থাৎ একজন ক্রেতা যত বর্গফুট জায়গা ব্যবহার করবেন, ঠিক ততটুকুর মূল্য পরিশোধ করবেন। প্রতিটি জায়গা ইঞ্চি পরিমাণ মেপে ক্রেতা বুঝে নিতে পারবেন।’
বর্তমানে দক্ষিণ খুলশী ভিআইপি আবাসিক এলাকায় উইকন মে বেরি, রহমান নগরে উইকন ইকরা, কাতালগঞ্জে উইকন ক্যানোপি, চট্টেশ্বরী রোডে উইকন এম এন টাওয়ার ও উইকন রেইন ফরেস্ট, আমিরবাগে উইকন জেএম সাউথ লন, উত্তর খুলশীতে উইকন নর্থ, ওআর নিজাম রোডে উইকন মমতাজ ম্যানোর, হালিশহর জি ব্লকে উইকন হকস বে ল্যান্ডমার্ক, গোলপাহাড়ে উইকন স্কাইরিজ নামে প্রকল্প নিয়েছে উইকন।
খুলশী চট্টগ্রামের সবচেয়ে অভিজাত আবাসিক এলাকা। পাহাড়ের ওপর গড়ে ওঠা এই আবাসিক এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮০ ফুট ওপরে। এ এলাকায় করা জুমাইরার বহুতল ভবনে থাকছে সুইমিং পুল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এতটা উচ্চায় সুইমিং পুলে গোসলের অনুভূতি যে কাউকে বিমোহিত করবে।
খুলশী ৩(ক) নম্বর রোডে ‘জুমাইরা ইসলাম প্যালেস’ নামের ১৪তলা ভবনটির তিনটি ফ্লোরই পার্কিং হিসেবে ব্যবহৃত হবে। রয়েছে কার লিফটও। জুমাইরা ইসলাম প্যালেসের মতো প্রতিটি ভবনেই লাক্সারি ফ্ল্যাট দিচ্ছে নগরবাসীকে।
ভবনটিতে প্রবেশ করতেই ওপরের দিকে অনেক উঁচু মনে হবে। প্রকৃতপক্ষে তা উঁচু বটেই। নিচতলার ছাদটি ১৭ ফুট ওপরে আর ভবনে প্রবেশের সময় একটু অন্য রকম অনুভূতি দেবে যে কাউকে। অনেক ভবনে নামাজের কক্ষ ছাদের ওপরে কিংবা প্রথম তলায় থাকে। কিন্তু এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় মনোরম নকশার একটি প্রার্থনা কক্ষ রয়েছে। প্রতি ফ্লোরে দুই ইউনিটের ফ্ল্যাট, প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২৭০০ বর্গফুট। দুটি লিফট ও দুটি সিঁড়ির সমন্বয়ে গড়ে তোলা ভবনটির ছাদ পর্যন্ত লিফট সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া সুইমিং পুলের ওপরে ভবনের অন্য প্রান্তে রয়েছে ব্যাডমিন্টন কোর্ট। রয়েছে শিশুদের খেলার জায়গা, জিম, চেঞ্জরুম, লাইব্রেরি রুমসহ নানা সুবিধা।
দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন, নান্দনিক লবি, সবুজের সমারোহ এবং সুইমিং পুল সুযোগ-সুবিধাসংবলিত লাক্সারি ফ্ল্যাট দিচ্ছে জুমাইরাহ হোল্ডিংস। দুই দশক ধরে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এই প্রতিষ্ঠান নগরীতে গুলশানের ফ্ল্যাটের স্বাদ দিচ্ছে। ইতিমধ্যে নির্মিত এবং আগামীতে নির্মাণ হতে যাওয়া বিভিন্ন প্রকল্পে এমনই নকশা দেখা যাচ্ছে। নগরীর আমিরবাগ আবাসিক এলাকা, ওআর নিজাম রোড, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, হিলভিউ হাউজিং সোসাইটি, লাভলেইন, খুলশীসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ করছে জুমাইরা।
বৈচিত্র্যময় নকশা, গুণগত মানসম্পন্ন নির্মাণ উপকরণ এবং লাক্সারিয়াস আইটেম ব্যবহারের কারণে ভবন নির্মাণে এগিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের ভবনগুলোর নকশা অন্যান্য ভবন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। দৃষ্টিনন্দন নকশার পাশাপাশি ভবন নির্মাণে সেরা উপকরণ ব্যবহার করি। এতে ফ্ল্যাট ব্যবহারকারীরা স্বাচ্ছন্দ্য পান।’
কিন্তু এত ভালো নির্মাণ উপকরণ ও ভবন সাজাতে ভালো আইটেম দিতে গেলে ফ্ল্যাটের মূল্য তো বেড়ে যাবে। এত দাম দিয়ে কি মানুষ ফ্ল্যাট কিনবে? মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘ভালো জিনিস পেলে মানুষ দাম দিতেও রাজি। আমরা এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেছি। দাম দিয়েই মানুষ কিনছে এবং তাদের আস্থায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে নির্মাণ উপকরণের দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা গ্রাহকের সঙ্গে যে দরে চুক্তি করেছি, সেই দরেই ফ্ল্যাট হস্তান্তর করছি। নান্দনিক ডিজাইনের পাশাপাশি ভালো সার্ভিসের মাধ্যমে আমরা এই শহরেই নগরবাসীকে গুলশানের ফ্ল্যাটের স্বাদ দিচ্ছি।’ আবাসন ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এমন একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় ফ্ল্যাট মানে ছিল একটি বাসা। কিন্তু বর্তমানে একটি ফ্ল্যাটে নাগরিকদের আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকতে হয়। এমনকি হ্যালিপ্যাডও যুক্ত করা হচ্ছে। আর তাই একসময় ডেভেলপাররা ৫ থেকে ৭ কাঠায় প্রকল্প নিতেন, কিন্তু এখন ১০ কাঠার কম আয়তনের জমিতে কোনো প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে না। এর কারণ কী? জানতে চাইলে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘বর্তমানে ফ্ল্যাটের কনসেপ্ট বদলে গেছে। ফ্ল্যাট মানে শুধু ঘর নয়। ফ্ল্যাট মানে হলো একটি পরিবার বসবাস করার জন্য যা যা প্রয়োজন, সবই থাকতে হবে ফ্ল্যাটের কম্পাউন্ডের মধ্যে। আর তা করতে গিয়ে জায়গার পরিমাণ বাড়াতে হয়। কম জায়গায় সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয় না।’
