নামছে সেনাবাহিনী
অনলাইন ডেস্ক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২৩:২৬
রোববার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর একটি দল চাঁদপুর পৌঁছায়। ছবি: দেশ রূপান্তর
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রোববার মধ্যরাত থেকে সারা দেশে সেনাবাহিনী নামতে শুরু করেছে।
নির্বাচন কমিশন জানায়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে সশস্ত্র বাহিনীর।
এর আগে নির্দেশনা পেয়েই সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর কবির নিশ্চিত করেন।
আমাদের আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, রোববার বিকেলে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের অস্থায়ী ক্যাম্পে সেনাবাহিনীর একটি দল পৌঁছায়। সেখানকার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান জানান, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী আখাউড়া উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী পর্যায়ক্রমে সোমবার থেকে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম করবে। আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন তাদের অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চাঁদপুরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তারা চাঁদপুর এসে পৌঁছায়।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. মাজেদুর রহমান খান রোববার রাতে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে এক ব্রিগেড সেনাবাহিনী চাঁদপুরের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে ১৪ থেকে ১৫ প্লাটুন সৈনিক রয়েছেন। জেলা সদরের জন্য চাঁদপুর স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আরো জানান, এ ছাড়া সেনাবাহিনীর বাকি সদস্যরা ৪ নির্বাচনী এলাকার জন্য জেলার ৭ উপজেলায় অবস্থান করবেন।
তিনি বলেন, সোমবার রাত ১টার পর থেকে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরোদমে কাজ শুরু করবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতারা সেনাবাহিনী নামার বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। তবে এর আগে তারা নির্বাচনে সেনাবাহনীর বিচারিক ক্ষমতা চেয়েছে। তারা বলেছে, সেনাবাহিনী শুধু দাঁড়িয়ে থাকলেও হবে। আমরা যেন প্রচার চালাতে পারি, সেনাবাহিনী সে ব্যাপারে অবশ্যই সহযোগিতা করবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম দেশ রূপান্তর বলেন, সেনাবাহিনী নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে। কেউ যেন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র না করতে পারে সেই লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সশস্ত্রবাহিনী যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা থানায় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী।
এতে বলা হয়, অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন।
জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেপ্তারের করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিন মাঠে ছিল সেনাবাহিনী। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় একজন কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২৩:২৬

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রোববার মধ্যরাত থেকে সারা দেশে সেনাবাহিনী নামতে শুরু করেছে।
নির্বাচন কমিশন জানায়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে সশস্ত্র বাহিনীর।
এর আগে নির্দেশনা পেয়েই সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর কবির নিশ্চিত করেন।
আমাদের আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, রোববার বিকেলে আখাউড়া উপজেলা পরিষদের অস্থায়ী ক্যাম্পে সেনাবাহিনীর একটি দল পৌঁছায়। সেখানকার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান জানান, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী আখাউড়া উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী পর্যায়ক্রমে সোমবার থেকে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম করবে। আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন তাদের অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চাঁদপুরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তারা চাঁদপুর এসে পৌঁছায়।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. মাজেদুর রহমান খান রোববার রাতে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে এক ব্রিগেড সেনাবাহিনী চাঁদপুরের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে ১৪ থেকে ১৫ প্লাটুন সৈনিক রয়েছেন। জেলা সদরের জন্য চাঁদপুর স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আরো জানান, এ ছাড়া সেনাবাহিনীর বাকি সদস্যরা ৪ নির্বাচনী এলাকার জন্য জেলার ৭ উপজেলায় অবস্থান করবেন।
তিনি বলেন, সোমবার রাত ১টার পর থেকে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরোদমে কাজ শুরু করবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতারা সেনাবাহিনী নামার বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। তবে এর আগে তারা নির্বাচনে সেনাবাহনীর বিচারিক ক্ষমতা চেয়েছে। তারা বলেছে, সেনাবাহিনী শুধু দাঁড়িয়ে থাকলেও হবে। আমরা যেন প্রচার চালাতে পারি, সেনাবাহিনী সে ব্যাপারে অবশ্যই সহযোগিতা করবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম দেশ রূপান্তর বলেন, সেনাবাহিনী নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে। কেউ যেন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র না করতে পারে সেই লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সশস্ত্রবাহিনী যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা থানায় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী।
এতে বলা হয়, অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন।
জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেপ্তারের করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিন মাঠে ছিল সেনাবাহিনী। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় একজন কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন।