
রাজনৈতিক কারণে ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে মগজ ধোলাই অব্যাহত রাখতেই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিরোধীতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বুধবার (২৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ ও দেশব্যাপী প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে বিরোধিতার বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের বছর, রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে বিরোধীতা করা হচ্ছে। আর আরেকটি পক্ষ রয়েছে, যারা ধর্মটাকে অপব্যবহার করে সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের জন্য বিরোধিতা করছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে, তেমনি নতুন শিক্ষাক্রম নিয়েও অনেক বাঁধা তৈরি হচ্ছে। আমাকে এবং যারা বইয়ের লেখক, জাফর ইকবাল ভাইসহ (শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল) তাদের বেশ কয়েকজনকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন— চামড়া মোটা করতে হবে, পিঠে কুলা বাঁধতে হবে। কিন্তু আমরা দমে যাবার পাত্র নই। দেশকে এগিয়ে নেবার জন্য, নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত নির্মাণ করবার জন্য,আর যে স্বপ্ন নিয়ে এতো ত্যাগের বিনিময়ে দেশটি তৈরি হয়েছিল সেই স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছবার জন্য যা কিছু করণীয়, তা করতেই হবে, এটা আমাদের কর্তব্য, এটা আমাদের দায়িত্ব, এটা আমাদের পালন করতেই হবে। ’
ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বিরোধিতা তো আছেই। সব দেশেই থাকে, আমাদের দেশেও আছে। আমাদের দেশের ধরণটা হয়ত ভিন্ন, টক্সিট। এখানে (বাংলাদেশে) বিরোধিতা করে এমন একটি পক্ষ আছে যারা আমাদের পক্ষকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। গ্রেনেড মেরে, বোমা মেরে, গুলি করে, নানান পদ্ধতিতে। নির্বাচন সামনে, তারা খুব সক্রিয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে খুব বেশি ইস্যু-টিস্যু পাওয়া যাচ্ছে না, কাজেই শিক্ষাক্রম ও বইয়ের বিরোধিতা করার একটা প্রচেষ্টা করা হয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা ভাবতে শিখে যায়, শিক্ষার্থীরা ভলো-মন্দ সাদা-কালোর তফাৎ করতে শিখে যায়, শিক্ষার্থীরা যদি সুক্ষ্ম চিন্তা করতে শেখে তাহলে মগজ ধোলাই আর করা যাবে না। এই চক্রের মূল কাজ হলো মগজ ধোলাই। সেটি করা যাবে না সেজন্য তাদের খুব আপত্তি। ’
কোচিং ও নোট-গাইডের কারণে অনেকে বিরোধীতা করছেন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোচিংয়ের সব কিছু খারাপ তা তো নয়, কোচিং কথাটাও খারাপ নয়, বাণিজ্য কথাটাও খারাপ নয়, কিন্তু যারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে যেতে, সেখান থেকে রোজগারটা করেন অতিরিক্ত। সেখানে সমস্যা। এই কাজ যারা করেন শিক্ষার্থীদের কোচিং করান তাদের একটি মহাভয়, ভয়টি অমূলক নয়। কারণ এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে কোচিং দরকার হবে না। আরেকটি পক্ষ আছে নোটবই-গাইড বই, তাদেরও ভয় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়ে গেলে তো নোটবই-গাইড বই দরকার হবে না। তাদের ভয়টিও অমূলক নয়, এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে নোটবই-গাইড বই প্রয়োজন হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি শ্রেণি আছে, সমাজে যাদের অংশ বিশাল বড়, তারা স্ট্যাটাসকো পছন্দ করেন, অর্থাৎ যা আছি তাই, আমি ছাপোষা মানুষ এর মধ্যেই থাকি কীসের আবার পরিবর্তন। আমরা পরিবর্তন চাই-টাই না। আবার কিছু আছে আমার ছেলেটা পাস করে যাক তার পর পরিবর্তন হোক। নতুন কিছুর দিকে এক ধরনের একটি সংশয়, সন্দেহ কাজ করে। কিন্তু যতই বিরোধীতা থাকুক, যত ষড়যন্ত্রই থাকুক, যত প্রতিবন্ধকতাই থাকুক নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বনাগরিক হবে। আপনারা আস্থা রাখুন এই যে শিক্ষাক্রম বাস্তায়ন শুরু হয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যে বাচ্চাদের যে পরিবর্তন দেখতে পাবো, আমরা গর্ব অনুভব করবো, দৃঢ প্রত্যয়ে তা বলতে পারি। পরবর্তী প্রজন্মের প্রতি আমাদের যে অঙ্গীকার যে প্রত্যয় আমাদের দেশটা যেখানে নিয়ে যেতে চাই, সেই জায়গায় নিয়ে যাবার জন্য আমাদের এই কাজটি করতেই হবে। সেখানে সমালোচনা থাকতে পারে বাধা আসতে পারে, প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে। হয়ত আবার কদর্য ভাষার আশ্রয় নিতে পারে, নিক, কিচ্ছু যায় আসে না, আমরা এগিয়ে যাবোই, জয়ী হবোই। ‘
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোলাইমান খান, ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন দীপা শংকর।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারাদেশের প্রধান শিক্ষকরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
