সবারই ‘না’ বলার অধিকার আছে
| ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০
প্রত্যেক মানুষের ‘না’ বলার অধিকার আছে, সবার উচিত এটাকে সম্মান করা আর এই বার্তা নিয়েই অরুণ চৌধুরী ‘মায়াবতী’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন। এ সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা বলেছেন ইফতেখার শুভ
‘মায়াবতী’ সিনেমাটি নিয়ে জানতে চাই...
আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘মায়াবতী’। ছোটপর্দার সুপরিচিত নির্মাতা অরুণ চৌধুরীর পরিচালনায় এ সিনেমায় আমার বিপরীতে আছেন ইয়াশ রোহান। আমরা খুব সুন্দর একটি গল্প বলতে চেয়েছি। এ সিনেমার গল্প গড়ে উঠেছে নারী পাচারকে ঘিরে। সমাজের পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিত্রায়িত হয়েছে এ চলচ্চিত্রে। নিটোল প্রেমের গল্পের পাশাপাশি পরিচালক অরুণ চৌধুরী এতে সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন। মায়া নামের এক কিশোরী ছোটবেলায় তার মায়ের কাছ থেকে চুরি হয়ে যায়। পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে সে। তাকে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে বিক্রি করা হয়। সেখানে মায়াকে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন গানের গুরু খোদা বক্স। ওদিকে মায়ার গানের প্রেমে পড়েন একজন ব্যারিস্টার। একসময় ভয়ংকর খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি। শুরু হয় নতুন গল্প। নতুন সংগ্রাম। এতে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, রাইসুল ইসলাম আসাদ, দিলারা জামান, মামুনুর রশীদ, নরেশ ভুঁইয়া, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, আফরোজা বানু, অরুণা বিশ্বাস, আগুনসহ অনেকে। আমি সব দর্শককে সিনেমা হলে সপরিবারে এসে সিনেমাটি দেখার অনুরোধ করছি। প্রাথমিকভাবে ২০টি হলে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। প্রথম সপ্তাহে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখে হলের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এখন ঢাকার যেই হলগুলোতে দর্শক বেশি হয়, সেগুলোতে মুক্তি পচ্ছে।
সিনেমাটিতে অভিনয় করতে কোন বিষয়টি আপনাকে বেশি আগ্রহী করেছে?
একটি মেয়ে দৌলতদিয়ার নিষিদ্ধ পল্লীতে থাকে। কিন্তু সে সেখানকার আর দশটা মেয়ের মতো পতিতাবৃত্তি করতে চায় না। এমন একটি পরিবেশে বড় হয়ে একটি মেয়ে নিজের সম্মান বাঁচানোর জন্য ‘না’ বলতে পারেÑ সমাজের অনেকে তা ভাবতেই পারেন না। কিন্তু সবারই না বলার অধিকার রয়েছে। এ বিষয়টিই আমাকে সবচেয়ে আকৃষ্ট করেছে। শুধু যে একটি সামাজিক বার্তা দেওয়া হয়েছে তা নয়। এ সিনেমায় বাণিজ্যিক সিনেমার মতো প্রেম-বিরহ, কমেডি, গানÑ সবই আছে।
আপনার বেশিরভাগ সিনেমাই ভিন্নধারার। কখনো কি মনে হয় এ ধরনের সিনেমা ব্যবসাসফল হতে গেলে বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয়?
আমার মতে প্রতিটি সিনেমা মূলধারার। প্রতিটি সিনেমা নির্মাণ করা উচিত দর্শকদের কথা মাথায় রেখে। ফর্মুলার বাইরের সিনেমাগুলোর দর্শক দিন দিন বাড়ছে। অনেকে মনে করেন ফর্মুলা সিনেমা নির্মাণ করলেই দর্শকরা দেখবেন। আমি সবার প্রতি সম্মান রেখেই বলছিÑ ‘মনপুরা’, ‘আয়নাবাজি’, ‘দেবী’ এগুলো কোনো ফর্মুলা সিনেমা নয়। কিন্তু দর্শক দেখেছেন। দর্শকরা কিন্তু সিনেমা দেখতে চান। আমরা নির্মাতারা তাদের টানতে পারছি না।
সিনেমা করতে গিয়ে কি কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়?
অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নির্মাতারা সিনেমা বানান শুধু দর্শকদের জন্য। বাজেট সমস্যা রয়েছে, সিনেমা হলের পরিবেশ নিয়ে সমস্যা আছে, দক্ষ কারিগরি টিমের অভাব রয়েছে। তার মধ্যেও দর্শক যখন প্রেক্ষাগৃহে সপরিবারে সিনেমা দেখতে আসেন, তখনই আসলে এত পরিশ্রম সার্থক হয়। আর ভবিষ্যতে নির্মাতাদের আরও সিনেমা বানাতে সাহস জোগায়। দর্শকদের বলতে চাইÑ তারা যেন সিনেমা দেখেন, তাদের মন্তব্য জানান এবং সাপোর্ট করেন।
এ সিনেমার বাইরে আর কী কী সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত আপনি?
আগামী নভেম্বরে আমার প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’-এর শ্যুটিং শুরু হবে। এতে অভিনয় করবেন বলিউড তারকা নওয়াজউদ্দীন সিদ্দিকী। এটি নির্মাণ করবেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
নতুন এই যাত্রায় আশা করছি সবার সহযোগিতা পাব। ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ হতে যাচ্ছে ফারুকীর প্রথম ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির ৭০ শতাংশ শ্যুটিং হবে আমেরিকায়। আর বাকি ৩০ শতাংশ হবে ভারত, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায়। এই মুহূর্তে এই মুভিটি নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।
এছাড়া আমার অভিনীত ‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্রটি বিদেশের একাধিক ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু দেশে এখনো মুক্তি পায়নি। তবে এ নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। আমি জীবনে কোনো কিছু নিয়ে আক্ষেপ করি না। বিদেশে চলচ্চিত্রটি প্রশংসিত হচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশে এটি শিগগিরই মুক্তি পাবে। সবকিছু আসলে সময়ের ওপর নির্ভর করে।
শেয়ার করুন
| ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০

প্রত্যেক মানুষের ‘না’ বলার অধিকার আছে, সবার উচিত এটাকে সম্মান করা আর এই বার্তা নিয়েই অরুণ চৌধুরী ‘মায়াবতী’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন। এ সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা বলেছেন ইফতেখার শুভ
‘মায়াবতী’ সিনেমাটি নিয়ে জানতে চাই...
আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘মায়াবতী’। ছোটপর্দার সুপরিচিত নির্মাতা অরুণ চৌধুরীর পরিচালনায় এ সিনেমায় আমার বিপরীতে আছেন ইয়াশ রোহান। আমরা খুব সুন্দর একটি গল্প বলতে চেয়েছি। এ সিনেমার গল্প গড়ে উঠেছে নারী পাচারকে ঘিরে। সমাজের পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিত্রায়িত হয়েছে এ চলচ্চিত্রে। নিটোল প্রেমের গল্পের পাশাপাশি পরিচালক অরুণ চৌধুরী এতে সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন। মায়া নামের এক কিশোরী ছোটবেলায় তার মায়ের কাছ থেকে চুরি হয়ে যায়। পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে সে। তাকে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীতে বিক্রি করা হয়। সেখানে মায়াকে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন গানের গুরু খোদা বক্স। ওদিকে মায়ার গানের প্রেমে পড়েন একজন ব্যারিস্টার। একসময় ভয়ংকর খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি। শুরু হয় নতুন গল্প। নতুন সংগ্রাম। এতে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, রাইসুল ইসলাম আসাদ, দিলারা জামান, মামুনুর রশীদ, নরেশ ভুঁইয়া, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, আফরোজা বানু, অরুণা বিশ্বাস, আগুনসহ অনেকে। আমি সব দর্শককে সিনেমা হলে সপরিবারে এসে সিনেমাটি দেখার অনুরোধ করছি। প্রাথমিকভাবে ২০টি হলে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। প্রথম সপ্তাহে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখে হলের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এখন ঢাকার যেই হলগুলোতে দর্শক বেশি হয়, সেগুলোতে মুক্তি পচ্ছে।
সিনেমাটিতে অভিনয় করতে কোন বিষয়টি আপনাকে বেশি আগ্রহী করেছে?
