ক্ষমতায় গেলে প্রতিশোধ নেবে না বিএনপি: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:৪৮
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের লেকশোর হোটেলে বিএনপির ইশতেহার তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল। ছবি: দেশ রূপান্তর।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে কারও ওপরই কোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। একটি প্রতিহিংসামুক্ত ও সহমর্মী বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হবে বিএনপির লক্ষ্য।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের লেকশোর হোটেলে দলের ইশতেহার তুলে ধরার পর তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আমাদের সঙ্গে নেই। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে একটি পরিত্যক্ত ভবনে নির্জন কারাবাস করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই দেশে ফিরতে পারছেন না। এ অবস্থায় দুই নেতার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় জনগণের কাছে বিএনপির পক্ষে ভোট চান বিএনপি মহাসচিব।”
ভোটারদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া। দীর্ঘদিন ধরে তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। আপনাদের একটি ভোট বিএনপি নেতাকর্মীদের তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দেবে। অবসান ঘটাবে জুলুম ও নির্যাতনের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা একটি জনপ্রতিনিধিত্বহীন সরকার গঠন করে। গত প্রায় ১০ বছরে দেশে কোনো রকম সুশাসন ও আইনের শাসন ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। মামলা-হামলা, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে এক ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব।”
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “জনগণের বাক্স্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে আঞ্চলিক ও শ্রেণিবৈষম্য ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। দারিদ্র্য হ্রাসের হার কমে গেছে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, ব্যাংকগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে। দেশে সৃষ্টি হয়েছে দুর্বৃত্তায়ন ও লুণ্ঠনের অর্থনীতি।”
বিএনপির মহাসচিব বলেন, “এ রকম একটি নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতিতে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ লড়াই শুধু নির্বাচনে জয় পরাজয়ের লড়াই নয়, এ লড়াই অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।”
তিনি বলেন, “বিএনপি একটি উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। দেশের উন্নয়নের জন্য বিএনপির কর্মসূচিগুলো বহুমুখী ও উন্নততর। বিএনপি জনগণের কাছে স্পষ্টভাবে অঙ্গীকার করতে চায়, ক্ষমতায় গেলে কারও ওপরই কোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। একটি প্রতিহিংসামুক্ত ও সহমর্মী বাংলাদেশ গড়ে তোলাই বিএনপির লক্ষ্য। নির্বাচনে জয়লাভ করে ঐক্যের সরকার গঠন করলে ‘ঐকমত্য, সবার অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিহিংসাহীনতা’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।”
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:৪৮

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে কারও ওপরই কোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। একটি প্রতিহিংসামুক্ত ও সহমর্মী বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হবে বিএনপির লক্ষ্য।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের লেকশোর হোটেলে দলের ইশতেহার তুলে ধরার পর তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আমাদের সঙ্গে নেই। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে একটি পরিত্যক্ত ভবনে নির্জন কারাবাস করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই দেশে ফিরতে পারছেন না। এ অবস্থায় দুই নেতার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় জনগণের কাছে বিএনপির পক্ষে ভোট চান বিএনপি মহাসচিব।”
ভোটারদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া। দীর্ঘদিন ধরে তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। আপনাদের একটি ভোট বিএনপি নেতাকর্মীদের তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দেবে। অবসান ঘটাবে জুলুম ও নির্যাতনের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা একটি জনপ্রতিনিধিত্বহীন সরকার গঠন করে। গত প্রায় ১০ বছরে দেশে কোনো রকম সুশাসন ও আইনের শাসন ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। মামলা-হামলা, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে এক ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব।”
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “জনগণের বাক্স্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে আঞ্চলিক ও শ্রেণিবৈষম্য ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। দারিদ্র্য হ্রাসের হার কমে গেছে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, ব্যাংকগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে। দেশে সৃষ্টি হয়েছে দুর্বৃত্তায়ন ও লুণ্ঠনের অর্থনীতি।”
বিএনপির মহাসচিব বলেন, “এ রকম একটি নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতিতে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ লড়াই শুধু নির্বাচনে জয় পরাজয়ের লড়াই নয়, এ লড়াই অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।”
তিনি বলেন, “বিএনপি একটি উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। দেশের উন্নয়নের জন্য বিএনপির কর্মসূচিগুলো বহুমুখী ও উন্নততর। বিএনপি জনগণের কাছে স্পষ্টভাবে অঙ্গীকার করতে চায়, ক্ষমতায় গেলে কারও ওপরই কোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। একটি প্রতিহিংসামুক্ত ও সহমর্মী বাংলাদেশ গড়ে তোলাই বিএনপির লক্ষ্য। নির্বাচনে জয়লাভ করে ঐক্যের সরকার গঠন করলে ‘ঐকমত্য, সবার অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিহিংসাহীনতা’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।”