এই দিনে
২৪ নভেম্বর
উপমহাদেশের খ্যাতিমান গণিতবিদ কালীপদ বসু। তিনি কে পি বসু নামেও পরিচিত। তার জন্ম ১৮৬৫ সালের ২৪ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার ঝিনাইদহের হরিশংকরপুর গ্রামে। বাবা মহিমাচরণ বসু ছিলেন রেজিস্ট্রি অফিসের চাকরিজীবী। কালীপদের বাল্যশিক্ষা শুরু গ্রামের পাঠশালার মেধাবী শিক্ষক নছিম উদ্দিন মণ্ডলের কাছে। তিনি যশোর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স ও এফএ এবং কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে বিএ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় হয়ে তিনি কিছুদিন সেখানকার অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল অফিসে সহকারী অডিটর পদে চাকরি করেন। এ পেশা ছেড়ে তিনি ১৮৮৩ সালে কটকের রেভেন কলেজে গণিত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। প্রায় সাত বছর অধ্যাপনা করার পর ১৮৯০ সালে যোগ দেন ঢাকা কলেজে। ১৮৯৪ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে গণিতের অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত হন। ১৯০৮ সালে অধ্যাপনা ছেড়ে প্রকাশনাশিল্পের ব্যবসায় চলে আসেন এবং কলকাতায় কে পি বসু পাবলিশিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০২ সালে তিনি কলকাতায় সর্বভারতীয় গণিত সম্মেলনে একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ পেশ করেন। প্রবন্ধে ‘কড়াকিয়া’ ও ‘গণ্ডাকিয়া’ পদ্ধতি বর্জন করে ‘দশমিক’ পদ্ধতি চালুর সুপারিশ ছিল। কে পি বসু গণিতের অনেক নতুন সূত্র উদ্ভাবন করে বীজগণিতের উৎকর্ষ সাধন করেছেন। জ্যামিতি শাস্ত্রের ওপরও নানা গবেষণা চালিয়েছেন তিনি। ‘অ্যালজেব্রা মেড ইজি’, ‘মডার্ন জিওমেট্রি’, ‘ইন্টারমিডিয়েট সলিড জিওমেট্রি’ ছাড়াও শিশুতোষ অনেক গণিত বই তিনি লিখেছেন। ১৯০৭ সালে তিনি নিজ গ্রামে বিশাল পাকা এক ভবন নির্মাণ করেন, যা আজও অক্ষত রয়েছে। তিনি ১৯১৪ সালে পার্নিসাস ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃতদেহ ঝিনাইদহে আনা হলে হাজার হাজার মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায়। ঝিনাইদহ শহরে তার নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।
শেয়ার করুন
২৪ নভেম্বর

উপমহাদেশের খ্যাতিমান গণিতবিদ কালীপদ বসু। তিনি কে পি বসু নামেও পরিচিত। তার জন্ম ১৮৬৫ সালের ২৪ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার ঝিনাইদহের হরিশংকরপুর গ্রামে। বাবা মহিমাচরণ বসু ছিলেন রেজিস্ট্রি অফিসের চাকরিজীবী। কালীপদের বাল্যশিক্ষা শুরু গ্রামের পাঠশালার মেধাবী শিক্ষক নছিম উদ্দিন মণ্ডলের কাছে। তিনি যশোর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স ও এফএ এবং কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে বিএ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় হয়ে তিনি কিছুদিন সেখানকার অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল অফিসে সহকারী অডিটর পদে চাকরি করেন। এ পেশা ছেড়ে তিনি ১৮৮৩ সালে কটকের রেভেন কলেজে গণিত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। প্রায় সাত বছর অধ্যাপনা করার পর ১৮৯০ সালে যোগ দেন ঢাকা কলেজে। ১৮৯৪ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে গণিতের অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত হন। ১৯০৮ সালে অধ্যাপনা ছেড়ে প্রকাশনাশিল্পের ব্যবসায় চলে আসেন এবং কলকাতায় কে পি বসু পাবলিশিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০২ সালে তিনি কলকাতায় সর্বভারতীয় গণিত সম্মেলনে একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ পেশ করেন। প্রবন্ধে ‘কড়াকিয়া’ ও ‘গণ্ডাকিয়া’ পদ্ধতি বর্জন করে ‘দশমিক’ পদ্ধতি চালুর সুপারিশ ছিল। কে পি বসু গণিতের অনেক নতুন সূত্র উদ্ভাবন করে বীজগণিতের উৎকর্ষ সাধন করেছেন। জ্যামিতি শাস্ত্রের ওপরও নানা গবেষণা চালিয়েছেন তিনি। ‘অ্যালজেব্রা মেড ইজি’, ‘মডার্ন জিওমেট্রি’, ‘ইন্টারমিডিয়েট সলিড জিওমেট্রি’ ছাড়াও শিশুতোষ অনেক গণিত বই তিনি লিখেছেন। ১৯০৭ সালে তিনি নিজ গ্রামে বিশাল পাকা এক ভবন নির্মাণ করেন, যা আজও অক্ষত রয়েছে। তিনি ১৯১৪ সালে পার্নিসাস ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃতদেহ ঝিনাইদহে আনা হলে হাজার হাজার মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায়। ঝিনাইদহ শহরে তার নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।