
প্রাথমিকের শিক্ষকতায় মেধাবীদের নিয়োগের উদ্দেশ্যে বিসিএসের দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছিল। কিন্তু তারা বেশি দিন এ পেশায় থাকছেন না। অন্য চাকরিতে চলে যাচ্ছেন। এমনকি দ্বিতীয় শ্রেণির যেকোনো চাকরিতে যেতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। পদোন্নতির সুযোগ না থাকাই এর মূল কারণ।
প্রার্থীরা বলছেন, দ্বিতীয় শ্রেণির পদের কথা বলে নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা দশম গ্রেড পাচ্ছেন না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু এ ব্যাপারে মামলা চলছে। মামলা নিষ্পত্তি হলেই আমরা তাদের দশম গ্রেড দেব। আমরাও চাই, তারা পদোন্নতি পান। এ ব্যাপারে নতুন বিধিমালা হচ্ছে। বিধি হলে পদোন্নতির ব্যাপারে সঠিক বলা সম্ভব হবে।’
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য দুই ধরনের গ্রেড চালু আছে। যাদের প্রশিক্ষণ নেই তাদের এক ধরনের আর যাদের প্রশিক্ষণ আছে তাদের আরেক ধরনের। যারা নতুন যোগ দেন তাদের প্রশিক্ষণ থাকার সুযোগ নেই, ফলে তারা চাকরি শুরু করেন ১২তম গ্রেডে ১১ হাজার ৩০০ টাকার বেতন স্কেলে। তারা সর্বসাকল্যে বেতন পান প্রায় ২২ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তারা উন্নীত হন ১১তম গ্রেডে। তখন তাদের বেতন হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকার স্কেলে প্রায় ২৪ হাজার টাকা। যারা চাকরি শুরুর কিছুদিন পর প্রশিক্ষণ নেন, তারা ১১তম গ্রেডে বেতন-নির্দিষ্ট হলেও অনেক সময় ১২তম গ্রেডের চেয়ে এক হাজার টাকা কম পান। ফলে অনেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েও ১২তম গ্রেডেই রয়ে যান।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ৩৪তম বিসিএস থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৯৮ জন প্রধান শিক্ষক যোগদান করেন। ৩৬তম বিসিএস থেকে ২০১৯ সালে আরও ৩০৩ জন প্রধান শিক্ষক যোগদান করেন। দুই বিসিএস মিলিয়ে ১ হাজার ২০১ জন যোগদান করলেও ইতিমধ্যে দুইশোর বেশি শিক্ষক চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। আরও অনেকে মোটামুটি সম্মানজনক কোনো চাকরি পেলে চলে যাবেন স্থির করেছেন। সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকরা বলেছেন, ‘তিন কারণে বিসিএস থেকে আসা প্রধান শিক্ষকরা থাকতে চাইছেন না। প্রথমত পদোন্নতি না থাকা, দ্বিতীয়ত দ্বিতীয় শ্রেণির পদ হওয়া সত্ত্বেও দশম গ্রেড না পাওয়া, তৃতীয়ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কাক্সিক্ষত পরিবেশ না পাওয়া।’
৩৪তম বিসিএস থেকে ২০১৭ সালে নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির পদে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন মো. সেলিম উদ্দিন। ২০১৯ সালে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছেড়ে একটি ব্যাংকে যোগ দেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শুরুতেই ধাক্কা খেলাম। দশম গ্রেডের পরিবর্তে আমাদের দেওয়া হলো ১২তম গ্রেড। আমরা উচ্চ আদালতে রিট করলে দশম গ্রেড দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক পদ থেকে আর পদোন্নতির সুযোগও নেই। চাকরির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই পদ। আমার পদায়ন হয়েছিল বাড়ি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে। দুজন মাত্র শিক্ষক। পরিবেশও অনুকূল ছিল না।’
প্রধান শিক্ষকরা জানান, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ সরকার প্রধান শিক্ষকদের পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। প্রধান শিক্ষকদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আদালত তা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছিল। তাতেও কার্যকর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন শিক্ষকরা। এ ব্যাপারে রিভিউ আবেদন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। মামলাটি চলছে। সরকারের আচরণে সামন্ত-সংস্কৃতির ছাপ পুরোমাত্রায় বহাল।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা-২০২১-এর কাজ চলমান রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের কাজ শেষ করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠিয়েছে। সেই খসড়া বিধিমালায় প্রধান শিক্ষকদের জন্য সরাসরি পদোন্নতির বিধান রাখা হয়নি। পরবর্তী পদ সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করতে বলা হয়েছে। তবে বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স ৫০ বছর পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে এবং তাদের জন্য ৮০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করা হবে উল্লেখ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক পদে তিন বছর ও সহকারী শিক্ষক পদে ১০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে তারা বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতে পারবেন। বিভাগীয় প্রার্থীদের মধ্যে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে উন্মুক্ত প্রার্থীদের মধ্য থেকে তা পূরণের কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ ও মুখপাত্র শেখ মোহাম্মদ ছায়িদ উল্লা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মর্যাদায় আমরা নিম্ন স্থানে রয়েছি। আট বছরেরও বেশি সময় আগে আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়া হলেও তা আজও কার্যকর হয়নি। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত আমাদের পদোন্নতির সুযোগ ছিল। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে। নতুন যে বিধিমালা তৈরি হচ্ছে তাতেও আমাদের পদোন্নতির সুযোগ নেই। বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সুযোগের যে কথা বলা হচ্ছে, তা অনেকটা ‘মুলা’ ঝুলানোর মতো। এই যদি অবস্থা, তাহলে বিসিএসের মাধ্যমে এসে মেধাবীরা কেন এ পদে থাকবে!’
