এই দিনে
২৩ জুন
| ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০
শিক্ষাবিদ, পন্ডিত ও অভিধান-প্রণেতা হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৬৭ সালের ২৩ জুন অবিভক্ত বাংলার চব্বিশ পরগনা জেলার রামনারায়ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল বসিরহাটের জামাইকাটিতে। ছাত্রজীবনেই হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি প্রবেশিকা ও এফএ পরীক্ষা পাস করার পর বৃত্তি নিয়ে বিএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। বাংলা ১৩০৮ সনে কলকাতা টাউন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রধান পন্ডিত নিযুক্ত হন। বাংলা ১৩০৯ সনের শ্রাবণ মাসে তিনি রবীন্দ্রনাথের জমিদারিতে পতিসরের কাচারির সুপারিনটেনডেন্ট পদে যোগ দেন। রবীন্দ্রনাথ জ্ঞানচর্চায় হরিচরণের আগ্রহ লক্ষ করে তাকে শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয়ে
সংস্কৃতের শিক্ষক নিযুক্ত করেন। এ স্কুলে তিনি তিরিশ বছর শিক্ষকতা করেন। বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় দক্ষতার কারণে রবীন্দ্রনাথ তাকে অভিধান রচনায় অনুপ্রাণিত করেন। এরই ফসল বিখ্যাত ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিধান শব্দার্থের গভীর ও ব্যাপকতর অর্থ নির্ণয়ে অসাধারণ। বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি প্রভৃতি ভাষার শব্দ ছাড়াও এ অভিধানে আছে ইংরেজি, পর্তুগিজ, হিন্দি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষার শব্দ। তিনি শব্দার্থ স্পষ্ট করতে বাংলা সাহিত্য থেকে প্রয়োজনীয় উদ্ধৃতির সাহায্য নিয়েছেন; আবার একটি শব্দের পূর্ণ পরিচিতির জন্য সংস্কৃত থেকেও আবশ্যকীয় উদ্ধৃতির সমাবেশ ঘটিয়েছেন। এ ছাড়া হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে ‘রবীন্দ্রনাথের কথা’, ‘সংস্কৃত-প্রবেশ’, ‘ব্যাকরণ-কৌমুদী’, ‘পালি-প্রবেশ’, ‘শব্দানুশাসন’, ‘কবির কথা’ প্রভৃতি গ্রন্থ। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক’, ১৯৫৪ সালে ‘শিশিরকুমার স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৫৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শেয়ার করুন
২৩ জুন
| ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০

শিক্ষাবিদ, পন্ডিত ও অভিধান-প্রণেতা হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৬৭ সালের ২৩ জুন অবিভক্ত বাংলার চব্বিশ পরগনা জেলার রামনারায়ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল বসিরহাটের জামাইকাটিতে। ছাত্রজীবনেই হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি প্রবেশিকা ও এফএ পরীক্ষা পাস করার পর বৃত্তি নিয়ে বিএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। বাংলা ১৩০৮ সনে কলকাতা টাউন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রধান পন্ডিত নিযুক্ত হন। বাংলা ১৩০৯ সনের শ্রাবণ মাসে তিনি রবীন্দ্রনাথের জমিদারিতে পতিসরের কাচারির সুপারিনটেনডেন্ট পদে যোগ দেন। রবীন্দ্রনাথ জ্ঞানচর্চায় হরিচরণের আগ্রহ লক্ষ করে তাকে শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয়ে
সংস্কৃতের শিক্ষক নিযুক্ত করেন। এ স্কুলে তিনি তিরিশ বছর শিক্ষকতা করেন। বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় দক্ষতার কারণে রবীন্দ্রনাথ তাকে অভিধান রচনায় অনুপ্রাণিত করেন। এরই ফসল বিখ্যাত ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিধান শব্দার্থের গভীর ও ব্যাপকতর অর্থ নির্ণয়ে অসাধারণ। বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি প্রভৃতি ভাষার শব্দ ছাড়াও এ অভিধানে আছে ইংরেজি, পর্তুগিজ, হিন্দি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষার শব্দ। তিনি শব্দার্থ স্পষ্ট করতে বাংলা সাহিত্য থেকে প্রয়োজনীয় উদ্ধৃতির সাহায্য নিয়েছেন; আবার একটি শব্দের পূর্ণ পরিচিতির জন্য সংস্কৃত থেকেও আবশ্যকীয় উদ্ধৃতির সমাবেশ ঘটিয়েছেন। এ ছাড়া হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে ‘রবীন্দ্রনাথের কথা’, ‘সংস্কৃত-প্রবেশ’, ‘ব্যাকরণ-কৌমুদী’, ‘পালি-প্রবেশ’, ‘শব্দানুশাসন’, ‘কবির কথা’ প্রভৃতি গ্রন্থ। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক’, ১৯৫৪ সালে ‘শিশিরকুমার স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৫৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।