ভোট বিপ্লবের ডাক ঐক্যফ্রন্টের
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:২১
রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: দেশ রূপান্তর।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে ভোট বিপ্লব করার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর ৩০ ডিসেম্বর হবে আরেকটি বিজয় দিবস।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী কার্যালয়ে ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। এর আগে কার্যালয়ে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কোন মূল্যে নির্বাচনের মাঠে থাকার। কারণ হিসেবে কমিটির নেতারা বলেন, ভোটে জনগণের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তাই নির্বাচনে থাকবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসবে।
‘সরকার ভীত হয়ে পড়েছে’-এমন মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার যদি মনে করত তারা জিতবে, তাহলে তো দুই নাম্বারি, তিন নাম্বারি করত না। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করত না।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। ৩০ তারিখ ভোটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে পরিবর্তন চায়। ১৬ ডিসেম্বর যেমন বিজয়ের দিন, ৩০ ডিসেম্বর হবে আরেক বিজয় দিবস।
ড. কামাল বলেন, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। নির্বাচনই জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করবে। ধানের শীষে ভোট দিলে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ঐক্যফ্রন্টের এই আহ্বায়ক বলেন, অনেকে ভয় পান, আমরা ভয় পেলে দেশ স্বাধীন করতে পারতাম না। ১৯৯০ সালে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করতে পারতাম না। অতএব ভোট গণনা না করা পর্যন্ত পাহারা দিন। ১৬ কোটি মানুষ, কতজনকে গ্রেপ্তার করবে তারা ?
প্রশাসন ও আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষকে ভয় দেখানো সম্ভব নয়। তাদেরকে মারাও সম্ভব নয়। জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাড়া পেয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে আরেকটি বিপ্লব হবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের উন্নয়নের অনেক বক্তব্য শুনতে হয়। উন্নয়নের বক্তব্যে আমার কোনও আপত্তি নেই। তবে উন্নয়নের সঙ্গে গণতন্ত্র যদি না থাকে, মানবাধিকার যদি না থাকে, তবে তাকে উন্নয়ন বলে না। উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিপরীত না।
তিনি বলেন, জনগণ দেশের মালিক হলে সত্যিকার অর্থে দেশের উন্নয়ন হবে। তারা বলছেন, গণতন্ত্র রাখো, আগে উন্নয়ন। এটা পঞ্চাশ বছর আগেকার কথা। মানুষ এই সব কথায় কান না দিয়ে দেশের মালিক থাকতে চান।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ক্ষমতাসীনদের প্রচারণায় তাগিদ দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করে ড. কামাল বলেন, উন্নয়ন উন্নয়ন, এটা আইয়ুব খানের প্রত্যাখ্যাত বক্তব্য। ১৯৭১ সালে এটা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনসহ সর্বস্তরে সরকার দলীয়করণ করেছে। ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনগণের ভোটের ক্ষমতায় গেলে দলীয়করণ মুক্ত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, যারা ’৬৯ দেখেছেন, ’৭১ দেখেছেন, তারা ২০১৮ সালের ঐক্য দেখে বিস্মিত হবেন। আচরণের কারণে বর্তমান সরকার নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা যেসব কার্যকলাপ বা ভূমিকা পালন করছেন, তার জন্য সিইসির তালিকায় নায়, মীর জাফরের তালিকায় তার নাম থাকবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রযন্ত্রের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। গণতন্ত্রের মুক্তি, রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরে পেতে ধানের শীষে ভোট দিন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব জগলুল হায়দার আফ্রিক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান প্রমুখ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:২১

আগামী ৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে ভোট বিপ্লব করার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর ৩০ ডিসেম্বর হবে আরেকটি বিজয় দিবস।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী কার্যালয়ে ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। এর আগে কার্যালয়ে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কোন মূল্যে নির্বাচনের মাঠে থাকার। কারণ হিসেবে কমিটির নেতারা বলেন, ভোটে জনগণের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তাই নির্বাচনে থাকবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসবে।
‘সরকার ভীত হয়ে পড়েছে’-এমন মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার যদি মনে করত তারা জিতবে, তাহলে তো দুই নাম্বারি, তিন নাম্বারি করত না। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করত না।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। ৩০ তারিখ ভোটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে পরিবর্তন চায়। ১৬ ডিসেম্বর যেমন বিজয়ের দিন, ৩০ ডিসেম্বর হবে আরেক বিজয় দিবস।
ড. কামাল বলেন, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। নির্বাচনই জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করবে। ধানের শীষে ভোট দিলে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ঐক্যফ্রন্টের এই আহ্বায়ক বলেন, অনেকে ভয় পান, আমরা ভয় পেলে দেশ স্বাধীন করতে পারতাম না। ১৯৯০ সালে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করতে পারতাম না। অতএব ভোট গণনা না করা পর্যন্ত পাহারা দিন। ১৬ কোটি মানুষ, কতজনকে গ্রেপ্তার করবে তারা ?
প্রশাসন ও আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষকে ভয় দেখানো সম্ভব নয়। তাদেরকে মারাও সম্ভব নয়। জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাড়া পেয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে আরেকটি বিপ্লব হবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের উন্নয়নের অনেক বক্তব্য শুনতে হয়। উন্নয়নের বক্তব্যে আমার কোনও আপত্তি নেই। তবে উন্নয়নের সঙ্গে গণতন্ত্র যদি না থাকে, মানবাধিকার যদি না থাকে, তবে তাকে উন্নয়ন বলে না। উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিপরীত না।
তিনি বলেন, জনগণ দেশের মালিক হলে সত্যিকার অর্থে দেশের উন্নয়ন হবে। তারা বলছেন, গণতন্ত্র রাখো, আগে উন্নয়ন। এটা পঞ্চাশ বছর আগেকার কথা। মানুষ এই সব কথায় কান না দিয়ে দেশের মালিক থাকতে চান।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ক্ষমতাসীনদের প্রচারণায় তাগিদ দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করে ড. কামাল বলেন, উন্নয়ন উন্নয়ন, এটা আইয়ুব খানের প্রত্যাখ্যাত বক্তব্য। ১৯৭১ সালে এটা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনসহ সর্বস্তরে সরকার দলীয়করণ করেছে। ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনগণের ভোটের ক্ষমতায় গেলে দলীয়করণ মুক্ত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, যারা ’৬৯ দেখেছেন, ’৭১ দেখেছেন, তারা ২০১৮ সালের ঐক্য দেখে বিস্মিত হবেন। আচরণের কারণে বর্তমান সরকার নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা যেসব কার্যকলাপ বা ভূমিকা পালন করছেন, তার জন্য সিইসির তালিকায় নায়, মীর জাফরের তালিকায় তার নাম থাকবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রযন্ত্রের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। গণতন্ত্রের মুক্তি, রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরে পেতে ধানের শীষে ভোট দিন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব জগলুল হায়দার আফ্রিক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান প্রমুখ।