জুমাইরা প্রকল্পগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন ও বিপণনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম (নয়ন)। জুমাইরার সব প্রকল্পে সুইমিং পুল যুক্ত থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু সুইমিং পুল নয়, নাগরিক সুবিধার সব উপাদান আমরা ফ্ল্যাটে বসবাসকারীদের দিয়ে আসছি। নগরসভ্যতায় এখন শিশুরা সাঁতার জানে না। তাই সাঁতার শেখার জন্য যেমন সুইমিং পুল রাখা হচ্ছে, তেমনিভাবে শিশুদের বিকাশের জন্য খেলার জায়গা, গেম জোন, জিম জোন, লাইব্রেরি, ব্যাডমিন্টনসহ নানাবিধ কম্পোনেন্ট রাখা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে জুমাইরাহ গড়ে ওঠার পর থেকে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে নগরীতে প্রায় শীর্ষে রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের প্রকল্পের সংখ্যাও বেশি। নির্ধারিত সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তরে প্রতিষ্ঠানটি পরীক্ষিত। আর এতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি মানুষের আস্থাও বেড়েছে কয়েক গুণ।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
মার্চে ঘরের মাঠে দুটি প্রীতি ম্যাচের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনাকে। তিন মাস পর আগামী মাসে তারা খেলবে আরও দুটি প্রীতি ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচের জন্য ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন লিওনেল স্কালোনি। তবে ঘোষিত সেই দলে নেই লাউতারো মার্তিনেজ।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস ও ওলে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গোড়ালির চোটের কারণে মার্তিনেজ চিকিৎসাধীন আছেন। তাই তাকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে রাখা হয়নি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের হয়ে গোল করেছিলেন। ফাইনালেও তাকে ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে। তারপরই তিনি মাঠের বাইরে চলে যাবেন। ঐ সময়ে তিনি বিশ্রামে থাকবেন। আর তাই কোচ স্কালোনি তাকে দলে রাখবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের অন্যতম সদস্য মার্তিনেজ। তবে পুরো টুর্নামেন্টে তিনি ব্যাথানাশক ঔষধ খেয়ে খেলছিলেন।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ও ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় চাচাতো ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে পলাশ হোসেন (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পলাশ হোসেন ওই গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত পলাশ হোসেনের চাচাতো ভাই সুমন প্রায়ই পলাশের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। শনিবার সন্ধ্যায় আবারো উত্ত্যক্ত করে। পলাশ বাড়িতে এলে বিষয়টি তাকে জানায় তার স্ত্রী। এ ঘটনায় পলাশ তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে বিষয়টির প্রতিবাদ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন ছুরি দিয়ে পলাশকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই পলাশ মারা যায়।
মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নিহত পলাশ পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন, সঙ্গে কৃষিকাজও করত।
রেফারির বাঁশি বাজার তিন মিনিটের মধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের জালে জড়ায় বল। রাফা মিরের দুর্দান্ত এক গোলে লিড পায় সেভিয়া। তবে শেষ অবধি তারা ধরে রাখতে পারেনি সে হাসি। রদ্রিগোর জোড়া গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল।
