চট্টগ্রাম-৪ (সিতাকুণ্ডু)
আওয়ামী লীগে উৎসবের আমেজ শঙ্কিত বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৭:৩১
পশ্চিমে সাগর আর পূর্বে পাহাড় বেষ্টিত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার খ্যাত সংসদীয় আসন সীতাকুণ্ড। বড় দারোগারহাট থেকে চট্রগ্রাম সিটি গেট এবং আকবর শাহ ও পাহাড়তলির কিছু অংশ নিয়ে এই আসন গঠিত।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসনে নৌকার টিকেট পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ দিদারুল আলম। আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা মিছিল মিটিং শোডাউন কর্মীসভা ও মতবিনিময় সভার পাশাপাশি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কেন্দ্র কমিটি গঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি সমানভাবে।
শুক্রবার দিদারুল আলম আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। এতে তিনি বলেন সীতাকুণ্ড ছিল 'নরককুণ্ড' আমরা করেছি শান্তিকুণ্ড। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
অন্যদিকে নানান প্রতিবন্ধকতার পর বিএনপি থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পান উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি ইসহাক কাদের চৌধুরী। তিনি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আসলাম চৌধুরীর বড় ভাই। এ আসন থেকে আসলাম চৌধুরীর নির্বাচন করার কথা থাকলেও ঋনখেলাপীর অভিযোগে তার নমিনেশন বাতিল করে ইসি। তিনি ২০১৬ সালের ১৫মে থেকে কারাগারে আছেন। ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে বৈঠক করার কারণে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নাশকতা, ভাংচুর, বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন থানায় ৬২টি মামলা রয়েছে।
এখনো বিএনপির কোনো কর্মসূচি বা নেতাকর্মী মাঠে নেই। এ বিষয়ে ইসহাক চৌধুরী বলেন, এই আসনের মূল প্রার্থী আসলাম চৌধুরী। সরকার পরিকল্পিত ভাবে তাকে নির্বাচন করতে দিচ্ছে না। আমাদের নেতাকর্মীরা দলীয় হামলা এবং গ্রেফতার আতংকে রয়েছে। প্রথম নির্বাচনী বৈঠক থেকে ২৫জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হামলা মামলায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী ঘরছাড়া অনেকে। খুইয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণের সমর্থন পক্ষে আসবে বলে এই নেতা মনে করেন।
এ আসনে মোট ১১জন মনোনয়ন জমা দেন। যাচাই বাছাইকালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া এবং বিএনপির আসলাম চৌধুরী বাদ পড়েন। প্রথমে নানা অভিযোগ জানালেও পরবর্তীতে বাকের ভূঁইয়া বলেন মনোনয়ন অনেকে চেয়েছে কিন্তু নেত্রী যাকে দিয়েছেন তার জন্য আমরা কাজ করব।
ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়ক এবং শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এ আসনের গুরুত্ব বরাবরই বেশি। তাই বড় দুই দলের দৃষ্টি থাকে এ আসনে। ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন প্রয়াত এল কে সিদ্দিকী, ১৯৯৬তে আওয়ামীলীগ থেকে প্রয়াত এবিএম আবুল কাশেম মাস্টার জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে আবার এলকে সিদ্দিকী ও ২০০৮ এ আবুল কাশেম মাস্টার জয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে নতুন মুখ দিদারুল আলম আওয়ামীলীগ থেকে জয়লাভ করেন। মজার বিষয় এ আসনে যে দল জয়ী হয়েছে সে দল সরকার গঠন করেছে।
আবারো দলীয় টিকেট পাওয়া আওয়ামীলীগের বর্তমান এমপি দিদার বলেন, বিগত পাঁচ বছরে সীতাকুণ্ড শান্তির শহরে পরিণত হয়েছে, ১২/১৩ সালে মানুষ পেট্রোল বোমা, গাড়ি ভাংচুর এবং আগুন সন্ত্রাস দেখেছে। বর্তমানে এখানে চাঁদাবাজি নেই, বোমাবাজি নেই, সন্ত্রাসী নেই। মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারছে। আবার সু্যোগ পেলে সীতাকুণ্ডকে মডেল উপশহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তবে বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক নেতা অভিযোগ করেন ‘গত এক দশকে ক্যাডার ও পুলিশি নির্যাতনে শতশত নেতাকর্মী ঘরছাড়া। অনেকেই কারাগারে রয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর নামেও রয়েছে ৬২টি মামলা। এসব নির্যাতনের জবাব জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে দিবে।
চট্রগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন বলেন আমিও মনোনয়ন চেয়েছি। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাতে পাইনি। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে আমিও নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
এছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্ট (এরশাদ) থেকে দিদারুল কবির, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবুল বাসার মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন ও বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন নির্বাচন করছেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৭:৩১

