বিচ্ছেদ নিয়ে লুকোছাপা নেই ফারিয়ার
মাসিদ রণ | ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
কথা বলায় বরাবরই সাহসী জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তিনি নিজের জোরালো মতামত তুলে ধরেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অবশেষে তারকা জীবনের এক স্পর্শকাতর বিষয়ে নিজের অবস্থান জানান দিলেন। এক দীর্ঘ ফেইসবুক স্ট্যাটাসে গত শনিবার সন্ধ্যায় নিজের বিবাহবিচ্ছেদের খবর জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। স্বামী হারুনুর রশীদ অপুর সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে সে স্ট্যাটাসে ফারিয়া জানিয়েছেন, ‘আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও পাঁচ বছরের পুরনো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি। বিবাহে বিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালোবাসার বিচ্ছেদ নেই, বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই।’ বিবাহবিচ্ছেদের খবর জানানোর পরদিন ফারিয়া আর এক স্ট্যাটাসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘মানুষ ব্লেইম গেম, গালিগালাজ, মানুষকে ছোট করতে পছন্দ করে। বিচ্ছেদের পর কোনো সম্পর্ক কেন সুন্দর হবে না? কেন আমরা বলতে পারব না বিচ্ছেদের পরও আমরা বন্ধু।’ তিনি আরও লেখেন, ‘প্লিজ মাথায় নেন, শেষটাও সুন্দর হতে পারে, শেষটাও সম্মান দিয়ে, ভালোবাসার সঙ্গে শেষ হতে পারে। আমার কষ্ট, আমার অভিমান সব আমার কাছেই থাক। মনে রাখবেন, কাউকে ছোট করা আল্লাহ কখনই পছন্দ করেন না।’
গত শুক্রবার বিবাহবিচ্ছেদ ফারিয়া জানান, শুরুতে নিজেদের বিচ্ছেদের খবর কাউকে জানাতে চাইনি। পরে মনে হয়, বিচ্ছেদ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না দিলে পোর্টালগুলো ইচ্ছেমতো মুখরোচক খবর প্রকাশ করবে। এ জন্যই যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিচ্ছেদের খবর জানিয়েছি। ফারিয়া বলেন, ‘কাউকে অসম্মান করে কেউ বড় হতে পারে না। বিচ্ছেদ হলেও এখনো অপুর প্রতি সম্মান আছে আমার। তবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসার পেছনের আসল ঘটনা শুধু আমার পরিচিতজন ও পরিবারের সদস্যরা জানেন। যথেষ্ট কারণ না থাকলে মানুষটার সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসতাম না।’
২০১৫ সালে ফেইসবুকে ফারিয়া-অপুর পরিচয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেম। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা আংটি বদল করেন। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ধুমধাম করে বিয়ে হয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুনুর রশীদ অপুর। সেই হিসাবে তাদের সম্পর্কের বয়স পাঁচ বছর। কেন এমন হলো? জানতে চাইলে ফারিয়া বলেন, ‘সমস্যা যতটা না আমাদের দুজনের, তার চেয়ে বেশি আমাদের দুই পরিবারের। আমার বাবা নেই, মাকে নিয়ে আমার পরিবার। তার ওপর আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করি। আর দশজন মেয়ের বিবাহবিচ্ছেদ আর আমার বিবাহবিচ্ছেদ একেবারে ভিন্ন। আমি একটা মেয়ে, আমাদের সমাজ মেয়েদের দোষটাই আগে দেখবে জানি। সে কারণে অনেকভাবে চেষ্টা করেছি, যাতে সংসারটা টেকে। কিন্তু কোনোভাবেই সেটা সম্ভব হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দয়া করে মিডিয়ার মানুষের বিয়ে টেকে না ধরনের কথা বলে আমাদের কারণে আমার অন্য সহকর্মীদের ছোট করবেন না। আমরা সম্পূর্ণ পারিবারিক কারণে, পারিবারিকভাবে, পারিবারিক সম্মতিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের কখনো ভালোবাসা বা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না। দুজন মানুষের বিবাহবিচ্ছেদ মানে দুটো পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি নয়। তবু আমরা পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে চাই।’
বিষয়টি নিয়ে ফারিয়ার অপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আসলে নতুন করে বলার কিছু নেই। যা বলার আগেই সবার জন্য সামাজিক মাধ্যমে বলেছি। আমাদের একে অপরের ওপর কোনো অভিযোগ নেই। ভালো থাকার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