রাতে লা-লিগার ম্যাচে সেভিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। খেলার তৃতীয় মিনিটেই লিড পেয়েছিল সেভিয়া। তবে ২৯ মিনিটে রদ্রিগো সমতায় ফেরান রিয়ালকে। সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পর ফের বাড়ে আক্রমণের ধার। যার ফলে ৬৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় রিয়াল। এবারও নায়ক রদ্রিগোই। এবারেরটি অবশ্য টনি ক্রুসের সহায়তায়। পরে আর কোনো গোল না হওয়ায় ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মাদ্রিদের ক্লাবটি।
তবে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে লাল কার্ড দেখে আকুনা। হারের আগে সেভিয়ার আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডারের ভুলে ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে হয় রিয়ালকে।
শুরুতে গোল হজম করলেও ৬৭ শতাংশ সময় নিজেদের দখলে বল রেখেছিল রিয়াল। ছয়বার আক্রমণে গিয়েছিল তারা, যার মধ্যে তিনটি শট ছিল গোলবার লক্ষ্য করে।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
সংলাপে রাজনৈতিক সংকট দূর হওয়ার নজির তৈরি হয়নি এখনো। তবুও নানা সময়ে সংকট নিরসনে রাজনীতিতে সংলাপ করা নিয়ে আলোচনা হয়। সংলাপের আশ্রয় নিতেও দেখা গেছে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভিন্ন মেরুতে অবস্থান থাকায় আবারও রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় আলোচনায় এসেছে ‘সংলাপ’। যদিও প্রধান দুই দলের নেতারা সংলাপে অনীহা প্রকাশ করে আসছেন। আবার আড়ালে আলাপে দুই দলের আগ্রহও দেখা গেছে।
অন্তরালের সংলাপ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার আড়ালে আলাপের মূল কারণ হলো বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বড় একটি অংশ বয়স্ক হয়ে গেছেন। তাদের অনেকের এবারের পরে নির্বাচন করার সক্ষমতা আর থাকবে না। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকতে গিয়ে সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হয়েছে। এ সময় সংসদ সদস্য হয়ে মর্যাদা নিয়ে চলতে চান তারা। বিএনপির ওই অংশের সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাও রয়েছেন যারা নির্বাচনে যেতে চান। ফলে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী বিএনপির সেই সব নেতা আড়ালে আলাপে থাকতে রাজি আছেন। অন্যদিকে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চাওয়া বিদেশি শক্তিগুলোর সরকারের ওপর চাপ থাকায় বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায় আওয়ামী লীগ। ফলে প্রকাশ্যে সংলাপের আগ্রহ না দেখিয়ে আড়ালের আলাপে আগ্রহী দলটির নেতারা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বে না। অন্যদিকে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনোভাবেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যাবে না। দুই দলই নিজেদের এমন অনড় অবস্থান দেখাচ্ছে। দুই দলের পরস্পরবিরোধী অবস্থানে সৃষ্ট সংকট সমাধানে বিদেশি তৎপরতা বেশ আগে থেকেই শুরু হয়েছে। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসতে শুরু করেছে বিদেশি সেই তৎপরতায়ও গতি এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিএনপি কাউকেই কাছাকাছি অবস্থানে, অর্থাৎ এক মেরুতে আনতে পারেনি এখনো। তবে বিদেশি প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সংকট নিরসনে দুই দলকেই সংলাপে বসার জন্য বলছেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা সংলাপের মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের রাস্তা ঠিক করতে দুই দলকেই তাগিদ দিয়েছেন। বিদেশিদের অবস্থান হলো আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চান তারা। সে জন্য রাস্তা তৈরি করতে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই সংলাপে অনীহা দেখিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে অনীহার কথা জানিয়েছেন। বিএনপিও প্রায় প্রতিদিনই অনীহা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখছে।
তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এর আগেও সংলাপে সমাধান আসেনি। এবারও সংলাপে সমাধান আসার সম্ভাবনা কম। যদি সংলাপের আগেই এজেন্ডা নির্ধারণ করে সংলাপে বসে, সেই সংলাপ সফল হওয়ার পথ থাকে না।
