মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের কেউ স্বশিক্ষিত, কেউ ৫ম শ্রেণি পাস
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি | ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:৩৯
আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩৯ জন। কিন্তু ৩৯ প্রার্থীদের বেশিরভাগের শিক্ষাগত্য যোগ্যতা নিয়ে হতাশ শিক্ষিত সমাজ। প্রার্থীদের কেউ স্বশিক্ষিত, কেউ কেউ ৫ম-৮ম শ্রেণি পাস।
জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সূত্রে প্রার্থীদের হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি। নির্বাচনে মেয়র পদে দুই, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন।
মোট ৩৯ প্রার্থীর একজন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৩৯ জনের মধ্যে ৩৮ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
জানা গেছে, এদের মধ্যে অনেকে এসএসসির গন্ডি পার হতে পারেননি। শুধু তাই নয়, আছেন স্বশিক্ষিত প্রার্থীও। নির্বাচন কমিশনের হলফনামা পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এমন চিত্র।
হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেখা গেছে, কাউন্সিলর পদে স্বশিক্ষিত নয়জন, পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ প্রার্থী দুজন, সপ্তম শ্রেণি উত্তীর্ণ চারজন, অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ১১, নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ দুজন, এসএসসি পাস দুজন, এইচএসসি পাস পাঁচজন। তবে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তিনজন।
মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভোটাররা বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান সময়ে একজন জনপ্রতিনিধি শিক্ষিত হওয়া খুব জরুরী। শিক্ষা ছাড়া সমাজ এবং রাষ্ট্র অগ্রসর হওয়া সম্ভব না। জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষার মান এত নিচে থাকলে, আমরা উপরে উঠব কী করে।
পৌর শহরের একাধিক ভোটারের মতে, সুশিক্ষিত প্রার্থী ছাড়া নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। অনেকে বলছেন জনগণের সেবক হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সেবা করা অনেক সহজ হবে।
শিক্ষাবিদ মো. আব্দুল খালিক জানান, বিষয়টি বিব্রতকর। সরকার যদি একটা সর্বনিম্ন যোগ্যতা নির্ধারণ না করে দেয় তা হলে এ অবস্থা থেকে বের হওয়া যাবে না। আমরা চাই না এমনটা, কিন্তু তার আগে একটা নীতিমালা না করলে এটা বন্ধ করা যাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, শিক্ষার অভাব যদি জনপ্রতিনিধির মধ্যে থাকে, সেই সুযোগ নেয় তার আশেপাশের কর্মচারীরা। তারা জনপ্রতিনিধির শিক্ষাগত যোগ্যতার অভাবকে পুঁজি করে নিজেরা বিভিন্ন সুযোগ গ্রহণ করে। যার ফলে দুর্নীতি বাসা বাঁধে। একটি এলাকায় অবশ্যই শুধু অষ্টম শ্রেণি বা এসএসসি পাশ মানুষ থাকতে পারে না। সেখানে অবশ্যই মাস্টার্স, অনার্স এবং বিএ পাস মানুষও আছেন। তবে কেন নির্বাচনে শিক্ষিত মানুষ দাঁড়াচ্ছেন না?
তিনি আরো বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হওয়া মানে এ না যে তারা শুধু জনসেবামূলক কাজ করবেন। তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটি জেলাকে রিপ্রেজেন্ট করতে হবে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পলিসি নির্ধারণ করতে হবে। তাদের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অনেক উচ্চমহলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। সে জন্য অভিজ্ঞতার পাশাপাশি শিক্ষার গুরুত্বও অনেক। এজন্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষিত মানুষকে নির্বাচনে আসা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি | ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:৩৯

আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩৯ জন। কিন্তু ৩৯ প্রার্থীদের বেশিরভাগের শিক্ষাগত্য যোগ্যতা নিয়ে হতাশ শিক্ষিত সমাজ। প্রার্থীদের কেউ স্বশিক্ষিত, কেউ কেউ ৫ম-৮ম শ্রেণি পাস।
জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সূত্রে প্রার্থীদের হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি। নির্বাচনে মেয়র পদে দুই, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন।
মোট ৩৯ প্রার্থীর একজন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৩৯ জনের মধ্যে ৩৮ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
জানা গেছে, এদের মধ্যে অনেকে এসএসসির গন্ডি পার হতে পারেননি। শুধু তাই নয়, আছেন স্বশিক্ষিত প্রার্থীও। নির্বাচন কমিশনের হলফনামা পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এমন চিত্র।
হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেখা গেছে, কাউন্সিলর পদে স্বশিক্ষিত নয়জন, পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ প্রার্থী দুজন, সপ্তম শ্রেণি উত্তীর্ণ চারজন, অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ১১, নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ দুজন, এসএসসি পাস দুজন, এইচএসসি পাস পাঁচজন। তবে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তিনজন।
মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভোটাররা বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান সময়ে একজন জনপ্রতিনিধি শিক্ষিত হওয়া খুব জরুরী। শিক্ষা ছাড়া সমাজ এবং রাষ্ট্র অগ্রসর হওয়া সম্ভব না। জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষার মান এত নিচে থাকলে, আমরা উপরে উঠব কী করে।
পৌর শহরের একাধিক ভোটারের মতে, সুশিক্ষিত প্রার্থী ছাড়া নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। অনেকে বলছেন জনগণের সেবক হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সেবা করা অনেক সহজ হবে।
শিক্ষাবিদ মো. আব্দুল খালিক জানান, বিষয়টি বিব্রতকর। সরকার যদি একটা সর্বনিম্ন যোগ্যতা নির্ধারণ না করে দেয় তা হলে এ অবস্থা থেকে বের হওয়া যাবে না। আমরা চাই না এমনটা, কিন্তু তার আগে একটা নীতিমালা না করলে এটা বন্ধ করা যাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, শিক্ষার অভাব যদি জনপ্রতিনিধির মধ্যে থাকে, সেই সুযোগ নেয় তার আশেপাশের কর্মচারীরা। তারা জনপ্রতিনিধির শিক্ষাগত যোগ্যতার অভাবকে পুঁজি করে নিজেরা বিভিন্ন সুযোগ গ্রহণ করে। যার ফলে দুর্নীতি বাসা বাঁধে। একটি এলাকায় অবশ্যই শুধু অষ্টম শ্রেণি বা এসএসসি পাশ মানুষ থাকতে পারে না। সেখানে অবশ্যই মাস্টার্স, অনার্স এবং বিএ পাস মানুষও আছেন। তবে কেন নির্বাচনে শিক্ষিত মানুষ দাঁড়াচ্ছেন না?
তিনি আরো বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হওয়া মানে এ না যে তারা শুধু জনসেবামূলক কাজ করবেন। তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটি জেলাকে রিপ্রেজেন্ট করতে হবে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পলিসি নির্ধারণ করতে হবে। তাদের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অনেক উচ্চমহলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। সে জন্য অভিজ্ঞতার পাশাপাশি শিক্ষার গুরুত্বও অনেক। এজন্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষিত মানুষকে নির্বাচনে আসা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।