শ্বাসরুদ্ধকর পানির রাজ্য
ওয়াহিদ সুজন | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
ডিসি কমিকসের অতি পরিচিত সুপার হিরোরা যখন একের পর এক সিনেমায় ব্যর্থ হয়েছে, তখন স্বস্তি জাগিয়েছিল ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’। এবার তার সঙ্গে শামিল হলো অ্যাকুয়াম্যান।
পানির তলের এ সুপার হিরোকে ওয়ান্ডার ওম্যানের মতো দেখা গেছে ‘ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান : ডন অব জান্টিস’ ও ‘জাস্টিস লিগ’-এর মতো সিনেমায়। কিন্তু একক সিনেমায় তার রূপ পুরোপুরি খুলল। অথবা বলা যায় ডিসি’র ত্রাণকর্তা হয়ে এল অ্যাকুয়াম্যান। ব্যাপক রিলিজের আগেই সিনেমাটি বাজেটের দ্বিগুণ ঘরে তুলে নিয়েছে।
ছবির কাহিনি খুব একটা নতুনÑ এমন নয়। কিন্তু মানতেই হবে অরিজিন স্টোরিগুলো এ ধাঁচের হয়েই থাকে। সমুদ্র উপকূলে বাতিঘরের দায়িত্বে থাকা থমাস ঝড়ের সময় উদ্ধার করে পানির নিচের সাম্রাজ্য আটলান্টার রাজকন্যা আটলানাকে। তাদের মধ্যে প্রেম হয়। অতঃপর সংসার ও সন্তান আর্থারের জন্ম। কিন্তু সন্তানসহ রাজকন্যাকে ফিরে যেতে হয় পানির তলে। সেখানে আর্থার তার সৎভাই অর্মর মুখোমুখি হয়।
এর সঙ্গে জড়িয়ে যায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নিউক্লিয়ার সাবমেরিন ও লেভিয়াথানের পুরাণসহ নানা কিছু। আর্থারের রক্তের আধা হিস্যা স্থলভাগে, এ কারণে পানির তলে প্রত্যাখ্যাত হয় সে। কিন্তু আর্থার জল ও স্থল দুই জায়গায়ই সফল। হ্যাঁ, জল-স্থল-অন্তরীক্ষে সমান ক্ষমতা না দেখালে কিসের সুপার হিরো! ছবির শেষে তারই জয় হয়। ‘অ্যাকুয়াম্যান’ পরিচালনা করেছেন অ্যাকশন ও হরর সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া জেমস ওয়্যান। তার পরিচালনায় পানির তলার জগৎ কতটা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে তা ট্রেইলারে দেখা গেছে। সিনেমা দেখিয়ে দিল সেই জগৎ কতটা সুন্দর ও শ্বাসরুদ্ধকর। তবে হ্যাঁ গল্পের মতো দৃশ্যায়ন ও সিজিআই ট্রিটমেন্টে অনেক দর্শকই হয়তো সন্তুষ্ট হবেন না। কিন্তু ডিসি’র একের পর এক ব্যর্থতার পর মনে হবে ‘অ্যাকুয়াম্যান’ অনেকটাই বিনোদনমূলক। অন্তত ‘জাস্টিস লিগ’-এর মতো জগাখিচুড়ি মনে হবে না। একটা সাদাসিধে কাহিনি দেখতে দেখতে সময় ভালো কাটে।
ছবির নাম ভূমিকায় আছেন জেসন মোমোয়া। আগের দুই ছবিতে অন্যদের তুলনায় তাকে অনেকেটা কিম্ভূতাকার মনে হলেও এ সিনেমায় বোঝা গেছে অ্যাকুয়াম্যান কে এবং কেমন? তার সাজসজ্জা-অভিনয় মিলে যেমন অভিনব, তেমন আগ্রহ জাগানিয়া। যেহেতু ‘অ্যাকুয়াম্যান’-এ সিক্যুয়ালের ইঙ্গিত আছে, ধরে নেওয়া যায় আরো রোমাঞ্চকর কিছু আসছে সামনে।
ছবির অন্য কাস্টদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাম্বর হার্ড ও নিকোল কিডম্যান। তাদের অভিনয়ও মনে ধরে। বিশেষ করে নিকোল কিডম্যানের মতো সাড়া জাগানো নায়িকা এ সিনেমার আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি আছেন অ্যাকুয়াম্যানের মায়ের ভূমিকায়।
‘অ্যাকুয়াম্যান’ এমন এক সময়ে মুক্তি পেল যখন সমুদ্র দূষণ ও প্রাণবৈচিত্র্য নিয়ে সারা বিশ্বে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বেশি কথা হচ্ছে। ‘অ্যাকুয়াম্যান’ যেন দুই জগতের কথা বলছে। সেই মেজাজ যদি পরের ছবিগুলোতে বেশি বেশি আসে তাহলে বলা যাবে সুপারহিরোর রাজ্য হয়তো কল্পিতই, কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন নয়। আরো সাবলীল ও প্রাকৃতিক হয়ে উঠবে।