আগামী সোমবার (৫ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ এডুকেশন এক্সপো ২০২৩। মেলায় প্রবেশ সকলের জন্য উন্মুক্ত। এতে দেশ বিদেশে উচ্চশিক্ষায় ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীরা এক ছাদের নিচে বসেই সব ধরনের তথ্য পাবেন। এই এক্সপোতে শতভাগ পর্যন্ত শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে উপস্থিত থাকবে দেশ বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এছাড়া ৬০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের গবেষনা, প্রকাশনা ও উদ্ভাবন নিয়েও হাজির থাকবেন।
জানা যায়, দিনব্যাপী এই এক্সপো সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে চলবে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত। এতে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান ছাড়াও একাধিক সেমিনার ও প্যানেল আলোচনা থাকছে। শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বিষয় নির্বাচন নিয়ে থাকছে পাবলিক লেকচার। যাতে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা প্রশাসনের উর্ধ্বতনরা, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও সেলিব্রেটিরা। শিক্ষা নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় এডুকেশন এক্সপো আয়োজন করছে শিক্ষা সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন-ইরাব।
ইরাব সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসীম জানান, আমরা যারা শিক্ষা নিয়ে রিপোর্টিং করি তাদের সংগঠন ইরাব। সংগঠনটি গত বছর বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন লাভ করে। শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবেই আমরা এই এক্সপোর আয়োজন করছি। এতে শিক্ষার্থীরা একই স্থানে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির তথ্য পাবেন। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নানা ধরনের গবেষনা ও উদ্ভাবন এখানে তুলে ধরবেন।
আয়োজকরা জানান, এক্সপো উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রেজিস্ট্রেশন। শিক্ষার্থীরা যে কোনো সময় এই www.bangladesheducationexpo.com ওয়েবসাইটে ঢুকে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। রেজিস্ট্র্রেশন করলে লটারিতে থাকছে ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইলসহ অসংখ্য পুরষ্কার। রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও মেলা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকছে। ইতিমধ্যে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে।
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিষ্ঠাতা-উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির (এপিইউবি) বার্ষিক সাধারণ সভা এবং কার্যনিবাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শেখ কবির হোসেন। সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারাল আর্টস বাংলাদেশের ড. কাজী আনিস আহমেদ।
অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশের (এপিইউবি) জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক বেলাল আহমেদ স্বাক্ষরিত পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সমিতির নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) অধ্যাপক শফিক আহমেদ সিদ্দিক।
জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হয়েছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইশতিয়াক আবেদিন এবং ট্রেজারার পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কে বি এম মঈন উদ্দিন চিশতি।
কার্যনিবাহী পরিষদের অন্যান্য নির্বাচিত সদস্যরা হলেন- পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এ কে এম এনামুল হক শামীম, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির নজরুল ইসলাম বাবু, আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির কাজী রফিকুল আলম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাদাফ সাজ সিদ্দিকী, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির শফিকুল ইসলাম মহিউদ্দিন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের চৌধুরী নাফিজ সরাফত, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মো. সবুর খান, এক্সিম ব্যাংক এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের আব্দুল হাই সরকার, ঈশাখাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিয়াদ আহমেদ তুষার, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের অধ্যাপক আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির মো. রেজাউল করিম এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের কাইয়ূম রেজা চৌধুরী।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু সালেহের নেতৃত্বে চার সদস্যের নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির (এপিইউবি) কার্যনিবাহী পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা করে।
