র্যাবের সংবাদ সম্মেলন
নির্বাচনী সহিংসতায় ১৫০ কোটি টাকা ছড়ানোয় ‘সম্পৃক্ত’ তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:১৫
মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে বিপুল টাকা উদ্ধার করে র্যাব। ছবি: রুবেল রশিদ
সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতার উদ্দেশ্যে ১৫০ কোটি কালো টাকা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই টাকা যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই সহিংসতা হচ্ছে বলে দাবি করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় মতিঝিল সিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ আরো বলেন, জব্দ করা টাকার সঙ্গে তারেক রহমানের ছবি সংবলিত একজন বিএনপি নেতার প্রচারপত্র পাওয়া গেছে সেখানে। ওই নেতা হচ্ছেন শরীয়তপুর -৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী নূরুদ্দিন অপু।
তিনি জানান, ঢাকার একটি আসনের সব ভোটারের নাম-ঠিকানা সংবলিত একটি তালিকাও পাওয়া গেছে আলী হায়দারের অফিসে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের মধ্যে একজনের সঙ্গে হাওয়া ভবনের বিশেষ সম্পর্কও ছিল বলে জানান র্যাবের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কালো টাকার মাধ্যমে একটি বিশাল চক্র প্রভাবিত করতে পারে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত দুদিন ধরে অভিযান চালিয়ে মতিঝিল থেকে তিনজনকে আটক করার সময় তাদের কাছ থেকে সাড়ে আট কোটি টাকা নগদ ও ১০ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতাররা হলো আমদানি-রপ্তানি ও ঠিকাদারি কোম্পানি ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হায়দার আলী, আমেনা এন্টারপ্রাইজের ঝালকাঠি জেলার অফিস ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন(৩৮) ও একই গ্রুপের জিএম(অ্যাডমিন) জয়নাল আবেদীন(৪৫)।
বেনজির আহমেদ বলেন, আলী হায়দারের (২৪) কাছে নগদ প্রায় আট কোটি টাকা ও ১০ কোটি টাকার চেক পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে কালো টাকা ছড়ানোর জন্য এই অফিস নেওয়া হয়েছে। গত দুই মাসে এই অফিস থেকে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছে।
‘এই করপোরেশনের কথিত মালিক মাহমুদের একটি অ্যাকাউন্টে ৭৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এবং দুই মাস মিলিয়ে প্রায় এক শ ৪০ কোটি টাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়েছে। ‘
র্যাবপ্রধান বলেন, কালো টাকার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করাই উদ্দেশ্য ছিল। এখানে একজন প্রার্থীরও কাগজপত্র পেয়েছি, তার কাছেও ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে এখান থেকে। সেই টাকা পাঠানোর পরপরই আমরা দেখেছি সেই এলাকায় সহিংসতা হয়েছে।
‘এবং আমরা দেখেছি যেখানে যেখানে টাকা গেছে এর অনেক জায়গায় সহিংসতা হয়েছে’।
সংবাদ সম্মেলনে বেনজির আহমেদ বলেন, এই অফিসে বিভিন্ন ক্যাশ বই আছে। বিভিন্ন জায়গায় টাকা পাঠানোর স্লিপ রয়েছে। এবং একদিনেই ১১ কোটি ও ২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
তিনি বলেন, এই টাকার বেশির ভাগ এসেছে দুবাই থেকে, হুন্ডির মাধ্যমে। ব্যাংকের মাধ্যমে ও স্থানীয় পর্যায় থেকেও সংগ্রহ করা হয়েছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, এরা টাকার রেকর্ড খুব বেশি দিন রাখে না। অফিস স্থাপনের পর গত দুই মাসের পূর্ণাঙ্গ হিসাব পেলে কত টাকা টাকা ছড়ানো হয়েছে তার হিসাব পাওয়া যেত।
বেনজির আহমেদ বলেন, অফিসের রেজিস্ট্রার খাতা ও কম্পিউটার পরীক্ষার পর ধারণা পাওয়া যাবে, আসলে কত টাকার লেনদেন হয়েছে এখান থেকে। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে দেখেছি, এখান থেকে দেড় শ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
বেনজির আহমেদ দাবি করেন, এই অভিযানের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার ভয়াবহ ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে পেরেছি।