গত বছর অনলাইনে আবেদন করার পরও যেসব শিক্ষার্থী কোনো কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়নি তাদের রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা বাড়িয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। আজ শুক্রবার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে যেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করেছে কিন্তু কোনো কলেজে ভর্তি হতে পারেনি, তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে অনলাইনে ছবি সহ ফরম পূরণের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশের স্থায়ী সনদপ্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ মালয়েশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথভাবে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস)-এর চার সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। ইএমজিএস- এর চেয়ারম্যান এবং মালয়েশিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষদূত ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রফেসর বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, এই মুহূর্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের সুযোগ নেই। তবে তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গবেষণা করতে আগ্রহী। স্থায়ী সনদ পাওয়া প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শর্ত সাপেক্ষে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করতে পারে।
এর মাধ্যমে তাদের গবেষণার দ্বার উন্মোচিত হবে এবং গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান বিষয়ে তিনি মালয়েশিয়া সরকারর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের আগ্রহের কথা জানান।
তিনি প্রতিনিধি দলকে মালয়েশিয়ায় অধ্যায়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান। মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অন্যান্য নাগরিকদের যেন মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখা হয় সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ করেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মালয়েশিয়া উচ্চশিক্ষা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণে চেষ্টা করছে। মালয়েশিয়ায় বেশ কিছু মানসম্পন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে। মালয়েশিয়া উচ্চশিক্ষার মান বজায় রাখতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা, ট্যালেন্ট হান্ট করাসহ যৌথ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও স্টাফদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। যৌথ গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধি করছে।
সভায় ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান, গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর আহাম্মদ। তিনি ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ১৪ বছর ধরে ওই অফিসে চাকরি করছেন। তার মূল পদ প্রধান শিক্ষক। কথিত আছে, ওই অঞ্চলে টাকা ছাড়া এমপিও মেলে না। বাতিল হওয়া আবেদনেও বড় অঙ্কের ঘুষ পেলে তিনি তা ছাড় করে দেন। খোদ সরকারি সংস্থার তদন্তেই তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি জাহাঙ্গীর কবীর আহাম্মদের অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে তদন্তে নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। তদন্ত দলে ছিলেন যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার, সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ও অডিট অফিসার মো. মতিয়ার রহমান। তারা এমপিও, কেনাকাটাসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন। চলতি সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া ২০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে উপপরিচালকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সিলেটের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছিল, তার প্রায় সব প্রমাণিত হয়েছে। আমরা সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। মন্ত্রণালয়ই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।’
হবিগঞ্জ সদরের তরপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তদন্ত দলের সামনে সাক্ষ্য দেন, ‘টাইম স্কেল ও এমপিওভুক্তির জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. রুহুল্লার মাধ্যমে ডিডি জাহাঙ্গীর কবীর টাকা নেন।’
রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালের ১০ মার্চ নিয়োগ পাই। এরপর চার-পাঁচবার এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছি। প্রতিবারই “নিডেড টু ভেরিফাই” বলে রিজেক্ট করা হয়। আমি গবেষণা কর্মকর্তা গিয়াসউদ্দিনের কাছে গেলে তিনি বড় স্যার অর্থাৎ উপপরিচালকে খুশি করতে হবে বলে জানান এবং আমাকে লিংকন নামের একজনকে দেখিয়ে দেন। তিনি এমপিওভুক্তির জন্য ডিডির বরাত দিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন।’