শেয়ার করুন
ওয়াহিদ সুজন | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

ডিসি কমিকসের অতি পরিচিত সুপার হিরোরা যখন একের পর এক সিনেমায় ব্যর্থ হয়েছে, তখন স্বস্তি জাগিয়েছিল ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’। এবার তার সঙ্গে শামিল হলো অ্যাকুয়াম্যান।
পানির তলের এ সুপার হিরোকে ওয়ান্ডার ওম্যানের মতো দেখা গেছে ‘ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান : ডন অব জান্টিস’ ও ‘জাস্টিস লিগ’-এর মতো সিনেমায়। কিন্তু একক সিনেমায় তার রূপ পুরোপুরি খুলল। অথবা বলা যায় ডিসি’র ত্রাণকর্তা হয়ে এল অ্যাকুয়াম্যান। ব্যাপক রিলিজের আগেই সিনেমাটি বাজেটের দ্বিগুণ ঘরে তুলে নিয়েছে।
ছবির কাহিনি খুব একটা নতুনÑ এমন নয়। কিন্তু মানতেই হবে অরিজিন স্টোরিগুলো এ ধাঁচের হয়েই থাকে। সমুদ্র উপকূলে বাতিঘরের দায়িত্বে থাকা থমাস ঝড়ের সময় উদ্ধার করে পানির নিচের সাম্রাজ্য আটলান্টার রাজকন্যা আটলানাকে। তাদের মধ্যে প্রেম হয়। অতঃপর সংসার ও সন্তান আর্থারের জন্ম। কিন্তু সন্তানসহ রাজকন্যাকে ফিরে যেতে হয় পানির তলে। সেখানে আর্থার তার সৎভাই অর্মর মুখোমুখি হয়।
এর সঙ্গে জড়িয়ে যায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নিউক্লিয়ার সাবমেরিন ও লেভিয়াথানের পুরাণসহ নানা কিছু। আর্থারের রক্তের আধা হিস্যা স্থলভাগে, এ কারণে পানির তলে প্রত্যাখ্যাত হয় সে। কিন্তু আর্থার জল ও স্থল দুই জায়গায়ই সফল। হ্যাঁ, জল-স্থল-অন্তরীক্ষে সমান ক্ষমতা না দেখালে কিসের সুপার হিরো! ছবির শেষে তারই জয় হয়। ‘অ্যাকুয়াম্যান’ পরিচালনা করেছেন অ্যাকশন ও হরর সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া জেমস ওয়্যান। তার পরিচালনায় পানির তলার জগৎ কতটা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে তা ট্রেইলারে দেখা গেছে। সিনেমা দেখিয়ে দিল সেই জগৎ কতটা সুন্দর ও শ্বাসরুদ্ধকর। তবে হ্যাঁ গল্পের মতো দৃশ্যায়ন ও সিজিআই ট্রিটমেন্টে অনেক দর্শকই হয়তো সন্তুষ্ট হবেন না। কিন্তু ডিসি’র একের পর এক ব্যর্থতার পর মনে হবে ‘অ্যাকুয়াম্যান’ অনেকটাই বিনোদনমূলক। অন্তত ‘জাস্টিস লিগ’-এর মতো জগাখিচুড়ি মনে হবে না। একটা সাদাসিধে কাহিনি দেখতে দেখতে সময় ভালো কাটে।
ছবির নাম ভূমিকায় আছেন জেসন মোমোয়া। আগের দুই ছবিতে অন্যদের তুলনায় তাকে অনেকেটা কিম্ভূতাকার মনে হলেও এ সিনেমায় বোঝা গেছে অ্যাকুয়াম্যান কে এবং কেমন? তার সাজসজ্জা-অভিনয় মিলে যেমন অভিনব, তেমন আগ্রহ জাগানিয়া। যেহেতু ‘অ্যাকুয়াম্যান’-এ সিক্যুয়ালের ইঙ্গিত আছে, ধরে নেওয়া যায় আরো রোমাঞ্চকর কিছু আসছে সামনে।
ছবির অন্য কাস্টদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাম্বর হার্ড ও নিকোল কিডম্যান। তাদের অভিনয়ও মনে ধরে। বিশেষ করে নিকোল কিডম্যানের মতো সাড়া জাগানো নায়িকা এ সিনেমার আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি আছেন অ্যাকুয়াম্যানের মায়ের ভূমিকায়।
‘অ্যাকুয়াম্যান’ এমন এক সময়ে মুক্তি পেল যখন সমুদ্র দূষণ ও প্রাণবৈচিত্র্য নিয়ে সারা বিশ্বে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বেশি কথা হচ্ছে। ‘অ্যাকুয়াম্যান’ যেন দুই জগতের কথা বলছে। সেই মেজাজ যদি পরের ছবিগুলোতে বেশি বেশি আসে তাহলে বলা যাবে সুপারহিরোর রাজ্য হয়তো কল্পিতই, কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন নয়। আরো সাবলীল ও প্রাকৃতিক হয়ে উঠবে।