সুচিত্রা সেন আমার আইডল
মাসিদ রণ | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
‘পোড়ামন ২’ ও ‘দহন’ এর সাফল্য কি আপনাকে বদলে দিয়েছে?
আমি একদমই বদলে যাইনি। শুরু থেকেই নিজেকে একজন সামান্য শিল্পী মনে করি, সারা জীবন তাই মনে করব। কারণ যখনই আমি ভাবব আমি কিছু একটা হয়ে গেছি তখনই আমার শেখার আগ্রহ কমে যাবে। আমি নতুন কিছু দর্শককে দিতে পারব না।
দহনে আপনাকেই কেন কাস্ট করা হয়েছিল, জানেন?
আসলে আমি জাজ মাল্টিমিডিয়ার চোখের সামনে বেড়ে উঠেছি। জাজের প্রথম ছবি ‘ভালোবাসার রঙ’ থেকে শুরু করে অনেক ছবি করেছি। নায়িকা হিসেবে এরইমধ্যে তারা আমাকে চারটি বড় বাজেটের ছবিতে সুযোগ দিয়েছেন। ফলে আমার মেধা কতটুকু তা আমার চেয়ে জাজের কর্ণধার আব্দুল আজিজ স্যার বেশি জানেন। তিনি হয়তো মনে করেছেন দহনের গার্মেন্টস শ্রমিক চরিত্রটি আমি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব, তাই এ ছবিতে আমাকে নিয়েছেন।
এ ছবিতে আপনার চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। চরিত্রটি কীভাবে নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন?
আসলেই চরিত্রটি আমার জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি চেয়েছি সেই চ্যালেঞ্জটিকে গ্রহণ করতে। চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে অনেক কষ্ট করেছি। বিশেষ করে দুই মাসের মতো আমি কড়া ডায়েট করেছি, ওজন কমিয়েছি। গার্মেন্টসের মেয়েদের তো আমি কখনো কাছ থেকে কোনোদিন দেখিনি। তাই তাদের মতো কথা বলা, হাঁটা-চলা শেখার জন্য সরাসরি গার্মেন্টসে চলে যাই। নিজের পরিচয় লুকিয়ে টানা ৭দিন গার্মেন্টসে কাজও করেছি। কিন্তু কেউ আমাকে চিনতে পারেনি। আমার তখনই মনে হয়েছিল আমি হয়তো চরিত্রটি নিজের মধ্যে ধারণ করতে পেরেছি। দর্শক আমার অভিনয় পছন্দ করেছেন, এটাই সার্থকতা।
শুনেছি এই ছবির জন্য আপনাকে টানা ৬ ঘণ্টা ধরে মেকআপ করতে হতো...
হ্যাঁ, একদমই ঠিক শুনেছেন। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন একজন গার্মেন্টস শ্রমিক তো কোনোদিন মেকআপ করে না। তাহলে সেই চরিত্র করতে কেন ৬ ঘণ্টা মেকআপ করতে হবে? তবে আমি নিশ্চিতÑ যারা হলে গিয়ে ছবিটি দেখেছেন তারা বুঝতে পেরেছেন, কী মেকআপ করেছি যার জন্য এত সময় ব্যয় হতো।
নায়িকা হিসেবে আপনার পথচলা অল্প দিনের। তারপরও জানতে চাই ভবিষ্যতে নিজেকে নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে ...
সব অভিনেত্রীই চায় নিজেকে শীর্ষে দেখতে। আমি তাই চাই। সব মানুষ আমাকে এক নামে চিনবে সেটা আমি চাই। তবে আমাদের দেশের বেশিরভাগ নায়িকাই মনে করেন তার নামের পাশে আজীবন নায়িকা তকমাটা থাকুক। কিন্তু আমি চাই এখন থেকেই নিজেকে ভালো একজন অভিনেত্রী হিসেবে তৈরি করতে।
বড়পর্দা অনেক বড় একটি জায়গা। এর জন্য অনেক প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হয়। আপনি কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন?