দুই দলের একাধিক সূত্র দেশ রূপান্তরকে আরও বলেন, প্রকাশ্যে সংলাপ না করে এবার আড়ালে সংলাপ হতে পারে। অনেকটা হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে-বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়ে বসতে পারেন।’ তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে দেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা সংকট নিরসনে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ওই সব বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দুই দলেরই অবস্থান জানতে চেয়েছেন তারা। একই সঙ্গে দুই দলকে তারা এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে ভিন্নমত থাকলেও স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের স্বার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়া জরুরি। এ কারণে নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার আবশ্যকতা রয়েছে। এই সমঝোতার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, কিংবা উভয় পন্থায় দুই দলের মধ্যে ‘আলাপ’ হওয়া দরকার, তা সেটা সংলাপ বা আলোচনা যে নামেই করা হোক না কেন। এদিকে কূটনীতিকদের কাছে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করেছে, বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে আগ্রহী নয়। ২০১৪ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে বিএনপির আচরণ বিদেশিদের কাছে তুলে ধরে সংলাপে বিএনপির অনীহার কথা জানান।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দাবি করছেন, রাজনীতিতে কোনো কিছু আদায় করতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীনদের বাধ্য করতে হয়। কিন্তু সেটা বিএনপি পারছে না। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছিল। সেখানে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিএনপিকে পদত্যাগে বাধ্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিএনপি এখন সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে বলে মনে করছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। মাঠে আওয়ামী লীগের অবস্থান আছে। জনগণ সরকারের সঙ্গে আছে। আর তাদের সঙ্গে জনগণই নেই। তাই তো খালেদা জিয়াকে এখনো মুক্ত করতে পারেনি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘যেকোনো সমস্যার সমাধান সংলাপের মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। সংলাপে বসলে হয়তো শতভাগ পাব না। তবে গিভ অ্যান্ড টেক তো কিছু হবেই। গণতন্ত্রে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই।’
তবে দলটির সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য বলেন, ‘সংলাপ চলছে। মিডিয়ায়, টক শোতে, মাঠে মঞ্চে। এক দল আরেক দলকে উদ্দেশ্য করে যে বক্তব্য দিচ্ছে, তাও এক ধরনের সংলাপ। এসব অনেকেই সংলাপ বলে টের না পেলেও মূলত এটাও সংলাপ।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, সংলাপের ব্যাপারে পশ্চিমা কূটনীতিকেরা তাদের তেমন কোনো পরামর্শ দেননি। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘আমরা তাদের (কূটনীতিক) বলেছি সংলাপের উদ্যোগ আমরা নিয়ে কী করব? তাদের (বিএনপি) যদি কোনো দাবি থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে পারে। নির্বাচন কমিশন যদি সুপারিশ করে, সেটা অবশ্যই সরকারের কাছে আসবে। সরকার দেখবে তখন।’
সংলাপ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ভাবনা আমাদের নাই।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন এই সরকারই থাকবে এবং তাদের অধীনে নির্বাচনে হবে। নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সংকট সমাধানে কূটনীতিকদের দূতিয়ালি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও ইতিবাচক বিএনপি। সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থার দূতসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। ওই বৈঠকগুলোতে কেন এই সরকারের অধীনে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না তা ব্যাখ্যা করেছে দলটি। বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে যাবে না, সেটিও স্পষ্ট করেছে। একই সঙ্গে কূটনীতিকদের বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে সে বিষয়ে সংলাপের আহ্বান আসলে তাতে সাড়া দেবে বিএনপি। আর এই সংকট মোকাবিলায় কূটনীতিকদের ‘রোল প্লে’ (ভূমিকা রাখা) করার সুযোগ আছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। তাদের মতে, প্রকাশ্যে না হলেও পর্র্দার অন্তরালে সংলাপ হতে পারে। কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনেও গুঞ্জন রয়েছে ভেতর-ভেতর সংলাপ হচ্ছে।
সর্বশেষ ১৮ মে গুলশানের আমেরিকান ক্লাবে মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল চিফ ব্রান্ডন স্ক্যাট, পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথিউ বে, পলিটিক্যাল কনস্যুলার ডেনিয়েল শেরির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
জানতে চাইলে শামা ওবায়েদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকগুলোতে তারা আমাদের অবস্থান জানতে চান। আমরাও আমাদের অবস্থান তুলে ধরি। সর্বশেষ তারা জানতে চেয়েছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে আপনাদের অবস্থান কী। আমরা বলেছি, আন্দোলন চলছে, সেটা আমরা কন্টিনিউ (চালিয়ে যাব) করব। তারা অন্য পক্ষের (ক্ষমতাসীনদের) কথাও শুনছেন। এ অবস্থায় তারা কী করছে (দূতিয়ালি), নাকি অন্য কিছু হচ্ছে সেটা তাদের বিষয়। তবে আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আরেকটি গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক, সে ব্যাপারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকুক।’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক সংলাপের ব্যাপারে কূটনীতিকেরা কোনো বৈঠকেই আমাদের কিছু বলেনি।’
তবে বৈঠকগুলোতে থাকা দলের আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা একাধিকবার সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছি। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনের সংলাপে পর চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের তিন মাস পর নতুন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে তারা প্রতারণা করেছে। তাই এজেন্ডা ছাড়া কোনো সংলাপে আমরা যাচ্ছি না। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বলেছি, আনুষ্ঠানিক সংলাপের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক। কিন্তু সেটি হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে।’
ওই নেতার আরও বলেন, ‘সরকার এখন বিভিন্ন চাপে আছে। আন্তর্জাতিক চাপ তো আগে থেকেই আছে। এখন নতুন করে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ বেড়েছে। এসব চাপ সামাল দিতে তারা সংলাপের নামে নানা কথা বলবে। কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় সরকারের মনোভাবে কিছু হলেও আঁচ করা যায়। হয়তো কয়েক দিন পর সরকার আনুষ্ঠানিক সংলাপের জন্য আমন্ত্রণও জানাতে পারে।’
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন প্রায় ৩৪ হাজার। বাবার আর্থিক অবস্থাও অসচ্চল। কিন্তু তার আছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, দামি জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি। সবমিলে তিনি অন্তত ১০ কোটি টাকার মালিক। দেশের ভেতরে যাতায়াত করেন বিমানে। ইচ্ছে হলে বিদেশেও যান। মাত্র ২৬ বছরে এত স্বল্প বেতনে চাকরি করেও সম্পদের বিশাল পাহাড় গড়ে সবাইকে তাজ্জব লাগিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী মুহাম্মদ এয়াকুব। একই সঙ্গে তিনি সিবিএর সাধারণ সম্পাদক এবং গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিব। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ে বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রমাণ হয়নি। আমি নিয়মিত আয়কর দাখিল করি। কোথাও অসামঞ্জস্য থাকলে সেটা আরও আগে ধরা পড়ত। আমি দুর্নীতিবাজ না। তবে আবার সুফিও না। সিবিএর নেতা হয়ে মসজিদের ইমাম সাহেবও হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচবার প্রত্যক্ষ ভোটে এবং তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু বেতন-ভাতা ভালো। এর বাইরে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কোম্পানির লভ্যাংশ পাই। মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর আছে। গরু পালন করি। দুই ভাই বিদেশে থাকে। এসব টাকা দিয়েই বাড়ি কিনেছি। যমুনা অয়েলের একজন ক্লিনারেরও তো বাড়ি আছে। আমি সিবিএর নেতা। আমার একটা বাড়ি থাকা কি অন্যায়?’
