চাকরির বয়সসীমা ও কোটা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৬:০৫
সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা না রাখা, অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধী ছাড়া কোটা না রাখা ও নির্বাচনে জিতলে সব নাগরিকের কল্যাণে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
ক্ষমতায় গেলে ‘রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনালে ইশতেহার ঘোষণা করে এ জোট।
ইশতেহার ঘোষণার শুরুতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এ সময় ঐক্যফ্রন্ট বিজয়ী হলে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা এবং সংবিধানে প্রতিশ্রুত দেশের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
লিখিত ইশতেহার পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। ইশতেহারে বলা হয়, ২০১৪ সালে ‘নির্বাচনের নামে প্রহসনের’ মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণ হারিয়েছিল। সেই মালিকানা ৩০ ডিসেম্বর ভোটে জিতে আবার ‘জনগণের হাতে’ ফিরিয়ে দিতে চায় ঐক্যফ্রন্ট।
ইশতেহারে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলে আমূল পরিবর্তন আনা হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিহিংসার রাজনীতি দূর করা, নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি দমন ও সুশাসন।
ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, তারা ক্ষমতায় এলে পরপর দুই মেয়াদের বেশি একজন প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এ ছাড়া চালিয়ে যাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারদের জন্য বেকার ভাতা চালু করতে একটি কমিশন হবে। আগামী ৩ বছরে সরকারি চাকরিতে সব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষিত বয়োবৃদ্ধের জন্য ন্যূনতম ভাতা রেখে অবৈতনিক খণ্ডকালীন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প অব্যাহত রাখা হবে। তবে সরকারের শেষের দুই বছরে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা মূল্যায়ন করা হবে।
ঐক্যফ্রন্টের ঘোষিত ইশতেহার সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের যে মৌলিক দাবি-দাওয়া রয়েছে তা এ ইশতেহারের মাধ্যমে উঠে এসেছে। এটি একটি বৈপ্লবিক ইশতেহার হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৬:০৫

সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা না রাখা, অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধী ছাড়া কোটা না রাখা ও নির্বাচনে জিতলে সব নাগরিকের কল্যাণে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
ক্ষমতায় গেলে ‘রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনালে ইশতেহার ঘোষণা করে এ জোট।
ইশতেহার ঘোষণার শুরুতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এ সময় ঐক্যফ্রন্ট বিজয়ী হলে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা এবং সংবিধানে প্রতিশ্রুত দেশের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
লিখিত ইশতেহার পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। ইশতেহারে বলা হয়, ২০১৪ সালে ‘নির্বাচনের নামে প্রহসনের’ মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণ হারিয়েছিল। সেই মালিকানা ৩০ ডিসেম্বর ভোটে জিতে আবার ‘জনগণের হাতে’ ফিরিয়ে দিতে চায় ঐক্যফ্রন্ট।
ইশতেহারে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলে আমূল পরিবর্তন আনা হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিহিংসার রাজনীতি দূর করা, নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি দমন ও সুশাসন।
ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, তারা ক্ষমতায় এলে পরপর দুই মেয়াদের বেশি একজন প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এ ছাড়া চালিয়ে যাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারদের জন্য বেকার ভাতা চালু করতে একটি কমিশন হবে। আগামী ৩ বছরে সরকারি চাকরিতে সব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষিত বয়োবৃদ্ধের জন্য ন্যূনতম ভাতা রেখে অবৈতনিক খণ্ডকালীন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প অব্যাহত রাখা হবে। তবে সরকারের শেষের দুই বছরে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা মূল্যায়ন করা হবে।
ঐক্যফ্রন্টের ঘোষিত ইশতেহার সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের যে মৌলিক দাবি-দাওয়া রয়েছে তা এ ইশতেহারের মাধ্যমে উঠে এসেছে। এটি একটি বৈপ্লবিক ইশতেহার হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।