এ ঘটনায় আমি বিস্মিত হয়েছি
সুদীপ্ত | ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০
জনিপ্রয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে কথা বললেন দেশ রূপান্তরের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুদীপ্ত
এই সময়ে...
ভালো। টুকটাক কাজ করছি। পূজা শুরু হয়ে গেছে। তবে অন্যবারের চেয়ে এবারের পূজা আলাদা ভাবে পালন করতে হচ্ছে। করোনার কারণেই এটা করতে হচ্ছে। আশা করছি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
‘যুবতী রাধে’...
দারুণ একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে গানটি গাইতে। শাওনের পারফরম্যান্সও অসাধারণ ছিল। কিন্তু অনাকাক্সিক্ষত বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। আমি এই ঘটনায় বিস্মিত হয়েছি। ‘যুবতী রাধে’ গানটিকে আমরা সবাই প্রচলিত গান বলেই জানতাম। বহু বছর আগের গান এটা। কিছু কথা আর সুর পরিবর্তন হয়েছে। এর কথা, ভাব, সুর সেই প্রমাণ দেয়। তখনকার সাধকেরা রাধাকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে পালা-পুঁথি লিখতেন, নানা পদ রচনা করতেন। এমন প্রচলিত গানের জন্য অনুমতি লাগবে সেটা কেউ ভাবেনি। ইউটিউবেও এই গানের অনেকগুলো ভার্সন দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোনো ব্যান্ডের নাম ক্রেডিট হিসেবে দেওয়া নেই। যদি জানা যেত গানটির মালিক সরলপুর ব্যান্ড তাহলে আইপিডিসি বা পার্থ বড়ুয়া অবশ্যই তাদের অনুমতি নিত। আমরা সবাই দীর্ঘদিন ধরেই শিল্পচর্চার সঙ্গে জড়িত। কোনো নেতিবাচক মানসিকতা এখানে কারোর নেই।
ফোক গান নিয়ে...
আমি শখের গায়ক। বেশ কিছু গান আমি গেয়েছি। আপনারা জানেন সেগুলোর প্রায় সবই ফোক গান। গানের কথা একটু এদিক-সেদিক করে নেন অনেকেই অনেক সময়। বকুল ফুল বকুল ফুল গানটি খুব জনপ্রিয় এখন। এটা কিন্তু সর্বপ্রথম আমার কণ্ঠেই রেকর্ড হয়েছে। এরপর জলের গান গেয়েছি, দিনাত জাহান মুন্নী গেয়েছেন। এখন আমি কি বলব যে এই গান তারা আমার অনুমতি ছাড়া কেন গাইল? আমি এই গানের মালিক? বা আমি এই গানের কপিরাইট আমার নামে করে নেব? একদমই না। কারণ গানটি অনেক আগে থেকেই মানুষের মুখে মুখে বেজে চলেছে। আমি সেটাকে রেকর্ড করে সবার কাছে তুলে ধরেছি। তাই বলে এই গান আমার হয়ে গেল না। আমার কণ্ঠে আরেকটি জনপ্রিয় গান আছে ‘ফুল গাছটি লাগাইছিলাম ধুলা মাটি দিয়া রে’। এটি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা অঞ্চলের গান। অনেকেই মুখে মুখে বলেন, এটা চঞ্চলের গান। তাই বলে এটা তো আমার হয়ে গেল না। এর পদ রচনাকারী আমি নই।’
আইন মানতেই হবে...
‘কোনো গানে কেউ খানিকটা এদিক-সেদিক পরিবর্তন করে যদি সেটা তার নিজের বলে দাবি করে তখন তো আসলে বলার কিছু থাকে না। শুনছি সরলপুর ব্যান্ড দাবি করেছে তাদের নামে কপিরাইট আছে ‘যুবতী রাধে’ গানটি তাদের। যদি এমনটা হয় তাহলে আইন তাদের পক্ষে। সেটা মানতেই হবে।
কপিরাইট নিয়ে প্রশ্ন...
আইন অনুযায়ী এখন গানটি সরলপুর ব্যান্ডের। কিন্তু তাদের কপিরাইট নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে। সরলপুর ব্যান্ড তাদের বক্তব্যে বলছে গানটির ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছে আর ৭০ ভাগ তাদের লেখা। জানতেই চাই যে ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছে সেটা কার কার থেকে? তাদের কপিরাইটের বেলায় বিষয়টা কী হবে? আর যে ৭০ ভাগ তারা লিখেছে সেখানে কোন কোন লাইনগুলো তাদের লেখা? কারণ বেশিরভাগই লাইন মধ্যযুগের কবি দ্বিজ কানাইয়ের লেখা মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া গানের পদের মতো। প্রায় হুবহু। জানি না কপিরাইট আইনের ব্যাখ্যা বা নিয়মটা কেমন। সেটাই জানতে চাই তাদের কাছে। কীভাবে গানটি তাদের মালিকানায় এলো। তারপর একটা বিষয় হলো যে গানটি আমি ও শাওন গেয়েছি সেই গানের অনেকগুলো ভার্সন ইউটিউবে রয়েছে। সেগুলোর কপিরাইট কার? সেগুলো তো অনেক দিন ধরেই রয়েছে সেখানে। অনেক ভিউও আছে। তাহলে সেগুলো না সরিয়ে যখন আমরা গাইলাম এবং গানটি খুব সাড়া পেল তখন কেন সরানো হলো?