গত বছর অনলাইনে আবেদন করার পরও যেসব শিক্ষার্থী কোনো কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়নি তাদের রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা বাড়িয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। আজ শুক্রবার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে যেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করেছে কিন্তু কোনো কলেজে ভর্তি হতে পারেনি, তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে অনলাইনে ছবি সহ ফরম পূরণের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশের স্থায়ী সনদপ্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ মালয়েশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথভাবে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস)-এর চার সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। ইএমজিএস- এর চেয়ারম্যান এবং মালয়েশিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষদূত ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রফেসর বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, এই মুহূর্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের সুযোগ নেই। তবে তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গবেষণা করতে আগ্রহী। স্থায়ী সনদ পাওয়া প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শর্ত সাপেক্ষে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করতে পারে।
এর মাধ্যমে তাদের গবেষণার দ্বার উন্মোচিত হবে এবং গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান বিষয়ে তিনি মালয়েশিয়া সরকারর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের আগ্রহের কথা জানান।
তিনি প্রতিনিধি দলকে মালয়েশিয়ায় অধ্যায়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান। মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অন্যান্য নাগরিকদের যেন মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখা হয় সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ করেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মালয়েশিয়া উচ্চশিক্ষা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণে চেষ্টা করছে। মালয়েশিয়ায় বেশ কিছু মানসম্পন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে। মালয়েশিয়া উচ্চশিক্ষার মান বজায় রাখতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, ট্যালেন্ট হান্ট করাসহ যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও স্টাফদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। যৌথ গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধি করছে।
সভায় ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান, গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর আহাম্মদ। তিনি ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ১৪ বছর ধরে ওই অফিসে চাকরি করছেন। তার মূল পদ প্রধান শিক্ষক। কথিত আছে, ওই অঞ্চলে টাকা ছাড়া এমপিও মেলে না। বাতিল হওয়া আবেদনেও বড় অঙ্কের ঘুষ পেলে তিনি তা ছাড় করে দেন। খোদ সরকারি সংস্থার তদন্তেই তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি জাহাঙ্গীর কবীর আহাম্মদের অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে তদন্তে নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। তদন্ত দলে ছিলেন যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার, সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ও অডিট অফিসার মো. মতিয়ার রহমান। তারা এমপিও, কেনাকাটাসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন। চলতি সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া ২০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে উপপরিচালকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সিলেটের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছিল, তার প্রায় সব প্রমাণিত হয়েছে। আমরা সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। মন্ত্রণালয়ই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।’
হবিগঞ্জ সদরের তরপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তদন্ত দলের সামনে সাক্ষ্য দেন, ‘টাইম স্কেল ও এমপিওভুক্তির জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. রুহুল্লার মাধ্যমে ডিডি জাহাঙ্গীর কবীর টাকা নেন।’
রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালের ১০ মার্চ নিয়োগ পাই। এরপর চার-পাঁচবার এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছি। প্রতিবারই “নিডেড টু ভেরিফাই” বলে রিজেক্ট করা হয়। আমি গবেষণা কর্মকর্তা গিয়াসউদ্দিনের কাছে গেলে তিনি বড় স্যার অর্থাৎ উপপরিচালকে খুশি করতে হবে বলে জানান এবং আমাকে লিংকন নামের একজনকে দেখিয়ে দেন। তিনি এমপিওভুক্তির জন্য ডিডির বরাত দিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন।’