এয়াকুব বলেন, ‘আমি আমার বিরুদ্ধে লেখেন কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আজ পড়লে কাল ভুলে যাবে। হয়তো কিছু সম্মানহানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও দেশ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটে আজ আমি কেরানি। কমার্স কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। চাইলে আজ থেকে ১০ বছর আগেই কর্মকর্তা হতে পারতাম। কিন্তু সিবিএর নেতা হওয়া একটা নেশা।’
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার বেঙ্গুরা গ্রামের এয়াকুব ১৯৯৪ সালে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অস্থায়ী পদে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি শুরু করেন। মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানের টাইপিস্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রভিডেন্টফান্ড ও অন্যান্য খাতে টাকা কর্তন শেষে মাস শেষে তিনি বেতন পান ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা।
জানা গেছে, এত দিন ৪২ হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এয়াকুব। সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকা লালখান বাজারে তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার আয়তন প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট। দুটো ইউনিটে তিনি নিজে থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, তিনটি ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো হবে। অভিজাত ফ্ল্যাট দুটি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছি।
আরও জানা গেছে, নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেল রোডে এয়াকুবের ৪ কাঠা জমিতে টিনশেডের ঘর আছে। ১০টি পরিবারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এয়াকুবের জমি ও ঘরসহ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, ওই সম্পত্তির মালিক তিনি নন। জমিটি প্রথমে বায়না করলেও পরে আর কেনেননি।
এর বাইরে পতেঙ্গা, বেঙ্গুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এয়াকুবের নামে-বেনামে জমি ও অন্যান্য সম্পদ থাকার তথ্য এসেছে দেশ রূপান্তরের কাছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এয়াকুব একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। তবে দেশ রূপান্তরের কাছে তার দাবি, এই গাড়ির মালিক তার পরিচিত। কিন্তু গাড়িটি তার নয়।
অভিযোগ উঠেছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদারের শ্রমিক মো. আবদুল নুর ও মো. হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় সিবিএ নেতা এয়াকুব কোম্পানির ডিপোতে চাকরি দেওয়ার নামে ৮ জনের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিস ও বিকাশের মাধ্যমে ২০১৯ সালে কয়েক দফায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। ওই টাকাও ফেরত পাননি কেউই। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপোতে কর্মরত তৎকালীন কর্মচারী তোতা মিয়ার মাধ্যমে এয়াকুবকে ওই টাকা পাঠানো হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর একাধিক রসিদ দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তোতা মিয়া ও চাকরি প্রার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এয়াকুবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সাধারণ ডায়েরি করেন মো. তোতা মিয়া।
এয়াকুব দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী আমার কাছে এবং কোম্পানির দায়িত্বশীলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিএ নেতা এয়াকুব তোতা মিয়াকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেন। ওই সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে একটা মীমাংসা করা হলেও পরে ওই টাকা ফেরত দেয়নি এয়াকুব। তবে এয়াকুবের দাবি, তিনি কাউকে চাপ প্রয়োগ করেননি। অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় তোতা মিয়া তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, সিবিএর কিছু নেতা নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন না।
এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দীন আনচারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে, খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়াল নিয়োগ, ফার্নেস অয়েল, বিটুমিনসহ বিভিন্ন খাতে এয়াকুব মাসোহারা নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রধান তেল স্থাপনা ও দেশের সব ডিপো থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বদলিসহ নানা রকম শাস্তি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মচারী।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং সরেজমিন তথ্য পর্যালোচনা করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা দরকার। তার ওই সুপারিশ আমলে নিয়ে কমিশন আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন।
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন প্রায় ৩৪ হাজার। বাবার আর্থিক অবস্থাও অসচ্চল। কিন্তু তার আছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, দামি জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি। সবমিলে তিনি অন্তত ১০ কোটি টাকার মালিক। দেশের ভেতরে যাতায়াত করেন বিমানে। ইচ্ছে হলে বিদেশেও যান। মাত্র ২৬ বছরে এত স্বল্প বেতনে চাকরি করেও সম্পদের বিশাল পাহাড় গড়ে সবাইকে তাজ্জব লাগিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী মুহাম্মদ এয়াকুব। একই সঙ্গে তিনি সিবিএর সাধারণ সম্পাদক এবং গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিব। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ে বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রমাণ হয়নি। আমি নিয়মিত আয়কর দাখিল করি। কোথাও অসামঞ্জস্য থাকলে সেটা আরও আগে ধরা পড়ত। আমি দুর্নীতিবাজ না। তবে আবার সুফিও না। সিবিএর নেতা হয়ে মসজিদের ইমাম সাহেবও হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচবার প্রত্যক্ষ ভোটে এবং তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু বেতন-ভাতা ভালো। এর বাইরে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কোম্পানির লভ্যাংশ পাই। মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর আছে। গরু পালন করি। দুই ভাই বিদেশে থাকে। এসব টাকা দিয়েই বাড়ি কিনেছি। যমুনা অয়েলের একজন ক্লিনারেরও তো বাড়ি আছে। আমি সিবিএর নেতা। আমার একটা বাড়ি থাকা কি অন্যায়?’