একটি মেয়ে দৌলতদিয়ার নিষিদ্ধ পল্লীতে থাকে। কিন্তু সে সেখানকার আর দশটা মেয়ের মতো পতিতাবৃত্তি করতে চায় না। এমন একটি পরিবেশে বড় হয়ে একটি মেয়ে নিজের সম্মান বাঁচানোর জন্য ‘না’ বলতে পারেÑ সমাজের অনেকে তা ভাবতেই পারেন না। কিন্তু সবারই না বলার অধিকার রয়েছে। এ বিষয়টিই আমাকে সবচেয়ে আকৃষ্ট করেছে। শুধু যে একটি সামাজিক বার্তা দেওয়া হয়েছে তা নয়। এ সিনেমায় বাণিজ্যিক সিনেমার মতো প্রেম-বিরহ, কমেডি, গানÑ সবই আছে।
আপনার বেশিরভাগ সিনেমাই ভিন্নধারার। কখনো কি মনে হয় এ ধরনের সিনেমা ব্যবসাসফল হতে গেলে বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয়?
আমার মতে প্রতিটি সিনেমা মূলধারার। প্রতিটি সিনেমা নির্মাণ করা উচিত দর্শকদের কথা মাথায় রেখে। ফর্মুলার বাইরের সিনেমাগুলোর দর্শক দিন দিন বাড়ছে। অনেকে মনে করেন ফর্মুলা সিনেমা নির্মাণ করলেই দর্শকরা দেখবেন। আমি সবার প্রতি সম্মান রেখেই বলছিÑ ‘মনপুরা’, ‘আয়নাবাজি’, ‘দেবী’ এগুলো কোনো ফর্মুলা সিনেমা নয়। কিন্তু দর্শক দেখেছেন। দর্শকরা কিন্তু সিনেমা দেখতে চান। আমরা নির্মাতারা তাদের টানতে পারছি না।
সিনেমা করতে গিয়ে কি কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়?
অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নির্মাতারা সিনেমা বানান শুধু দর্শকদের জন্য। বাজেট সমস্যা রয়েছে, সিনেমা হলের পরিবেশ নিয়ে সমস্যা আছে, দক্ষ কারিগরি টিমের অভাব রয়েছে। তার মধ্যেও দর্শক যখন প্রেক্ষাগৃহে সপরিবারে সিনেমা দেখতে আসেন, তখনই আসলে এত পরিশ্রম সার্থক হয়। আর ভবিষ্যতে নির্মাতাদের আরও সিনেমা বানাতে সাহস জোগায়। দর্শকদের বলতে চাইÑ তারা যেন সিনেমা দেখেন, তাদের মন্তব্য জানান এবং সাপোর্ট করেন।
এ সিনেমার বাইরে আর কী কী সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত আপনি?
আগামী নভেম্বরে আমার প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’-এর শ্যুটিং শুরু হবে। এতে অভিনয় করবেন বলিউড তারকা নওয়াজউদ্দীন সিদ্দিকী। এটি নির্মাণ করবেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
নতুন এই যাত্রায় আশা করছি সবার সহযোগিতা পাব। ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ হতে যাচ্ছে ফারুকীর প্রথম ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির ৭০ শতাংশ শ্যুটিং হবে আমেরিকায়। আর বাকি ৩০ শতাংশ হবে ভারত, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায়। এই মুহূর্তে এই মুভিটি নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।
এছাড়া আমার অভিনীত ‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্রটি বিদেশের একাধিক ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু দেশে এখনো মুক্তি পায়নি। তবে এ নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। আমি জীবনে কোনো কিছু নিয়ে আক্ষেপ করি না। বিদেশে চলচ্চিত্রটি প্রশংসিত হচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশে এটি শিগগিরই মুক্তি পাবে। সবকিছু আসলে সময়ের ওপর নির্ভর করে।