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, হবিগঞ্জ সদরের পইল হাই স্কুলের মো. নুরুল হুদার আবেদনটি বাতিল করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, ‘নিয়োগ পরীক্ষার ফল-বিবরণীতে কমিটির সদস্যদের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে স্বাক্ষরের বিষয়টির যাচাই বা ব্যাখ্যা প্রয়োজন।’ পরে আবার এ শিক্ষককেই এমপিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কীভাবে যাচাই করে ফল-বিবরণী সঠিক হলো তার কোনো ব্যাখ্যা নথিতে নেই। এতে বোঝা যায়, নিয়োগ রেকর্ড যথাযথ না থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতির মাধ্যমে এমপিও আবেদনটি অনুমোদন করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদরের পূর্ব পাগলা হাই স্কুলের পীযূষ কান্তি দেবের নিয়োগের স্বাক্ষরের তারিখটি ঘষামাজা করা। প্রথমে আবেদনটি বাতিল করা হলেও পরে অনুমোদন করা হয়। সুনামগঞ্জের হাফিজ আলী হাই স্কুলের শেফালী রানী দাসের আবেদনের সিএস কপিতে ডিডি প্রতিনিধির স্বাক্ষর যাচাইয়ের জন্য প্রথমে রিজেক্ট করলেও পরে অনুমোদন করা হয়।
সিলেটের ড. ইদ্রিস আলী হাই স্কুলের মো. আবদুল কাদেরের কাম্য, যোগ্যতা বিএজিএড ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও প্রথমে আপত্তি জানিয়ে পরে ঠিকই এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের তেলিবিল হাই স্কুলের সাবিনা ইয়াসমীনের প্যাটার্নভুক্ত পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও প্রথমে বাতিল করে দীর্ঘদিন পরে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। বিএড সনদ না থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালে প্রধান শিক্ষকের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়ে পরে এমপিওভুক্ত করা হয়।
ঘুষ না দেওয়ায় সিলেট সদরের আল আমীন জামেয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক শামছুল হকের প্রথমবারের আবেদন ‘ল্যাক অব কোয়ালিফিকেশন’ ও পরে তিনবার ‘আদারস’ দেখিয়ে রিজেক্ট করা হয়। একইভাবে রসময় মেমোরিয়াল হাই স্কুলের সহকারী লাইব্রেরিয়ান কাজী মাহবুবুর রহমানের আবেদনটিও ‘নিডেড টু ভেরিফাই’ দেখিয়ে রিজেক্ট করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সিলেট আঞ্চলিক অফিসে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে এমপিওভুক্তিতে বিভিন্ন ত্রুটি দেখিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে বেশিরভাগ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জড়িত। ঘুষ প্রদানকারী ব্যক্তিরা তদন্ত দলের কাছে জেলা শিক্ষা অফিস ও আঞ্চলিক অফিসের বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে আর্থিক লেনদেনের কথা বলেছেন।’
জানতে চাইলে ডিডি জাহাঙ্গীর কবীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘২০২১ সালের দিকে ডিআইএর তদন্ত দল এসেছিল। তারা ২০টির মতো এমপিও নিয়ে কথা বলেছেন। আমার উত্তরে তারা স্যাটিসফাইড হয়েছিলেন। তারা ক্যাশবই চেয়েছিলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তো সরকারি অডিট হয়। তাই দুই-তিন বছরেরটা দেখালাম।’
এমপিওর ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ডিআইএর রিপোর্টে কী আছে তা আমি জানি না। তবে আমি জ্ঞাতসারে কোনো অনিয়ম করিনি। সহজেই এমপিও দিয়ে দিই। আমি ১ জুন হজে যাচ্ছি। এর আগে কেন এ রিপোর্ট জমা দিল বুঝতে পারছি না।’
তদন্ত কমিটি বলছে, ডিডি জাহাঙ্গীর কবীরের দায়িত্বকালে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত নতুন ৩ হাজার ৫৮১টিসহ ৮ হাজার ৩৩৭টি এমপিও দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ৮৪১টি আবেদন বাতিল করা হয়। বাতিলের তালিকা থেকে পরে কত আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে তা তিনি দেখাননি। আবেদনগুলো সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হলেও এখন আর প্রদর্শিত হয় না জানিয়েছেন ডিডি। অথচ সরকারের এ সংক্রান্ত পরিপত্রে বলা হয়েছে, আবেদনের প্রিন্ট আউটে স্বাক্ষর করে তা সংরক্ষণ করতে হবে।
সিলেট আঞ্চলিক অফিসে আর্থিক ব্যয় ও কেনাকাটায়ও অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত দল। ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের কেনাকাটা ও অর্থ ব্যয়ের আংশিক কাগজপত্র তদন্তের প্রথম দিন দেওয়া হলেও পরে আর কাগজপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
আংশিক কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কমিটি দেখতে পায়, মালামাল কেনার নথিতে অনুমোদন ও চাহিদাপত্র নেই। কেনা মালামালের স্টকের রেজিস্ট্রার নেই। মালামাল খন্ডে খন্ডে কেনা হয়েছে। বিক্রেতাকে টাকা পরিশোধ করা হলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রায় প্রতিটি বিলেই ক্যালকুলেটর ও স্ট্যাপলার কেনা হয়েছে দেখানো হলেও তা গ্রহণকারীর তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রাপ্যতা যাচাই ছাড়াই কর্মচারীদের পোশাক সরবরাহে ব্যয় দেখানো হয়েছে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূতভাবে ব্যয় করা টাকা সরকারি কোষাগারে ট্রেজারির মাধ্যমে জমা দিতে হবে। অন্যান্য বাজেট ব্যয়ের হিসাব না দেওয়া সরকারি কাজে অসহযোগিতার শামিল বিধায় ডিডি জাহাঙ্গীর কবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলো।
এ ছাড়া এমপিওভুক্তির আবেদন রিজেক্ট করা এবং পুনরায় অনুমোদন করার ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের অবস্থান প্রমাণিত। এ ক্ষেত্রেও তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলো।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।