এয়াকুব বলেন, ‘আমি আমার বিরুদ্ধে লেখেন কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আজ পড়লে কাল ভুলে যাবে। হয়তো কিছু সম্মানহানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও দেশ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটে আজ আমি কেরানি। কমার্স কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। চাইলে আজ থেকে ১০ বছর আগেই কর্মকর্তা হতে পারতাম। কিন্তু সিবিএর নেতা হওয়া একটা নেশা।’
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার বেঙ্গুরা গ্রামের এয়াকুব ১৯৯৪ সালে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অস্থায়ী পদে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি শুরু করেন। মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানের টাইপিস্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রভিডেন্টফান্ড ও অন্যান্য খাতে টাকা কর্তন শেষে মাস শেষে তিনি বেতন পান ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা।
জানা গেছে, এত দিন ৪২ হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এয়াকুব। সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকা লালখান বাজারে তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার আয়তন প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট। দুটো ইউনিটে তিনি নিজে থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, তিনটি ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো হবে। অভিজাত ফ্ল্যাট দুটি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছি।
আরও জানা গেছে, নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেল রোডে এয়াকুবের ৪ কাঠা জমিতে টিনশেডের ঘর আছে। ১০টি পরিবারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এয়াকুবের জমি ও ঘরসহ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, ওই সম্পত্তির মালিক তিনি নন। জমিটি প্রথমে বায়না করলেও পরে আর কেনেননি।
এর বাইরে পতেঙ্গা, বেঙ্গুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এয়াকুবের নামে-বেনামে জমি ও অন্যান্য সম্পদ থাকার তথ্য এসেছে দেশ রূপান্তরের কাছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এয়াকুব একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। তবে দেশ রূপান্তরের কাছে তার দাবি, এই গাড়ির মালিক তার পরিচিত। কিন্তু গাড়িটি তার নয়।
অভিযোগ উঠেছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদারের শ্রমিক মো. আবদুল নুর ও মো. হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় সিবিএ নেতা এয়াকুব কোম্পানির ডিপোতে চাকরি দেওয়ার নামে ৮ জনের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিস ও বিকাশের মাধ্যমে ২০১৯ সালে কয়েক দফায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। ওই টাকাও ফেরত পাননি কেউই। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপোতে কর্মরত তৎকালীন কর্মচারী তোতা মিয়ার মাধ্যমে এয়াকুবকে ওই টাকা পাঠানো হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর একাধিক রসিদ দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তোতা মিয়া ও চাকরি প্রার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এয়াকুবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সাধারণ ডায়েরি করেন মো. তোতা মিয়া।
এয়াকুব দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী আমার কাছে এবং কোম্পানির দায়িত্বশীলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিএ নেতা এয়াকুব তোতা মিয়াকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেন। ওই সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে একটা মীমাংসা করা হলেও পরে ওই টাকা ফেরত দেয়নি এয়াকুব। তবে এয়াকুবের দাবি, তিনি কাউকে চাপ প্রয়োগ করেননি। অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় তোতা মিয়া তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, সিবিএর কিছু নেতা নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন না।
এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দীন আনচারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে, খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়াল নিয়োগ, ফার্নেস অয়েল, বিটুমিনসহ বিভিন্ন খাতে এয়াকুব মাসোহারা নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রধান তেল স্থাপনা ও দেশের সব ডিপো থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বদলিসহ নানা রকম শাস্তি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মচারী।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং সরেজমিন তথ্য পর্যালোচনা করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা দরকার। তার ওই সুপারিশ আমলে নিয়ে কমিশন আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।