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, হবিগঞ্জ সদরের পইল হাই স্কুলের মো. নুরুল হুদার আবেদনটি বাতিল করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, ‘নিয়োগ পরীক্ষার ফল-বিবরণীতে কমিটির সদস্যদের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে স্বাক্ষরের বিষয়টির যাচাই বা ব্যাখ্যা প্রয়োজন।’ পরে আবার এ শিক্ষককেই এমপিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কীভাবে যাচাই করে ফল-বিবরণী সঠিক হলো তার কোনো ব্যাখ্যা নথিতে নেই। এতে বোঝা যায়, নিয়োগ রেকর্ড যথাযথ না থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতির মাধ্যমে এমপিও আবেদনটি অনুমোদন করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদরের পূর্ব পাগলা হাই স্কুলের পীযূষ কান্তি দেবের নিয়োগের স্বাক্ষরের তারিখটি ঘষামাজা করা। প্রথমে আবেদনটি বাতিল করা হলেও পরে অনুমোদন করা হয়। সুনামগঞ্জের হাফিজ আলী হাই স্কুলের শেফালী রানী দাসের আবেদনের সিএস কপিতে ডিডি প্রতিনিধির স্বাক্ষর যাচাইয়ের জন্য প্রথমে রিজেক্ট করলেও পরে অনুমোদন করা হয়।
সিলেটের ড. ইদ্রিস আলী হাই স্কুলের মো. আবদুল কাদেরের কাম্য, যোগ্যতা বিএজিএড ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও প্রথমে আপত্তি জানিয়ে পরে ঠিকই এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের তেলিবিল হাই স্কুলের সাবিনা ইয়াসমীনের প্যাটার্নভুক্ত পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও প্রথমে বাতিল করে দীর্ঘদিন পরে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। বিএড সনদ না থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালে প্রধান শিক্ষকের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়ে পরে এমপিওভুক্ত করা হয়।
ঘুষ না দেওয়ায় সিলেট সদরের আল আমীন জামেয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক শামছুল হকের প্রথমবারের আবেদন ‘ল্যাক অব কোয়ালিফিকেশন’ ও পরে তিনবার ‘আদারস’ দেখিয়ে রিজেক্ট করা হয়। একইভাবে রসময় মেমোরিয়াল হাই স্কুলের সহকারী লাইব্রেরিয়ান কাজী মাহবুবুর রহমানের আবেদনটিও ‘নিডেড টু ভেরিফাই’ দেখিয়ে রিজেক্ট করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সিলেট আঞ্চলিক অফিসে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে এমপিওভুক্তিতে বিভিন্ন ত্রুটি দেখিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে বেশিরভাগ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জড়িত। ঘুষ প্রদানকারী ব্যক্তিরা তদন্ত দলের কাছে জেলা শিক্ষা অফিস ও আঞ্চলিক অফিসের বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে আর্থিক লেনদেনের কথা বলেছেন।’
জানতে চাইলে ডিডি জাহাঙ্গীর কবীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘২০২১ সালের দিকে ডিআইএর তদন্ত দল এসেছিল। তারা ২০টির মতো এমপিও নিয়ে কথা বলেছেন। আমার উত্তরে তারা স্যাটিসফাইড হয়েছিলেন। তারা ক্যাশবই চেয়েছিলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তো সরকারি অডিট হয়। তাই দুই-তিন বছরেরটা দেখালাম।’
এমপিওর ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ডিআইএর রিপোর্টে কী আছে তা আমি জানি না। তবে আমি জ্ঞাতসারে কোনো অনিয়ম করিনি। সহজেই এমপিও দিয়ে দিই। আমি ১ জুন হজে যাচ্ছি। এর আগে কেন এ রিপোর্ট জমা দিল বুঝতে পারছি না।’
তদন্ত কমিটি বলছে, ডিডি জাহাঙ্গীর কবীরের দায়িত্বকালে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত নতুন ৩ হাজার ৫৮১টিসহ ৮ হাজার ৩৩৭টি এমপিও দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ৮৪১টি আবেদন বাতিল করা হয়। বাতিলের তালিকা থেকে পরে কত আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে তা তিনি দেখাননি। আবেদনগুলো সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হলেও এখন আর প্রদর্শিত হয় না জানিয়েছেন ডিডি। অথচ সরকারের এ সংক্রান্ত পরিপত্রে বলা হয়েছে, আবেদনের প্রিন্ট আউটে স্বাক্ষর করে তা সংরক্ষণ করতে হবে।
সিলেট আঞ্চলিক অফিসে আর্থিক ব্যয় ও কেনাকাটায়ও অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত দল। ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের কেনাকাটা ও অর্থ ব্যয়ের আংশিক কাগজপত্র তদন্তের প্রথম দিন দেওয়া হলেও পরে আর কাগজপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
আংশিক কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কমিটি দেখতে পায়, মালামাল কেনার নথিতে অনুমোদন ও চাহিদাপত্র নেই। কেনা মালামালের স্টকের রেজিস্ট্রার নেই। মালামাল খন্ডে খন্ডে কেনা হয়েছে। বিক্রেতাকে টাকা পরিশোধ করা হলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রায় প্রতিটি বিলেই ক্যালকুলেটর ও স্ট্যাপলার কেনা হয়েছে দেখানো হলেও তা গ্রহণকারীর তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রাপ্যতা যাচাই ছাড়াই কর্মচারীদের পোশাক সরবরাহে ব্যয় দেখানো হয়েছে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূতভাবে ব্যয় করা টাকা সরকারি কোষাগারে ট্রেজারির মাধ্যমে জমা দিতে হবে। অন্যান্য বাজেট ব্যয়ের হিসাব না দেওয়া সরকারি কাজে অসহযোগিতার শামিল বিধায় ডিডি জাহাঙ্গীর কবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলো।