পশ্চিমে সাগর আর পূর্বে পাহাড় বেষ্টিত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার খ্যাত সংসদীয় আসন সীতাকুণ্ড। বড় দারোগারহাট থেকে চট্রগ্রাম সিটি গেট এবং আকবর শাহ ও পাহাড়তলির কিছু অংশ নিয়ে এই আসন গঠিত।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসনে নৌকার টিকেট পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ দিদারুল আলম। আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা মিছিল মিটিং শোডাউন কর্মীসভা ও মতবিনিময় সভার পাশাপাশি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কেন্দ্র কমিটি গঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি সমানভাবে।
শুক্রবার দিদারুল আলম আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। এতে তিনি বলেন সীতাকুণ্ড ছিল 'নরককুণ্ড' আমরা করেছি শান্তিকুণ্ড। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
অন্যদিকে নানান প্রতিবন্ধকতার পর বিএনপি থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পান উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি ইসহাক কাদের চৌধুরী। তিনি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আসলাম চৌধুরীর বড় ভাই। এ আসন থেকে আসলাম চৌধুরীর নির্বাচন করার কথা থাকলেও ঋনখেলাপীর অভিযোগে তার নমিনেশন বাতিল করে ইসি। তিনি ২০১৬ সালের ১৫মে থেকে কারাগারে আছেন। ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে বৈঠক করার কারণে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নাশকতা, ভাংচুর, বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন থানায় ৬২টি মামলা রয়েছে।
এখনো বিএনপির কোনো কর্মসূচি বা নেতাকর্মী মাঠে নেই। এ বিষয়ে ইসহাক চৌধুরী বলেন, এই আসনের মূল প্রার্থী আসলাম চৌধুরী। সরকার পরিকল্পিত ভাবে তাকে নির্বাচন করতে দিচ্ছে না। আমাদের নেতাকর্মীরা দলীয় হামলা এবং গ্রেফতার আতংকে রয়েছে। প্রথম নির্বাচনী বৈঠক থেকে ২৫জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হামলা মামলায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী ঘরছাড়া অনেকে। খুইয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণের সমর্থন পক্ষে আসবে বলে এই নেতা মনে করেন।
এ আসনে মোট ১১জন মনোনয়ন জমা দেন। যাচাই বাছাইকালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া এবং বিএনপির আসলাম চৌধুরী বাদ পড়েন। প্রথমে নানা অভিযোগ জানালেও পরবর্তীতে বাকের ভূঁইয়া বলেন মনোনয়ন অনেকে চেয়েছে কিন্তু নেত্রী যাকে দিয়েছেন তার জন্য আমরা কাজ করব।
ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়ক এবং শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এ আসনের গুরুত্ব বরাবরই বেশি। তাই বড় দুই দলের দৃষ্টি থাকে এ আসনে। ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন প্রয়াত এল কে সিদ্দিকী, ১৯৯৬তে আওয়ামীলীগ থেকে প্রয়াত এবিএম আবুল কাশেম মাস্টার জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে আবার এলকে সিদ্দিকী ও ২০০৮ এ আবুল কাশেম মাস্টার জয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে নতুন মুখ দিদারুল আলম আওয়ামীলীগ থেকে জয়লাভ করেন। মজার বিষয় এ আসনে যে দল জয়ী হয়েছে সে দল সরকার গঠন করেছে।
আবারো দলীয় টিকেট পাওয়া আওয়ামীলীগের বর্তমান এমপি দিদার বলেন, বিগত পাঁচ বছরে সীতাকুণ্ড শান্তির শহরে পরিণত হয়েছে, ১২/১৩ সালে মানুষ পেট্রোল বোমা, গাড়ি ভাংচুর এবং আগুন সন্ত্রাস দেখেছে। বর্তমানে এখানে চাঁদাবাজি নেই, বোমাবাজি নেই, সন্ত্রাসী নেই। মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারছে। আবার সু্যোগ পেলে সীতাকুণ্ডকে মডেল উপশহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তবে বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক নেতা অভিযোগ করেন ‘গত এক দশকে ক্যাডার ও পুলিশি নির্যাতনে শতশত নেতাকর্মী ঘরছাড়া। অনেকেই কারাগারে রয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর নামেও রয়েছে ৬২টি মামলা। এসব নির্যাতনের জবাব জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে দিবে।
চট্রগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন বলেন আমিও মনোনয়ন চেয়েছি। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাতে পাইনি। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে আমিও নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
এছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্ট (এরশাদ) থেকে দিদারুল কবির, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবুল বাসার মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন ও বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন নির্বাচন করছেন।