র্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আলী হায়দার নামে ওই ব্যক্তি আমদান-রপ্তানি ও ঠিকাদারি কোম্পানি ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:১৫

সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতার উদ্দেশ্যে ১৫০ কোটি কালো টাকা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই টাকা যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই সহিংসতা হচ্ছে বলে দাবি করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় মতিঝিল সিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ আরো বলেন, জব্দ করা টাকার সঙ্গে তারেক রহমানের ছবি সংবলিত একজন বিএনপি নেতার প্রচারপত্র পাওয়া গেছে সেখানে। ওই নেতা হচ্ছেন শরীয়তপুর -৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী নূরুদ্দিন অপু।
তিনি জানান, ঢাকার একটি আসনের সব ভোটারের নাম-ঠিকানা সংবলিত একটি তালিকাও পাওয়া গেছে আলী হায়দারের অফিসে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের মধ্যে একজনের সঙ্গে হাওয়া ভবনের বিশেষ সম্পর্কও ছিল বলে জানান র্যাবের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কালো টাকার মাধ্যমে একটি বিশাল চক্র প্রভাবিত করতে পারে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত দুদিন ধরে অভিযান চালিয়ে মতিঝিল থেকে তিনজনকে আটক করার সময় তাদের কাছ থেকে সাড়ে আট কোটি টাকা নগদ ও ১০ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতাররা হলো আমদানি-রপ্তানি ও ঠিকাদারি কোম্পানি ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হায়দার আলী, আমেনা এন্টারপ্রাইজের ঝালকাঠি জেলার অফিস ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন(৩৮) ও একই গ্রুপের জিএম(অ্যাডমিন) জয়নাল আবেদীন(৪৫)।
বেনজির আহমেদ বলেন, আলী হায়দারের (২৪) কাছে নগদ প্রায় আট কোটি টাকা ও ১০ কোটি টাকার চেক পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে কালো টাকা ছড়ানোর জন্য এই অফিস নেওয়া হয়েছে। গত দুই মাসে এই অফিস থেকে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছে।
‘এই করপোরেশনের কথিত মালিক মাহমুদের একটি অ্যাকাউন্টে ৭৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এবং দুই মাস মিলিয়ে প্রায় এক শ ৪০ কোটি টাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়েছে। ‘
র্যাবপ্রধান বলেন, কালো টাকার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করাই উদ্দেশ্য ছিল। এখানে একজন প্রার্থীরও কাগজপত্র পেয়েছি, তার কাছেও ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে এখান থেকে। সেই টাকা পাঠানোর পরপরই আমরা দেখেছি সেই এলাকায় সহিংসতা হয়েছে।
‘এবং আমরা দেখেছি যেখানে যেখানে টাকা গেছে এর অনেক জায়গায় সহিংসতা হয়েছে’।
সংবাদ সম্মেলনে বেনজির আহমেদ বলেন, এই অফিসে বিভিন্ন ক্যাশ বই আছে। বিভিন্ন জায়গায় টাকা পাঠানোর স্লিপ রয়েছে। এবং একদিনেই ১১ কোটি ও ২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
তিনি বলেন, এই টাকার বেশির ভাগ এসেছে দুবাই থেকে, হুন্ডির মাধ্যমে। ব্যাংকের মাধ্যমে ও স্থানীয় পর্যায় থেকেও সংগ্রহ করা হয়েছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, এরা টাকার রেকর্ড খুব বেশি দিন রাখে না। অফিস স্থাপনের পর গত দুই মাসের পূর্ণাঙ্গ হিসাব পেলে কত টাকা টাকা ছড়ানো হয়েছে তার হিসাব পাওয়া যেত।
বেনজির আহমেদ বলেন, অফিসের রেজিস্ট্রার খাতা ও কম্পিউটার পরীক্ষার পর ধারণা পাওয়া যাবে, আসলে কত টাকার লেনদেন হয়েছে এখান থেকে। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে দেখেছি, এখান থেকে দেড় শ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
বেনজির আহমেদ দাবি করেন, এই অভিযানের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার ভয়াবহ ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে পেরেছি।
র্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আলী হায়দার নামে ওই ব্যক্তি আমদান-রপ্তানি ও ঠিকাদারি কোম্পানি ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।