আসলে আমি মনে করি অভিনয়, সুর, নাচ অনেকটা আসে জিন থেকে। আর কিছুটা চর্চার মাধ্যমে হয়। আমার মনে হয় অভিনয় আমার রক্তেই ছিল। কারণ আমার বাবার দাদা প্রায় ২০০ বছর আগে যাত্রাপালায় খুব নামকরা অভিনেতা ছিলেন। বাবা বলেন আমি নাকি তার কাছ থেকে এই অভিনয় গুণ পেয়েছি। তাছাড়া খুব ছোটবেলা থেকেই অভিনয়, গান, নাচ শিখেছি। তবে নায়িকা হব বলে না। বাবা-মায়ের আগ্রহ থেকেই শেখা। যদিও এখন সময়ের অভাবে গুরু ধরে শেখা হচ্ছে না। এছাড়া শিশুশিল্পী হিসেবে নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্র করতে করতেও এক ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো অভিনয় করার। এই যে মিডিয়ায় কাজ করছি তার জন্য আমার বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা সাপোর্ট না করলে হয়তো আমি মিডিয়ায় কাজই করতে পারতাম না।
কোন অভিনেত্রী আছে যাকে আপনি আইডল ভাবেন ...
সুচিত্রা সেন আমার আইডল। তার প্রতিটি কাজ আমার খুব ভালো লাগে। যখনই সময় পাই তার ছবিগুলো দেখি। বিশেষ করে হারানো সুর, পথে হলো দেরী, দেবদাস আমার বেশি প্রিয়। যখনই তার অভিনয় দেখি আমি হাঁ হয়ে যাই। ভাবি, কী করে একজন মানুষ এত সুচারুভাবে অভিনয় করেন। তার চোখের এক্সপ্রেশন অসামান্য মুগ্ধতা এনে দেয়। আমার অভিনয় দেখেও মানুষ তেমনই আনন্দ পাবে বলে স্বপ্ন দেখি।
দহনের গল্প দিয়ে বলিউডে জলন নামে ছবি হতে যাচ্ছে। সেখানে আপনি ও সিয়াম অভিনয় করছেন। বলিউড নিয়ে কী ভাবনা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ?
বলিউড নিয়ে এখনই কোনো চিন্তা নেই। আগে বলিউডে যাই, তারপর এর অভিজ্ঞতা বলব সবাইকে। সেখানে নিজের দেশটাকে ভালোভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে চাই। এর বেশি এখনই কিছু বলতে চাই না। এখন শুধু এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত আছি।
শেয়ার করুন
মাসিদ রণ | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

‘পোড়ামন ২’ ও ‘দহন’ এর সাফল্য কি আপনাকে বদলে দিয়েছে?
আমি একদমই বদলে যাইনি। শুরু থেকেই নিজেকে একজন সামান্য শিল্পী মনে করি, সারা জীবন তাই মনে করব। কারণ যখনই আমি ভাবব আমি কিছু একটা হয়ে গেছি তখনই আমার শেখার আগ্রহ কমে যাবে। আমি নতুন কিছু দর্শককে দিতে পারব না।
দহনে আপনাকেই কেন কাস্ট করা হয়েছিল, জানেন?
আসলে আমি জাজ মাল্টিমিডিয়ার চোখের সামনে বেড়ে উঠেছি। জাজের প্রথম ছবি ‘ভালোবাসার রঙ’ থেকে শুরু করে অনেক ছবি করেছি। নায়িকা হিসেবে এরইমধ্যে তারা আমাকে চারটি বড় বাজেটের ছবিতে সুযোগ দিয়েছেন। ফলে আমার মেধা কতটুকু তা আমার চেয়ে জাজের কর্ণধার আব্দুল আজিজ স্যার বেশি জানেন। তিনি হয়তো মনে করেছেন দহনের গার্মেন্টস শ্রমিক চরিত্রটি আমি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব, তাই এ ছবিতে আমাকে নিয়েছেন।
এ ছবিতে আপনার চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। চরিত্রটি কীভাবে নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন?
আসলেই চরিত্রটি আমার জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি চেয়েছি সেই চ্যালেঞ্জটিকে গ্রহণ করতে। চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে অনেক কষ্ট করেছি। বিশেষ করে দুই মাসের মতো আমি কড়া ডায়েট করেছি, ওজন কমিয়েছি। গার্মেন্টসের মেয়েদের তো আমি কখনো কাছ থেকে কোনোদিন দেখিনি। তাই তাদের মতো কথা বলা, হাঁটা-চলা শেখার জন্য সরাসরি গার্মেন্টসে চলে যাই। নিজের পরিচয় লুকিয়ে টানা ৭দিন গার্মেন্টসে কাজও করেছি। কিন্তু কেউ আমাকে চিনতে পারেনি। আমার তখনই মনে হয়েছিল আমি হয়তো চরিত্রটি নিজের মধ্যে ধারণ করতে পেরেছি। দর্শক আমার অভিনয় পছন্দ করেছেন, এটাই সার্থকতা।
শুনেছি এই ছবির জন্য আপনাকে টানা ৬ ঘণ্টা ধরে মেকআপ করতে হতো...
