সিইসিকে ব্যর্থ বলে সরে দাঁড়ালেন লতিফ সিদ্দিকী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৪:৩৩
গত ১৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিজের গাড়িবহর ও সমর্থকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট ও অনশন শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। ছবি: দেশ রূপান্তর
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রোববার দুপুর ১২টা দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “আমি আর নির্বাচন করছি না। কারণ মাঠ নির্বাচন করার মতো সমতল নয়। মাঠ এমনই সমতল যে পুলিশের বুটের তলে পড়তে হয়। আর সন্ত্রাসীদের লাঠির আঘাত খেতে হয়।”
তিনি বলেন, “আমার অফিস ভেঙে দিয়েছে। আমার নিরীহ লোকদেরকে প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার করছে। যারা সমর্থক তাদেরকে পুলিশ প্রতিনিয়ত টেলিফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। এর পরে ইলেকশন করা যায় নাকি?”
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “ইলেকশনটাতো বাণিজ্য নয়। আমি জীবনে অনেক ইলেকশন করেছি। ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করেছি, আজকে ২০১৮ সাল। এ রকম নির্বাচন আমার এলাকায় আমি জীবনেও দেখিনি।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চিফ ইলেকশন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি। কিছুই চাইনি; আমি কিছু চাওয়ার লোক না। আমি বলে আসলাম- আপনি যে (নির্বাচন) পরিচালনাটা করছেন, এই পরিচালনায় আপনি ব্যর্থ। এই পরিচালনায় নির্বাচন হতে পারে না। তাই আমি মাঠ ছেড়ে দাঁড়ালাম।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “এখনতো আর প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তাই আমি সরে দাঁড়ালাম। আমি নিরীহ মানুষকে আহত, নিহত হওয়ার সুযোগ কেন করে দেব?”
“যারা আহত-নিহত হবে, তাদের দায় আমাকে নিতে হবে। আমি সেই দায় নেব না। আমি এতো বড় বীরপুরুষ হতে চাই না। এটা স্বাধীনতা যুদ্ধ না যে মুখোমুখি লড়াই করব। যার সঙ্গে লড়াই করব, সে আমারই কর্মী কিংবা কর্মীর সন্তান। আমি কেন যাব এই ধরনের হানাহানিতে, যদি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে না পারে?” যোগ করেন তিনি।
সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “আমি তাকে (সিইসি) বলে দিয়ে আসলাম- আপনি স্বীকার করুন আর না করুন, আপনি ব্যর্থ।”
কমিশনের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কিছুই বলা হয়নি। আমিতো তার কাছে শুনতে চাই নাই। আমি বলেছি- এক মিনিট আপনার সঙ্গে দেখা করে চিঠি দিয়ে চলে যাব।”
এখন কি সংশ্লিষ্ট অফিসার ইনচার্জের (ওসি) প্রত্যাহার চান কিনা এমন প্রশ্নে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “এখন আর কিছুই চাই না। এখন আর সময় আছে নাকি? আমি নিজেকেই মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়েছি। কার কাছে কি চাইব? এদেশে চাইলেই কিছু হয় না, ঘটনাক্রমে ঘটে।”
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল-বল্লভবাড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খানের কর্মী-সমর্থকরা হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে।
এতে লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত গাড়িসহ চারটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিবাদে ওই বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি নিয়ে এসে তিন দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট এবং পরে অনশন শুরু করেন তিনি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৪:৩৩

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রোববার দুপুর ১২টা দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “আমি আর নির্বাচন করছি না। কারণ মাঠ নির্বাচন করার মতো সমতল নয়। মাঠ এমনই সমতল যে পুলিশের বুটের তলে পড়তে হয়। আর সন্ত্রাসীদের লাঠির আঘাত খেতে হয়।”
তিনি বলেন, “আমার অফিস ভেঙে দিয়েছে। আমার নিরীহ লোকদেরকে প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার করছে। যারা সমর্থক তাদেরকে পুলিশ প্রতিনিয়ত টেলিফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। এর পরে ইলেকশন করা যায় নাকি?”
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “ইলেকশনটাতো বাণিজ্য নয়। আমি জীবনে অনেক ইলেকশন করেছি। ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করেছি, আজকে ২০১৮ সাল। এ রকম নির্বাচন আমার এলাকায় আমি জীবনেও দেখিনি।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চিফ ইলেকশন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি। কিছুই চাইনি; আমি কিছু চাওয়ার লোক না। আমি বলে আসলাম- আপনি যে (নির্বাচন) পরিচালনাটা করছেন, এই পরিচালনায় আপনি ব্যর্থ। এই পরিচালনায় নির্বাচন হতে পারে না। তাই আমি মাঠ ছেড়ে দাঁড়ালাম।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “এখনতো আর প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তাই আমি সরে দাঁড়ালাম। আমি নিরীহ মানুষকে আহত, নিহত হওয়ার সুযোগ কেন করে দেব?”
“যারা আহত-নিহত হবে, তাদের দায় আমাকে নিতে হবে। আমি সেই দায় নেব না। আমি এতো বড় বীরপুরুষ হতে চাই না। এটা স্বাধীনতা যুদ্ধ না যে মুখোমুখি লড়াই করব। যার সঙ্গে লড়াই করব, সে আমারই কর্মী কিংবা কর্মীর সন্তান। আমি কেন যাব এই ধরনের হানাহানিতে, যদি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে না পারে?” যোগ করেন তিনি।
সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “আমি তাকে (সিইসি) বলে দিয়ে আসলাম- আপনি স্বীকার করুন আর না করুন, আপনি ব্যর্থ।”
কমিশনের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কিছুই বলা হয়নি। আমিতো তার কাছে শুনতে চাই নাই। আমি বলেছি- এক মিনিট আপনার সঙ্গে দেখা করে চিঠি দিয়ে চলে যাব।”
এখন কি সংশ্লিষ্ট অফিসার ইনচার্জের (ওসি) প্রত্যাহার চান কিনা এমন প্রশ্নে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “এখন আর কিছুই চাই না। এখন আর সময় আছে নাকি? আমি নিজেকেই মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়েছি। কার কাছে কি চাইব? এদেশে চাইলেই কিছু হয় না, ঘটনাক্রমে ঘটে।”
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল-বল্লভবাড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খানের কর্মী-সমর্থকরা হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে।
এতে লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত গাড়িসহ চারটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিবাদে ওই বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি নিয়ে এসে তিন দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট এবং পরে অনশন শুরু করেন তিনি।