এ ছাড়া এমপিওভুক্তির আবেদন রিজেক্ট করা এবং পুনরায় অনুমোদন করার ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের অবস্থান প্রমাণিত। এ ক্ষেত্রেও তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলো।
দেশের ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) জন্য আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ব্যয় বাবদ ১২ হাজার ২৬২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে ইউজিসি।
বাজেটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ১২ হাজার ১৮৫কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং ইউজিসির জন্য ৭৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বাজেটে ৬ হাজার ১০৯ কোটি ১০ লাখ টাকার রাজস্ব বাজেট এবং ৩১টি প্রকল্পের অনুকূলে ৬ হাজার ৭৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার উন্নয়ন বাজেট রয়েছে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ১৬৫তম পূর্ণ কমিশন সভায় আজ রবিবার এ বাজেট অনুমোদিত হয়। ইউজিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভার কার্যপত্র তুলে ধরেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। সভায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন ইউজিসি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধিত বাজেটে ০৯ হাজার ২৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে ২ হাজার ৯২০ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব বাজেট পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৫৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং গবেষণা খাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সবচেয়ে বেশি ১৫ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে গবেষণা খাতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালন ও উন্নয়নের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সর্বোচ্চ কৃচ্ছতা সাধনের আহ্বান জানান।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এডুকেশনের ডিন অধ্যাপক সুফিয়া বেগম এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক এই পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩০। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। ভর্তি পরীক্ষার ফল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
মানবিক বিভাগের 'বি' ইউনিটের মধ্য দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম। ১৯টি কেন্দ্রে একসঙ্গে শনিবার (২০ মে) দুপুর ১২টায় শুরু হবে এ পরীক্ষা। চলবে ১টা পর্যন্ত।
এ বছর গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে তিন ইউনিট মিলে মোট আবেদন করেছেন মোট ৩ লাখ ৩ হাজার ২৩১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মানবিক শাখা ইউনিট 'বি' থেকে ৯৬ হাজার ৪৩৫ জন, বিজ্ঞান শাখা ইউনিট 'এ' থেকে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৩ জন এবং বাণিজ্য শাখা ইউনিট 'সি' থেকে ৩৯ হাজার ৮৬৫ জন আবেদন করেছেন।
মানবিক বিভাগের পরীক্ষা আজ (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া আগামী ২৭ মে বিজ্ঞান বিভাগ এবং ৩ জুন বাণিজ্য বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক এই পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩০। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। ভর্তি পরীক্ষার ফল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রথম সেট ২৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ২৮ মিনিটে জিতলেন কার্লোস আলকারাজ। মনে হচ্ছিল কোয়ালিফায়ার ফ্যাভিও কোবোলিকে বুঝি উড়িয়েই দিচ্ছেন শীর্ষ বাছাই।
না, তৃতীয় সেটতে প্রতিরোধ গড়লেন ইতালিয়ান। সময় গড়ালো ঘন্টায়। শেষপর্যন্ত জয় এসেছে ৬৬ মিনিটে। ৬-০, ৬-২, ৭-৫ গেমে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে রাফায়েল নাদালের উত্তরসুরি ক্লে কোর্টের সর্বোচ্চ আসর শুরু করলেন।
নাদালের চোটজনিত অনুপস্থিতিতে শীর্ষবাছাই আলকারাজ। ২০২১ এ তৃতীয় রাউন্ড, গতবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন। এবার আরো এগোলে সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সংগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা।
সে দেখা যাবে। আপাতত দ্বিতীয় রাউন্ডে আলকারাজকে টপকাতে হবে জাপানের টি. দানিয়লেকে।
আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিততে চেন্নাই সুপার কিংসের চাই ১৫ ওভারে ১৭১ রান। আহমেদাবাদে রাত ১২.৪০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গুজরাট টাইট্যান্সের ২১৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ বলে ৪ রান করার পর বৃ্স্টিতে বন্ধ হয় ফাইনাল। অর্থাৎ বাকি ১৪.৩ ওভারে আরো ১৬৭ রান চাই ধোনীর দলের।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।