শেয়ার করুন
মাসিদ রণ | ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

কথা বলায় বরাবরই সাহসী জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তিনি নিজের জোরালো মতামত তুলে ধরেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অবশেষে তারকা জীবনের এক স্পর্শকাতর বিষয়ে নিজের অবস্থান জানান দিলেন। এক দীর্ঘ ফেইসবুক স্ট্যাটাসে গত শনিবার সন্ধ্যায় নিজের বিবাহবিচ্ছেদের খবর জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। স্বামী হারুনুর রশীদ অপুর সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে সে স্ট্যাটাসে ফারিয়া জানিয়েছেন, ‘আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও পাঁচ বছরের পুরনো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি। বিবাহে বিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালোবাসার বিচ্ছেদ নেই, বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই।’ বিবাহবিচ্ছেদের খবর জানানোর পরদিন ফারিয়া আর এক স্ট্যাটাসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘মানুষ ব্লেইম গেম, গালিগালাজ, মানুষকে ছোট করতে পছন্দ করে। বিচ্ছেদের পর কোনো সম্পর্ক কেন সুন্দর হবে না? কেন আমরা বলতে পারব না বিচ্ছেদের পরও আমরা বন্ধু।’ তিনি আরও লেখেন, ‘প্লিজ মাথায় নেন, শেষটাও সুন্দর হতে পারে, শেষটাও সম্মান দিয়ে, ভালোবাসার সঙ্গে শেষ হতে পারে। আমার কষ্ট, আমার অভিমান সব আমার কাছেই থাক। মনে রাখবেন, কাউকে ছোট করা আল্লাহ কখনই পছন্দ করেন না।’
গত শুক্রবার বিবাহবিচ্ছেদ ফারিয়া জানান, শুরুতে নিজেদের বিচ্ছেদের খবর কাউকে জানাতে চাইনি। পরে মনে হয়, বিচ্ছেদ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না দিলে পোর্টালগুলো ইচ্ছেমতো মুখরোচক খবর প্রকাশ করবে। এ জন্যই যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিচ্ছেদের খবর জানিয়েছি। ফারিয়া বলেন, ‘কাউকে অসম্মান করে কেউ বড় হতে পারে না। বিচ্ছেদ হলেও এখনো অপুর প্রতি সম্মান আছে আমার। তবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসার পেছনের আসল ঘটনা শুধু আমার পরিচিতজন ও পরিবারের সদস্যরা জানেন। যথেষ্ট কারণ না থাকলে মানুষটার সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসতাম না।’
২০১৫ সালে ফেইসবুকে ফারিয়া-অপুর পরিচয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেম। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা আংটি বদল করেন। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ধুমধাম করে বিয়ে হয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুনুর রশীদ অপুর। সেই হিসাবে তাদের সম্পর্কের বয়স পাঁচ বছর। কেন এমন হলো? জানতে চাইলে ফারিয়া বলেন, ‘সমস্যা যতটা না আমাদের দুজনের, তার চেয়ে বেশি আমাদের দুই পরিবারের। আমার বাবা নেই, মাকে নিয়ে আমার পরিবার। তার ওপর আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করি। আর দশজন মেয়ের বিবাহবিচ্ছেদ আর আমার বিবাহবিচ্ছেদ একেবারে ভিন্ন। আমি একটা মেয়ে, আমাদের সমাজ মেয়েদের দোষটাই আগে দেখবে জানি। সে কারণে অনেকভাবে চেষ্টা করেছি, যাতে সংসারটা টেকে। কিন্তু কোনোভাবেই সেটা সম্ভব হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দয়া করে মিডিয়ার মানুষের বিয়ে টেকে না ধরনের কথা বলে আমাদের কারণে আমার অন্য সহকর্মীদের ছোট করবেন না। আমরা সম্পূর্ণ পারিবারিক কারণে, পারিবারিকভাবে, পারিবারিক সম্মতিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের কখনো ভালোবাসা বা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না। দুজন মানুষের বিবাহবিচ্ছেদ মানে দুটো পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি নয়। তবু আমরা পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে চাই।’
বিষয়টি নিয়ে ফারিয়ার অপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আসলে নতুন করে বলার কিছু নেই। যা বলার আগেই সবার জন্য সামাজিক মাধ্যমে বলেছি। আমাদের একে অপরের ওপর কোনো অভিযোগ নেই। ভালো থাকার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।’