শেয়ার করুন
সুদীপ্ত | ২৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০

জনিপ্রয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে কথা বললেন দেশ রূপান্তরের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুদীপ্ত
এই সময়ে...
ভালো। টুকটাক কাজ করছি। পূজা শুরু হয়ে গেছে। তবে অন্যবারের চেয়ে এবারের পূজা আলাদা ভাবে পালন করতে হচ্ছে। করোনার কারণেই এটা করতে হচ্ছে। আশা করছি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
‘যুবতী রাধে’...
দারুণ একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে গানটি গাইতে। শাওনের পারফরম্যান্সও অসাধারণ ছিল। কিন্তু অনাকাক্সিক্ষত বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। আমি এই ঘটনায় বিস্মিত হয়েছি। ‘যুবতী রাধে’ গানটিকে আমরা সবাই প্রচলিত গান বলেই জানতাম। বহু বছর আগের গান এটা। কিছু কথা আর সুর পরিবর্তন হয়েছে। এর কথা, ভাব, সুর সেই প্রমাণ দেয়। তখনকার সাধকেরা রাধাকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে পালা-পুঁথি লিখতেন, নানা পদ রচনা করতেন। এমন প্রচলিত গানের জন্য অনুমতি লাগবে সেটা কেউ ভাবেনি। ইউটিউবেও এই গানের অনেকগুলো ভার্সন দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোনো ব্যান্ডের নাম ক্রেডিট হিসেবে দেওয়া নেই। যদি জানা যেত গানটির মালিক সরলপুর ব্যান্ড তাহলে আইপিডিসি বা পার্থ বড়ুয়া অবশ্যই তাদের অনুমতি নিত। আমরা সবাই দীর্ঘদিন ধরেই শিল্পচর্চার সঙ্গে জড়িত। কোনো নেতিবাচক মানসিকতা এখানে কারোর নেই।
ফোক গান নিয়ে...
আমি শখের গায়ক। বেশ কিছু গান আমি গেয়েছি। আপনারা জানেন সেগুলোর প্রায় সবই ফোক গান। গানের কথা একটু এদিক-সেদিক করে নেন অনেকেই অনেক সময়। বকুল ফুল বকুল ফুল গানটি খুব জনপ্রিয় এখন। এটা কিন্তু সর্বপ্রথম আমার কণ্ঠেই রেকর্ড হয়েছে। এরপর জলের গান গেয়েছি, দিনাত জাহান মুন্নী গেয়েছেন। এখন আমি কি বলব যে এই গান তারা আমার অনুমতি ছাড়া কেন গাইল? আমি এই গানের মালিক? বা আমি এই গানের কপিরাইট আমার নামে করে নেব? একদমই না। কারণ গানটি অনেক আগে থেকেই মানুষের মুখে মুখে বেজে চলেছে। আমি সেটাকে রেকর্ড করে সবার কাছে তুলে ধরেছি। তাই বলে এই গান আমার হয়ে গেল না। আমার কণ্ঠে আরেকটি জনপ্রিয় গান আছে ‘ফুল গাছটি লাগাইছিলাম ধুলা মাটি দিয়া রে’। এটি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা অঞ্চলের গান। অনেকেই মুখে মুখে বলেন, এটা চঞ্চলের গান। তাই বলে এটা তো আমার হয়ে গেল না। এর পদ রচনাকারী আমি নই।’
আইন মানতেই হবে...
‘কোনো গানে কেউ খানিকটা এদিক-সেদিক পরিবর্তন করে যদি সেটা তার নিজের বলে দাবি করে তখন তো আসলে বলার কিছু থাকে না। শুনছি সরলপুর ব্যান্ড দাবি করেছে তাদের নামে কপিরাইট আছে ‘যুবতী রাধে’ গানটি তাদের। যদি এমনটা হয় তাহলে আইন তাদের পক্ষে। সেটা মানতেই হবে।
কপিরাইট নিয়ে প্রশ্ন...
আইন অনুযায়ী এখন গানটি সরলপুর ব্যান্ডের। কিন্তু তাদের কপিরাইট নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে। সরলপুর ব্যান্ড তাদের বক্তব্যে বলছে গানটির ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছে আর ৭০ ভাগ তাদের লেখা। জানতেই চাই যে ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছে সেটা কার কার থেকে? তাদের কপিরাইটের বেলায় বিষয়টা কী হবে? আর যে ৭০ ভাগ তারা লিখেছে সেখানে কোন কোন লাইনগুলো তাদের লেখা? কারণ বেশিরভাগই লাইন মধ্যযুগের কবি দ্বিজ কানাইয়ের লেখা মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া গানের পদের মতো। প্রায় হুবহু। জানি না কপিরাইট আইনের ব্যাখ্যা বা নিয়মটা কেমন। সেটাই জানতে চাই তাদের কাছে। কীভাবে গানটি তাদের মালিকানায় এলো। তারপর একটা বিষয় হলো যে গানটি আমি ও শাওন গেয়েছি সেই গানের অনেকগুলো ভার্সন ইউটিউবে রয়েছে। সেগুলোর কপিরাইট কার? সেগুলো তো অনেক দিন ধরেই রয়েছে সেখানে। অনেক ভিউও আছে। তাহলে সেগুলো না সরিয়ে যখন আমরা গাইলাম এবং গানটি খুব সাড়া পেল তখন কেন সরানো হলো?