হ্যাঁ, একদমই ঠিক শুনেছেন। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন একজন গার্মেন্টস শ্রমিক তো কোনোদিন মেকআপ করে না। তাহলে সেই চরিত্র করতে কেন ৬ ঘণ্টা মেকআপ করতে হবে? তবে আমি নিশ্চিতÑ যারা হলে গিয়ে ছবিটি দেখেছেন তারা বুঝতে পেরেছেন, কী মেকআপ করেছি যার জন্য এত সময় ব্যয় হতো।
নায়িকা হিসেবে আপনার পথচলা অল্প দিনের। তারপরও জানতে চাই ভবিষ্যতে নিজেকে নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে ...
সব অভিনেত্রীই চায় নিজেকে শীর্ষে দেখতে। আমি তাই চাই। সব মানুষ আমাকে এক নামে চিনবে সেটা আমি চাই। তবে আমাদের দেশের বেশিরভাগ নায়িকাই মনে করেন তার নামের পাশে আজীবন নায়িকা তকমাটা থাকুক। কিন্তু আমি চাই এখন থেকেই নিজেকে ভালো একজন অভিনেত্রী হিসেবে তৈরি করতে।
বড়পর্দা অনেক বড় একটি জায়গা। এর জন্য অনেক প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হয়। আপনি কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন?
আসলে আমি মনে করি অভিনয়, সুর, নাচ অনেকটা আসে জিন থেকে। আর কিছুটা চর্চার মাধ্যমে হয়। আমার মনে হয় অভিনয় আমার রক্তেই ছিল। কারণ আমার বাবার দাদা প্রায় ২০০ বছর আগে যাত্রাপালায় খুব নামকরা অভিনেতা ছিলেন। বাবা বলেন আমি নাকি তার কাছ থেকে এই অভিনয় গুণ পেয়েছি। তাছাড়া খুব ছোটবেলা থেকেই অভিনয়, গান, নাচ শিখেছি। তবে নায়িকা হব বলে না। বাবা-মায়ের আগ্রহ থেকেই শেখা। যদিও এখন সময়ের অভাবে গুরু ধরে শেখা হচ্ছে না। এছাড়া শিশুশিল্পী হিসেবে নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্র করতে করতেও এক ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো অভিনয় করার। এই যে মিডিয়ায় কাজ করছি তার জন্য আমার বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা সাপোর্ট না করলে হয়তো আমি মিডিয়ায় কাজই করতে পারতাম না।
কোন অভিনেত্রী আছে যাকে আপনি আইডল ভাবেন ...
সুচিত্রা সেন আমার আইডল। তার প্রতিটি কাজ আমার খুব ভালো লাগে। যখনই সময় পাই তার ছবিগুলো দেখি। বিশেষ করে হারানো সুর, পথে হলো দেরী, দেবদাস আমার বেশি প্রিয়। যখনই তার অভিনয় দেখি আমি হাঁ হয়ে যাই। ভাবি, কী করে একজন মানুষ এত সুচারুভাবে অভিনয় করেন। তার চোখের এক্সপ্রেশন অসামান্য মুগ্ধতা এনে দেয়। আমার অভিনয় দেখেও মানুষ তেমনই আনন্দ পাবে বলে স্বপ্ন দেখি।
দহনের গল্প দিয়ে বলিউডে জলন নামে ছবি হতে যাচ্ছে। সেখানে আপনি ও সিয়াম অভিনয় করছেন। বলিউড নিয়ে কী ভাবনা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ?
বলিউড নিয়ে এখনই কোনো চিন্তা নেই। আগে বলিউডে যাই, তারপর এর অভিজ্ঞতা বলব সবাইকে। সেখানে নিজের দেশটাকে ভালোভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে চাই। এর বেশি এখনই কিছু বলতে চাই না। এখন শুধু এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত আছি।