মরে গেলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করব না: কামাল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২০:৩৭
ড. কামাল।
যে কোনো পরিস্থিতিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে থাকার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্ববায়ক ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, মরে গেলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করব না। আমার লাশ নিয়ে ভোট দিতে নিয়ে যাবে। আমি মরে গেলেও আমার আঙুল তো থাকবে। আঙুল ভোট দিবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। এর আগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ইসির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন।
ড. কামাল বলেন, ইলেকশন হতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) যদি চায় এসব জঘন্য ধরনের আক্রমণ করে আবেগে আমরা নির্বাচন করব না। এটা আমরা করব না। আমার লাশও করবে না। তিনি বলেন, আমরা উনাদের (ইসি) তথ্য দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে বললাম- পুরো দেশে উত্তর দক্ষিণ সব জায়গা থেকে অভিযোগগুলো পেয়েছি। পেশিশক্তি নিয়ে প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। যারা নির্বাচনের কাজে নেমেছে তাদের ওপরই আক্রমণ হচ্ছে। কেউ পোস্টার লাগতে পারছেন না। বক্তব্য রাখতে পারছেন না। বিভিন্ন জায়গায় একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা নির্বাচন করার জন্য এগিয়ে এসেছেন তাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এটা খুব ভয়াবহ।
আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ড. কামাল বলেন, আমার তো ৫৫ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলাম ৭০ এ। তখন থেকে এখন সব নির্বাচনই ভালমন্দ দেখেছি। কিন্তু এ অবস্থা কোনো দিন দেখি নাই। আমরা লিখিত তালিকা দিয়েছি। বেশ কিছু কেস- যেখানে সময় স্থানের ছবি দিয়েছি। গুলিবিদ্ধ ব্যারিস্টার খোকন, রোমনার ছবি দিয়েছি। একজন দুই চোখ হারিয়েছেন, সেই মহিলা ছবি দিয়েছি। আ স ম আবদুর রবের ভাঙ্গা গাড়ির ছবিও আমরা দিয়েছি।
এসব ঘটনার কিছু কিছুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিব্রত হয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, বিব্রতবোধ করা যথেষ্ট নয়। কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হয়। আমরা তাদের বলেছি- এখনই আপনারা ইনকোয়ারি চান, একদিনের মধ্যে রিপোর্ট নেন, পদক্ষেপ নেন- যাতে বুঝতে পারি নির্বাচন কমিশন দেশকে মুক্ত করতে চায়, যাতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের নূন্যতম পরিবেশ আমরা পাই।
এক দলের পোষ্টার ছাড়া অন্য কোনো দলের পোষ্টার দেখা যায় না অভিযোগ করে ড. কামাল বলেন, এটা আমি জীবনে দেখিনি। শুধু এক দলের পোস্টার থাকে, অন্য দল মাঠে নামতে পারে না। আমি যতদিন বেচে থাকি একথাগুলো বলে যাব। আপনাদের সামনে বলব, মানুষের সামনে বলব। প্রতিকার দাবি করব। মানুষের ভোটাধিকারের ক্ষমতার কথা বলব। লাখো লাখো শহীদ সেই ক্ষমতা দিয়ে গেছেন- সেটা থেকে যেন জনগণ বঞ্চিত না হয়। এখন যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া অব্যাহত। এটি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। ইসি সেই ক্ষমতা রাখে।
৩০ তারিখের ভোটের পর ইনকোয়ারির কোনো অর্থ থাকবে না মন্তব্য করে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল বলেন, একদিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পরশুর মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত- সেটা আমরা মনে করি। সংবিধান অনুযায়ী ইসির ক্ষমতা আছে। কিন্তু উনারা প্রয়োগে করছেন না। সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আ স ম আব্দুর রব বলেন, আজ থেকেই আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছি।
বৈঠকে সিইসি কেএম নূরুল হুদাসহ অন্যান্য কমিশনার ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে আরো ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কাদের সিদ্দিক, মাহমুদুর রহমান মান্না, নজরুল ইসলাম খান, ড. মইন খান, মোস্তফা মহসিন মিন্টু, জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২০:৩৭
.jpg)
যে কোনো পরিস্থিতিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে থাকার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্ববায়ক ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, মরে গেলেও আমরা নির্বাচন বর্জন করব না। আমার লাশ নিয়ে ভোট দিতে নিয়ে যাবে। আমি মরে গেলেও আমার আঙুল তো থাকবে। আঙুল ভোট দিবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। এর আগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ইসির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন।
ড. কামাল বলেন, ইলেকশন হতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) যদি চায় এসব জঘন্য ধরনের আক্রমণ করে আবেগে আমরা নির্বাচন করব না। এটা আমরা করব না। আমার লাশও করবে না। তিনি বলেন, আমরা উনাদের (ইসি) তথ্য দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে বললাম- পুরো দেশে উত্তর দক্ষিণ সব জায়গা থেকে অভিযোগগুলো পেয়েছি। পেশিশক্তি নিয়ে প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। যারা নির্বাচনের কাজে নেমেছে তাদের ওপরই আক্রমণ হচ্ছে। কেউ পোস্টার লাগতে পারছেন না। বক্তব্য রাখতে পারছেন না। বিভিন্ন জায়গায় একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা নির্বাচন করার জন্য এগিয়ে এসেছেন তাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এটা খুব ভয়াবহ।
আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ড. কামাল বলেন, আমার তো ৫৫ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলাম ৭০ এ। তখন থেকে এখন সব নির্বাচনই ভালমন্দ দেখেছি। কিন্তু এ অবস্থা কোনো দিন দেখি নাই। আমরা লিখিত তালিকা দিয়েছি। বেশ কিছু কেস- যেখানে সময় স্থানের ছবি দিয়েছি। গুলিবিদ্ধ ব্যারিস্টার খোকন, রোমনার ছবি দিয়েছি। একজন দুই চোখ হারিয়েছেন, সেই মহিলা ছবি দিয়েছি। আ স ম আবদুর রবের ভাঙ্গা গাড়ির ছবিও আমরা দিয়েছি।
এসব ঘটনার কিছু কিছুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিব্রত হয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, বিব্রতবোধ করা যথেষ্ট নয়। কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হয়। আমরা তাদের বলেছি- এখনই আপনারা ইনকোয়ারি চান, একদিনের মধ্যে রিপোর্ট নেন, পদক্ষেপ নেন- যাতে বুঝতে পারি নির্বাচন কমিশন দেশকে মুক্ত করতে চায়, যাতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের নূন্যতম পরিবেশ আমরা পাই।
এক দলের পোষ্টার ছাড়া অন্য কোনো দলের পোষ্টার দেখা যায় না অভিযোগ করে ড. কামাল বলেন, এটা আমি জীবনে দেখিনি। শুধু এক দলের পোস্টার থাকে, অন্য দল মাঠে নামতে পারে না। আমি যতদিন বেচে থাকি একথাগুলো বলে যাব। আপনাদের সামনে বলব, মানুষের সামনে বলব। প্রতিকার দাবি করব। মানুষের ভোটাধিকারের ক্ষমতার কথা বলব। লাখো লাখো শহীদ সেই ক্ষমতা দিয়ে গেছেন- সেটা থেকে যেন জনগণ বঞ্চিত না হয়। এখন যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া অব্যাহত। এটি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। ইসি সেই ক্ষমতা রাখে।
৩০ তারিখের ভোটের পর ইনকোয়ারির কোনো অর্থ থাকবে না মন্তব্য করে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল বলেন, একদিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পরশুর মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত- সেটা আমরা মনে করি। সংবিধান অনুযায়ী ইসির ক্ষমতা আছে। কিন্তু উনারা প্রয়োগে করছেন না। সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আ স ম আব্দুর রব বলেন, আজ থেকেই আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছি।
বৈঠকে সিইসি কেএম নূরুল হুদাসহ অন্যান্য কমিশনার ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে আরো ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কাদের সিদ্দিক, মাহমুদুর রহমান মান্না, নজরুল ইসলাম খান, ড. মইন খান, মোস্তফা মহসিন মিন্টু, জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।