এখনই সিইসির পদত্যাগ দাবি ঐক্যফ্রন্টের
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২২:২০
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বৈঠক শেষে এ দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নির্বাচনী প্রচারে আহত গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। রক্তাক্ত সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়’।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। হচ্ছে রক্তের হলি খেলা। সব জায়গায় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। হামলা থেকে নারীরাও বাদ যাচ্ছেন না। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীও আক্রান্ত হয়েছেন। কাউকে বাদ দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি), ব্যর্থ, অকার্যকর এটা আজ জাতির সামনে প্রমাণিত। ঐক্যফ্রন্ট এই মুহুর্তে সিইসির পদত্যাগ চায়। ফ্রন্ট এখনই চায় তিনি পদত্যাগ করুন।
এরপর ঐক্যফ্রন্টের বিবৃতি পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি মির্জা ফখরুলের পক্ষে এটি পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সারা দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর হামলা, মামলা, নির্যাতনের বিষয়ে অবহিত করতে ইসিতে গিয়েছিলেন ফ্রন্টের নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা। কিন্তু নেতাদের অভিযোগ শুনে সিইসি সরকার দলীয় নেতার মতো আচরণ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আলোচনায় ড. কামাল হোসেনসহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রশাসন ও পুলিশের ক্রমাগত অসহযোগিতার কথা ইসিকে জানান। একই সঙ্গে বহু ক্ষেত্রে আক্রমণকারী সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আক্রমণের শিকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দিন, তারিখ, স্থান উল্লেখ করে অভিযোগ জানান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিইসির ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে তা ছিলে ‘অত্যন্ত অশোভন’। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তাৎক্ষণিক ক্ষোভ জানিয়ে বৈঠক বর্জন করেন। এ অবস্থায় ঐক্যফ্রন্ট ইসি’র পদত্যাগ দাবি করছে। রাষ্ট্রপতির কাছে ঐক্যফ্রন্ট আহ্বান জানাচ্ছে যাতে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঐক্যফ্রন্ট জনগণকে আহ্বান জানাবে জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে জনগণের দাবি আদায়ের।
নির্বাচনী প্রচারে হামলার শিকার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ইসি’র আচরণ দেখে মনে হয় ইসি ’৭১ সালের আল বদর, আল শামসবাহীনির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন ক্ষমতাসীনদের বিজয়ী করতে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জনগণ যেভাবে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করেছে ঠিক একইভাবে আগামী ৩০ তারিখের নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পরাজিত করবে। বিএনপি বলতে চায়, রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ইসি’র সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার পর ২টার দিকে তারা বৈঠক বর্জন করেন। বৈঠক থেকে বের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
এরপর সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২২:২০

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বৈঠক শেষে এ দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নির্বাচনী প্রচারে আহত গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। রক্তাক্ত সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়’।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। হচ্ছে রক্তের হলি খেলা। সব জায়গায় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। হামলা থেকে নারীরাও বাদ যাচ্ছেন না। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীও আক্রান্ত হয়েছেন। কাউকে বাদ দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি), ব্যর্থ, অকার্যকর এটা আজ জাতির সামনে প্রমাণিত। ঐক্যফ্রন্ট এই মুহুর্তে সিইসির পদত্যাগ চায়। ফ্রন্ট এখনই চায় তিনি পদত্যাগ করুন।
এরপর ঐক্যফ্রন্টের বিবৃতি পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি মির্জা ফখরুলের পক্ষে এটি পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সারা দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর হামলা, মামলা, নির্যাতনের বিষয়ে অবহিত করতে ইসিতে গিয়েছিলেন ফ্রন্টের নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা। কিন্তু নেতাদের অভিযোগ শুনে সিইসি সরকার দলীয় নেতার মতো আচরণ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আলোচনায় ড. কামাল হোসেনসহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রশাসন ও পুলিশের ক্রমাগত অসহযোগিতার কথা ইসিকে জানান। একই সঙ্গে বহু ক্ষেত্রে আক্রমণকারী সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আক্রমণের শিকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দিন, তারিখ, স্থান উল্লেখ করে অভিযোগ জানান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিইসির ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে তা ছিলে ‘অত্যন্ত অশোভন’। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তাৎক্ষণিক ক্ষোভ জানিয়ে বৈঠক বর্জন করেন। এ অবস্থায় ঐক্যফ্রন্ট ইসি’র পদত্যাগ দাবি করছে। রাষ্ট্রপতির কাছে ঐক্যফ্রন্ট আহ্বান জানাচ্ছে যাতে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঐক্যফ্রন্ট জনগণকে আহ্বান জানাবে জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে জনগণের দাবি আদায়ের।
নির্বাচনী প্রচারে হামলার শিকার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ইসি’র আচরণ দেখে মনে হয় ইসি ’৭১ সালের আল বদর, আল শামসবাহীনির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন ক্ষমতাসীনদের বিজয়ী করতে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জনগণ যেভাবে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করেছে ঠিক একইভাবে আগামী ৩০ তারিখের নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পরাজিত করবে। বিএনপি বলতে চায়, রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ইসি’র সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার পর ২টার দিকে তারা বৈঠক বর্জন করেন। বৈঠক থেকে বের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
এরপর সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।